তাকলিদ করা কি শির্ক!?

লিখেছেন লিখেছেন জ্ঞানের কথা ২১ জুলাই, ২০১৫, ০৯:৪০:৫৭ সকাল



তাকলিদ করা কি শির্ক?

তাকলিদ করা শির্ক হতেও পারে নাও হতে পারে। জদি কোন লোক শরীয়তের বিপরিতে কোন আলেমের কথাকে মানে তাহলে কোরআনের আয়াত اتَّخَذُواْ أَحْبَارَهُمْ وَرُهْبَانَهُمْ أَرْبَابًا مِّن دُونِ اللّهِ আল্লাহর পরিবর্তে তারা তাদের আলেম ও রাহেরবদের কে নিজের রব বানিয়ে নিয়েছে। (সুরা তওবাহ/৩১) এই আয়াত দারা ঐ লোক আলেমকে নিজের রব বানিয়েছে, আর কাউকে নিজের রব বানানো “শির্ক”

কোরআন ও সুন্নাহর মোকাবেলায় কোন আলেমের কথা মানা যেখানে স্পষ্ট ভাবে তা বিপরিত কোরআন ও সুন্নার, তার পরেও আলেমের কথাকে মানে ইলম থাকার পরেও তাহলে এটা শির্ক

কিন্তু এমন কোন লোক জার কিছুই ইলম নেই। আর সে কোন আলেম বা কোন লোকের কাছে জিজ্ঞাস করে এবং সেই আলেম দলিল ছাড়াই বলে যে এরকম করো এবং তার মাঝে ত্বাহক্কীক করার ক্ষমতাও নেই, এভাবে সে কোন আলেমের কাছে মাসালা জিজ্ঞাসা করে নিলে তবে তা শির্ক নয়।

হ্যাঁ দলিল পাবার পরেও জদি সে তার কথাকে মানে তবে ভয়ংকর বিষয় হচ্ছে সে কুফরা বা শির্কের মাঝে পড়ে যেতে পারে। অতএব এই পার্থক্য খেয়াল রাখাটি জরুরী।

কোন লোক ইলম থাকা সত্তেও কোন আলেমের কাথাকে দলিল হিসেবে মানে তাহলে তা শির্ক হয়ে যাবে।

কেনা লোক যেমন, এখনি মুসলমান হয়েছে, আর নামাজের সময় হয়েছে, কেমন করে নামাজ পড়বে! আপনি কি বলবেন? চলো বুখারী খুলি!?

আপনি বলবেন, যেভাবে আমি পড়ি সেভাবে পড়ো। সে আপনার কথা অনুসরণ করেই তো চলতেছে! আপনি কি দলিল বলতেছেন যে সাজদাতে গিয়ে সাজদার এই হাদীস আছে! রুকুতে গিয়ে বলতেছেন রুকুর এই হাদীস আছে! আপনি এভাবে বলতে পারবেন না। আপনাকে বলতে হবে, হাতে সময় কম আমি যেভাবে করি সেভাবে করুন পরে দেখাবো বিস্তারিত কি আছে।

তো সময় সল্পতা ও দ্রুততার জন্য কোন লোককে কোন আলিম বা যেকারোই কথা মানতে হয়। এটা এরকম যে, কোন লোক ওযুর জন্য জদি পানি না পায় তাহলে সে তায়াম্মুম করতে পারে। কিন্তু পানি এলে তায়াম্মুম কিহবে? থাকবে কি? ধরুন আপনি তায়াম্মুম করেছেন এখন পনি মিলেছে তাহলে কি তায়াম্মুম থাকবে! থাকেবে না।

সেজন্য আপনার সামনে জদি নবী(সা) এর দলিল এসে যায় আর আলিমের কথা জদি সেটার সাথে সাংর্ঘষিক হয় তাহলে আলেমের কাথা বাতিল হয়ে যাবে। এই কথা খেয়াল রাখতে হবে।

তো তাকলিদ যে আছে সেটা তায়াম্মুমের মতো আর আমরা এটাকে তাকলিদ ও বলবো না কেন? কারন কিতাবে ও সুন্নাতে তাকলিদ হিসেবে কোন শব্দ নেই। এটাকে ইত্তেবা বলা যাবে কেননা আল্লাহ তাআলা বলেন: فَاسْأَلُواْ أَهْلَ الذِّكْرِ إِن كُنتُمْ لاَ تَعْلَمُونَ (সুরা আম্বিয়া/৭) জ্ঞানীদের কাছে জিজ্ঞাসা করো যদি তুমি না জানো। তো আলেমের কাছে জিজ্ঞাস করা হারাম নয়।

যার দলিল সহ সেখার সামর্থ আছে সে দলিল সহ শিখবে আর যার দলিল বোঝার ক্ষমতা নেই সে যদি দলিল ছাড়াই আলেমের কথা মানে তবে শর্ত হচ্ছে কোরআন ও সুন্নার বিপরীত না হয় তাহলে সেটাতে কোন ক্ষতি নেই।

অনেক আলেম বলে যে এটাতে ইজমা আছে, খেয়াল রাখবেন, এর বিপরিতে ওলামারা জবাব নকল করে ইজমা করেছেন যে, যদি কোন লোক বলে যে, কোন একজন আলেম বা ইমামের কথা মানা ওয়াজিব! তাহলে এই কথাকে না মানাই ওয়াজিব!

কোন লোক জদি বলে যে ইমাম আবু হানিফা বা চার ইমামের যে কোন একজনের তাকলিদ করা ওয়াজিব! তাহলে এরকম বলা হারাম!

