এই আমাদের পুলিশ
লিখেছেন লিখেছেন মুসলমান ২০ অক্টোবর, ২০১৫, ০৪:৪৬:৪০ বিকাল
অদম্য বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের সদস্যরা নিজের আয়ের একটি অংশ পথশিশুদের কল্যাণে ব্যয় করেন। গত ১২ সেপ্টেম্বর বনশ্রীর ‘সি’ ব্লকের একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে ১০ শিশুকে উদ্ধার করে পুলিশ। সে সময় সংগঠনের ৪ সদস্য আরিফুর, জাকিয়া, ফিরোজ ও হাসিবুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে রামপুরা থানায় মানবপাচার আইনে মামলা করেন উদ্ধার হওয়া এক শিশুর চাচা। ঢাকার হাকিম আদালত ওই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চারজনকে ২ দিনের পুলিশ রিমান্ডেও পাঠায়।
১৩ সেপ্টেম্বর উদ্ধারকৃত শিশুদের মধ্যে একজনকে তার পরিবারের কাছে দেওয়া হয় আর বাকিদের গাজিপুর কিশোর-কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্রে রাখা হয়। তাদের বয়স ৯ -১৪ বছর। ওই শিশুরা গণমাধ্যমকে জানান আশ্রয় কেন্দ্রে তারা যতেœই ছিলেন। খাবার থেকে শুরু করে নিরাপত্তা সবই ভালো ছিল। ওখানে তারা সুখেই ছিল বলে জানান। তারা ৬ মাস ধরে অবস্থান করে কোন প্রকার নির্যাতনের শিকার হননি।
অদম্য বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের চার সদস্যের বিরুদ্ধে শিশু পাচারের অভিযোগের প্রমাণ না পাওয়ায় এ মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ। রামপুরা থানার ওসি মাহবুবুর রহমান জানান, অদম্য বাংলাদেশের সদস্যরা মানবপাচারের সঙ্গে জড়িত নয়। অদম্য বাংলাদেশের চার সদস্যকে আদালতে হাজির করে জামিনের আবেদন করা হলে মহানগর হাকিম মো. ইউসুফ হোসেন তা মঞ্জুর করে তাদের জামিনের আদেশ দেন।
কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পরে অদম্য বাংলাদেশের সদস্য শাকিল বলেন, আমরা রাজধানীর রামপুরার একটি ফ্ল্যাটে হতদরিদ্র ও পথশিশুদের আবাসন ও খাদ্য নিরাপত্তা দিয়ে সহায়তা করেছি। অথচ আমাদের বিরুদ্ধে পাচারের অভিযোগ এনে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে সরকার থেকে নিবন্ধন করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
তাদের গ্রেফতারের পরে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে মুক্তির দাবিতে ঝড় উঠেছিল। ফেইস বুকের পোস্টে ১৪ অক্টোবর একজন লিখেন, আরিফ কম্পিউটার সায়েন্সের প্রকৌশলী, হাসিব এসএসসি ও এইচএসসিতে এ প্লাস পেয়েছে। গ্রেফতার হয়ে কারাগারে থাকার কারণে এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি। জাকিয়া ও ফিরোজ পথ শিশুদের নিয়ে বহুদিন ধরে কাজ করছেন।
আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই হাবিবুর রহমান বলেন, “অদম্য বাংলাদেশ পাচারের উদ্দেশ্যে ওই শিশুদের আটকে রাখেনি বলে তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে।
সে সময় পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, অদম্য বাংলাদেশের এনজিও কার্যক্রম চালানোর নিবন্ধন নেই, সমাজসেবা অধিদপ্তরের কোনো সনদও তারা নেয়নি। কিন্তু গ্রেপ্তার চারজনকে নির্দোষ দাবি করে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে শুরু থেকেই আলোচনা চলতে থাকে। তাদের মুক্তির দাবিতে রাজপথে মানববন্ধনও হয়।
সম্প্রতি একজন সাংবাদিক এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ চেয়ে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেন। এরপর রামপুরা থানা পুলিশের পক্ষ থেকে সোমবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়ে গ্রেপ্তার আসামিদের অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করা হয়। এতে প্রমাণিত হয় পুলিশ যথাযথ তদন্ত না করেই তাদের আটক করেছিল।
সূত্র: ডেইলি স্টার ও বিডিনিউজ
বিষয়: বিবিধ
১০১০ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন