সেই হাজার কোটি অজানা টাকার দানকারী সৌদি বাদশাহ আব্দুল্লাহ !

লিখেছেন লিখেছেন মুসলমান ০৭ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০৯:৪৩:৪৬ সকাল



(ফেবুর সৌদি বিরোধী শিয়া জিহাদীদের জন্য এটা একটা দুঃসংবাদ)

ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় সিডরে যখন লণ্ডভণ্ড দেশের দক্ষিণাঞ্চল, চারদিকে লাশের মিছিল আর হাহাকার, তার কয়েক দিনের মধ্যেই এলো এক সুখবর। কোনো এক ব্যক্তি নিজের নাম-পরিচয় গোপন রাখার শর্তে সিডর আক্রান্তদের সহায়তার জন্য ১৩ কোটি ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় এক হাজার ৪৬ কোটি টাকা) দান করলেন, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো ব্যক্তির সর্বোচ্চ দান। দেশ-বিদেশে থাকা বাংলাদেশি এমনকি সরকারের শীর্ষ পর‌্যায়ের কর্তাদেরও কৌত‚হল ছিল, কে এই দানবীর? আট বছর পর জানা গেল সেই দাতার নাম। তিনি সৌদি আরবের তখনকার বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজ, যিনি গত জানুয়ারি মাসে মারা গেছেন।

গত মাসে বাংলাদেশ সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে ১৩ কোটি ডলারের দাতা হিসেবে সৌদি আরবের প্রয়াত বাদশাহর নাম প্রথমবারের মতো জানান ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক-আইডিবির প্রেসিডেন্ট ড. আহমেদ মোহাম্মদ আলী। আগামী মধ্য জানুয়ারিতে বাদশাহ আবদুল্লাহর ছেলে প্রিন্স টার্কি বিন আবদুল্লাহ ও আইডিবির প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ সফরে এলে তখন আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারের পক্ষ থেকে দেশবাসীর সামনে ওই ১৩ কোটি ডলারের দাতার নাম ঘোষণা করা হবে।

সূত্র জানায়, টেলিভিশন ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সিডরে আক্রান্তদের দুর্দশা ও ক্ষয়ক্ষতির দৃশ্য দেখে মর্মাহত হন সৌদি আরবের তখনকার বাদশাহ আবদুল্লাহ। তিনি আক্রান্তদের সহায়তার জন্য আইডিবির প্রেসিডেন্ট ড. আহমেদ মোহাম্মদ আলীকে জানান, সিডর আক্রান্তদের সহায়তার জন্য ১৩ কোটি ডলার দান করতে চান তিনি। তবে একটিমাত্র শর্ত জুড়ে দিয়ে বাদশা বলেন, কে এই অর্থ দান করেছে, তা গোপন রাখতে হবে। কোনোমতেই তাঁর নাম বলা যাবে না। নাম-পরিচয় গোপন রাখার আশ্বাস দেন আইডিবি প্রধান। পরদিনই বাংলাদেশের জন্য পুরো ১৩ কোটি ডলার সৌদি বাদশাহ পৌঁছে দেন আইডিবির কাছে। তিনি ব্যক্তিগত অর্থ-সম্পদ থেকে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ দান করেন বাংলাদেশকে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, গত জানুয়ারি পর্যন্ত এই বিপুল অর্থ দানকারীর নাম শুধু একজনই জানতেন। তিনি আইডিবির প্রেসিডেন্ট ড. আহমেদ মোহাম্মদ আলী। বাদশাহর অনুরোধ রাখতে গিয়ে কারও কাছে প্রকাশ করেননি তিনি। তবে গত জানুয়ারি মাসে সৌদি বাদশাহ আবদুল্লাহ মারা যাওয়ার পর আইডিবি প্রেসিডেন্ট প্রথমবারের মতো বাদশাহর ভাই ও সন্তানদের কাছে বিষয়টি খোলাসা করে বলেন, বাংলাদেশে সিডর আক্রান্তদের ১৩ কোটি ডলার সহায়তা দেওয়া অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিটি ছিলেন তাঁদেরই বাদশাহ। সেই অর্থে বাংলাদেশে স্কুল-কাম-শেল্টার হোম নির্মাণ হচ্ছে।

আরবি ভাষায় ‘ফায়েল খায়ের’ (ভালো কাজের পরিচয় গোপন রেখে সহায়তা করা) দাতা পরিচয়ে সরকারকে ওই অর্থ দিচ্ছে আইডিবি। দানের ওই ১৩ কোটি ডলারের মধ্যে ১১ কোটি ডলার দিয়ে উপকূলীয় এলাকায় নির্মাণ করা হচ্ছে ১৭৩টি স্কুল-কাম-আশ্রয়কেন্দ্র। এর মধ্যে ৩৪টি চালু হয়েছে। ২৭টি নির্মাণ শেষ হয়েছে। বাকিগুলো নির্মাণের প্রক্রিয়া চলছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের তদারকিতে বেসরকারি খাতের প্রতিষ্ঠান আবদুল মোনেম কনস্ট্রাকশন ও নাভানাসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এগুলো নির্মাণ করছে। সরকারের চাহিদা অনুযায়ী, নির্মাণ ব্যয় মেটাতে দানের সেই অর্থ থেকে টাকা দিচ্ছে আইডিবি। বাকি দুই কোটি ডলার দিয়ে সিডর আক্রান্ত কৃষক ও জেলে এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কৃষি উপকরণ সরবরাহে বিনাসুদে ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে, যা এখনো চলছে।

