জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ শিক্ষা যখন কফিনে শিক্ষার্থীরা তখন হিঁজড়া নাচে
লিখেছেন লিখেছেন সফেদক্যানভাস ১৭ জুন, ২০১৫, ১০:৩১:১১ সকাল
আমারতো মনে হয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত শিক্ষার্থীরা হিঁজড়া হয়ে গেছে। আমার মুখ থেকে এমন কথা বলা যে খুবই ধৃষ্টতাপূর্ণ তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু না বলে আর থাকতে পারলাম না। দেশের শীর্ষস্থানীয় পত্র-পত্রিকাসহ সমস্থ গণমাধ্যমে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বরাত দিয়ে খবর প্রকাশিত হয়েছে- জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে এ বছর থেকে আর কোনো ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে না। অথচ এ ব্যাপারে মতামত দিয়ে একজন ছাত্রকে দেখলাম না কিছু লিখতে। দুই-চারজনকে দেখলাম বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত নিউজটা শেয়ার করেছ আর কিছু লোক বলদের মত কিছু না বুঝেই সমানে লাইক দিয়ে যাচ্ছে।
আরে ভাই আমার প্রশ্ন হচ্ছে- জাতীয় বিশ্ব বিদ্যালয়ের ইতিহাসে এমন একটি কলঙ্কজনক ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে আর আপনাদের কোনো মাথা ব্যাথা নেই..?? মাথা থাকলেতো ব্যাথা করবে। মাথাতো আগেই খেয়ে ফেলেছে। ছেলে-মেয়েদের মাথা খেয়েছে ফেসবুক, সারারাত জেগে গার্লফ্রেন্ড-বয়ফ্রেন্ডের সাথে কথা বলে সারাদিন ঘুমানো, কিছু তথাকথিত এলিট শ্রেণির ছেলে-মেয়েদের সিগারেট-গাজা-ইয়াবা থেকে শুরু করে ভয়াবহ মাদকের নেশা। সেই সাথে যোগ হয়েছে ইন্টারনেট ও স্মার্ট ফোনের কল্যাণে উন্মত্ত পর্নগ্রাফীর নেশা আর ভারতীয় চ্যানেলের কল্যাণে অসীম পর্বের সিরিয়াল নাটক। বাহ! আর কি লাগে একটি জাতির মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দেওয়ার জন্য। কি অসাধারণ প্লান? ছাত্রসমাজকে নেশার ঘোরে রেখে বেজন্মাগুলো গণতন্ত্রের নামে রাজতন্ত্রের ধ্বজাধারীদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বিশ্ব বিদ্যালয় যার চলমান শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২২ থেকে ২৫ লক্ষ। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এই বিশাল সংখ্যক শিক্ষার্থীর জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলে চলেছে শিক্ষক নামধারী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কিছু কমিশনভোগী দালাল চক্র। দিনের পর দিন অনিয়ম, দুর্নীতি আর অবহেলার কারনে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থরা হয়ে পড়েয়ে পিতামাতাহীন যারজ সন্তানের মত। নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য এরা লক্ষ লক্ষ সম্ভাবনাময় শিক্ষার্থীর জীবন নিয়ে জুঁয়া খেলতেও দ্বিধাবোধ করে না।
আমাকে একজন বলুনতো, পৃথিবীর সমস্থ বিশ্ববিদ্যালয়ে যেখানে পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তি নেয়া হয় সেখানে এটি কেমন যুক্তি যে পরীক্ষা নিলে নাকি সময় নষ্ট হয়। তাই পরীক্ষা ছাড়াই ভর্তি করা হবে। আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি বাংলাদেশের সমস্ত শিক্ষর্থীদের কাছ থেকে যদি এ ব্যাপারে ভোট নেয়া হয় একটি ভোটও তাদের পক্ষে পড়বে না।
শুধুমাত্র জিপিএ দিয়ে যদি একজন শিক্ষর্থীর যোগ্যতা পরিমাপ করা হয় তাহলে এটি হবে উচ্চ শিক্ষার কফিনে শেষ পেরেক ঠুঁকা। কেননা বাংলাদেশের মানুষ জানে জিপিএ পাঁচ শিক্ষর্থীরা কিভাবে পায়। তাছাড়া সুষ্ঠ কম্পিটিশন না হলে সেখানে দুর্নীতি হতে যেমন বাধ্য তেমনই অযোগ্যদের ভিড়ে যোগ্য শিক্ষার্থীরাও কোনো সুযোগ পাবে না। সত্য কথা বলতে এটি বোঝার জন্য বড় কোনো বিশেষজ্ঞ হওয়া লাগে না। সবাই বোঝে।
যাহোক, জানি আমার এ লেখায় হয়তো ঐ ডাকাতদের নেয়া সিদ্ধান্ত পাল্টেও যাবে না বা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যানরত ২৩ লাখ শিক্ষার্থীর মাঝে বিপ্লবি চেতনাও ফিরে আসবে না। যা দিয়ে তারা সমস্ত শৃঙ্খল ভেঙ্গে বেরিয়ে আসবে। তাছাড়া দলবাজ সন্ত্রাসের মদদপুষ্ট ছাত্রনেতারাতো আছেই। তবুও লিখলাম এবং আগেও লিখেছি শুধুমাত্র গণমাধ্যমের একজন নগন্য কর্মী হিসেবে নিজের দ্বায়বদ্ধতা থেকে।
বিষয়: বিবিধ
৮৯১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন