সন্ত্রাসবাদের অপরনাম ইসলাম!আসলেই কি তাই?
লিখেছেন লিখেছেন শাহমুন নাকীব ফারাবী ১৮ অক্টোবর, ২০১৫, ১০:১৪:০১ রাত
পত্রিকার পাতা উল্টাতে গিয়ে একটি খবরে চোখ আটকে গেল!ব্রিটেনে হিজাব পরিধানকারী মুসলিম নারীকে লাঞ্জিত করেছে,এক খৃষ্টান নারী!সেই খৃষ্ঠান নারী,মুসলিম বোনটিকে বলতেছিল,“তোমার হিজাব খুলে ফেল।তোমার হিজাবের নিচে বোমা লুকানো আছে।বোমা মেরে মানুষ মারতে চাইলে,নিজের দেশে চলে যাও।আমাদেরকে শান্তিতে থাকতে দাও”।
আজকে বিশ্বের দিকে তাকালে মনে হবে,সারাবিশ্বের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের জন্য শুধুমাত্র মুসলিমরাই দায়ী।আর এই সন্ত্রাসবাদকে প্রতিহত করতে,পশ্চিমারা তথা খৃষ্টানরাসহ অন্যান্যরা বদ্ধ পরিকর।কিন্তু কথায় আছে,“সরীষার ভিতরেই ভূত থাকে”।
১৯৯০ সালে বসনীয়ার যুদ্ধের কথা ইতিহাসে অমর হয়ে আছে।বসনীয় যুদ্ধনিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের “wittenberg university" এর ফ্যাকাল্টি মেম্বার ও বিখ্যাত আমেরিকান গবেষক,‘কেইথ ডাউড’ এই রিপোটর্টি প্রকাশ করেন।
সেই গবেষনায় পাওয়া যায়,“সাবির্য়ার অথোর্ডক্স চাচের্র পাদ্রীরাই খৃষ্ট ধর্মকে ব্যবহার করে,সার্বিয় জনগনকে মুসলিমদের বিরূদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলে।তারা সার্বিয় খৃষ্টানদের নিয়মিত আর্শীবাদ করতে বেরিয়ে যেত এবং পুন্যলাভের উদ্দেশ্যে মুসলিমদের হত্যা করতে উৎসাহিত করত।আর এই পাদ্রীদের উৎসাহে উদ্বুদ্ধ হয়ে,সার্বিয় জনগন এবং খৃষ্টান সৈন্যরা পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে নিকৃষ্টতম গনহত্যায় ঝাপিয়ে পড়ে”।
১৯৯৪ সাল!ইতিহাসের পাতায় আরও একটি কালো অধ্যায়।আফ্রিকান দেশ হুতি এবং তুতসি উপজাতিদের মধ্যে একটি ভয়াবহ দাঙ্গার ঘটনা ঘটে।উক্ত দাঙ্গায় সাধারন জনগনকে উস্কে দিয়ে গনহত্যা চালাতে উদ্বুদ্ধ করে,খৃষ্টান পাদ্রীরাই।১৯৯৬ সালে রুগান্ডার সামরিক আদালত ‘ফাদার উয়েনকেসাস মুনসেকাভা’ কে ধর্ষন এবং হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করে।আর সেই সামরিক আদালত ফাদারের অনুপস্থিতে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করে।কিন্তু তার আগেই সেই খৃষ্টান পাদ্রী ফ্রান্সে পালিয়ে যান।
মধ্য আফ্রিকায় আজও চলছে মুসলিম নিধন।কিন্তু সেগুলোর একটিও আজ কোন মিডিয়ায় পাওয়া যায় না।সর্বশেষ ২০১৪ সালের ২৯ এপ্রিল “নিউ ইয়র্ক টাইমস” মধ্য আফ্রিকার মুসলিমদের নিয়ে একটি রিপোর্ট করে।
