হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ইসলাম বিরোধী- ওলামা লীগ
লিখেছেন লিখেছেন মুসলমান ০৭ জানুয়ারি, ২০১৬, ০১:৫৬:৪১ দুপুর
আওয়ামী ওলামা লীগের নেতৃবৃন্দ বলেছেন, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ওলামা লীগের দাবী ও বক্তব্যের সমালোচনা করে ইসলাম, মুসলমান, দেশ ও সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তারা বলেন, পরিষদের বক্তব্য মিথ্যাচার এবং দালিলিক নয়। গতকাল এক বিবৃতিতে ওলামা লীগের নেতৃবৃন্দ এ কথা বলেন। বিবৃতি দিয়েছেন- সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা, পীরজাদা পীর আখতার হোসেন বুখারী, নির্বাহী সভাপতি হাফেজ মাওলানা আব্দুস সাত্তার, কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্জ্ব ক্বাজী মাওলানা আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী এবং হাজী হাবীবুল্লাহ রুপগঞ্জী ও মাওলানা শওকত আলী শেখ। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ওলামা লীগ বর্তমান মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকারের ভ্রাতৃপ্রতিম সহযোগী সংগঠন। এ সংগঠন মুসলমানদের ধর্মীয় অধিকার ও দাবি-দাওয়া সরকারের কাছে তুলে ধরে। ওলামা লীগের বক্তব্য ও দাবিতে ইসলাম, মুসলমান, দেশ ও মানবতার সত্যকে তুলে ধরা হয়েছে। ঐক্য পরিষদ পৃষ্ঠপোষক সুরঞ্জিত সেন, সরকারি চাকরিতে হিন্দুদের প্রাধান্য, পাঠ্যপুস্তকে হিন্দু লেখকদের প্রাধান্য, পয়লা বৈশাখ বিরোধী দাবির ব্যাখ্যা চেয়েছে। এ প্রসঙ্গে নেতৃবৃন্দ বলেন, কট্টর হিন্দুত্ববাদী নেতা সি আর দত্ত পরিকল্পিতভাবে মুসলিম বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে ও আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছে। গত ৫ অক্টোবর কট্টর হিন্দুত্ববাদী সাম্প্রদায়িক নেতা সি আর দত্ত বলেছে, সংবিধানে ইসলাম ধর্মকে রাষ্ট্র ধর্ম করার জন্য দেশ স্বাধীন হয়নি। এ সংগঠনের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক সুরঞ্জিত সেন গত ২৭ মে/১১ জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সমাবেশে বলেছে ‘রাজপথে আন্দোলন গড়ে তোলা গেলে সংবিধান থেকে বিসমিল্লাহ ও রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দেয়া যাবে’। এ কথা বলে সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত সংবিধান সংশোধনের কমিটির কো-চেয়ারম্যান পদের যোগ্যতা হারিয়েছেন। কারণ সে নিজেই রাষ্ট্রধর্ম ইসলামকেই সংবিধানে বহাল রেখেছে। রাষ্ট্রধর্ম দ্বীন ইসলাম ও বিসমিল্লাহ সম্পর্কে তার এই বক্তব্যের কারণে তাকে তার পদ থেকে বহিষ্কার করতে হবে। নেতৃবৃন্দ বলেন, গত ৪ ডিসেম্বর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ সংসদে ২০ শতাংশ আসন এবং সাংবিধানিক পদসহ প্রশাসনের সর্বস্তরে ২০ শতাংশ পদ রিজার্ভ রাখার দাবি করেছে। এ প্রসঙ্গে নেতৃবৃন্দ বলেন, ২০১৩ সালে পুলিশের এসআই পদে হিন্দুরা ২১.৯৭ শতাংশ চাকরি পেয়েছে। যা তাদের দাবির চেয়ে ২ শতাংশ বেশি। ২০১১ সালে গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইতে ৯৩ জনের মধ্যে হিন্দু নিয়োগ করা হয়েছে ২৩ জন। যা ২৪.৭৩ শতাংশ এবং দাবির চেয়ে ৪.৭৩ শতাংশ বেশী। বাংলাদেশে জনসংখ্যার পাঁচ-সাত ভাগ হিন্দু সরকারী নিয়োগ পাচ্ছে ২২-২৫ ভাগ। ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানরা বঞ্চিত হচ্ছে। অথচ ভারত ৪০ শতাংশ এবং পশ্চিমবঙ্গে ৫০ শতাংশ মুসলমান হলেও সামাজিক চাকরি ও সামাজিক ক্ষেত্রে তাদের অংশীদারিত্ব মাত্র ২ শতাংশ। সরকারীভাবে যেখানে ১০ শতাংশ সুযোগ মুসলমানদের পাওয়ার কথা সেখানে তারা পাচ্ছে মাত্র ২ শতাংশ। সুতরাং বাংলাদেশের হিন্দুরা স্বর্গে বাস করছে। অপরদিকে সি আর দত্ত, সুরঞ্জিত সেন এবং গয়েশ্বর গংরা বাংলাদেশে বসে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের উস্কানি দিচ্ছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশ মুসলিম দেশ। এখানে শতকরা ৯৭ জন মুসলমান। পাঠ্যপুস্তকে প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত বাংলা বইয়ে অন্তর্ভুক্ত গল্প, প্রবন্ধ ও কবিতার সংখ্যা ১৯৩ টি। অথচ এর মধ্যে ১৩৭ জন লেখক হচ্ছে হিন্দু ও নাস্তিক। যা শতকরা হিসাবে ৫৭-৮২ ভাগ। অথচ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের দাবী হচ্ছে আনুপাতিক হার। তাদের দাবী অনুযায়ী বিচার করলে মুসলিম লেখকদের অধিকার ভূলন্ঠিত হচ্ছে। পহেলা বৈশাখ বিষয়ে বক্তারা বলেন, এই দিনে মুসলমানদের কোন বিষয় নেই। তাহলে ধর্ম যার যার উৎসব সবার বলে মুসলমানদের উৎসাহিত করতে হবে কেন? যদি তাই করা হয় তাহলে মুসলমানদের দুই ঈদ এবং ঈদে মীলাদুন্নবী, শবে ক্বদর, শবে বরাত হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান পালন করবে কি? বক্তারা বলেন, এভাবে মুসলমানদের ধর্মীয় অধিকার এবং ইসলামের মৌলিক বিষয় তুলে ধরলে সাম্প্রদায়িকতা হবে কেন? বরঞ্চ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদই সাম্প্রদায়িক। তাদের রাষ্ট্রদ্রোহী ঘোষণা করতে হবে।
উৎসঃ ইনকিলাব
বিষয়: বিবিধ
১২৪২ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন