আজ প্রয়োজন আইয়ুব (আঃ) থেকে গৃহিত শিক্ষা
লিখেছেন লিখেছেন শাহমুন নাকীব ফারাবী ০২ নভেম্বর, ২০১৫, ০৮:১৯:০৪ রাত
মিঠাপুকুর প্রেস ক্লাবের সামনে একটি চায়ের দোকান আছে।“রং চা” এর জন্য দোকানটি তরুনদের মাঝে বিখ্যাত।আমার চা খাওয়া নিয়ে তেমন একটা মাথা ব্যথা নেই।পেলে খাই না পেলে খাই না।কিন্তু সেই দোকানের চায়ের লোভ সামলানোটা খুব দুষ্কর।
মিঠাপুকুরে প্রচন্ড গন্ডগোল কিংবা পুলিশি অভিযানের মাঝেও কখনোও কখনোও প্রোগাম থেকে ফেরার সময়,বাইক থামিয়ে ঐ দোকানে চা খেতাম।আর চায়ের দোকানদারও আমাকে হয়তো একটু বেশিই পছন্দ করতো।তাই আমাকে দেখলেই উৎকন্ঠিত হয়ে দ্রুত চা বানিয়ে দিতো।বলতো বাবু তাড়াতড়ি চলে যাও।পরিবেশ ভালো না।
বেচারার একাটাই আফসোস!সে আমার নামটা মনে রাখতে পারতো না।সে বলতো,আমার নামটা নাকি আল্লাহর দুনিয়ার সবচেয়ে কঠিন নাম।তখন সে আমার নাম দিয়ে ছিল,“চশমা পরা লম্বা বাবু”!আজও নাকি সে এই নাম ধরে আমার কথা কারও কারও কাছে জিজ্ঞেস করে।
কিন্তু মজার বিষয় হল সেই লোকটি হিন্দু।সেই হিন্দু লোকটি একদিন আল্লামা সাঈদীকে নিয়ে প্রশ্ন করে বসল।তিনি বললেন,আচ্ছা বাবু!সাঈদী সাহেব এতো ভাল একজন মানুষ।শুনছি ওয়াজ করতো,তাহলে তোমার আল্লাহ কেন তাকে সাহায্য করছে না?কিন্তু তারপরেও তো দেখি সে হাতে করে কুরআন শরীফ নিয়ে থাকে।
আমি বললাম,আপনাকে একটা ঘটনা বলি শুনুন!
অনেকদিন আগে দুনিয়াতে একজন মানুষ ছিলেন যার নাম ছিল আইয়ুব (আঃ)।তাঁর বিশাল সম্পত্তি ছিল।তাঁর কয়েকজন সন্তান আর স্ত্রীকে নিয়ে সুখেই দিন পার করতেছিলেন।কিন্তু হঠাৎ কয়েক দিনের ব্যবধানে তাঁর সন্তানরা অজানা একটা রোগে মারা যায়।সেই আইয়ুব (আঃ) ও অজানা একটি রোগে আক্রান্ত হন।তাঁর শরীর পঁচে র্দুগন্ধ বেরুতে শুরু করল।তখন সমাজ তাঁকে তাঁর স্ত্রীসহ এক ঘরে করে দিল।
দির্ঘদিন এমন দুঃখ,কষ্ট এবং যন্ত্রনাময় অবস্থায় থাকার পর একদিন তাঁর স্ত্রী সহ্য করতে না পেরে বললেন,“আর কতদিন এই দুর্দশা চলবে? কখন এই দুঃসময় শেষ হবে? কেন আপনি আপনার আল্লাহকে বলছেন না,এই কষ্ট থেকে আমাদের মুক্তি দিতে?
আইয়ুব (আঃ) এই কথা শুনে রাগান্বিত হয়ে বললেন,“এই কষ্টের আগে আমরা কতোদিন সুখে শান্তিতে বসবাস করেছি? তাঁর স্ত্রী জবাবে বললেন,“৭০ বছর”।
আইয়ুব (আঃ) বললেন,“আর আল্লাহ কতোদিন ধরে আমাদেরকে এই পরীক্ষায় ফেলেছেন?তাঁর স্ত্রী জবাবে বললেন,“৭ বছর”।
তখন আইয়ুব (আঃ) বললেন,৭০ বছর ধরে আমরা সুখ ভোগ করার পর মাত্র ৭ বছর আল্লাহ আমাদের পরীক্ষা নিয়েছেন।এই বিষয়ে আল্লাহর কাছে নালিশ করতে আমার লজ্জা করছে।
এর পর দির্ঘ ১৮ বছর এই রোগে ভোগার পর তিনি আল্লঅহর কাছে দোয়া করলেন।আর সেই দোয়াটি হল,“আমি দুঃখ কষ্টে পড়েছি,আপনি তো দয়ালুদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু”।[সূরা আম্বিয়া-৮৩]।
আর এই দির্ঘ সময় ধৈর্য ধরার কারনে,আল্লাহপাক আবারও আইয়ুব (আঃ)কে তাঁর হারানো সম্পদ এবং সন্তানদের ফিরিয়ে দেন।
ঠিক তেমনি আল্লামা সাঈদী হয়তো ৭ অথবা ৮ বছর থেকে জেলে বন্দি আছেন।কিন্ত এর আগে তিনি ৫০ বছর নির্বিগ্নে গোটা বিশ্বে আল্লাহর বাণী প্রচারের কাজ করেছেন। ৫০ বছর তিনি যে নেয়ামত ভোগ করেছেন তা মাত্র ৭ বছরের কষ্টে ভুলে যাবেন?হয়তো এই কষ্টের পরই তাঁর জন্য অপেক্ষা করছে অনন্ত সুখের জীবন।(ইনশা আল্লাহ)
আর আল্লাহ এ ব্যপারে আগেই সতর্ক করেছেন,“নিশ্চয়ই তোমাদেরকে পরীক্ষা করা হবে তোমাদের সম্পদ ও জীবনের দ্বারা..”[সূরা আল ইমরান-১৮৬]
আজ ঈমানের সেই অগ্নি পরীক্ষার সম্মুখিন হয়েছেন,আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী।আর আমরা তাঁর জন্য দোয়া করি, আল্লাহপাক তাঁকে যেন হযরত আইয়ুব (আঃ) এর মত ধৈর্য ধরার তৌফিক দান করেন।
বিষয়: বিবিধ
১১৩৭ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আলহামদুলিল্লাহ....
আলহামদুলিল্লাহ....
লিখাটা খুব ভাল লাগলো, ধন্যবাদ আপনাকে
মন্তব্য করতে লগইন করুন