শাহানশাহ্ নাম রাখা যাবে কি?
লিখেছেন লিখেছেন জ্ঞানের কথা ০৮ জুলাই, ২০১৫, ০৬:৫৫:২৫ সকাল
নাম মানুষের একটি আইডেনটিফিকেশন কোড বা সহজ কথায় যা দারা মানুষকে চেনা যায়। একই নাম অনেকের হতে পারে তবে কিছু নাম আছে যা রাখা যাবে না। আসুন সেসকল নামের ব্যাপারে জ্ঞান অর্জন করি।
সব সময় সব নাম রাখা যায় না। যেমন অনেকে আজীজ,গফুর নাম রাখলেও তার আগে আব্দুল গফুর বা পিছনে রহমান যেমন আজিজুর রহামন ইত্যাদি বলে ডাকতে হবে। শুধু আজীজ, গফুর বলে ডাকা যাবে না।
অনেক সময় আমরা দেখি অনেকে নাম রাখেন শাহানশাহ। কিন্তু এই নাম রাখা বিষয়ে রসুল (সা) নিষেধ করেছেন:
শাহানশাহ নামের বিষয়ে:
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مَيْمُونٍ الْمَكِّيُّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، يَبْلُغُ بِهِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَخْنَعُ اسْمٍ عِنْدَ اللَّهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ رَجُلٌ تَسَمَّى بِمَلِكِ الأَمْلاَكِ " . قَالَ سُفْيَانُ شَاهَانْ شَاهْ وَأَخْنَعُ يَعْنِي أَقْبَحَ . هَذَا حَدِيثٌ
حَسَنٌ صَحِيحٌ
আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে মারফূ’রূপে বর্ণিত আছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: কিয়ামতের দিন আল্লাহর নিকট সবচেয়ে অবাঞ্ছিত নাম হবে সেই ব্যক্তির যার নাম রাখা হয়েছে ‘মালিকুল আমলাক’। সুফইয়ান (র) বলেন: অর্থাৎ শাহানশঅহ (রাজাধিরাজ)।
এ হাদীসটি হাসান-সাহীহ।
(তিরমিযি হা/২৮৩৭, এছাড়াও এই হাদীস বুখারী ও মুসলিমে রয়েছে)
তাই শাহানশাহ নাম রাখা যাবে নাহ।
এছাড়াও নিম্নক্ত নাম গুলো রাখতে রসুল (সা) নিষেধ করেছেন।
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا أَبُو أَحْمَدَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لأَنْهَيَنَّ أَنْ يُسَمَّى رَافِعٌ وَبَرَكَةُ وَيَسَارٌ "
উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: রাফি’, বারাকা, ইয়াসার নাম রাখতে আমি নিষেধ করছি।
(তিরমিযি হা/২৮৩৫, হাদীস সহীহ)
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ هِلاَلِ بْنِ يِسَافٍ، عَنِ الرَّبِيعِ بْنِ عُمَيْلَةَ الْفَزَارِيِّ، عَنْ سَمُرَةَ بْنِ جُنْدُبٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لاَ تُسَمِّي غُلاَمَكَ رَبَاحٌ وَلاَ أَفْلَحُ وَلاَ يَسَارٌ وَلاَ نَجِيحٌ يُقَالُ أَثَمَّ هُوَ فَيُقَالُ لاَ "
সামুরা ইবন জুন্দুব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: তোমার সন্তানের নাম রাবাহ, আফলাহ, ইয়াসার, নাজীহ রাখবে না। কেননা বলা হবে, এখানে অমুক আছে কি? জওয়াবে বলা হবে: নেই।
রসুল (সা) নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাকা আমাদের জন্য ফরজ। এজন্য উপরোক্ত নাম গুলো রাখাও নিষেধ।
মা আয়েশা (রা) হতে বর্ণিত তিনি বলেন:
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ نَافِعٍ الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ عَلِيٍّ الْمُقَدَّمِيُّ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُغَيِّرُ الاِسْمَ الْقَبِيحَ .
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খারাপ নাম পরিবর্তন করে দিতেন।
(তিরমিযি হা/২৮৩৯, হাদীসটি সহীহ)
অতএব: আপনার কারো নাম জদি উপরোক্ত হাদীসের নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পরে তাহলে তার নাম চেঞ্জ করে নতুন সুন্দর নাম রাখুন।
এছাড়া আমি বলেছি শুধু গফুর, শুধু রহিম, শুধু কারিম বলে ডাকাও নিষেধ। কেননা ডাকা হবে গফুর আছে জওয়াবে বলা হবে: নেই।
আপনার সন্তানের নাম রাখার ব্যাপারে সতর্ক হউন। কি নাম রাখছেন, কিভবে ডাকতে হবে তা ভালো করে যাচাই করুন।
আল্লাহ আমাদেরকে বোঝার তাওফিক দান করুন আমীন।
বিষয়: বিবিধ
১৫২৪ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন