অমুসলিম মনীষীদের চোখে ইসলাম এবং মুহাম্মাদ (সঃ).......
লিখেছেন লিখেছেন শাহমুন নাকীব ফারাবী ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৫, ১২:০৩:২৮ দুপুর
মুক্তবুদ্ধি এবং মুক্তচিন্তার নামে একটা সময় প্রায়ই রাসূল (সঃ) কে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করে ব্লগ লিখতে দেখা যেতো। এটা নাকি তাদের মুক্তচিন্তার ফসল। কিন্তু বাস্তবিত অর্থেই যারা মুক্তচিন্তাকে ধারন করেছেন এবং যাদেরকে মুক্ত চিন্তার ধারক কিংবা বাহক বলা হয় তারা কিন্তু আজকের মুক্তচিন্তকদের থেকে ভিন্ন কথা বলেছেন। যা আজকের মুক্তচিন্তকরা হয়তো বা জানে কিন্তু জানাতে চায় না! হয়তোবা মানে কিন্তু প্রকাশ করতে চায় না। কারণ এতে করে ইউরোপের ভিসা মিস হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে(!) কিন্তু সত্য কখনো চাপা থাকে না। সত্য তার আপন গতিতে সামনে চলে আসবে এবং প্রকাশিত হবেই। এটাই জগতের নিয়ম। সেই সত্যগুলোকে আজকের মুক্তচিন্তকদের সামনে নিয়ে আসার চেষ্ঠা করছি। যদি সম্ভব হয়, তাহলে সুস্থ মস্তিষ্কে এবং ঠান্ডা মাথায় পড়ে দেখার আহব্বান রইল।
জগত বিখ্যাত লেখক ‘জর্জ বার্নাড শ’ এর নাম শুনেননি এমন লোক খুঁজে পাওয়া কঠিন। জর্জ বার্নাড শ তাঁর জ্ঞান চর্চার অংশ হিসেবে ইসলাম এবং শেষ নবী হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) কে নিয়ে প্রচুর পড়াশুনা করেন এবং জানার চেষ্ঠা করেন। এরপর তিনি রাসূল (সঃ) কে কেন্দ্র করে তাঁর রচতি বই ‘জেনুইন ইসলাম’ (Genunine Islam; vol 1) নামক বইয়ে বলেন,“যদি আগামী একশ বছরের মধ্যে শুধু ইংল্যান্ড নয়, সমগ্র ইউরোপকে শাসন করবার কোন সম্ভাবনা থাকে, তাহলে সে ধর্ম হবে কেবল ইসলাম। আমি সর্বদা মুহাম্মাদ (সঃ) এর ধর্ম সম্পর্কে উক্ত ধারণা পোষন করে এসেছি এর আশ্চর্য জীবনী শক্তির জন্য। আমার মনে হয় এটাই একমাত্র ধর্ম যা জীবনের পরিবর্তিত ধাপের সঙ্গে একাত্নীভূত হবার ক্ষমতা রাখে। সেই কারণে প্রতিটা যুগেই আছে এর সমান আবেদন। আমি বিশ্বাস করি যদি মুহাম্মাদ (সঃ) এর মত একজন মানুষ আধুনিক বিশ্বের এক নায়কের পদ অধিকার করতেন, তাহলে তিনি এমন সাফল্যের সঙ্গে এর সমস্যাগুলির সমাধান করতে পারতেন যা এর জন্য প্রয়োজনীয় সুখ ও শান্তি বয়ে আনতো”।
ভারতের প্রতিষ্ঠাতা মহত্না গান্ধী জি ‘Islam and it's holy prophet as judged by the non muslim world’ নামক বই এর ৩ নাম্বার পৃষ্ঠায় বলেন,“মুহাম্মাদ (সঃ) ছিলেন একজন মহান পয়গম্বর। তিনি সাহসী ছিলেন এবং আল্লাহকে ছাড়া কাউকে ভয় করতেন না। তিনি কখনো এক কথা বলে অন্য কাজ করতেন না। এই পয়গম্বর ছিলেন মুসাফিরের মত। তিনি যদি ইচ্ছা করতেন তবে প্রচুর সম্পদ করতে পারতেন। আমি যখন তাঁর দুঃখের কাহিনী পড়ি,তখন আমার চোখ দিয়ে কান্না ঝরে পড়ে। তিনি, তাঁর পরিবার বর্গরা কতোই না কষ্ট ভোগ করেছেন স্বেচ্ছায়। তাই আমার মত একজন সতাগ্রহী তাঁর মত মানুষকে শ্রদ্ধা না করে পারে না। যিনি তাঁর মনকে নিবদ্ধ রেখেছিলেন এক আল্লাহর প্রতি এবং তিনি চিরকাল হেটেছেন আল্লাহর ভিরুতার পথে।মানবজাতির প্রতি তাঁর সহানুভূতি ছিল সীমাহীন”।
শিখ ধর্মের প্রবর্তক গুরু নানক তার রচিত বই ‘গ্রন্থ মাহেব’ এর ১১৪ তম পৃষ্ঠায় বলেছেন,“কলমা তৈয়ব সতত পড়িবে উহা ভিন্ন সঙ্গের সাথী কিছু নাই। যে উহা না পড়িবে সে দোজখে যাইবে। তৌরত, যাবুর, ও ইঞ্জিল পড়ে দেখেছি একমাত্র কুরআনই গ্রন্থ যাহা কলিযুগে মুক্তি দিতে পারে”।
ড.তাঁরাচাঁদ ‘Islam and it's holy prophet as judged by the non muslim world’ নামক বইয়ের ২৪০ তম পৃষ্ঠায় বলেন,“অমুসলিমদের উচিত গরীব,পদদলিত এবং অনাথদের বন্ধু চিরসত্যবাদী মুহাম্মাদ (সঃ) সম্পর্কে আরো ভালোভাবে জানা। মুহাম্মাদ (সঃ) ঘৃনা ভরে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন আরাম ও সুখের জীবন। তিনি কঠোর পরিশ্রম করতেন। নিজের পোশাক ও জুতো নিজের হাতেই পরিষ্কার করতেন। তিনি তাঁর শত্রুদের ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। দয়া দেখিয়েছিলেন, কৃতদাসের প্রতি। তিনি যেমন সাহসী ও অকুতোভয় ছিলেন তেমনি ছিলেন ভদ্র ও অমায়িক। আমরা অবশ্যই স্বীকার করব যেইসলামের বিস্তার তলোয়ার দিয়ে রাজ্য বিজয়ের মাধ্যমে হয়নি। ইসলামের বিস্তার হয়েছে তাঁর ব্যক্তিত্বের জাদুতে এবং তাঁর আশ্চর্য বাগ্মিতার প্রভাবে”।
ফিলিপ কে হিট্টি তাঁর রচিত বই ‘History of the arabs’ নামক বই এর ৩য় পৃষ্ঠায় বলেছেন,“পৃথিবীর সকল ধর্মের মধ্যে একমাত্র ইসলাম পেরেছিল জাত ও ধর্মের ভেদাভেদ মুছে ফেলতে”।
এম.এন.রায় তাঁর স্বরচিত বই ‘The historical role of islam’ এ বলেন,“ইসলামের অসাধারণ সাফল্যের মূলে রয়েছে এর বৈপ্লবিক তাৎপর্য। ইসলামই প্রথম সামাজিক সাম্য প্রবর্তন করেছিল যা সমস্ত দেশের প্রাচীন সভ্যতাগুলির মধ্যে তখনও ছিল অজানা”।
ডব্লিউ এইচ টি গার্ডনার তাঁর রচিত বই ‘মিনস অব ইসলাম’ নামক বই এ বলেছেন,“ইসলামের ক্রমবর্ধমান প্রভাব বিস্তারের কারণ হচ্ছে যে, এইটাই একমাত্র ধর্ম যা এককভাবে খ্রিষ্টবাদকে পরাজিত করেছে। খ্রীষ্টবাদের মধ্যকার অনিয়ম উশৃঙ্খল ও অসামজ্ঞকে কঠোরভাবে মোকাবেলা করে চলেছে এবং এইটাই একমাত্র ধর্ম যার মর্মবানীর কাছে খ্রীষ্টবাদের বক্তব্য ম্লান হয়ে গেছে। মুহাম্মাদ (সঃ) এর একটি বিশাল এবং চমৎকার সেনাবহিনী এ কাজ করেছে তা নয়। এইটা সম্ভব হয়েছে তাঁর সেনাবাহিনী ছিল আল্লাহর সেনাবাহিনী এবং মুহাম্মাদ (সঃ) নিজে ছিলেন একজন অমায়িক, ধৈর্যশীল ও ক্ষমাশীল ব্যক্তি। বলিষ্ঠ চারিত্রিক বৈশিষ্ঠ এবং অভূতপূর্ব কর্তব্যপরায়নতা তাঁকে শ্রেষ্ঠতম মানব হিসেবে বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তিনি সত্য ন্যায়ের এক উজ্জল দ্বীপ শিখা”।
বিষয়: বিবিধ
১৮০৪ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন