দেশের সম্মানিত অভিভাবকদের কাছে এক যুবকের খোলা চিঠি
লিখেছেন লিখেছেন সফেদক্যানভাস ২৫ আগস্ট, ২০১৫, ০৫:৩৯:০১ বিকাল
হ্যা, আমি জানি আমি কি চাই তাই আশাহতো হই না কখনো। যদিও অনেকের কাছে আমার চাওয়াটা পাগলামী আর আবেগে ভরপুর। হবে হয়তো, কিন্তু আমি বিশ্বাস করি না।
সমাজকে তো আর একদিনে বদলে দেয়া যায় না আর দেওয়াও ঠিক নয়। অভিভাবক বৃন্দ বেয়াদবি মাফ করবেন। এই আমি ২৬ বছরের এক যুবক হওয়া সত্তেও আমার বিয়ে করতে চাওয়াটা ভিষন অপরাধ। কেনো জানেন..?? আমি আমার উত্তমার্ধকে পার্সোনায় নিতে পারবো না বা ইউনিলিভারের প্রসাধনী দিয়ে তার দেহো তত্ব সাঙ্গো করতে পারবো না বা বসুন্ধরা শপিং মলে গিয়ে রোজগারের সবটুকু লুজ মোশোনে শেষ করতে পারবো না এই কারনে। এটি আমার কথা নয়; এটি এই সমাজের কথা। আমার-আপনার মত সমাজের ভদ্রলোকদের কথা। তবে এই আমিই যদি ২-৫ টা প্রেম করি, গার্ল ফ্রেন্ড নিয়ে পার্কে, চিপায়-চাপায় ডেটিং করি অথবা মাঝে মধ্যে আবাসিক হোটেল বা বন্ধুর মেসে নিয়ে একটু ফুর্তি করি তখন এই একই সমাজ কি বলবে জানেন..?? একটু দায় সারা গোছের কিছু নৈতিকতার বুলি আওড়াবে। সমাজ রসাতলে গেলো বলে কিছুক্ষণ চিল্লাপাল্লা করবে। অতঃপর কেউ কেই বলবে, এটা কোনো ব্যাপার না; এই বয়সে একটু-আধটু করেই থাকে। আমার বন্ধুদের কাছে আমি হবো স্মার্ট বয়। বাহ! কি চমৎকার তাই না..!!
ব্যাপারটা খুব মজার যে আমি বেকার এজন্য সমাজের কাছে আমার বিয়ে করা হারাম কিন্তু প্রেম করা যায়েজ। বেকার অবস্থায় টি-শার্ট বদলানোর মতো গার্লফ্রেন্ড বদলানো যাবে, যেখানে-সেখানে ডেটিং করা যাবে, সারা দিন ক্যাম্পাসে আড্ডা দেওয়া যাবে; সারা রাত মোবাইল ফোনে লাইলি-মজনু হয়ে কথা বলা যাবে; সিনেমা হলে যে দিকে একটু বেশি অন্ধকার সেখানে বসে রোমান্স করা যাবে, পরীক্ষার রাতেও বসে বসে ফেসবুকে চ্যাট করা যাবে....আরও যা যা আছ সবই করা যাবে। শুধু বিয়েটা করা যাবে না। কারণ আমি বেকার। তখন ভরোণ-পোষোনের প্রশ্ন আসে। অথচ বেকার অবস্থায় ডজন ডজন প্রেম করলেও অভিভাবকরা দিব্বি খরচ দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ঐ একই কাজ গুলো যদি বিয়ে করে করতে চাই তখনোই বাধে যত বিপত্তি............!!!
ভুল তত্বে কেটে গেলো ২৫টি বছর। জীবনের সবচেয় গুরুত্বপূর্ণ সময় ছিলো এটি। কিন্তু রাষ্ট্রীয় নিয়মের বেড়াজালে পড়ে শুধু গ্রাজুয়েশন শেষ করতেই চলে যাবে জীবনের ২৭-২৮ টি বসন্ত। এর পর আসবে গ্রীষ্মের ঝড়ো হাওয়া, শীতের প্রকট। কিন্তু তখন কি পারবো ২৫ এর সেই টকবগে যুবকের মত সবকিছু মোকাবেলা করতে..?? প্রতিষ্ঠিত নামক শোনার হরিণ যখন আমার হাতে ধরা দেবে তখন তো আমি ৩৫ কি ৩৬ বছর। জীবনি শক্তি কি আগের মত করে কাজ করবে..?? তবে তাতে অভিভাবকদের কোনো আপত্তি নেই। আমিতো এখন স্ট্যাব্লিশ। এটিইতো আসোল কথা। এখনো আমার অধিকার আছে প্রেয়সীকে ঘরে তুলবার। যদিও সবাই জানি আমার প্রেয়োসী কিছু দিন আগেও আর কত জনের গার্লফ্রেন্ড ছিলো। কত যুবকের রাতের ঘুম কেড়ে নেবার কারন ছিলো। থাক ওরা না ঘুমিয়ে; তাতে আমার কি..?? আমিতো এখন স্ট্যাব্লিশ। এখন আমার একার সমস্ত অধিকার তার দেহের ইপর উপর....।। হামলে পড়তে নিষেধ করে কার এত বড় বুকের পাটা.? আমার টাকা আছে; আমিতো স্ট্যাব্লিশ।
তাহলে সমাজ, সভ্যতা, রাষ্ট্র যে দূরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত সেটি সেরে তুলবে কে..?? যে ছিলো ২৫ বছরের যুবক সেতো নিজেই জরাগ্রোস্থ।
৬৭টি বছরের গড় আয়ু না কি আমাদের। সংগ্রাম করবার মত বাকি থাকলো গুটি কয়েক বছর। তার পর..?? মাঝে মাঝে মনে হয় অপ্রত্যাশিত কিছু করে ফেলি। কিন্ত থেমে যায় এই ভেবে যে আল্লাহর কাছ আমি কি জবাব দেবো..??
কি বা করার আছে আমার..?? দোষ আসলে যত আমার ঐ বাধ ভাঙ্গা যৌবনের।
যাহোক আবারও ক্ষমা চাচ্ছি অভিভাবক বৃন্দ...!! মাফ করবেন...!!
বিষয়: বিবিধ
১৩১৪ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন