দেওবন্দী হানাফী পণ্ডিত, হানাফী ফিকহের প্রতিষ্ঠা ও পুনর্জাগরণ করার আন্দোলন
লিখেছেন লিখেছেন মুসলমান ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৯:৩৩:০১ সকাল
সূচনা: এটা হল ছোট্ট একটি প্রবন্ধ যেখানে উদ্ভট ও রহস্যময় হানাফী ফিকহের রূপ দেখানো হয়েছে। এখানে এমন কিছু বিষয় দেখানো হলো যেগুলো হানাফী মাযহাব অনুমোদন করে এবং কোরআন ও হাদীসের কোন দলীল ছাড়াই সেগুলোকে হালাল মনে করে। প্রবন্ধটির বিষয়বস্তু একজন হানাফী হোটেলের ওয়েটার ও একজন কাস্টমারের কথোপোথনের মাধ্যমে প্রকাশ করা হলো।
হানাফী ওয়েটার: স্বাগতম স্যার, আমরা এই হোটেল দেওবন্দীদের অত্যন্ত প্রিয় ও পছন্দনীয় আন্টি মিসেস ইন্দিরা গান্ধীর নামে খুলেছি এবং এটা পাবলিকদের সেবায় সদা নিয়োজিত রয়েছে।
কাস্টমার: কি বললেন ভাই! দেওবন্দীরা তো মুসলিম আর ইন্দিরা গান্ধীতো মুসলিমদের বন্ধু নয়, তিনি তো হিন্দু। তাহলে তার নামে হোটেল কেন?
ওয়েটার: আমাদের দেওবন্দীদের সাথে উনার (ইন্দিরা গান্ধীর) বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে, সে জন্যই দেওবন্দ মাদ্রাসার ১০০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে উনাকে দাওয়াত দেওয়া হয়েছিল এবং যথেষ্ট সম্মান, গভীর শ্রদ্ধা ও কবিতার আবৃত্তির মাধ্যমে উনাকে উষ্ণ অভিনন্দন জানানো হয়েছিল। সেজন্যই হোটেল উনার নামে নাম করণ করা হয়েছে।
কাস্টমার: আপনাদের এখানে রান্না করা মাংস হবে?
ওয়েটার: জ্বী, কেন হবে না? আমাদের এখানে রান্না করা কুকুরের, বিড়ালের, হাতির, বাঘের, চিতাবাঘের, গাঁধার, ঘোড়ার, এমনকি শুকুরের মাংসও পাবেন। ও হ্যা, আমাদের আরো আছে মাংসের কিমা, মিটবলস্, রিবস্, রোস্ট করা মাংস – যা সবসময়ের জন্যই পাওয়া যায় স্যার। আর এগুলো জবাই করার সময় বিসমিল্লাহ বলে জবাই করা হয়েছে। ফলে সেগুলো খাওয়া হালাল, কারণ আমাদের নির্ভরযোগ্য হানাফী ফিকহের কিতাবে বর্ণিত আছে যে, যে কোন প্রানীই হোক তা খাওয়া হালাল হবে যদি তা জবাই করার সময় বিসমিল্লাহ পড়া হয় এবং যখন চামড়া পাকানো (tanned) হয় এবং উক্ত প্রানী থেকে বিষ্ঠা দূর করার পর জবাই করা হয় তখন সেটা হালাল হয়ে যায়। [হিদায়া, ফাতহুল কাদীর (১/৮৩-৮৪)]
কাস্টমার: এগুলো ব্যাতীত আর কিসের রান্না আছে?
ওয়েটার: আমাদের বিশেষ এক প্রকার ছাগলের মাংসের কাবাব আছে যার মুখটা কুকুরের মতো কিন্তু বাকি শরীর ছাগলের মতো ছিল। যা মূলত, কুকুর ও ছাগলের সঙ্কর প্রানী, যেটি একই সাথে ঘাসও খায় আবার মাংসও খায়, মাঝেমাঝে এটি কুকুরের মতো ডাকে আবার কখনও ছাগলের মতো ডাকে। এবং জবাই করার সময় এর পেটে নাড়িভুঁড়ি ছিল। আর আমাদের হানাফী মাযহাব মতে এমন বৈশিষ্ট্যসম্পণ্ন ছাগলের মাংস খাওয়া হালাল, কিন্তু এর মাথা খাওয়া হারাম। যার ফলে আমরা এরূপ প্রাণীর খুবই সুস্বাদু কাবাব বানিয়েছি, বিশেষ করে হানাফী ভাইদের জন্য। আর ঘাবরাবার কিছু নেই, এগুলো আমাদের হানাফী ফিকহে সুস্পষ্টরূপে বর্ণিত আছে। [ফাতাওয়া কাযী খান (৩/৩৫৭), ফাতাওয়া আলমগীরী (৫/২৯০)]
কাস্টমার: বাদ দেন এসব, আজেবাজে কি রান্না করেছেন?
ওয়েটার: আমাদের ভুল বুঝবেন না স্যার, আমাদের রয়েছে মেষ, যেটি গাঁধা ও শুকরের দুধ খেয়ে বড় হয়েছে, এবং এছাড়া এটি কিছুদিন ধরে ঘাস খেয়েছে। আমাদের হানাফী ফাতাওয়া অনুসারে এগুলোর মাংস খাওয়াতে কোন সমস্যা নেই। [ফাতাওয়া আলমগীরী ৯৫/২৯০]। যার কারণে কিছু চমৎকার কাবাব এগুলো থেকে রান্না করা হয়েছে।
কাস্টমার: আরে ভাই যথেষ্ট হয়েছে, কিছু ভাল খাবারের কথা বলুন।
ওয়েটার: হ্যা হ্যা আছে, সুন্দর একটি খাবার। আমাদের একটি বাছুর থেকে বানানো খাবার রয়েছে যেটি গাভীর জরায়ুতেই ছিল। কসাই বিশেষ কৌশলে গাভীর প্রসবের রাস্তা দিয়ে ছুরিসহ হাত ঢুকিয়ে জবাই করেছে। যেহেতু এটা হালাল (ফাতাওয়া আলমগীরী, ৫/২৮৪), তাই এটা দিয়ে খুবই সুস্বাদু একটা ডিশ তৈরি করা হয়েছে।
কাস্টমার: দেখুন! কোন হালাল খাবার কি নাই যেগুলো আমাদের খাওয়ার জন্য দিতে পারেন?
ওয়েটার: কি যে বলেন স্যার! আমাদের সবচেয়ে কালো এবং বজ্জাত পাখি আছে যেটি কাক বলে পরিচিত। আমরা বিশেষ কায়দায় এটা রান্না করেছি। যদিও কিছু লোক এটাকে নিষিদ্ধ মনে করে, কিন্তু আমরা আমাদের বহু ফিকহের কিতাবে এবং অন্যান্য বেশ কিছু কিতাবে এটা খাওয়া হালাল পেয়েছি। এমনকি কয়েক বছর পূর্বেও আমাদের হানাফী স্কলারগণ কাক থেকে তৈরি করা এক ভোজের আয়োজন করেছিলেন এবং তারা এটা সাধারণ লোকদের মাঝেও বিতরণ করেন। [তাজকিরাতুর রাশীদ আহমাদ গাংগুহী দেওবন্দী হানাফী (২/১৭৭)]
কাস্টমার: আপনাদের কি আর কোন পাখির মাংস আছে যেগুলো আমরা খেতে পারি?
ওয়েটার: হ্যা আমাদের সুন্দরভাবে রান্না করা বাদুড় আছে। আমাদের অন্যতম ক্ল্যাসিকাল হানাফী ফিকহের বইতে বলা হয়েছে যে বাদুড় খাওয়া যেতে পারে (ফাতাওয়া আলমগীরী, ৫/২৯০)। এমন কি আমরা পেঁচার মাংসও খেতে পারি। বিশ্বাস করুন, এটা খুবই টেস্টি, এটাও আমাদের বিখ্যাত ফিকহের বইয়ে আছে। (ফাতাওয়া আলমগীরী, ৫/২৯০)
কাস্টমার: আল্লাহ এসব মাংস তোমাদের জন্যই রাখুন! আপনাদের এখানে কোন মাছ হবে?
ওয়েটার: যে সমস্ত প্রানী পানিতে যায় যেমন, কচ্ছপ, ব্যাঙ, কুমির, কাঁকড়া ইত্যাদি সবকিছুই আমাদের এখানে পাওয়া যাবে যা আমরা পাশের হোটেল থেকে অর্ডার দিয়ে নিয়ে আসবো এবং তিনি একজন শাফেয়ী মুকাল্লিদ। সেও যেমন শাফেয়ীর মুকাল্লিদ আমরাও তেমন হানাফী মুকাল্লিদ। আমরা প্ল্যান করেছি যে একটি সামাজিক সী-ফুডের ডিশ প্রস্তুত করব। সুতরাং কোন মাছ যদি কোন নাপাক পানিতে রাখা হয় এবং সেগুলোকে পুষ্ট ও বড় করা হয়, তাহলে হানাফী উলামাদের মতে সেই মাছ খাওয়া হারাম নয়। (আল-ইশবাহ ওয়ান-নাযা’ইর, পৃ: ১৫৯)। আমরা আমাদের হানাফী ভাইদের জন্য এসব স্পেশাল খাবার রান্না করেছি, কারণ হানাফী ভাইদের মধ্যে অনেক ধরণ রয়েছে। আর আমরা এগুলো বানানোর জন্য একারণেই গুরুত্ব দিয়েছি যে, পিছে না আবার এভাবে ডিশ তৈরি না করে আমরা গাইরে মুকাল্লিদ হয়ে যাই!
কাস্টমার: ভাই আপনি তো সৌহার্দ্যমূলক আচরণ করছেন না, এখন পর্যন্ত আমাকে একটা বসার জন্য সিট পর্যন্ত দেখিয়ে দেন নি।
ওয়েটার: এখানে অনেক বসার অনেক সিট ও টেবিল রয়েছে, আপনার পছন্দমত একটিতে বসে যান।
কাস্টমার: দেখেন ব্রাদার, কোথায় আমি বসব? সব চেয়ার টেবিল তো নোংরা, বাজে জিনিসে ঢেকে আছে।
ওয়েটারা: আরে! আপনি মনে হয় আহলে হাদীসদের কুমন্ত্রনা পেয়েছেন? দেখুন আমাদের ফিকহ অনুযায়ী এসব নোংরা জিনিস সকল ক্ষেত্রে হারাম বস্তু নয়।
কাস্টমার: কি বলছেন ভাই? দেখেতো মনে হচ্ছে এই চেয়ারে মহিলাদের মাসিক স্রাবের রক্ত লেগে আছে।
ওয়েটারা: জ্বী আপনি ঠিক ধরেছেন, এক হানাফী দম্পতি এখানে বসেছিলেন। তারা যখন প্রেমালাপে মত্ত ছিল এবং অতিমাত্রায় আবেগপূর্ণ হয়ে গিয়েছিল, তখন মহিলাটির লজ্জাস্থান থেকে রক্তক্ষরণ হয়েছে। আর আমাদের হানাফী ফিকহ অনুসারের এরূপ মাসিকের রক্ত নাপাক নয় বরং পবিত্র। [দুররুল মুখতার, হাশিয়াহ শামী (১/১২৩)]
কাস্টমার: কিছু মনে করবেন না, এই মহিলার মাসিকের রক্ত, এমনকি দেখতে পাচ্ছি টেবিলের উপর কয়েক ফোটা বীর্যও পরে আছে, সেগুলো নিয়ে এখন কি করা উচিত?
ওয়েটার: ঘাবড়ানোর কিছু নেই, শান্ত হোন এবং বসে পরুন। যদি এই পরিমান নাপাক বস্তু কারো বাহুতে বা কাপড়ে লেগে যায় তাহলে তিনবার তা জিহবা দিয়ে চেটে নিলেই পাক হয়ে যায়। [ফাতাওয়া আলমগীরী (১/৪৫), দুররুল মুখতার (১/২২৬)]
কাস্টমার: আমি বিস্মীত না হয়ে পারলাম না কিভাবে এই মাসিকের রক্ত ও বীর্য এখানে আসল? একি! এক লোক দেখি লোকজনের উপস্থিতেই হস্তমৈথুন করছে, ওকে হোটেল থেকে বের করে দেন?
ওয়েটার: কেন আপনি বিস্মিত হচ্ছেন? আমাদের নির্ভরশীল ও বিশ্বাসযোগ্য হানাফী ফিকহে উল্লেখ আছে, যখন মানুষের কামনা অতিমাত্রায় বেড়ে যায় এবং তাঁর যদি কোন বিবি বা দাসী না থাকে, তাহলে সে চরম উত্তেজনা থেকে মুক্তি পেতে হস্তমৈথুন করতে পারে এবং আশা করা যায় এতে তার কোন পাপ হবে না। কিন্তু এই চরম যৌন উত্তেজনার কারণে যদি তার পাপ কাজ (যেমন-যিনা) করার সম্ভাবনা দেখা দেয়, তাহলে তখন তার জন্য হস্তমৈথুন করা ওয়াজিব হয়ে যায়। [দুররুল মুখতার, হাশিয়াহ শামী (৩/১৭১)] তাহলে কেন আমরা এটা বারণ করতে যাবো যেটা করা বাধ্যতামূলক, কেন তাকে হোটেল থেকে বের করে দিব যখন সেকাজ তার জন্য ওয়াজিব হয়ে যায়? বরং ইমাম শামী বলেছেন “যদি যিনা করে ফেলার ভয় হয়, তখন সে এই কাজ (হস্তমৈথুন) করার কারণে পুরস্কৃত হবে (অর্থাৎ নেকি পাবে) [মিনহাতাল খালিক্ব, পৃ: ৬১] আর এরূপ বাধ্যতামূলক কাজের জন্যই আমাদের টেবিল ও চেয়ারে এসব নাপাক বস্তু পড়ে যায়। তবে এটা তিন বার জিহ্বা দিয়ে চেটে নিলেই পাক হয়ে যাবে।
(ফেসবুক হতে কপি পেষ্ট)
বিষয়: বিবিধ
১৫৮৬ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুন।
আমার পীরসাহেব এগুলা মানতে নিষেধ করেছেন।
আপনার জ্ঞান ও তাই। ভুলকে ভুল হিসেবে গ্রহন করতে শিখুন।
আমার পীরসাহেবর এটাই নিতি।
Click this link
আপনার জ্ঞান ও তাই। ভুলকে ভুল হিসেবে গ্রহন করতে শিখুন।
আমার পীরসাহেবর এটাই নিতি।
মন্তব্য করতে লগইন করুন