শুকরের গোশত হারাম কেন?
লিখেছেন লিখেছেন মুসলমান ০৮ নভেম্বর, ২০১৫, ১০:৪৩:৫৩ সকাল
ইসলামে শুকরের গোশত খাওয়া হারাম। তবে নিষিদ্ধের কারণটি অনেকেরই অজানা। কুরআনে শুকুরের মাংস নিষিদ্ধ হওয়ার ব্যাপারটি অন্তত চারটি স্থানে উল্লেখ করা হয়েছে। “তিনি তোমাদের ওপর হারাম করেছেন, মৃত জীব, রক্ত, শুকরের গোশত এবং সেসব জীব-জন্তু যা আল্লাহ্ ব্যতীত অপর কারো নামে উৎসর্গ করা হয়।
অবশ্য যে লোক অনন্যোপায় হয়ে পরে এবং না-ফরমানী ও সীমালঙ্ঘনকারী না হয়, তার জন্য কোন পাপ নেই। নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ মহান ক্ষমাশীল, অত্যন্ত – দয়ালু”। (সূরা বকারাহ, আয়াতঃ ১৭৩)
অন্যত্র বলেন, “তোমাদের জন্যে হারাম করা হয়েছে মৃত জীব, রক্ত, শূকরের মাংস, যেসব জন্তু আল্লাহ্ ছাড়া অন্যের নামে উৎসর্গকৃত হয়, যা কণ্ঠরোধে মারা যায়, যা আঘাত লেগে মারা যায়, যা উচ্চ স্থান থেকে পতনের ফলে মারা যায়, যা শিং-এর আঘাতে মারা যায় এবং যাকে হিংস্র জন্তু ভক্ষণ করেছে, কিন্তু যাকে তোমরা যবেহ্ করেছ। যে জন্তু যজ্ঞবেদীতে যবেহ্ করা হয় এবং যা ভাগ্য নির্ধারক শর দ্বারা বন্টন করা হয়। এসব গোনাহ্র কাজ। আজ কাফেররা তোমাদের দ্বীন থেকে নিরাশ হয়ে গেছে। অতএব তাদেরকে ভয় করো না বরং আমাকে ভয় কর। আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার অবদান সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম। অতএব যে ব্যক্তি তীব্র ক্ষুধায় কাতর হয়ে পড়ে, কিন্তু কোন গোনাহ্র প্রতি প্রবণতা না থাকে, তবে নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ক্ষমাশীল। (সূরা মায়েদাহ, আয়াতঃ ৩)
সূরা আনআমে বলেন, আপনি বলে দিন, যা কিছু বিধান ওহীর মাধ্যমে আমার কাছে পৌঁছেছে, তন্মধ্যে আমি কোন হারাম খাদ্য পাই না কোন ভক্ষণকারীর জন্যে, যা সে ভক্ষণ করে; কিন্তু মৃত অথবা প্রবাহিত রক্ত অথবা শূকরের গোশত এটা অপবিত্র অথবা অবৈধ; যবেহ করা জন্তু যা আল্লাহ্ ছাড়া অন্যের নামে উৎসর্গ করা হয়। অতঃপর যে ক্ষুধায় কাতর হয়ে পড়ে এমতাবস্থায় যে অবাধ্যতা করে না এবং সীমালঙ্ঘন করে না, নিশ্চয় আপনার প্রতিপালক ক্ষমাশীল, দয়ালু। (সূরা আনআম, আয়াত: ১৪৫)
সূরা নাহালে বলা হয়েছে, “অবশ্যই আল্লাহ্ তোমাদের জন্যে হারাম করেছেন রক্ত, শূকরের গোশত এবং যা জবাইকালে আল্লাহ্ ছাড়া অন্যের নাম উচ্চারণ করা হয়েছে। অতঃপর কেউ সীমালঙ্ঘনকারী না হয়ে নিরুপায় হয়ে পড়লে তবে, আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু”। (সূরা নাহল, আয়াতঃ ১১৫)
শুকুরের গোশত কেন নিষেধ করা হয়েছে তার সন্তোষজনক উত্তরের জন্য কুরআনের উল্লেখিত আয়াতই যথেষ্ট।
খ. বাইবেল শুকুর গোশত ভক্ষণের নিষিদ্ধতা একজন খ্রীস্টান তার ধর্মগ্রন্থ সমূহের উল্লেখ দেখে সন্তুষ্ট হলে দেখতে পাবে যে, বাইবেল ‘লেভীটিকাস্থ গ্রন্থে শুকুরের গোশত খেতে নিষেধ করেছে। বলা হয়েছে, এবং শুকুর যদিও তার খুর দ্বিখন্ডিত এবং খুরযুক্ত পদ বিশিষ্ট। এমন কি সে চিবিয়ে খায়, যাবর কাটে না। (তবু) ওটা অপরিচ্ছন্ন (অপবিত্র) তোমার জন্য”। একই গ্রন্থের ১১ অধ্যায় ৭ ও ৮ স্তবকে বলা হয়েছে, ওগুলোর গোশত তুমি খাবে না এবং ওগুলোর মৃতদেহ তুমি স্পর্শও করবে না, ওগুলো ‘অপবিত্র’ তোমার জন্য।
শুকর গোশত মারাত্মক রোগের কারণ
শুকরের গোশত ভক্ষণ কমপক্ষে সত্তরটি রোগের উদ্ভব ঘটাতে পারে।
প্রথমত, আক্রান্ত হতে পারে বিভিন্ন প্রকার ক্রিমির দ্বারা। যেমন বৃত্তাকার ক্রিমি, ক্ষুদ্র কাঁটাযুক্ত ক্রিমি এবং বক্র ক্রিমি। এর মধ্যে সবচাইতে ভয়ঙ্কর ও মারাত্মক হলো ‘টাইনিয়া সোলিয়াম’। সাধারণভাবে যেটাকে ফিতা ক্রিমি’ বলা হয়। এটা পেটের মধ্যে বেড়ে ওঠে এবং অনেক লম্বা হয়। এর ডিম রক্ত প্রবাহে প্রবেশ করে এবং দেহের প্রায় সকল অঙ্গ প্রত্যঙ্গে ঢুকে পড়তে পারে, যদি এটা মস্তিস্কে ঢোকে, তাহলে কারণ ঘটাতে পারে স্মৃতি ভ্রষ্ট হয়ে যাবার। হৃদযন্ত্রের মধ্যে ঢুকলে বন্ধ করে দিতে পারে হৃদযন্ত্রক্রিয়া। চোখে ঢুকলে অন্ধত্বের কারণ হয়, কলিজায় ঢুকলে সেখানে মারাত্মক ক্ষতের সৃষ্টি করে অর্থাৎ এটা শরীরের যে কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কর্মক্ষমতাকে ধ্বংস করে দিতে পারে।
এরপরও আছে আরো ভয়ঙ্কর ‘ত্রীচুরা টিচুরাসীস্থ।’ এ সম্পর্কে একটা সাধারণ ধারণা হলো ভালো করে রান্না করলে এর ডিম্ব মারা যায়। এর ওপরে আমেরিকায় গবেষণা চালানো হয়েছে। ফলাফল, ভালো করে রান্না করার পরও প্রতি ২৪ জনের ২২ জন এই ‘ত্রীচুরাসীস্থ’ দ্বারা আক্রান্ত। প্রমাণ হলো সাধারণ রান্নায় এ ডিম্ব ধ্বংস হয় না। এতে চর্বি উৎপাদনের উপাদান প্রচুর
শুকরের গোশত পেশী তৈরির উপাদান অত্যন্ত নগণ্য পরিমাণ। পক্ষান্তরে চর্বি উৎপাদনের উপাদান প্রচুর। এ জাতীয় চর্বি বেশিরভাগ রক্ত নালীতে জমা হয়, যা কারণ ঘটায় হাইপার টেনশান এবং হার্ট এটাকের। অবাক হওয়ার কিছু নেই যে ৫০ ভাগ আমেরিকান হাইপার টেনশানের রুগী।
শুকর নোংরা ও পঙ্কিলতম প্রাণী নিজেদের বিষ্ঠা, মানুষের মল ও ময়লাপূর্ণ জায়গায়এ প্রাণীটি বসবাস করতে পছন্দ করে। আল্লাহ তাআলা সমাজবদ্ধ সৃষ্টিকূলের ধাঙর, মেথর বা ময়লা পরিষ্কারক হিসাবেই বোধকরি এ প্রাণিটি সৃষ্টি করেছেন।
(কপিপেষ্ট বিডিটুডে হতে)
বিষয়: বিবিধ
১৬৮৮ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
hatred নিয়ে কিছু বুঝার চেষ্টা মূর্খতার সমান। এরকম ভূল ইনটারপ্রিটেশনের সম্ভাবনাই বেশী।
গরুর গোস্ত খাওয়া নিষেধ ষাড়ের গোস্ত খাওয়া নিষেধ হীন
চলো পালিয়ে যাই দুজনে মিলে সূদদদদুর দুরে অজানায় উমমমা
আল্লা সবার আগে ধুমপান নিষিদ্ধ করেন্নি কেন?? বেচারী মাদক আর মদের কথা তুলতে ভুইলা গেছিল
মন্তব্য করতে লগইন করুন