রমাদান মাসে বহুল প্রচারিত দুটি ভুল বক্তব্য
লিখেছেন লিখেছেন জ্ঞানের কথা ০২ জুলাই, ২০১৫, ০৭:১৯:৪১ সকাল
রমাদান মাসে বহুল প্রচারিত দুটি ভুল বক্তব্যঃ
১ম ভুল বক্তব্যঃ
''প্রথম ১০ দিন রহমতের, দ্বিতীয় ১০ দিন মাগফেরাতের, তৃতীয় ১০ দিন নাজাতের''
সঠিক বক্তব্যঃ
এই অশুদ্ধ কথাকে কেন্দ্র করে অনেকেই প্রথম ১০ দিন অতিবাহিত হওয়ার পর আফসোস করে বলতে থাকেন, রহমতের ১০ দিন চলে গেল! দ্বিতীয় দশক শেষ হওয়ার পর আবারো হা-হুতাশ করে বলতে থাকেন, মাগফেরাতের ১০ দিন শেষ হয়ে গেল ইত্যাদি। আসলে কুরআন ও সহীহ হাদীসের ভিত্তিতে পুরো রমাদান মাসই রহমত, মাগফেরাত ও জাহান্নাম থেকে নাজাত পাওয়ার মাস। সুতরাং এটাকে এভাবে ভাগ না করে মহান আল্লাহর দেয়া সুযোগকে পরিপূর্ণভাবে কাজে লাগানো উচিৎ।
২য় ভুল বক্তব্যঃ
''ইফতারের আগে দু'আ কবুল হয়''
আমাদের জনসাধারনের মধ্যে বহুল প্রচলিত একটি কথা হচ্ছে, 'ইফতারের আগে দু'আ কবুল হয়'। এই কথাটিও বিশুদ্ধভাবে প্রমানিত নয়। এই অশুদ্ধ কথাকে কেন্দ্র করে অনেকেই ইফাতারের আগে সম্মিলিতভাবে দু''আ করতে ব্যাস্ত হয়ে পড়েন। যা স্পষ্ট একটি বিদা'আত।
সঠিক বক্তব্য হচ্ছে:
পুরো রমাদান মাসই হচ্ছে দু'আ কবুলের মাস। সুতরাং একজন মুসলিমের উচিৎ পুরো রমাদান মাস জুড়েই দু''আ করা। অন্য আরেকটি বর্ণনায় আছে রোজাদারের দু'আ কবুল হয়। সুতরাং সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্তও দু'আ কবুল হয়। এই হিসাবে একজন রোজাদারের সারাদিনই দু'আ কবুলের সুযোগ রয়েছে এমনকি ইফতারের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত। সুতরাং দু'আ কবুল হওয়ার সময়কে শুধু ইফতারের আগে সীমাবদ্ধ করার অর্থই হচ্ছে মহান আল্লাহর দেয়া বিশাল সুযোগকে সংকুচিত করে দেয়া, যা মোটেই কাম্য নয়।
শেষ কথাঃ
আমরা রমাদান মাসের প্রতিটি দিনই এমনকি প্রতিটি মুহূর্ত মহান আল্লাহর কাছে বেশি বেশি রহমত কামনা করবো, ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকবো, জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভের জন্য দু'আ করবো এবং সময় সুযোগ অনুযায়ী সর্বক্ষণ মহান আল্লাহর কাছে দু'আ করতে থাকবো।
মহান আল্লাহ্ আমাদেরকে সঠিক বুঝ দান করুন।
বিষয়: বিবিধ
১৫৯২ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সঠিক রেফারেন্স দিলে মনে হয় ভালো হত।
অধিক সংক্ষক হাদীস (দুর্বল বা যঈফ) বর্ণনার চেয়ে অল্পসংক্ষক সহীহ হাদীসি আমাদের জন্য যথেষ্ট (মুক্কাদ্দাম সহীহ মুসলিম)
এজন্য হাদীস দুটির রেফারেন্স দেই নি। কেননা দরকার মনেহয় নি।
জাজাকিল্লাহী খায়রান।
আল্লাহ আপনাকে সুস্থ রাখুন আমীন।
তবে অনেকেই যে ইফাতারের আগে সম্মিলিতভাবে দুআ করতে ব্যাস্ত হয়ে পড়েন তা ঠিক নাও হতে পারে।
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ عَيَّاشٍ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي سُفْيَانَ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " إِنَّ لِلَّهِ عِنْدَ كُلِّ فِطْرٍ عُتَقَاءَ وَذَلِكَ فِي كُلِّ لَيْلَةٍ "
রসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন : আল্লাহ্ তা‘আলা প্রতি ইফতারের অর্থাৎ প্রতি রাতে বেশ সংখ্যক লোককে (জাহান্নাম থেকে) মুক্তি দেন।
এই হাদীস থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় ইফতারের সময় আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন। তবে এর দারা ইফাতারির আগেই শুধু দুআ কবুল হয় এরকম টি নয়। রোজাদারের দুআ রোজার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পুরো সময়েই আল্লাহ কবুল করেন।
জাজাকিল্লাহ। আল্লাহ আমাদেরকে উপরের হাদীসের অন্তর্ভুক্ত করুন। আমীন।
মাইন্ড করেন না ক্যাপশন দিসি
https://www.facebook.com/tomader.meye/posts/1590076121242046?notif_t=like
জাজাকাল্লাহু খায়রান এ,এস,ওসমান ভাই।
দেখলাম। তবে দেখুন সত্য গ্রহণ করা কত কঠিন কাজ। তবে আল্লাহ যদি চান সেটা ভিন্ন কথা।
এই হাদীসটি দেখুন
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ(রা) বলেন, “তোমাদের অবস্থা তখন কেমন হবে যখন ফিতনাহ (বিদ’আত) তোমাদেরকে এমনভাবে ঘিরে নেবে যে এটি (বিদ’আত) করতে করতে তোমাদের যুবকেরা বৃদ্ধ হবে, ছোটরা বড় হবে এবং মানুষ এটাকে (অর্থাৎ এই সব বিদ’আতকে) সুন্নাত হিসাবে গ্রহণ করবে। আর যদি কেউ এর (বিদ’আতের) কিছু ত্যাগ করে, তখন তাকে বলা হবে, “তুমি কি একটা সুন্নাত ত্যাগ করলে?” রাবী জিজ্ঞাসা করলেন, “কখন এমনটা হবে?” তিনি বললেন, “যখন আলিমদের মৃত্যু হয়ে যাবে, ক্বারীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে, দ্বীনের জ্ঞানসম্পন্ন মানুষের সংখ্যা হবে খুবই অল্প, বিশ্বস্ত মানুষ হবে খুবই কম এবং আখিরাতের কাজের মধ্যে মানুষ দুনিয়ার লাভ খুঁজবে।” (দারেমী, হা/১৯১; মুস্তাদরাক হাকিম, ৪/৫১৪, হা/৮৫৭০; মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ, ১৫/২৩, হা/৩৭১৫৬, সানাদ ছহীহ)
মন্তব্য করতে লগইন করুন