বিশ্বে সন্ত্রাসবাদ ও এর বিভিন্ন দিক নিয়ে সম্প্রতি আমেরিকান গবেষক ‘ডুয়ান কোলি’ একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেন।সেই রিপোর্ট অনুসারে পাওয়া যায়,বিগত শতাব্দিতে গোটা বিশ্বে মুসলিম সন্ত্রাসীদের হাতে প্রায় দুই মিলিয়ন বা ২০ লক্ষ লোক নিহত হয়েছে।আর এর বিপরীতে খৃষ্টানসহ অন্যান্য ধর্মালম্বীদের হাতে প্রায় একশত মিলিয়ন বা দশ কোটি মানুষ নিহত হয়েছে।এর মানে দাড়াল,বিগত বিংশ শতাব্দিতে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে সর্বমোট ১০ কোটি ২০ লক্ষ মানুষ নিহত হয়েছে।যার ২% সংঘঠিত হয়েছে মুসলিমদের দ্বারা আর বাতবাকী ৯৮% হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে খৃষ্টানসহ অন্যান্য ধর্মালম্বীরা।(সূত্রঃ বৃটেন টাইমস সাময়িকী)
আজ শুধুমাত্র মিডিয়া অপপ্রচারের কারনে,বিশ্বের পুরো সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের ভার মুসলিমদের একার বহন করতে হচ্ছে।আর এর জন্য দায়ী আমরা মুসলিমরাই।আজ আমরা পড়াশুনা থেকে অনেক দূরে।নিজের একাডেমিক পড়াশুনার বাহিরে,আর কোন পড়াশুনা করবার সুযোগই নেই।
কয়েকদিন আগে কয়েকজন বন্ধুসহ গল্প করতেছিলাম।তারা অধিকাংশরাই প্রাইভেট ভার্সিটির ষ্টুডেন্ট।প্রসঙ্গক্রমে একজন বলে উঠল,ইসলামে জিহাদের কোন অস্তিত্বই নেই(!)ওনাকে বললাম,কোরআন কতবার খতম দিয়েছেন।বোখারী শরীফ কিংবা সিহাহ সিত্তাহ হাদীসগুলোর নাম কোন দিন শুনেচেন কি?তাকে বললাম,কান খুলে শুনে রাখুন,পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক ৪৩ বার জিহাদের কথা উল্লেখ করেছেন।এটাই হল আজকের মুসলিম তরুনদের অবস্থা!
রাত হলে মোবাইলে,কিংবা ভাইবার আর হোয়াটসএপে ফিসফিসানি আর দিন হলে পার্কগুলোতে গার্লফ্রেন্ডদের হুকুম তালিম করলে,তাদের কাছে এর থেকে বেশি কিছু আশা করাটাই বোকামী!
প্রিয় মুসলিম তরুন ভাই ও বোনেরা!কতোদিন আর পাশ্চাত্যের গোলামী করবেন?এবার নিজের সংস্কৃতির দিকে ফিরে আসুন।নিজেকে একজন মুসলিম মিডিয়া হিসেবে প্রকাশ করুন।আপনার মুখ দিয়ে ইসলামরে সৌন্দর্য এবং মহত্ব প্রকাশে এগিয়ে আসুন।নিজের ফেসবুক ওয়ালটাকে সেলফিতে আর পাগলদের মত অহেতুক বিষয় দিয়ে ভরিয়ে না রেখে,ইসলামের প্রচোরে এগিয়ে আসুন।বাতিলের মুখটাকে আপনার জ্ঞান এবং গরীমা দিয়ে বন্ধ করে দিন।আর এর জন্য আপনাকে আল্লাহপাকের কালাম আল কোরআন এবং রাসূল (সাঃ) র হাদিসের পাশাপাশি সবধরনের বইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে হবে।
প্রিয় বোনরা,আপনাদের মেধা এবং মননসীলতাগুলোকে ষ্টার জলসা এবং জি বাংলার মাঝে বিলিন করে দিবেন না।আপনারা হবেন,আমাদের আগামী প্রজন্মের মা।আপনার জন্য অপেক্ষা করছে,জয়নাব আল গাজ্জালীর সেই সংগ্রাম মুখর জীবন।আপনার জন্য অপেক্ষা করছে মজলুম আফিয়া সিদ্দিকীর জীবনাচারন।আপনি তাদেরকে গড়ে তুলবেন,পরিপূর্ন ইসলামী চেতনা এবং জিহাদী বাসনায়।তারা হবে আমাদের আগামীর,মুহাম্মাদ ইবনে কাসিম কিংবা সালাউদ্দিন আউয়ুবী অথবা নূর উদ্দিন জঙ্গির মত মুসলিম সেনাপতি।
বিষয়: বিবিধ
১১৬৬ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ভিডিওটা দেখেছি!
"সভ্য" যাত্রীদের থেকেও প্রতিবাদ দেখলামনা!!
মন্তব্য করতে লগইন করুন