মাযহাবী ফিকহের কিতাবগুলো বড়ই রহস্যময়!
লিখেছেন লিখেছেন মুসলমান ০৭ জুলাই, ২০১৫, ১০:২৮:৫২ সকাল
কিছু কিছু বিজ্ঞ ইসলামী গবেষকের মতে বৃটিশর গোয়েন্দারা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অনেক আগে থেকেই কুরআন বিকৃত করার চেষ্টা করে সফল হয় নি (মুসলমানদের বিভক্ত করার উদ্দেশ্যে)। পরে তারা অনেক জাল হাদীস তৈরী করে বিভিন্ন হাদীস গ্রন্থের মধ্যে সুকৌশলে এড করে। । এবং বিভিন্ন ফিকহের কিতাব তৈরী অথবা বিকৃত করে ওদের অনুগত আলেম দ্বারা বা নিজেরা করে মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ বা বিভক্তি তৈরী করে। এর প্রমাণ পাওয়া যায় ফিকহের কিতাবগুলোতে কুরআন বিরোধী বিভিন্ন কথা থাকায়। তাছাড়া ফিকহের কিতাবগুলোর লেখার সঠিক ইতিহাস কি তা জানা দূরহ। সবকিছু কেমন যেন তাল গোলে!
হানাফি মাজহাবের মুল কিতাব (আল মুখতাসারুল কুদুরী)-
লেখকের নাম আবুল হাসান,পিতার নাম আহমাদ।কুদুরী নামেও পরিচিত।হারি পাতিলকে বলা হয় কুদুর। আর হারি পাতিলের ব্যবসায়ীকে বলা হয় কুদুরী।সম্ভবত গ্রন্থকার হারি পাতিলের ব্যবসায়ী ছিলেন বলে তাকে কুদুরী বলা হত।
তিনি জন্মগ্রহন করেছেন 362 হিজরীতে। মৃত্যুবরণ করেন 428 হিজরীতে।
গ্রন্থখানী তিনি নিজ হাতে লিখেন নাই।কিতাবের শুরুতে লিখিত আছে যে আবুল হাসান বলেছেন-।এতে প্রমান হয় যে,আবুল হাসান 12 হাজার মাসআলাহ বলেছেন,অন্য কেউ তা লিপিবদ্ধ করেছেন।অতঃপর ওই লিপিবদ্ধ গ্রন্থকে আল মুখতাসারুল কুদুরী নামকরন করা হয়েছে।কে লিখেছেন,তার নাম, ঠিকানা কিছুই জানা যায় না।অতএব,সংকলনকারীর নাম ও ঠিকানা বিহীন এই গ্রন্থখানাই হল হানাফি মাযহাবের নির্ভরযোগ্য কিতাব।
আবুল হাসানের মৃত্যুর দিন যদি গ্রন্থ লেখার শেষ দিন ধরা যায় তাহলে গ্রন্থ লেখা হয় 428 হিজরিতে। হানাফি মাযহাব অর্থ ইমাম আবু হানীফার মাযহাব। ইমাম আবু হানীফার জন্ম 80 হিজরীতে, মৃত্যু 150 হিজরীতে। অর্থাত ইমাম আবু হানীফার মৃত্যু (428-150)=278 বৎসর পর গ্রন্থটি সংকলিত হয়।আবুল হাসানের সাথে ইমাম আবু হানীফার কোন দিন সাক্ষাৎ হয়নি।তিনি ইমাম আবু হানীফার কথাগুলি কার নিকট পেলেন তার কোন সূত্র বর্ননা করেন নাই।অতএব, ইমাম আবু হানীফার নামে বর্নিত কথাগুলির কোন সুত্র নাই। তেমন বহু কথা আছে যা ইমাম আবু হানীফারও নয়,তাও হানাফি মাযহাব বলে পরিচয় দেয়া হয়।যেমন-আবু হানীফার মতে মাটি জাতীয় সমস্ত বস্তূ দ্বারা তায়াম্মুম জায়িয।
যেমন বালি,পাথর,চুন,সুরকী,সুরমা,হরিতাল[কুদুরী42পেজ] এ কথাটা ইমাম আবু হানীফার নামে বলা হল।কিন্তু ইমাম আবু হানীফার মৃত্যুর 212 বৎসর পর জন্ম নিয়ে কোন সূত্রে আবু হানীফার কথাটা পেলেন লেখক তা বললেন না।অতএব,কথাটা আবু হানীফার তা বিশ্বাস করার কোন প্রমান নেই।
