শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখালেন...........................................

লিখেছেন লিখেছেন শাহমুন নাকীব ফারাবী ২১ ডিসেম্বর, ২০১৫, ১১:৩৮:৪৭ সকাল

বেশ কয়েক মাস আগে,ধানমন্ডি লেকপাড়ে বেড়াতে গিয়েছিলাম! ঢাকার তিব্র জানজট উপেক্ষা করে কোথাও ঘুরতে যাওয়াটা সত্যিই খুব দুঃসাহসিক কাজই বলে মনে হয়(!) তারপরও নিঃসঙ্গতা আর একঘেয়ামী দূর করতে সেখানে ঘুরতে যাওয়া। সেই সঙ্গে লেকপাড়ে অসাধারণ সৌন্দয্য মন্ডিত কাঠের তৈরী, তাকওয়া মসজিদে নামায পড়ারও একটি সু্প্ত বাসনা ছিল!

যাইহোক, সেখানে ঘুরতে গিয়ে দেখলাম লেকপাড়ের পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে কিছু সিকিউরিটি গার্ড রাখা হয়েছে। আরও একটু সহজ করে বলি, কপোত কপোতিরা যেন লেকপাড়ে “কার্তিক মাসের কুকুরদের ন্যায়” কোন অস্বাভাবিক যৌনক্রিয়া সম্পন্ন করতে না পারেন সেদিকে কড়া দৃষ্টি আরোপের জন্য তাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে! লেকপাড়ে হাটার সময় দেখলাম, এক কপোত কপোতি একে অপরকে ভালোবাসতে বাসতে আবেগ তাড়িত হয়ে দু’জন দু’জনের কমোর জড়িয়ে ধরেছে! ঠিক সেই সময়ে বাঁশি বাজিয়ে উঠল গার্ড! তারা পিছন ফিরে দেখে খাকি পোশাকের গার্ড হাতে লাঠি নিয়ে দাড়িয়ে আছে! গার্ড বললেন সরে বসুন আর পার্কের পরিবেশ ঠিক রাখুন। গার্ড নিয়োগ দিয়ে আর বাঁশি বাজিয়ে, কি আর পার্কের পরিবেশ বজায় রাখা যায়?

মাঝ দুপুরে আকাশে কালো মেঘ জমে উঠল! তারপর গুড়ুগুড় করে মেঘ ডেকে আকাশ ভেঙ্গে ঝুম করে বুষ্টি পড়তে শুরু করল! পার্ক প্রায় গোটাটাই ফাঁকা! জনা কয়েক কপোত কোপোতি বৃষ্টিতে ভিজতে শুরু করল এবং কতক কপোত কপোতি ছাতা নিয়ে বৃষ্টিতে হাটতে লাগল! পার্কের সেই প্রায় জনশূন্য পরিবেশে সেইসব কপোত কপোতিরা যে কর্ম সম্পাদন করিলেন, তা দেখে মনে হল এ যেন কোন এডাল্ট সিনেমার শূটিং চলছে! মনে মনে বলি,ভূপেন রে! বাঙালীকে দমানো কি এতোটাই সহজ কর্ম হে! যেখানে স্বয়ং রবীণ্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন,“তুমি আমাদের বাঙালী করেছো,মানুষ করোনি” ।

এটা শুধু ধানমন্ডি লেকের চিত্র নয়, বলা যায় পুরো ঢাকা শহরে এবং শহরের অদূরবর্তি পার্কের চিত্র! সেখানে আব্বা-আম্মা কিংবা ছোট ভাই বোনকে নিয়ে বেড়াতে যাওয়ার কোন পরিবেশ নেই! যদি যেতেই হয়,তবে চক্ষু লজ্জাটাকে নিজের ঘরে ড্রয়ার বন্দি তরে যেতে হবে! তবে কি বঙ্গবন্ধু এই বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন?

না! বঙ্গবন্ধু এমন কোন দেশের স্বপ্ন দেখেন নি বলেই ১৯৭২ সালে গঠিত কুদরত-ই খুদা শিক্ষা কমিশনের শিক্ষানীতিকে গ্রহণ করেন নি! যে শিক্ষানীতিতে ধর্মকে উপেক্ষা করা হয়েছিল! সেই বঙ্গবন্ধুরই কন্যা কিনা ২০১০ সালে এসে সেই ধর্মহীন কুদরত-ই খুদা শিক্ষানীতিকে গ্রহণ করলেন! তাহলে কি শেখ হাসিনা আপন পিতার সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখালেন?

সে কথা না হয় পুরনো হয়ে গেছে, কিন্তু যে পাশ্চাত্যকে আমরা অন্ধঅনুকরণ করতে ভালোবাসি তারা কি করতেছে তার কি কোন খবর আমরা রাখি? সম্প্রতি জার্মানির পূর্বাঞ্চলে বেশ কয়েকটি স্কুলে ইসলাম শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে! কারণ জার্মানরা তাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নৈতিকতা সমৃদ্ধ দেখতে চায়। জার্মানিতে অবৈধ গর্ভপাত শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে চায়! তারা তাদের প্রজন্মকে দূর্নীতি মুক্ত দেখতে চায়। আর সেই লক্ষ্যেই স্কুল গুলোতে ইসলাম শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কারণ ইসলামই একমাত্র ধর্ম যেখানে নৈতিকতা গড়ে তোলার সম্পূর্ন সিলেবাস রয়েছে। বিধর্মীরা যেখানে নিজ দেশের প্রজন্মকে নৈতিকতাবোধ সম্পন্ন করতে ইসলামকে গ্রহণ করছে, সেখানে আমরা বাঙালীরা নিজ দেশের প্রজন্মকে নৈতিকতাহীন করতে ধর্মহীন শিক্ষাব্যবস্থাকে গ্রহণ করছে! এ যেন হুদের ন্যায় উল্টো পথে চলা!

আজ বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গুবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর জন্য বিশ্বকবি রবীণ্দ্রনাথের কবিতার দু’টো চরন দিয়ে শান্তনা দেয়া ছাড়া আমাদের কাছে আর কিছুই করার নেই,“মাঝে মাঝে বিধাতার নিয়মের এরূপ আশ্চর্য ব্যতিক্রম হয় কেন, বিশ্বকর্মা যেখানে চারকোটি বাঙালী নির্মাণ করিতেছিলেন, সেখানে হঠাৎ দুই-একজন মানুষ গড়িয়া বসেন কেন, তাহা বলা কঠিন” ।

বিষয়: বিবিধ

১১৭৩ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

354811
২১ ডিসেম্বর ২০১৫ দুপুর ০১:১৩
আব্দুল মান্নান মুন্সী লিখেছেন : ভাই জয়ের ডিজিটাল জমানা এইটা আর নানা বঙ্গবন্ধুর জমানাটা এনালগ...হেই জমানার কোনকিছুইকি এখন চলে...? আর মাননীয় পরধানমন্ত্রীর আদরের ডিজিটাল উপদেষ্টার কথা অমান্য করার ক্ষেমতা কি আছে...? বাবার জন্য মন কাঁদেনা তেমন না তবে জয়স্যারের যুক্তির কাছে তা ধুপে টিকে না... অনেক ধন্যবাদ ভালো লাগলো।
354821
২১ ডিসেম্বর ২০১৫ দুপুর ০২:০৭
দ্য স্লেভ লিখেছেন : সমাজ রাষ্ট্রের পচন ধরলে এরকমই হয়। শুধু উপদেশে এটা সমাধান সম্ভব নয়। যা দেখেছেন তার চাইতে ভয়ঙ্কর যা দেখেননি। অসব্য বেহায়া জাতি উপহার পাচ্ছি আমরা..ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হবে দাস,তাও আবার নিকৃষ্ট চরিত্রের
354897
২১ ডিসেম্বর ২০১৫ রাত ০৯:৩৯
শেখের পোলা লিখেছেন : আবার সেই রবী ঠাকুরই সাড়েে সাত কোটি বাঙ্গালীকে মানুষ নয় বাঙ্গালীই বলেছেন৷ছোট বেলায় শুতাম দুনিয়া উল্টে যাবে৷ভয় ও বিষ্ময় দুটাই হত৷ এখন বুঝি উল্টানোটা কি৷ অমুসলীমরা ইসলাম খোঁজে আর মুসলীমরা অমুসলীম হতে চায়৷ ধন্যবাদ৷

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File