ড.হাসান মাহমুদ সম্ভবত পাগলা গারদ থেকে পালিয়ে এসে রাজনীতি করছেন(!)

লিখেছেন লিখেছেন শাহমুন নাকীব ফারাবী ২৭ মার্চ, ২০১৬, ০২:৩৭:৩০ দুপুর

অনেক আগে একটা গল্প শুনেছিলাম। এই গল্পটা হয়তো সকলেই জানেন। তারপরও গল্পটি লিখবার লোভ সামলাতে পারছি না।

এক স্কুল ছাত্র বাংলা পরীক্ষায় লিখার জন্য কুমিরের রচনা শিখেছে। কুমির একটি জলজ প্রাণী। এর চারটি পা, দুটি চোখ, করাতের মত অনেকগুলো দাঁত ও একটি লেজ রয়েছে। কুমিরের লেজটি খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা.........

পরীক্ষার হলে গিয়ে ছেলেটি দেখতে পেল যে কুমিরের রচনা আসেনি। সেখানে রচনা লিখতে বলা হয়েছে 'নদীমাতৃক বাংলাদেশ' নিয়ে। ছেলেটি একটু দ্বিধায় পড়ে গেলেও শুরু করল নদীমাতৃক বাংলাদেশ বিষয়ে রচনা লিখতে আরম্ভ করল। সে লিখল - বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ। এদেশের বুকে বয়ে চলেছে অনেক নদনদী। এসব নদীতে বিভিন্ন মাছের সাথে রয়েছে কুমির। কুমির একটি জলজ প্রাণী। এর চারটি পা, দুটি চোখ, করাতের মত অনেকগুলো দাঁত ও একটি লেজ রয়েছে। কুমিরের লেজটি খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা.........

বাংলার শিক্ষক নদীমাতৃক বাংলাদেশের বদলে খাঁজ কাটা কুমিরের রচনা পড়ে একটু অবাক হলেও মেনে নিলেন। পরের বার পরীক্ষায় রচনা আসল 'কৃষিপ্রধান বাংলাদেশ'। কিন্তু তাতে ঐ ছেলেটি মোটেও দমে গেল না। সে রচনা লিখতে শুরু করল- বাংলাদেশ কৃষিনির্ভর দেশ। আর উন্নত কৃষি ব্যবস্থার জন্য দরকার সেচ ব্যবস্থা। আমাদের দেশের কৃষকরা তাদের জমিতে নদী, খালবিল এসব জলাশয় থেকে সেচ দেন। এসব নদী, খালবিলে থাকতে পারে কুমির। কুমির একটি জলজ প্রাণী। এর চারটি পা, দুটি চোখ, করাতের মত অনেকগুলো দাঁত ও একটি লেজ রয়েছে। কুমিরের লেজটি খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা.........

বাংলার শিক্ষক এবারও অবাক হলেন। নিজের বোকামির জন্য একটু রাগও হল তার। আগেরবারও সে অন্য একটা রচনাতে কুমির রচনা লিখে রেখেছিল। এবার পরীক্ষায় এমন রচনা দিতে হবে যার সাথে কুমিরের কোন সম্পর্ক থাকবে। অতএব তিনি পরেরবার পরীক্ষায় রচনা দিলেন 'শারদীয় দুর্গোৎসব'। একটু অন্য ধরনের রচনা কিন্তু এবারও ছেলেটি প্রবল উৎসাহে রচনা লিখতে শুরু করল- শারদীয় দুর্গোৎসব বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। দুর্গোৎসব শেষে দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন করা হয়। প্রতিমা বিসর্জন দিতে হয় নদি-নালা, খালবিল বা কোন জলাশয়ে। তাই প্রতিমা বিসর্জন দিতে থাকতে হবে অনেক সাবধান। কারণ এসব জলাশয়ে থাকতে পারে কুমির। কুমির একটি জলজ প্রাণী। এর চারটি পা, দুটি চোখ, করাতের মত অনেকগুলো দাঁত ও একটি লেজ রয়েছে। কুমিরের লেজটি খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা.........

ছেলেটির এহেন কর্মকাণ্ডে শিক্ষক এবার বেশ চটলেন। এবার তিনি পরীক্ষায় এমন রচনা দিবেন যাতে তার সাথে কোন অবস্থাতেই কুমিরের সাথে কোন সম্পর্ক না থাকে। এবার পরীক্ষায় রচনা লিখতে দেয়া হল 'পলাশীর যুদ্ধ' নিয়ে। ছেলেটি পরীক্ষায় পলাশীর যুদ্ধ বিষয়ে রচনা লিখতে হবে দেখতে পেয়ে একটু চিন্তা ভাবনা করে রচনা লিখতে শুরু করল- পলাশীর যুদ্ধে ভারতীয় উপমহাদেশ নিজেদের স্বাধীনতা হারিয়েছিল। তখনকার বাংলার নবাব ইংরেজদের সাথে এই যুদ্ধের দায়িত্ব দিয়েছিলেন মীর জাফরকে। আর মীর জাফরকে দায়িত্ব দেয়া আর খাল কেটে কুমির আনা একই কথা। কুমির একটি জলজ প্রাণী। এর চারটি পা, দুটি চোখ, করাতের মত অনেকগুলো দাঁত ও একটি লেজ রয়েছে। কুমিরের লেজটি খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা.......

আমাদের আওয়ামিলীগ নেতাদেরকে যখনই কোন বক্তব্য দিতে বলা হয় তখনই যেভাবেই হোক তারা ‍ঘুরে ফিরে সেই জামায়াত বিএনপির গায়ে গিয়েই উষ্ঠা খেয়ে পড়েন। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক হাসান মাহমুদ বলেছেন, ব্রাসেলসে বোমা হামলায় বিএনপি জামায়াতের সম্পৃক্ততা থাকতে পারে।

তিনি বলেন, ‘বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে সন্ত্রাসী বোমা হামলা ও বাংলাদেশে বিগত সময়ে বিদেশি হত্যাকাণ্ড, পেট্রোল বোমা হামলায় মানুষ হত্যা, ব্লগার-লেখক হত্যা সবই একই সূত্রে গাঁথা। তাই ব্রাসেলসে বোমা হামলার সাথে বিএনপি-জামায়াত জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে।’

মাঝে মাঝে মনে হয়, আমাদের দেশের রাজনীতিবিদরা কি পাগলা গারদ থেকে পালিয়ে এসে রাজনীতি করতেছে নাকি? তাদের কথাবার্তা বক্তৃতায় আপাতোত তাই মনে হয়। আমাদের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মখা আলমগীর রানা প্লাজা ধসে পড়ার পর বলেছিলেন, শিবিরের ছেলেরা ধাক্কা দিয়ে রানা প্লাজা ভেঙে ফেলেছে। এরকম বেকুব মার্কা কথা একটি দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলতে পারে না ভাবাই যায় না। তবে এখনও আমার কাছে আশ্বর্য লাগছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা চুরির সঙে এখনও জামায়াত বিএনপিকে জড়িয়ে বক্তব্য দেয়া হয় নি তা দেখে। বরং এটাতো আমাদের দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি পরিচিত হালচিত্র। আর এই হালচিত্রের মাঝে আমাদের প্রয়াত বিড়ি মন্ত্রীর কথা আর নাই বা বললাম। তবে যদি সম্ভব হয়, তাহলে একটিবার তদন্ত করে দেখা হোক! আমাদের রাজনীতিবিদরা আদৌও পাগলাগারদ থেকে পালিয়ে এসেছে কি না!

বিষয়: বিবিধ

১৫১৭ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

363777
২৭ মার্চ ২০১৬ দুপুর ০২:৫৪
আবু জান্নাত লিখেছেন : আশ্চার্য হওয়ার কিছু নেই, এই বক্তব্য অলরেডি হাসান সাহেব দিয়ে দিয়েছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা চুরির সঙে এখনও জামায়াত বিএনপিকে জড়িয়ে বক্তব্য দেয়া হয় নি তা দেখে।
উনি বলেছেনঃ বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা চুরির সঙে তারেকের হাত রয়েছে।

ফিলিস্তিনে ইস্রায়েলের হামলায়ও বি.এন.পি জামাত জড়িত। প্যারিসে হামলায়ও নাকি বি.এন.পি জামাত সম্পৃক্ত। প্রতিটি ঘটনাতেই উনি খাজ কাটা লেজের মত বি.এন.পি জামাত দেখতেই থাকবেন। আমার মনে হয় মৃত্যুর পরও উনি মুনকির নাকিরকে বি.এন.পি জামাত বলে মন্তব্য করেন কি না!

উনি আর পঁচাগম মার্কা মন্ত্রীর মত এমন বেহায়া মন্ত্রী আ'লীগে আর নেই।

২৭ মার্চ ২০১৬ দুপুর ০৩:৩৮
301596
শাহমুন নাকীব ফারাবী লিখেছেন : ধন্যবাদ। জানা ছিল না
363780
২৭ মার্চ ২০১৬ দুপুর ০৩:৩৩
হতভাগা লিখেছেন : গত টার্মে উনি বন ও পরিবেশ মন্ত্রনালয়ে ছিলেন । তখন বেশ ভাব গাম্ভীর্য দেখিয়েছিলেন ।

এবারের টার্মে তাকে বেকার বসে থাকতে হচ্ছে । পুঁচকে তারানা তাকে টপকে দিয়েছে । মেজাজ তাই চরমে ।

আওয়ামী লীগের হাই কমান্ডের মন পাওয়ার একটা সহজ তরিকা হচ্ছে বিএনপি ,জিয়া , খালেদা জিয়া এবং তারেককে নিয়ে খুবসে বকাবাজি করা । এতে হাই কমান্ড প্রলুব্ধ হয় ।

গত বছর খানেক ধরে এটা হানিফ করেই যাচ্ছেন , হাসান সাহেবও এখন তাকে ছাড়িয়ে যাবার চেষ্টা করছেন ।

এসব দেখে অন্যান্য মন্ত্রীরা তাদের কাজে গভীর মনোনিবেশ করেছেন । তাই হাসান-হানিফদের ভাগ্যে শিঁকে ছিঁড়তে দেরি হচ্ছে।
২৭ মার্চ ২০১৬ দুপুর ০৩:৩৯
301597
শাহমুন নাকীব ফারাবী লিখেছেন : আমারও সেরকমই মনে হচ্ছে
২৭ মার্চ ২০১৬ রাত ০৮:২৪
301665
শেখের পোলা লিখেছেন : আসল রহস্য উদ্ঘাটন করে দিলেন৷ ধন্যবাদ৷
২৮ মার্চ ২০১৬ সকাল ০৮:৫২
301755
হতভাগা লিখেছেন : http://epaper.prothom-alo.com/view/dhaka/2016-03-28/1

হাসান-হানিফের ভাগ্যে মনে হয় শিঁকে ছিড়লেও ছিড়তে পারে
363792
২৭ মার্চ ২০১৬ বিকাল ০৪:১০
কুয়েত থেকে লিখেছেন : ভালো লাগলো লেখাটি হাসান মাহমুদদের তো কাজই একটা বিরুধীতা করা যেখানেই যাই গঠুক বি এন পি জামায়াত করেছে। কিছুদিন পর বলবে তাদের জন্মের পিছনে ও জামায়াত বি এন পির হাত রয়েছে। ধন্যবাদ
363831
২৭ মার্চ ২০১৬ রাত ০৮:৩০
শেখের পোলা লিখেছেন : এ অপদার্থ যোগ্যতাটারও বহু মূল্য আছে৷ ৭১ বাঙ্গালী রাজনীতিবীদদের ক্ষমতা হস্তান্তর না করার বা টাল বাহানা করার এটাই প্রধান কারণ ছিল৷ ৫৪ তারা এ অভিজ্ঞতা লাভ করেছিল৷ আর সেই সূত্রধরেই গড়ে উঠেছিল স্বাধীকার আন্দোলন, যা পরে স্বাধীনতার যুদ্ধ হয়ে গর্জে ওঠে৷

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File