কুদুরীতে লেখা আছে-"যদি কোন ব্যক্তির শরীরে বা কাপড়েএক দিরহাম পরিমান(এক তোলা অর্থাৎ রিয়াদ মিউজিয়ামে রক্ষিত দিরহামকে নমুনা ধরা হয়েছে) রক্ত,মলমুত্র,মদ লেগে থাকে তাহলে তা সহ নামায় পরা জায়েয হবে(কুদুরী 52পেজ)।
এ মাসাঅলাটা কে রচনা করেছেন,তার নাম নাই। অথচ এটা কুরাআনে নাই,হাদীসে নাই,কার কথা তারও নাম নাই।আর এটাই হানাফী মাযহাব।
এ হানাফী মাযহাব চালু হয়েছে ইমাম আবু হানীফার মৃত্যুর (428-150)=278 বৎসর পর।বিশ্বের সকল সহীহ হাদীস সংকলনের বহু বছর পর।
1: পৃথিবীর সর্বপ্রথম সহীহ হাদীসের সংকলন হয় মুয়াত্তা মালিক সংকলিত হয় 179 হিজরীতে। আর কুদুরী লিপিবদ্ধ 428 হিজরীতে।অতএব,কুদুরী মুয়াত্তা মালিকের (428-179)=249 বৎসর পর রচিত হয় ।
2: সহীহ আল বুখারীর (428-256)=172 বৎসর পর।
3: সহীহ মুসলিমের (428-261)=167 বৎসর পর।
4: সুনান আবু দাউদের (428-261)=167 বৎসর পর।
5: সুনান তিরমিযীর (428-279)=149 বৎসর পর।
6: সুনান ইবনু মাজার (428-273)=155 বৎসর পর।
7: সুনান নাসাঈর (428-303)=125 বৎসর পর
অর্থাৎ সিহাহ সিত্তার সংকলনের বহু বছর পর আল মুখতাসারুল কুদুরী হানাফি মাযহাবের কিতাব লিপিবদ্ধ হয়।এই কিতাবে সিহাহ সিত্তার কোন বরাত নেই।
অতএব,হানাফী মাযহাবের সাথে হাদীসেরও কোন সম্পর্ক নাই,তেমন আবু হানীফারও কোন সম্পর্ক নাই। আবু হানীফার নামে সম্পুর্ন এ একটি বানানো মাযহাব।
কেউ বলতে পারেন সিহাহ সিত্তার পুর্বে যে সকল হাদীসের সংকলন ছিল আবুল হাসান কুদুরী তার বরাতে মাসআলাহ লিখেছেন অথবা ইমাম আবু হানীফা তার বরাতে মাসাঅলাহ আবিস্কার করেছেন। তার জবাবে বলব, তাহলে ওই সকল হাদীসের সংকলনের নাম ঠিকানা বলুন পরীক্ষা করে দেখা যাক।আমরাতো কিতাবে কোন হাদীসের সংকলনের নাম ঠিকানা পাই না। এসব বিষয় বিবেচনা ও গবেষণা করে ইসলামী গবেষকগণ এই ফিকহের কিতাবগুলোকে ইসলাম বিদ্বেষী বৃটিশদের ষড়যন্ত্র বলে ধারণা করছেন (মুসলিমদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে)।
(মুসলমানদের ফিকহ শাস্ত্র লিখিত হওয়া উচিত কুরআন ও সুন্নাহর ভিত্তিতে গবেষণা করে। আর এভাবে কুরআন ও সুন্নাহ বিরুধী কথা লিখে মুসলিমদের বিভক্ত করা ছাড়া আর কোন ফায়দা হবে না)
বিষয়: বিবিধ
৩৪১২ বার পঠিত, ২২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অর্থাৎ আপনি বলতে চাচ্ছেন, হাদীস সংকলন (হাদিস সংগ্রহ- যাচাই বাছাই- লিপিবদ্ধকরণ, অন্তত আপনার যুক্তি থেকেই তাই বুঝতে পারি) -এর পূর্বে মাসআলা ছিলো না, ফাতওয়াও ছিলো না!
