অস্ট্রেলিয়ায় ইসলাম ছড়িয়ে পড়ছে যেভাবে!
লিখেছেন লিখেছেন মুসলমান ১৮ আগস্ট, ২০১৫, ১০:১৪:১৩ সকাল
অস্ট্রেলিয়া পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট মহাদেশ। সব দিক বিবেচনায় উন্নত বিশ্বের একটি দেশ অস্ট্রেলিয়া। আশার কথা হলো, সম্প্রতি এক জরিপে জানা গেছে, অস্ট্রেলিয়ায় ধর্মবিশ্বাসীর সংখ্যা ব্যাপক হারে কমলেও প্রভাবশালী এ দেশটিতে অন্যান্য ধর্মের তুলনায় ইসলাম দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। ২০০৬ সালের আদমশুমারির পর থেকে সেখানে মুসলমানের সংখ্যা শতকরা ৪০ ভাগ বেড়েছে। যেখানে খৃস্টান ধর্মের অনুসারীর সংখ্যা কমে শতকরা ৬১ ভাগে দাঁড়িয়েছে। অস্ট্রেলিয়ায় ১৯৭৬ সালে মুসলমানের সংখ্যা ছিল মাত্র ৪৪ হাজার ৭১ জন। তবে এখন দেশটিতে মুসলমানের সংখ্যা চার লাখ ৭৬ হাজার ২৯১ জন। মুসলমানরা এখন অস্ট্রেলিয়ার মোট জনসংখ্যা শতকরা ২ দশমিক ২ ভাগ। বৃটিশরাই অস্ট্রেলিয়ার সভ্যতা গড়ে তোলেন। এর পরপরই মুসলমানরা আবাস গড়ে তোলেন।
অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম যে মুসলমানরা পদার্পণ করেন তারা ছিলেন ব্যবসায়ী। ইন্দোনেশিয়া থেকে তারা সেখানে ব্যবসার উদ্দেশে যান। তবে আফগান উটের মালিকদের প্রথম সফল কাফেলা করাচি বন্দর থেকে জাহাজে আরোহণ করে ৩১ ডিসেম্বর ১৮৬৫ খৃস্টাব্দে অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছে। সে কাফেলায় ১২৪টি উট এবং আরো কিছু পশু ছিল। সেগুলোর তত্ত্বাবধানের জন্য ৩১ জন আফগানকে অস্ট্রেলিয়ায় আনা হয়েছিল। তারা ছিলেন পাক্কা মুসলমান। তারাই মূলত অস্ট্রেলিয়ায় ইসলামের বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তারা নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও অস্ট্রেলিয়ায় প্রথমবার ছাপড়া মসজিদ নির্মাণ করেন। এই আফগানদের পর জার্মান, তুরস্ক, লেবানন, মিসর, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ভারত ও পাকিস্তান থেকে বহুসংখ্যক মুসলমান এখানে এসে অধিবাস গ্রহণ করেন। মুসলমানদের সর্বাধিক অধিবাস নিউ সাউথ ওয়েলসে, দ্বিতীয়ত ভিক্টোরিয়াতে, তৃতীয়ত কুইন্সল্যান্ডে আর চতুর্থ নম্বরে আছে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া।
অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী সিডনিতে প্রায় কয়েক লাখ মুসলমানের বসবাস। তাদের মধ্যে লেবানিজরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। লাকেম্বাতেই সিডনি তথা অস্ট্রেলিয়ার মুসলমানদের সবচেয়ে বড় মসজিদ। এই মসজিদে ঈদের সবচেয়ে বড় জামাত অনুষ্ঠিত হয়। অস্ট্রেলিয়ার কোথাও কোনো মসজিদে এমনিতে মাইকে আজান প্রচার হয় না। তবে ঈদের জামাতের সময় অনেক মসজিদে স্থান সঙ্কুলান না হলে রাস্তা বন্ধ করে জামাত আদায় করা হয়। বছরখানেক আগে পাকিস্তানি ক্রিকেটার মোহাম্মদ ইউসুফ খেলতে গিয়ে অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিম সিডনির গ্র্যান্ড মসজিদে তাবলিগ করে এসেছেন। এছাড়াও বিভিন্ন দেশ থেকে দ্বীনের দা’য়ীরা অস্ট্রেলিয়ায় ইসলামের প্রচার প্রসারের কাজে নিয়োজিত আছেন। সম্প্রতি কুরআন ছুঁয়ে শপথ নিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রথম মুসলিম সংসদ সদস্য এড হোসিচ। তিনি নির্বাচনী প্রচারণার সময় মুসলমান হওয়া তার জন্য একটি গর্বের বিষয় হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন। এসব কারণে অস্ট্রেলিয়ার যুবশ্রেণীর মধ্যে ইসলামের প্রতি ঝোঁক বাড়ছে।
বিষয়: বিবিধ
১১৭২ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ইরাক বা আফগানিস্তানে যদি আবারও যুক্তরাষ্ট্র এলাইডের হয়ে অস্ট্রেলিয়া হামলায় অংশ নেয় তারা কি এটাকে আটকানোর ব্যবস্থা করতে পারবে ?
মানুষ যত উন্নতির(!) দিকে যাচ্ছে ততই লাক্সারীবাজ হয়ে যাচ্ছে । আর লাক্সারী বহুগামিতা নিয়ে আসে , বিয়ে প্রথাকে দূরে ঠেলে দেয় । পারিবারিক প্রথাও ভেঙ্গে যায় । উন্নত বিশ্ব তথা পশ্চিমারা এটাই পছন্দ করে।
আর ইসলামে লাক্সারীর খুব একটা স্থান নেই । নেই এসব বহুগামিতার সুযোগ । পারিবারিক বন্ধন এবং একজনেই সারা জীবন তুষ্ট থাকার একটা বিষয় থাকে ।
লাক্সারীপ্রিয় পশ্চিমারা ইসলামে আসছে শুনলে মনে খটকা লাগে । তারা কি আদৈ মন থেকে এসেছে ইসলামের টানে তাদের দৈনন্দিন জীবনের জাঁক জমককে পরিহার করে , নাকি এটা সাময়িক একটা রুচি বদল ?
-কোরআনে উজাইর (আ) এর ঘটনা পড়ুন। তিনিও আপনার মতোই প্রশ্ন করেছিলো আল্লাহকে। আল্লাহ তাকে মৃত্যু দান করেন ও পরে জীবিত করে তার চোখের সামনে গলিত হাড্ডি পড়ে থাকা গাধার শরীরে মাংস লাগান।
-আল্লাহ যা ইচ্ছা তাই করেন তার সৃষ্টিতে। তবে পূবেই তিনি যা বলেছেন তা ছাড়া। যেমন: শয়তান জাহান্নামে যাবেই তা কোরআনে তিনি বলেছেন। এটা নরচর হবে না।
মন্তব্য করতে লগইন করুন