কেন! কারন না এর দলিল আছে কিতাবে, বা চারটি শরিয়তের উৎস কোরআন, হাদীস, ইজমা, কিয়াস! কোথও এই কথা বলা যে কোন একজন ইমামের তাকলিদ করা ওয়াজিব! এই কথা না কোরআনে আছে না হাদীসে আছে না ইজমাতে আছে না কিয়াসসে ও আসে যে একজনেরই কথা মানুন! তো এটা কোথাও মেলে না এটি চার টি শরিয়তের উৎস কোরআন, হাদীস, ইজমা, কিয়াস কোথাও নেই।

তাই তাকলিদ ক্ষেত্র বিশেষে "শির্ক" তায়াম্মুমের মতো, পনি পেলে তায়াম্মুম শেষ ঠিক তেমনি দলিল পেলে তাকলিদ শেষ

আল্লাহ আমাদেরকে বোঝার তাওফিক দিন আমীন।

বিষয়: বিবিধ

৩০৪০ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

330939
২১ জুলাই ২০১৫ সকাল ১০:২৪
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনার লিখাটি খুবই গুরুত্বপূর্ন সে জন্য অনেক ধন্যবাদ এবং আপনার লিখার বিষয় হচ্ছে 'তাকলিদ'। কিন্তু পুরো লিখা পড়ে পাঠকের বুঝতে সমস্যা হবে 'তাকলিদ' জিনিইটাই বা কি। সে জন্য লেখার শুরুতে অন্তত আরেকটি লাইন যোগ করে তাকলিদ কি? আরবী পরিভাষা ও বিশুদ্ধ বাংলায় তাকলিদ বলতে কি বুঝায়।

আপনার সুন্দর পোষ্টের জন্য আবারো ধন্যবাদ।
২১ জুলাই ২০১৫ সকাল ১১:১১
273132
জ্ঞানের কথা লিখেছেন : ভাই, আপনার উপদেশের জন্য আমি সত্যি কৃতঞ্জ। বর্তমান সময়ে সবাই জানে যে তাকলিদ মানে অনুসরণ। তবে অন্ধ তাকলিদ বা অন্ধ অনুসরণ নিষিদ্ধ। তাই আর বেশি কিছু লিখিনি। সরাসরি মূল বিষয়ে চলে গিয়েছি।

আপনার উপদেশ আমার স্বরণ থাকবে। জাজাকাল্লাহু খায়র।
২১ জুলাই ২০১৫ দুপুর ১২:২৮
273160
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। তাকলিদ শব্দের সাথে আমি ছোটকাল থেকেই পরিচিত। আরব দেশে থাকার কারণে তার ব্যাবহার সম্পর্কেও আরো বিস্তারিত শিখেছি। আমাদের ছোটকালে নিত্য ব্যবহার্য হিসেবে বহু আরবী শব্দ শুনতাম, এখন সে সবের বালাই নেই। আমি কথাটি লিখেছি সাধারণ পাঠক যারা আছে তাদের জন্য। বতর্মানে আরবী শিক্ষা প্রায় উঠেই যাচ্ছে। এই সমস্ত শব্দগুলোর সাথে সাধারণ শিক্ষার্থীতের পরিচয় খুব কমই ঘটে। আপনাকে অাবারো ধন্যবাদ, ভাল থাকুন।
২১ জুলাই ২০১৫ দুপুর ০২:০৯
273182
জ্ঞানের কথা লিখেছেন : জি ভাই। উত্তম উপদেশের জন্য জাজাকাল্লাহু খায়র।
330983
২১ জুলাই ২০১৫ দুপুর ০২:৪৬
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনার লিখার বিষয় হচ্ছে 'তাকলিদ'। .. সে জন্য লেখার শুরুতে অন্তত আরেকটি লাইন যোগ করে তাকলিদ কি? আরবী পরিভাষা ও বিশুদ্ধ বাংলায় তাকলিদ বলতে কি বুঝায়।
সহমত পোষণ করছি। আমি যা জানি তা হচ্ছে তাকলিদ মানে অন্ধ অনুসরণ।
অনেক ধন্যবাদ
২১ জুলাই ২০১৫ বিকাল ০৪:১৫
273199
জ্ঞানের কথা লিখেছেন : তাকলিদ মানে অনুসরণ আর তাকলিদে শাকশি মানে অন্ধ অনুসরণ।

উপরে তো স্পষ্ট করে দিয়েছি ভাই। আর একবার ভালো করে পড়ুন। তবে টিপু ভাইয়ের উপদেশ ভালো লেগেছে।
330985
২১ জুলাই ২০১৫ দুপুর ০৩:০১
নেহায়েৎ লিখেছেন : জাঝাকাল্লাহু খাইরান। সুন্দর লেখা।
২১ জুলাই ২০১৫ বিকাল ০৪:১৬
273200
জ্ঞানের কথা লিখেছেন : ওয়া আইয়্যাক। সুন্দর দোআর জন্য জাজাকাল্লাহ।
331020
২১ জুলাই ২০১৫ রাত ০৮:০২
শেখের পোলা লিখেছেন : আরও একটু বিস্তারিত হলে আরও পরিষ্কার হত৷ ধন্যবাদ৷
২১ জুলাই ২০১৫ রাত ০৯:০৪
273252
জ্ঞানের কথা লিখেছেন : জি ইনশা আল্লাহ চেষ্টা করবো ভাই।
জাজাকাল্লাহু খায়র।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File