সব বাদ দেই, স্বয়ং ইমাম মালেক (রহি.) কি মুআত্তা সংকলনের পূর্বে মাসআলা বয়ান করেননি?
মুজতাহিদ সাহাবারা (রাযি.) যে সকল মাসআলা বর্ণনা করতে, মুজতাহিদ তাবেঈগণ (রহি.) যে সকল মাসআলা বর্ণনা করতেন, তা কোন সংকলন দেখে এবং রেফারেন্স দিয়ে করতেন?
আর যদি প্রতিটি মাসআলার সপক্ষে স্পষ্ট হাদীস থাকা জরুরী হয়, তাহলে আপনার নিকট জানতে চাইবো, রোযা অবস্থায় ইনজেকশন নেওয়া জায়েয কিনা? (আপনি যে হাদীসসহ উত্তর দিবেন এতে আমার কোন সন্দেহ নেই।)
আরো কিছু প্রশ্ন ও ফ্যাক্ট ছিলো, কিন্তু নামাযের সময় আসন্ন দেখে সুযোগ পেলাম না, পরে এক সময় ইনশাআল্লাহ।
আপনি যে যুক্তি দিয়েছেন, সেগুলোকে কোট করেই তো প্রশ্নগুলো করা, তাই না?
ফাতওয়া কুরআন সুন্নাহ অনুযায়ী অবশ্যই হতে হবে, কিন্তু মাসআলা বর্ণনার সাথে সাথে সেটা কোন আয়াত অথবা হাদীস হতে নিসৃত তা বলা কি বাধ্যতামূলক? সাহাবায়ে কিরামদের সময় থেকেই কি এটা বাধ্যতামূলক সাব্যস্ত হয়েছে?
দ্বিতীয়ত, কোন একটি হাদীস যদি কোন এক বা দুই বা পাঁচ মুহাদ্দিসের কাছে সহীহ হয়ে, তাহলে কি সকলের কাছেই তা সহীহ হয়ে যেতে হবে? তাহলে বিরোধপুর্ণ হাদীস দিয়ে কি মাসআলা দেয়া যাবে না? যদি না হয়, তাহলে বলবেন কি এমন কয়টি হাদীস আছে যা নিয়ে কোন মতভেদ নেই?
এবং একই প্রশ্ন আবার করবো, সব মাসআলাই কি সরাসরি কুরআন বা সুন্নাহ হতে বের করা যায় কিনা?
এবার আশা করি আপনিও কুরআন-সুন্নাহর আলোকে উত্তর দিবেন।
আমি ওই মাযহাবের সে অই মাযহাবের এইগুলি জিনিসটা কি?
আমি মহানবী (সাঃ) এর উম্মাত তার বলে যাওয়া পথেই চলবো ইনসাআল্লাহ। তার দেখানো পথ সহীহ ৬ টি গ্রন্থে আছে সো কোন মাযহাবের দারস্থ কেন মানুষ হয়.?
তার দেখানো পথ সহীহ ৬ টি গ্রন্থে আছে
তাহলে নিশ্চয়ই রাসূল সাঃ হতেই উল্লেখ আছে যে এই ৬টি গ্রন্থ সহীহ, তাই না? অন্য কারো কথা মানা তো তাকলীদ, মাযহাব হয়ে যাবে। তো, রাসূলের (সাঃ) কোন হাদীস থেকে এটি এসেছে?
আপনি নিশ্চয়ই সবগুলো পড়েছেন। তাহলে সেই কিতাবগুলোর হাওয়ালা দিয়ে একটু বলবেন কি, কোন ব্যক্তি যদি বিমানে থাকা কালে এমন অবস্থা হয় যে সলাতের সময় হয়ে গেছে অথচ নিকটতম বিমানবন্দরে পৌছানোর আগেই ওয়াক্ত শেষ হয়ে যাবে (যেমন মাগরিব), এমতাবস্থায় সে কি করবে?
কুরআন হাদীস ও মাযহাব সবই মানতে হবে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন