এসো হাদীস শিখি ২
লিখেছেন লিখেছেন জ্ঞানের কথা ১৩ আগস্ট, ২০১৫, ১০:১৬:১৭ সকাল
বন্ধুগন! আপনারা এর আগে জেনেছেন, সহীহ হাদীস বলতে কি বুঝায় ও এর শর্ত কি ? আজকে আমরা "যঈফ-দূর্বল" ও "মা'উযু-জাল'" হাদীস সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করবো ইনশাআল্লাহ।
যঈফ (ضعيف :( ضعيف এর আভিধানিক অর্থ দুর্বল। ‘যে হাদীসের মধ্যে হাসান হাদীসের শর্তগুলি অবিদ্যমান দেখা যায়, মুহাদ্দিসগণের পরিভাষায় তাকে যঈফ হাদীস বলে।
‘যঈফ’ এর পারিভাষিক সংজ্ঞায় বলা যায় যে, “যেসব হাদীস হাসান হাদীসের স্তর থেকে নিচু তাই য‘ঈফ বা দুর্বল হাদীস, তার অনেক প্রকার রয়েছে”। অর্থাৎ -
১- রাবীর বিশ্বস্ততার ঘাটতি বা
২- তাঁর বিশুদ্ধ হাদীস বর্ণনা বা স্মৃতির ঘাটতি, বা
৩- সনদের মধ্যে কোন একজন রাবী তাঁর ঊর্ধ্বতন রাবী থেকে সরাসরি ও স্বকর্ণে শোনেননি বলে প্রমানিত হওয়া বা দৃঢ় সন্দেহ হওয়া, বা
৪- অন্যান্য প্রমানিত হাদীসের সাথে সাংঘর্ষিক হওয়া, অথবা
৫- সূক্ষ্ম কোন সনদগত বা অর্থগত ত্রুটি থাকা ইত্যাদি যে কোন একটি বিষয় কোন হাদীসের মধ্যে থাকলে হাদিসটি যঈফ বলে গণ্য। কোন হাদীসকে ‘যঈফ’ বলে গণ্য করার অর্থ হল, হাদীসটি রাসুল (সাঃ) এর কথা নয় বলেই প্রতীয়মান হয়।
সুতরাং হাদীসের দ্বারা কোন রাবী হাসান হাদীস – এর রাবীর গুণসম্পন্ন নয় সে হাদীসকে হাদীসে যঈফ বলে। (রাবীর যু’ফ বা দুর্বলতার কারণেই হাদীসটিকে যঈফ বলা হয়)।
যঈফ হাদীস রসুল (সা) থেকে প্রমানিত নয়। তাই এর দারা আকয়েদ, মাসায়েল, ফাজায়েল কোন কিছুই গ্রহনীয় নয়। যদিও কিছু আলেম গ্রহণ করে থাকে তবে তা উচিত নয়। এ সম্মন্ধে বিস্তারিত জ্ঞান অর্জনের ইচ্ছুককে সহীহ আল মুসলিমের মুকাদ্দামা পড়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।
মাউযু (موضوع) হাদীস বা বানোয়াট বা জাল হাদীসঃ মূলতঃ ‘মাউজু’ (موضوع) শব্দটি আরবী। ‘ওয়ায’ শব্দ হতে গঠিত। ‘ওয়াযা’ শব্দটি অনেক অর্থে ব্যবহৃত হয়। موضوع কর্মবাচক বিশেষ্য وَضْع ক্রিয়া বিশেষ্য থেকে উদ্গত, অর্থ বানোয়াট, তৈরিকৃত ও নির্মিত। ‘মাওদু’র আরেক অর্থ الشيء المحطوط অর্থাৎ জমিনে পতিত বস্তু।
যেমনঃ কোন বস্তুকে কোন স্থানে রাখা, স্থাপন করা, কারো মর্যাদাকে খাট করা, নির্ধারণ করা, নতুন করে কোন জিনিস বানানো, মিথ্যা উপাখ্যান করা ইত্যাদি। তবে হাদীস শাস্ত্রে ‘ওয়াযা’ বলা হয়, যা রাসূল (সাঃ) বলেননি, করেননি এবং সমর্থনও দেননি এমন কথা বা কাজকে রাসূল (সাঃ) এর দিকে মিথ্যা সম্বন্ধ করা।
অতএব, যে হাদীসের রাবী জীবনে কখনও ইচ্ছাকৃত ভাবে রাসুল (সাঃ) এর নামে বানোয়াট কথা সমাজে প্রচার করেছে অথবা, ইচ্ছাকৃত ভাবে হাদীসের সুত্র (সনদ) বা মূল বাক্যের মধ্যে কমবেশি করেছে বলে প্রমানিত হয়েছে, তার বর্ণিত হাদিসকে বানোয়াট বা মাউযু হাদীস বলে। এরূপ ব্যক্তির বর্ণিত হাদীস গ্রহণযোগ্য নয়।
রাসূল (সাঃ) আরও ইরশাদ করেছেনঃ
” مَنْ كَذَبَ عَلَيَّ مُتَعَمِّدًا، فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ “
“যে আমার উপর মিথ্যা বলল, সে যেন তার ঠিকানা জাহান্নাম বানিয়ে নেয়”। [তথ্যসূত্রঃ মুসলিম। আন-নুযহাহ্ঃ (পৃ.১২১-১২২)]
কিভাবে হাদীস "যঈফ-জাল" হয় সনদ বর্ননা করে জারাহ ও তাদিল দিয়ে আমরা তা পরবর্তী পোস্টে দেখবো ইনশাআল্লাহ।
বিষয়: বিবিধ
১৬৭৭ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
-ভাই এখন ভালো লাগছে হয়তো কিছুদিনে পরে ভালো নাও লাগতে পারে।
-আপনার কাছে প্রশ্ন: রাবী কাকে বলে?
মন্তব্য করতে লগইন করুন