রাত প্রায় তিনটা! ভারি অস্ত্র নিয়ে বাংলাদেশের সীমান্তে প্রবেশ করল বিএসএফ................
লিখেছেন লিখেছেন শাহমুন নাকীব ফারাবী ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১০:২৮:১৭ রাত
রাত প্রায় তিনটা!
ভারি অস্ত্র মেশিনগান এবং কয়েক জজন গ্রেনেড নিয়ে রৌমারি সীমান্ত দিয়ে এক প্লাটুন বিএসএফ বাহিনী বাংলাদেশে প্রবেশ করল! উদ্দেশ্য, তৎকালীন রৌমারী বিডিআর ক্যাম্পে হামলা করা। বিএসএফ সৈন্যরা ভোররাতে বিডিআর ক্যাম্পের রাস্তা খুঁজে পাচ্ছিল না। ঠিক সেই সময় এক বাংলাদেশী জমিতে পানি দিয়ে বাড়ি ফিরতেছিল!
বিএসএফ সৈন্যরা তাকে দাড় করাল! তাকে প্রশ্ন করল, বিডিআর ক্যাম্প কোন দিকে? লোকটি অনুমান করল নিশ্চয়ই কোন ঝামেলা আছে! তাই সে বুদ্ধি করে বিএসএফ সৈন্যদেরকে উল্টো পথ দেখিয়ে দিল। বিএসএফ বাহিনী চলে গেলে, সে এক দৌড়ে বিডিআর ক্যাম্পে উপস্থিত হয়! ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা কমান্ডার কে ভারতীয় সৈন্যদের আগমনের কথা বলে দেয়!
তৎকালীন বিডিআর বাহিনীর সদস্যরা তৎক্ষনাত, প্রস্তূত হয়ে যায়! বিএসএফ সৈন্যরা পথ ঘুরে যখন বিডিআর ক্যাম্প খুঁজে পেল, প্রথম অবস্থাতেই তারা হামলা চালাল! পূর্ব থেকে প্রস্তূত থাকা বিডিআর সৈন্যরাও পাল্টা গুলি চালায়! শুরু হয় যুদ্ধ! বিডিআর ক্যাম্পে তখন মাত্র ২৫ জন সৈন্য ছিল। আর সেই ২৫ জনই প্রাণপন লড়াই চালিয়ে যেতে লাগল!
পরের দিন সকাল ১০ টা! লালমনিরহাট থেকে লে.কর্ণেল শায়েরুজ্জামানের নেতৃত্বে অতিরিক্ত সৈন্য রৌমারি বিডিআর ক্যাম্পে যোগদান করে। সেইদিন সারাদিন গোলাগুলি চলতে থাকে।
সন্ধ্যার কিছুক্ষণ পরে যুদ্ধ কিছুটা থেমে যায়! আর এই সুযোগে বিডিআর সৈন্যরা এক অভিনব পন্থা কাজে লাগায়! বিডিআর ক্যাম্পের আশে পাশের কলা গাছ গুলোর মাথা কেটে সেগুলোতে হেলমেট বসিয়ে দেয়! দূর থেকে সেগুলোকে দেখলে সৈন্য মনে হয়!
আর বিএসএফ বাহিনীও বিডিআর এর পাতা ফাঁদে পা দেয়! তারা সেই সব কলাগাছ কে বিডিআর সৈন্য মনে করে গুলি করলে, হঠাৎ পিছন থেকে আক্রমন করে বিডিআর বাহিনী! প্রায় সব বিএসএফ জওয়ান সেইদিন মারা পড়ে! স্থানীয়দের মতে সেই যুদ্ধে প্রায় ১৫০ জন বিএসএফ জওয়ান নিহত হয়! আর বিপরীতে বিডিআর এর ৩জন সৈন্য শাহাদাত বরণ করেন।
সেই সময় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন আজকের শেখ হাসিনা! সেই রৌমারি যুদ্ধে যেখানে বিডিআরদেরকে পুরষ্কৃত করা উচিত সেখানে প্রধান মন্ত্রী বিডিআরদের গালিগালাজ করেছিলেন! আর আপনাদের স্মরণ আছে কি, রৌমারির সেই ঘটনার পর ভারতের ডিফেন্স মিনিষ্টার জসবন্ত সিং উত্তপ্ত লোকসভায় জানান দেন এ ঘটনার বদলা নেয়া হবে।
সেই বছরই আওয়ামী সরকার বদল হবার কারণে, তৎক্ষনাত সেই প্রতিশোধ নেয়া সম্ভব হয় নি! ২০০৮ সালে আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় আসলে, ভারত পিলখানা বিদ্রোহের নাটক সাজিয়ে ৫৭ জন সেনা অফিসারকে হত্যা করে প্রতিশোধ গ্রহণ করে!
হায়রে ক্ষমতা! ক্ষমতার লোভে নিজের দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের মৃত্যুর মুখে ঢেলে দিতেও এই আওয়ামী সরকার কুন্ঠা বোধ করল না!
বিষয়: বিবিধ
৬০১২ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
শেখ হাসিনা ক্ষমা চেয়ে আসলেন, তবুও দাদাদের মন ভুলাতো পারেন নি। অবশেষে তাজা বক্তের বিনিময়ে কয়েকগুন সুদসহ ঋণ পরিশোধ করতে হল জাতির কলঙ্ক হাসিনার সরকারকে।
এখন কিন্তু হাসিনাসহ দাদারা সবাই খুশি।
আপনার লেখায় কিন্তু কোন সুত্রের উল্লেখ নেই, পাঠকের কাছে বিশ্বাসযোগ্য করা কঠিন হয়ে যাবে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন