দুই ধরনের গোনাহ ক্ষমা করা হয়, বাকি দুই ধরনের ক্ষমা করা হয় না

লিখেছেন লিখেছেন মুসলমান ০১ নভেম্বর, ২০১৫, ০৩:৩৫:৩৯ দুপুর

ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায় শব্দটি নিজের কৃত পাপের জন্য অনুতপ্ত হওয়া, তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং তা পরিত্যাগের দৃঢ় সংকল্পকে বোঝায়।

পবিত্র কোরআনে কারিমের অনেক স্থানে তওবা শব্দটি উল্লেখ করা হয়েছে। এমনকি পবিত্র কোরআনের একটি পূর্ণাঙ্গ সূরার নামকরণ করা হয়েছে সূরা তওবা। এছাড়া সূরা নুর, সূরা সূরা তাহরিম, সূরা বাকারা ও সূরা ফুরকানসহ কোরআনের আরও সূরায় তওবা এবং এর গুরুত্ব উল্লেখ করা হয়েছে। কোরআনের ন্যায়, হাদিসেও তওবার কথা উল্লেখ রয়েছে এবং এর প্রতি জোর দেওয়া হয়েছে।

যেহেতু কোরআনে এবং হাদিসে কৃত পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করার বিষয়টি বারংবার উল্লেখ ও গুরুত্বারোপ করা হয়েছে, সে কারণে ইসলামে তওবার গুরুত্ব অনেক।

ইসলামি স্কলারদের অভিমত হলো, গোনাহ থেকে বাঁচার চেষ্টা যেমন মুমিনের পরিচায়ক তেমনি তওবা করাও মুমিনের অনন্য বৈশিষ্ট্য। চাই তা সগিরা (ছোট) গোনাহ বা কবিরা (বড়) গোনাহ। এ প্রসঙ্গে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, কোনো বান্দা যদি সগিরা গোনাহ করে অনুতপ্ত না হয় এবং তওবা না করে তবে তা আল্লাহর কাছে কবিরা গোনাহ বলে বিবেচিত হয়।

পক্ষান্তরে কেউ কবিরা গোনাহ করেও যদি অনুতপ্ত ও অনুশোচনা করে তওবা করে তবে তা আল্লাহর কাছে সগিরা গোনাহ বলে গণ্য হয় এবং তিনি তা ক্ষমা করে দেন। -সুনানে তিরমিজি গোনাহ করা যেমন বান্দার স্বভাব তেমনি গোনাহ মাফ করাও আল্লাহর স্বভাব ও বিশেষ গুণ। এ বিষয়ে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘যে তাকওয়ার নীতি অবলম্বন করে তার গোনাহগুলো মিটিয়ে দেওয়া হবে এবং তার প্রতিদানকে বহুগুণে বৃদ্ধি করা হবে।

সূরা তালাক: ০৫ গোনাহ চার প্রকার। দু’প্রকার ক্ষমা করা হয় বাকি দু’প্রকার ক্ষমা করা হয় না। ১. যে গোনাহ বান্দার অনিচ্ছায় হয়ে যায় তা ক্ষমা করা হয় এবং আজাব দেওয়া হয় না, নেয়ামত বন্ধ হয় না।

সূরা আহজাব: ০৫ ২. বান্দা কবিরা গোনাহ করার পর অনুতপ্ত হয়ে তওবা করলে আল্লাহ তা কবুল করেন এবং তার পদমর্যাদা বৃদ্ধি করেন।

সূরা আল ইমরান: ১৩৫ ৩. বান্দা গোনাহ করার পর যদি অনুতপ্ত না হয় বা তওবা না করে তাকে তুচ্ছ মনে করে তবে তার গোনাহ তওবা না করা পর্যন্ত ক্ষমা করা হয় না।

৪. যে ব্যক্তির কাছে পাপের কাজ পাপের বলে মনে হয় না বরং তা স্বাভাবিক মনে করে এ ধরনের গোনাহ ক্ষমা করা হয় না। এসব লোকই জাতির সবচেয়ে হতভাগ্য, যাদের আমল তাদের ধ্বংস করে দেয়। তবে কেউ যদি পরবর্তীতে তার পাপের ব্যাপারে অনুতপ্ত হয় এবং একনিষ্ঠ মনে তওবা করে সংশ্লিষ্ট পাপ থেকে বিরত থাকে তাহলে তাকে ক্ষমা করা হবে। কারণ আল্লাহতায়ালা তার রহমত থেকে মানুষকে নিরাশ হতে নিষেধ করেছেন।

সূরা জুমার: ৫৩ তওবা করতে হবে মৃত্যু যন্ত্রণা শুরু হওয়ার আগে। কারণ এ মুহূর্তে মানুষের ঈমান আনা ও তওবা করাতে কোনো লাভ নেই।

সূরা মুমিনুন: ১০০ মুমিন ও মুনাফিকের গোনাহের মধ্যে পার্থক্য হলো- মুমিন গোনাহকে পাহাড়সম বোঝা মনে করে আর মুনাফিক তাকে খুবই তুচ্ছ ও স্বাভাবিক মনে করে। তওবার দরজা কিয়ামতের নিদর্শন পশ্চিমাকাশে সূর্য উদয় হওয়ার আগ পর্যন্ত খোলা রয়েছে এবং আল্লাহতায়ালা বান্দাকে ক্ষমা করবেন।

কিন্তু তওবার রয়েছে তিনটি শর্ত। ১. কৃতকর্মের অনুশোচনা করা। ২. ভবিষ্যতে সংশ্লিষ্ট গোনাহ না করার ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়া। ৩. আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। তবে যদি তা ব্যক্তির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয় তাহলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির হক আদায় করতে হবে। অথবা ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে।

আল্লাহ আমাদের গুনাহ হতে বাঁচার তাওফিক দান করুন।

(ফেসবুক হতে)

বিষয়: বিবিধ

১২৪৮ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

348096
০১ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ০৩:৪৯
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
০৩ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ০৯:৩২
289138
মুসলমান লিখেছেন : জাঝাকাল্লাহু খাইরান।
348138
০২ নভেম্বর ২০১৫ রাত ১২:০০
আফরা লিখেছেন : লিখাটা অনেক বেশী ভাল লেগেছে আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ মুসলমান ভাইয়া ।

আল্লাহ আমাদের গুনাহ হতে বাঁচার তাওফিক দান করুন। আমীন ।

০৩ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ০৯:৩৩
289139
মুসলমান লিখেছেন : জাঝাকাল্লাহু খাইরান। আমীন।
352429
০২ ডিসেম্বর ২০১৫ বিকাল ০৪:৪১
মুন্সী কুতুবুদ্দীন লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
০৩ ডিসেম্বর ২০১৫ সকাল ১০:০৩
292676
মুসলমান লিখেছেন : জাঝাকাল্লাহু খাইরান।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File