“সব মাছই গুঁ খায় কিন্তু চ্যাং মাছের দোষ হয়”।(চ্যাং মাছের অবস্থায় মুসলিমরা)
লিখেছেন লিখেছেন শাহমুন নাকীব ফারাবী ২৭ অক্টোবর, ২০১৫, ০৮:৪৯:১৬ রাত
“ইরাক যুদ্ধের জন্য আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত”।-সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার।Click this link
অবশেষে ১২ বছর ধরে লক্ষ লক্ষ মানুষ হত্যা করার পর দুঃখ প্রকাশ করলেন,খৃষ্টান ধর্মানুসারী টনি ব্লেয়ার! কিন্তু এর জন্য তাকে খৃষ্টান জঙ্গি বলা হবে না। কিংবা পত্রিকায় হেডলাইন হবে না,খৃষ্টান জঙ্গিদের চাপিয়ে দেয়া ইরাক যুদ্ধের কারনে আজ আইএস এর উত্থান হয়েছে।
কিন্তু শুধুমাত্র নিজেদের ভূ-খন্ড রক্ষার জন্য আফগান তালেবানরা যুদ্ধ করলে তা হয়ে যায়,ইসলামী জঙ্গিবাদ। ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী জনতা দখলদার ইহুদিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলে,তা হয়ে যায় মুসলিম কতৃক সন্ত্রাস! বাহ! বাহ! কি চমৎকার!
স্বৈরশাসক হিটলালের তথ্য উপদেষ্টা ছিলেন,গোয়েবলস নামক জনৈক ব্যক্তি। গোয়েবলস হিটলারকে পরামর্শ দিলেন,‘আপনি টিভি, রেডিও এবং পত্রিকাগুলোতে আপনার শত্রু পক্ষের বিরুদ্ধে ন্যাক্কারজনক সংবাদ প্রচার করুন। হোক না তা মিথ্যা! কিন্তু একটা মিথ্যা বার বার প্রচারিত হলে তা এক সময় সত্য বলেই প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়”। আর এ কারনেই গোয়েবলস কে মিথ্যাচারের জনক বলা হয়।
আজকে বিবিসি,সিএনএন,রয়টার্স,এবিসি,ফক্স নিউজ তাদের সংবাদ স্ক্রলে বার বার মুসলিমদের সন্ত্রাসী আর জঙ্গি বলে প্রচার করছে। সেই গোয়েবলসীয় কায়দায় মিথ্যাটা এতো বেশি প্রচারিত হয়েছে যে, আজকের অনেক তরুন নামধারী মুসলিম মনে করে ইসলাম সন্ত্রাসবাদের ধর্ম! তারা তাদের বিধর্মী বন্ধুদের খুশি করতে গিয়ে বলে,ইসলামে কোন যুদ্ধের জায়গা নেই! ব্লা!ব্লা!
রাসূল (সাঃ) আব্দুল্লাহ ইবনে জাহশ (রাঃ) এর নেতৃত্বে ১২ সাহাবীকে কুরাইশদের একটি খাদ্যবাহী কাফেলাকে অবরোধ করতে পাঠান। সাহাবীগন নাখলাহ নামক স্থানে কুরাইশদের সেই দলটিকে পেয়ে যায়। কুরাইশদের সেই দলে এমন কয়েকজন ব্যক্তি ছিল,যারা মুসলিমদের উপর বর্বর নির্যাতন চালিয়েছে। যারা মুসলিমদের ধন সম্পদ লুট করে নিয়েছে। সাহাবীরা কাফেলাটিকে আক্রমন করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করলেন। কিন্তু সেই সময়টা ছিল রজম মাস। যুদ্ধ বিগ্রহ নিষিদ্ধের মাস। কিন্তু সাহাবীরা ইতিহাস এবং পরিস্থিতির বিচারে নিজেদের সিদ্ধান্তে অটল থাকলেন। তাঁরা কাফেলাটিকে আক্রমন করে,তাঁদের হারানো সম্পদ উদ্ধার করে ফিরে আসেন।
নিষিদ্ধ মাসে আক্রমন করার কারনে,কাফেররা মুসলিমদেরকে বর্তমানের ন্যায় সন্ত্রাসী,জঙ্গি বলে গালি দিতে শুরু করল।আর এহেন অবস্থায় মুসলিমদের ভিতরেও দ্বিধাবিভক্তি শুরু হয়ে গেল।কেউ কেউ বললেন,এটা করা মোটেও উচিত কাজ হয় নি।রাসূল (সাঃ) দুঃশ্চিন্তায় পড়ে গেলেন। তখন আল্লাহ পাক সূরা বাকারার ২১৭ নাম্বার আয়াত নাযিল করেন এবং এর মাঝেই সিদ্ধান্ত দিয়ে দেন।[সূত্রঃপ্রাচীর]
“ সম্মানিত মাস সম্পর্কে তোমাদের কাছে প্রশ্ন করে যে,তাতে যুদ্ধ করা কেমন? বলে দাও এতে যুদ্ধ করা ভীষণ বড় অপরাধ। আর আল্লাহর পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরী করা ও কুফরী করা,মসজিদুল হারাম যাওয়া পথে বাধা দেওয়া এবং সেখানকার অধিবাসীদেরকে বহিষ্কার করা,আল্লাহর কাছে তার চেয়েও বড় পাপ। আর ধর্মের ব্যপারে ফিতনা তৈরী করা মানুষ হত্যা অপেক্ষাও মহাপাপ”।[সূরা বাকারাঃ২১৭]
“60 minutes" নামের একটি অনুষ্ঠানে ম্যাডেলিন অলব্রাইট(আমেরিকার প্রথম মহিলা সেক্রেটারি অব ষ্টেট) আমেরিকার পক্ষ থেকে বলেন,“উপসাগরীয় যুদ্ধের পর ইরাকে আরোপিত অবরোধের কারনে,৫ লক্ষ ইরাকি শিশু নিহত হওয়াটা প্রাপ্য ছিল”।
কলম্বাস আমেরিকার আসার পূর্বে নেটিভ আমেরিকানদের সংখ্যা ছিল প্রায় ১ কোটি।কিন্তু ইউরোপিয়ান খৃষ্টান হানাদাররা তাদের কচুকাটা করে ১০ লক্ষতে নামিয়ে এনেছে।
হিরোসিমা নাগাসিকায় পারোমানিক বোমা হামলা চালিয়ে ১৫০ লক্ষ মানুষ হত্যা করেছিল,আমেরিকান খৃষ্টানরা। এতোকিছুর পরও খৃষ্টান বা ইহুদিরা জঙ্গি নয়।
কিন্তু নিজেদের জীবন রক্ষার্তে এবং নিজেদের ভূমি রক্ষার্থে মুসলিমরা যুদ্ধ করলেই তা হয়ে যায় জঙ্গিবাদ ।ফলাফল দাঁড়াল,“সব মাছই গুঁ খায় কিন্তু চ্যাং মাছের দোষ হয়”।
বিষয়: বিবিধ
১২০২ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন