শ্রমিকের লাশের উপর দাড়িয়ে “রেশমা” নাটক নির্মাণের ঘৃণ্য ইতিহাস

লিখেছেন লিখেছেন শাহমুন নাকীব ফারাবী ২৪ এপ্রিল, ২০১৬, ০৮:৫৯:৫৬ রাত

ভাইজান আল্লাহর দোহাই লাগে! আমাকে বাঁচান! বাড়িতে আমার দশ মাস বয়সের বাচ্ছা আছে! আমি মারা গেলে, আমার বাচ্চাটাও না খেয়ে মারা যাবে! দরকার হলে, আমার কোমর কেটে বের করুন।তবুও আমাকে বাঁচান। ঠিক এমনই আহাজারিতে আজকের দিনটিতে রানা প্লাজার পরিবেশ মর্মান্তিক আকার ধারন করেছিল! রেহেনা নামের সেই গার্মেন্টস কর্মীকে শেষ পর্যন্ত কোমর কেটে বের করা হলেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয় নি! প্রচুর রক্তক্ষরনের কারনে সে অপারেশন থিয়েটারেই মারা যায়।

আর সেইদিনকার হাজারো রেহেনাদের আন্তঃচিৎকার এবং হাহাকার ম্লান করে দিয়েছিল রেশমা নাটকের মাধ্যমে! রেশমা নাটকের বিষয়টি আমি জানতে পারি এসএ টিভির এক সাংবাদিকের মাধ্যমে। সেই সময় তিনি এনটিভিতে কাজ করতেন। সঙ্গত কারণেই তার নামটা উল্লেখ করছি না।

তিনি বলেন, রেশমাকে উদ্ধারের পর পরই তাকে সিএমএইচ হাসপাতালে নেয়া হয়। রেশমার উপর রিপোর্ট করবার জন্য আমি সিএমএইচ এ যাই। সেখানে যাওয়ার পর একজন নার্স বার বার সেই সাংবাদিকের আশে পাশে ঘুর ঘুর করতেছিল। সাংবাদিক সাহেব বললেন, আপনি কি আমাকে কিছু বলতে চান? সেই নার্স বললেন, আপনাকে কিছু জরুরী কথা বলবার ছিল। কিন্তু এখানে বললে, আমি আমার জীবন নিয়ে বের হতে পারব না। তখন নার্স মহিলাটি একটি ঠিকানা দিয়ে বললেন আজ সন্ধ্যায় রেষ্টুরেন্টে চলে আসেন।

সন্ধ্যায় সেই মহিলার সঙে দেখা হল। সেই মহিলাটি বললেন, আমি খুব অপরাধ বোধে ভুগছি। রেশমাকে সিএমএইচ এ আনার পর তাকে টেক কেয়ার করার দায়িত্ব আমার উপর বর্তায়। একটা মানুষ ১৬ দিন ধ্বংসস্তূপের নিচে থাকল অথচ তার চেহারায় কোন ক্লান্তি নাই। জামাতেও কোন ময়লা নেই। আমার তে,স জানি সন্দেহ হল! আমি তাকে সামান্য চার্জ করতেই সে কেঁদে ফেলে। সে বলে, আপা এ ছাড়া আমার আর কোন উপায় ছিল না। আমি রাজি না হলে অন্য কাউকে রাজি করানো হতো আর আমাকে হত্যা করা হতো।

তারপর আমি চলে যাই হাসপাতাল ইনচার্জ এর কাছে। তাকে বলি আমি এই অভিনয়ের অংশ হতে পারব না। আমি সব মিডিয়ার সামনে প্রকাশ করে দিব। তখন ইনচার্জ বললেন, পাগলামো করো না! আমার কথা না শুনলে তোমাকে এখনই গ্রেফতার করা হবে। এরপর তোমার লাশও কেউ খুঁজে পাবে না।

সেই নার্স সাংবাদিক সাহেবের হাতে একচি অডিও টেপ তুলে দেন। যাতে ছিল রেশমার স্বকন্ঠে স্বীকারক্তি। সেই নার্সটি বলেন, ভাই এটি আপনি প্রচার করে দিন। সাংবাদিক সাহেব আফসোস করে বলেন, বোন জীবনের মায়া বড় মায়া। আজ এটা প্রচার করলে কালকে হয়তো আমাকে লাশ হতে হবে।

বিষয়: বিবিধ

১১৯০ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

366978
২৪ এপ্রিল ২০১৬ রাত ০৯:৫৯
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : এই রেশমা এখন কিসের যোগ্যতায় ২৫০০০ টাকা বেতনে চাকরি করে সেটার জবাব ও প্রয়োজন।
366980
২৪ এপ্রিল ২০১৬ রাত ১০:০১
চেতনাবিলাস লিখেছেন : সবই তো নাটক | এই লেখাটাও হয়তো নাটক | বাংগালী নাটক দেখতেই অভ্যস্ত | চলুক |

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File