আইডিবির ঢাকা অফিস ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, আইডিবির প্রেসিডেন্ট ড. আহমেদ মোহাম্মদ আলীর কাছ থেকে বাবার দানের কথা শুনে নির্মাণ শেষ হওয়া ২৭টি স্কুল-কাম-আশ্রয়কেন্দ্র উদ্বোধন করার আগ্রহ প্রকাশ করেন প্রিন্স টার্কি বিন আবদুল্লাহ। তাঁর এই আগ্রহের কথা অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে চিঠি লিখে জানান আইডিবি প্রেসিডেন্ট। ১২ ডিসেম্বর বাংলাদেশে আসার আগ্রহের কথা জানিয়েছিলেন তাঁরা। তবে সময় কম বলে ইআরডির তরফ থেকে সফরটি মাসখানেক পেছানোর অনুরোধ করে আইডিবিকে একটি চিঠি পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। চিঠিতে আগামী মধ্য জানুয়ারিতে প্রিন্স টার্কি বিন আবদুল্লাহ ও আইডিবি প্রেসিডেন্ট আহমেদ মোহাম্মদ আলীকে বাংলাদেশে এসে ২৭টি স্কুল-কাম-আশ্রয়কেন্দ্র উদ্বোধন করতে অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

উৎসঃ কালের কন্ঠ

http://www.bdfirst.net/newsdetail/detail/200/174525

বিষয়: বিবিধ

১০৮৪ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

352995
০৭ ডিসেম্বর ২০১৫ সকাল ১১:১১
মুক্তিযোদ্ধার ভাগনে লিখেছেন : ইসলাম বিরোধী অপশক্তিরা এখন কি করবেন? সেটাই এখন দেখার পালা
০৮ ডিসেম্বর ২০১৫ সকাল ০৯:১৫
293123
মুসলমান লিখেছেন : তারা বিষয়ে কোন কথা বলবেন কি জানি না।
352997
০৭ ডিসেম্বর ২০১৫ সকাল ১১:১৪
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : বিষয়টা নিয়ে জানার আগ্রহ ছিল। যাক জানা হল। অনেক ধন্যবাদ।
০৮ ডিসেম্বর ২০১৫ সকাল ০৯:১৮
293124
মুসলমান লিখেছেন : আমরা কেউই জানতাম না। এখন জানা হল। আসলে দান গোপনেই করা উচিত।
353005
০৭ ডিসেম্বর ২০১৫ সকাল ১১:৪৩
আবু সাইফ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..

আল্লাহতায়ালা তাঁর দান কবুল করুন ও তাঁকে ক্ষমা করুন-
যদিও তাঁর অন্যরকম অনেক বিষয় আমরা ভুলতে পারিনা, ভুলে যাওয়া সম্ভব নয়!!
০৮ ডিসেম্বর ২০১৫ সকাল ০৯:২১
293126
মুসলমান লিখেছেন : ওয়াআলাইকুম সালাম ওয়ারহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।
আমীন।
তিনি যদি ভুল করে থাকেন সেটা আল্লাহ দেখবেন ক্ষমা করবেন কি শাস্তি দিবেন। আমরা দোয়া করি আল্লাহ তাকে মাফ করুন। আর আমরা নিজেরা নিজেদের ভুলের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই।
০৮ ডিসেম্বর ২০১৫ সকাল ১১:৪৯
293171
আবু সাইফ লিখেছেন : জ্বী, ঠিক বলেছেন!
আমার অনুভূতিটা ঐ রকম- যেমনটা রসূলুল্লাহﷺর হয়েছিল হিন্দা রাঃ-র প্রতি হামজা রাঃ-র ব্যাপারে!
কষ্টের অনুভূতি এবং ক্ষমা করে দেয়া ও ক্ষমার দোয়া করা- দুটো আলাদা বিষয়!!

আল্লাহতায়ালা সকল মুমিনকে ক্ষমা করুন, আমীন
353037
০৭ ডিসেম্বর ২০১৫ দুপুর ১২:৫৪
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
০৮ ডিসেম্বর ২০১৫ সকাল ০৯:২১
293127
মুসলমান লিখেছেন : আমারও ভাল লাগল।
353048
০৭ ডিসেম্বর ২০১৫ দুপুর ০২:২১
জেদ্দাবাসী লিখেছেন : মিশরের গনহত্যার পর বাদশাহর প্রতি র্ঘিনা জর্মে গিয়েছিল। পোস্ট পড়ে বুঝলাম তার অন্তর ভাল ছিল উপদেস্টাদের কারনে বির্তকিত কাজগুলি করেত ব্যাধ্য হয়েছিল। আল্লাহ তাহার দান কবুল করুন ও তাঁকে ক্ষমা করুন।

শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ
০৮ ডিসেম্বর ২০১৫ সকাল ০৯:২২
293128
মুসলমান লিখেছেন : আমীন। জাঝাকাল্লাহু খাইরান।
353050
০৭ ডিসেম্বর ২০১৫ দুপুর ০২:২১
লেন্দুপ দর্জি লিখেছেন : সৌদি টাকার কাছে জিহাদীরা বিক্রয় হয়ে যায় কি!?
আহা! মার্কিন দালাল আলে সৌদ জিন্দাবাদ, জিন্দাবাদ।
০৮ ডিসেম্বর ২০১৫ সকাল ০৯:২৫
293133
মুসলমান লিখেছেন : আমরা যেন নিজেদের ভুলের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই।
353101
০৭ ডিসেম্বর ২০১৫ রাত ০৯:০২
শেখের পোলা লিখেছেন : বাদশার খবর আল্লাহ নেবেন৷ আশ্রয় কেন্দ্রগুলো কাজে লাগলে আমাদের অবশ্যই কিছু উপকার হবে৷ ধন্যবাদ৷
০৮ ডিসেম্বর ২০১৫ সকাল ০৯:২৫
293134
মুসলমান লিখেছেন : জাঝাকাল্লাহু খাইরান।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File