যুদ্ধ্যের নীতিমালা

লিখেছেন লিখেছেন জ্ঞানের কথা ১৪ জুলাই, ২০১৫, ১০:৩৩:৫৭ সকাল



ইতিহাস পড়লে দেখা যায়, যুদ্ধ মানব পদার্পনের শুরু থেকেই চলে আসছে কোন না কোন কারনে। ঠুনক বিষয়েও যুদ্ধ শুরু হয়ে যেত বলেও ইতিহাসে প্রমান পাওয়া যায়। মানুষ যুদ্ধ করে নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য। আর এজন্য তারা হয়ে যায় পাষন্ড।

তবে ইসলামে যুদ্ধ করা হয় আল্লহার সন্তুষ্টির জন্য। অন্য কোন উদ্দেশ্য নিয়ে ইসলামে যুদ্ধ করলে সে যুদ্ধ সাধারন যুদ্ধ হিসেবে স্বীকৃতি পায়। সেটা কে আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ বলা যায় না

যুদ্ধে ভয়াবহত অনেক বেশি। কেননা কোন দল ই চায়না হারতে। ফলে সবাই উন্মত্ত নেষায় থাকে কিভবে জিতে বীর বেশে ফেরা যায়। ফলে অমানবিক কাজ করতেও দ্বীধাবোধ করে না।

তবে ইসলামে এরকম টি নয়। ইসলাম যুদ্ধ্যের নীতিমালা অনুস্বরন করেই যুদ্ধ করতে আদেশ দেয়। আর সেই নীতিমালার বাহিরে কোন যুদ্ধই ইসলামের সাথে সম্পর্ক নেই।

রসুল (সা) যুদ্ধ্যের নীতিমালা ঠিক করে দিয়ে গেছেন অনেক আগেই। আসুন জেনে নেই সেই নীতিমালা গুলো কিকি?

রাসুলুল্লাহ (সা) যখন কোন সেনাবাহিনী কিংবা সেনাদলের উপর আমীর নিযুক্ত করতেন তখন বিশেষ করে তাকে আল্লাহ ভীতি অবলম্বনের এবং তার সঙ্গী মুসলমানদের প্রতি কল্যাণজনক আচরণ করার উপদেশ দিতেন । আর (বিদায়লগ্নে) বলতেন,

* যুদ্ধ করো আল্লাহর নামে, আল্লাহ রাস্তায়

*লড়াই কর তাদের বিরুদ্ধে যারা আল্লাহর সঙ্গে যুদ্ব করেছে ।

*যুদ্ধ চালিয়ে যাও, তবে গনীমতের মালের খিয়ানত করবে না।

*চুক্তি ভঙ্গ করবে না

*শক্র পক্ষের অঙ্গ বিকৃতি করবে না

*শিশুদেরকে হত্যা করবে না

*যখন তুমি মুশরিক শক্রর সন্মুখীন হবে, তখন তাকে তিনটি বিষয় বা আচরণের প্রতি আহবান জানাবে,তারা এগুলোর মধ্য থেকে যেটিই গ্রহণ করে, তুমি তাদের পক্ষ থেকে তা মেনে নিবে এবং তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ থেকে বিরত থাকবে

-প্রথমে তাদের ইসলামের দিকে দাওয়াত দিবে ।

-যদি তারা তোমার এই আহবানে সাড়া দেয়, তবে তুমি তাদের পক্ষ থেকে তা মেনে-নিবে এবং তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা থেকে বিরত থাকবে

-মুসলমানের সঙ্গে শামিল হয়ে যুদ্ধ করলে গনিমতের অংশীদার হবে

*আর যদি তারা ইসলাম গ্রহণ করতে অস্বীকার করে

-তবে তাদের কাছে জিযিয়া, প্রদানের দাবী জানাবে

-যদি তারা তা গ্রহণ করে নেয়, তবে তুমি তাদের তরফ থেকে তা মেনে নিবে এবং তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ“ থেকে বিরত থাকবে

*আর যদি তারা এ দাবী না মানে তবে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাও এবং তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড় ।

*আর যদি তোমরা কোন দুর্গবাসীকে অবরোধ কর এবং তারা যদি তোমার কাছে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের যিম্মাদারী চায়

-তবে তুমি তাদের জন্য আল্লাহ ও তার রাসুলের যিম্মাদারী মেনে নিবে না । বরং তাদেরকে তোমার এবং তোমার সাথীদের যিম্মাদারীতে রাখবে । কেননা যদি তোমাদের ও তোমাদের সাথীদের যিম্মাদারী ভঙ্গ করে, তবে তা আল্লাহ ও তার রাসূলের যিলাদারী ভঙ্গের চাইতে কম গুরুতর ।

*যদি তোমরা কোন দুর্গের-অধিবার্সীদেরকে অবরোধ কর, তখন যদি তারা তোমাদের কাছে আল্লাহর নির্দেশ মুতাবিক অবতরণ করতে চায় তবে,

-তোমবা তাদের কে আল্লাহর হুকুমের উপর অবতরন করতে দিবে না, বরং তুমি তাদেরকে তোমার সিদ্ধান্তের উপর অবতরণ করতে দেবে । কেননা তোমার জানা নেই যে, তুমি তাদের মাঝে আল্লাহর নির্দেশ বাস্তবায়িত করতে পারবে কি না ?

(সহীহ আল মুসলিম হা/৪২৪৯,কিতাবুল জিহাদ ওয়াস-সিয়ার (সফর অভিযান অধ্যায়)

আল্লাহ আমাদেরকে তাওফিক দান করুন আমীন।

বিষয়: বিবিধ

১১৭০ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

329915
১৪ জুলাই ২০১৫ সকাল ১০:৫৩
ইসলামী দুনিয়া লিখেছেন : সুন্দর কথা।
১৪ জুলাই ২০১৫ দুপুর ১২:৩১
272197
জ্ঞানের কথা লিখেছেন : জাজাকাল্লাহু খায়রান! ভাই। আল্লাহ আপনার জ্ঞানকে বৃদ্ধি করুন।
329916
১৪ জুলাই ২০১৫ সকাল ১১:০০
হতভাগা লিখেছেন : এখনকার যুদ্ধে কোন নিয়ম নেই ।

কারও কারও কাছে নিজের লোকের গায়ে সামান্য ফুলের টোকা অন্যের লাখ লাখ লোকের প্রাণহানীর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ ।
১৪ জুলাই ২০১৫ দুপুর ১২:৩৮
272198
জ্ঞানের কথা লিখেছেন : ভাই, আসসালামু আলাইকুম। আপনি সত্যি একজন জ্ঞানী মানুষ। আপনার কথার প্রত্যেকটি পয়েন্ট অনেক সুন্দর সাবলীল এবং অল্প কথায় অনেক কিছু বুঝিয়েছেন।

জাজাকাল্লাহ।
329959
১৪ জুলাই ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:০০
দ্য স্লেভ লিখেছেন : প্রত্যেকটি বাহিনী প্রেরন করার অঅগে রসূল(সাঃ) নির্দেশ দিতেন - নারী,শিশু,বৃদ্ধদের উপর আগাত করবে না। যারা ধর্মীয় উপাসনালয়ে থাকে তাদেরকে আঘাত করবে না। যারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে,তাদের সাথে যুদ্ধ করবে....সম্ভবত বুখারী,মুসলিম
১৫ জুলাই ২০১৫ সকাল ০৭:১৩
272298
জ্ঞানের কথা লিখেছেন : হ্যা ভাই, এরকমটি আছে। তবে আমার মনে পড়ছে না কোন হাদীসে আছে।

জাজাকাল্লাহু খায়রান।
329971
১৪ জুলাই ২০১৫ রাত ০৮:০৮
শেখের পোলা লিখেছেন : ইসলাম শ্বাশতঃ সুন্দর৷ সুবহানাল্লাহ৷ধন্যবাদ৷
১৫ জুলাই ২০১৫ সকাল ০৭:১৮
272301
জ্ঞানের কথা লিখেছেন : জাজাকাল্লাহু খায়রান ভাই। আল্লাহ আপনার উপর রহম করুন আমীন।
330019
১৫ জুলাই ২০১৫ রাত ০১:৪১
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
ইসলামে যুদ্ধের যে নিতিমালা আছে তার আগে কোন মানবতা ভিত্তিক যুদ্ধনিতি নাই।
১৫ জুলাই ২০১৫ সকাল ০৭:১৮
272302
জ্ঞানের কথা লিখেছেন : জি একদম ঠিক বলেছেন ভাই। ইসলামের আগে কোন যুদ্ধের নীতিমালা ছিলো না আর এখন পর্যন্ত এর চেয়ে সুন্দর নীতিমালও নেই।

জাজাকাল্লাহু খায়রান।
330360
১৭ জুলাই ২০১৫ সকাল ১১:৪১
এ,এস,ওসমান লিখেছেন : জাযাকাল্লাহু খায়েরান
১৭ জুলাই ২০১৫ রাত ০৮:১৬
272617
জ্ঞানের কথা লিখেছেন : ওয়া আইয়্যাকুম।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File