হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি’মাল ওয়াকিল নি’মাল মাওলা ওয়া নি’মান নাসির
লিখেছেন লিখেছেন শাহমুন নাকীব ফারাবী ২৬ অক্টোবর, ২০১৫, ০৮:৩৯:১৬ রাত
ডিবির হেডকোয়ার্টারের গোপন সেলে অবচেতন এর মত ঘুমিয়ে আছে,আশরাফ সাহেব(ছদ্মনাম)!কিছুক্ষন পর জ্ঞান ফিরলে সারা শরীরে ব্যথা অনুভব করতে থাকে!স্বাভাবিক হতে কিছুক্ষন সময় লাগে আশরাফ সাহেবের!কিছুক্ষন পর সব কথা মনে পড়তে শুুরু করে।
বাসে করে ঢাকায় যাচ্ছিলেন আশরাফ সাহেব!যমুনা ব্রিজ পার হবার পর কয়েকজন লোক তাদের বাসটাকে থামাতে বলে!তারপর সেই লোকগুলো আশরাফ সাহেবকে তাদের গাড়িতে উঠতে বলে!আশরাফ সাহেব তাদের পরিচয় জানতে চাইলে বলে,আমরা প্রশাসনের লোক!
তারপর সারারাত ধরে আশরাফ সাহেবের উপর চলে অমানুষিক নির্যাতন।নির্যাতন এর এক পর্যায়ে সেগুন কাঠের লাঠির একটি বাড়ি এসে পড়ে তার কপালে!প্রচন্ড রক্তক্ষরন আর অস্বাভাবিক নির্যাতনের কারনে কিছুক্ষনের মধ্যেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন আশরাফ সাহেব!এরপর তারা আশরাফ সাহেবকে এই সেলে রেখে যায়!
জ্ঞান ফেরার পর তার চোখ কালো কাপড় দিয়ে চোখ ভেঁধে দেয়,ডিবির সদস্যরা!তারপর হাত ধরে তাকে টানতে থাকে!টানতে টানতে তাকে নিয়ে গাড়িতে তোলা হল!গাড়ির অতিরিক্ত ঝাঁকুনি আর শরীর দুর্বলতার কারনে আবারও জ্ঞান হারিয়ে ফেললেন আশরাফ সাহেব!যখন তার জ্ঞান ফিরল,তখন তিনি নিজেকে একটি খুপরি ঘরে আবিষ্কার করলেন!সে ঘরে কোন জানালা নেই আছে শুধু একটি এটাষ্ট বাধরুম!
বেশ মোটাতাজা এক লোক এসে আশরাফ সাহেবকে বলল,আপনাকে কিছুদিন এখানেই থাকতে হবে!একথা বলে তার হাত পিছন দিক দিয়ে হ্যান্ডকাপ পরিয়েে এবং চোখ দুটি কালো কাপড় দিয়ে বেঁধে চলে গেল!শুধুমাত্র খাবারের সময় তার দুই হাত এবং চোখের বাঁধন খুলে দেয়া হয়!
এভাবে তিনদিন চোখ বাঁধা অবস্থায় থাকার কারনে আশরাফ সাহেবের প্রচন্ড চোখ ব্যথা করতে থাকে!সেই মোটাতাজা লোকটি আবারো খাবার দিতে আসলে,আশরাফ সাহেব তাকে অনুরোধ করেন,যেন তার চোখ বেঁধে রাখা না হয়!সেই লোকটি আশরাফ সাহেবের বুকে লাত্থি দিয়ে বলে,মামা বাড়ির আবদার পাইসোস!
আশরাফ সাহেব নিজের অসহায়ত্বের কথা মহান আল্লাহপাকের কাছে পেশ করলেন!চোখের ব্যথা সইতে না পেরে,দু হাত তুলে আল্লাহর কাছে এই মানুষরূপী জানোয়ারটির হাত থেকে রেহাই চাইলেন!
এরপর প্রায় দুই সপ্তাহ কেটে গেল,সেই লোকটি আর আসে না!আর একজন লোক খাবার দিতে আসে,সে তুলনামূলক দয়াবান!আশরাফ সাহেবের চোখ বাঁধে না হাতেও হ্যান্ডকাপ পরিয়ে রাখে না।
একদিন সেই লোকটি বলে,আচ্ছা ভাই! আপনি কি ঐ মোটাতাজা লোকটার উপর কোন কারনে নাখোশ!আশরাফ সাহেব তাকে পুরো ঘটনা খুলে বলে!তখন সেই লোকটি বলে,ভাই আপনি ওনাকে ক্ষমা করে দেন!ঐ লোক আজ দুই সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে আছেন!বাঁচবে বলেও মনে হয় না!(আল্লাহু আকবার)
হেবা দাবাগ তার “just five minutes" তার মায়ের কারাবন্দি জীবনের একটি অভিজ্ঞতা বর্ননা করেন।কারাগারে হেবা দাবাগের ব্যাপারে তাঁর মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল।
তারা হেবা দাবাগের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন,“আমি কেবল এতোটুুকু জানি যে, আমি তাকে ঘর থেকে মসজিদ আর মসজিদ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবার অভ্যাস করিয়ে বড় করেছি”।এই উত্তরে তারা সন্তুষ্ট হতে পারে নি!সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা সিপাহীকে, হেবা দাবাগের আম্মাকে টর্চার করার নির্দেশ দিলেন!তখন তিনি বললেন,একি!তুুমি তোমার মায়ের বয়সী মহিলাকে টর্চার করার হুকুম দিচ্ছো!তিনি বলেন,আমাকে কাগজ কলম দাও!তোমাদের বিরুদ্ধে আমি অভিযোগ দায়ের করব!তখন সেই কর্মকর্তা তাচ্ছিল্ল করে বলে,তোমার রিপোর্ট গ্রহন করা হবে না।তখন হেবার আম্মা বলেন,“তবে আমি একমাত্র আল্লাহর কাছে আমার অভিযোগ তুলে ধরব।বরং তিনিই সর্বোত্তম বিচারক!এই ঘটনার দুই মাস পর সেই কর্মকর্তা রোড একেসিডেন্টে নিহত হন”।(আল্লাহু আকবার)
উপরোক্ত ঘটনাদুটি আমাদের কে মনে করিয়ে দেয়,“
হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি’মাল ওয়াকিল নি’মাল মাওলা ওয়া নি’মান নাসির”।
(আল্লাহই উত্তম অভিভাবক, উত্তম রক্ষাকারী ও সহায়তাকারী। আর আমাদের হেফাজত করার জন্য তিনিই যথেষ্ট)
বিষয়: বিবিধ
২২৩৬ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অত্যাচারিরা সবসময় মনে করে যে তারা অমর। কিন্তু তাদেরও একদিন জবাবদিহি করতে হয়।
যথার্থ বলেছেন, সহমত
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ,
মন্তব্য করতে লগইন করুন