বিদেশে গিয়ে হিন্দুরাও গরু গোশত খায়.....................।

লিখেছেন লিখেছেন শাহমুন নাকীব ফারাবী ০৪ অক্টোবর, ২০১৫, ১০:১২:৫৩ রাত

বিদেশে গিয়ে হিন্দুরাও গরু গোশত খায়!- বিহারের সাবেক মুুখ্যমন্ত্রী এবং আর জেডি প্রধান লালু প্রসাদ যাদব একথা বলেছেন।

তার এই বক্তব্য শোনার পর,আমার বড় বোনের বিয়ের একটি ঘটনা মনে পড়ে গেল।আমার বড় দুই বোনেরই বেশ ঘটা করে বিয়ে হয়েছিল।আশেপাশের কয়েক মহল্লার মানুষকে দাওয়াত করা হয়েছিল।

আমাদের বাড়ির সামনে প্রায় ১৪ টি সাঁওতাল পরিবার বাস করে।আব্বা তাদেরকে টাকা দিয়ে দিলেন।আর তাদের প্রয়োজন মত খরচ করে নিতে বললেন।কিন্তু বাঁধ সাধল হিন্দু অতিথিদের নিয়ে।তাদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করাটা বেশ কঠিন এবং ঝামেলা প্রবন।তাই কয়েকজন কে দাওয়াত করা হল।তাদের মধ্যে ছিলেন,আমার এক কলেজ শিক্ষক এবং আমাদের দোকানের কয়েকজন হিন্দু লেবার।তারা দির্ঘদিন থেকে দোকানে কাজ করছে।তাই তাদের কে উপেক্ষা করা কোন ভাবেই সম্ভব হল না।

আমার স্যার বিয়ে বাড়িতে আসার পর,আমাকে আলাদা করে ডেকে নিলেন আর মুখটা কাচুমাচু করে বললেন,“আমাকে গরু গোশত খাওয়াবি না”(!) আমি বললাম,স্যার আপনি মসকরা করতেছেন!স্যার চেতে গিয়ে বললেন,আমার জন্য এক বাটি গোশত নিয়ে আয়।আমি যন্ত্রের মত হুকুম পালন করলাম।তারপর দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে স্যারের গরু খাওয়া অবলোকন করলাম(!)

এরপর আমাদের দোকানের লেবাররা আসল।এবার তারা, বড় মামার কাছে গরু গোশত খাওয়ার আবদার করল!বড় মামা চোখ বড় বড় করে তাদের দিকে হা করে তাকিয়ে থাকলেন!তারপর বললেন,তোদের জাইতপাইত সব আটালে(সিঙ্গায়) উঠেছে নাকি রে!তারপর মামা তাদেরকে তিন বাটি গোশত এনে দিলেন।আর আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পৃথিবীর আশ্চ্যর্য জনক ঘটনাগুলোর একটি উপভোগ করলাম।

প্রখ্যাত লেখক ডিএনঝা তাঁর স্বরচিত বই“দি মিথ অব দ্যা হলি কাউ” এ দাবি করেন,“সনাতন ধর্মালম্বীরাও প্রাচীন কালে গরু গোশত খেত”।

আরও একটু ভিতরে প্রবেশ করলে দেখা যায়,হিন্দুদের বেদ প্রধানত চারটি।কিন্তু হিন্দু সমাজে সাম,ঋক এবং যজুর্বেদের প্রচলন পাওয়া যায়।অথর্ববেদ এর ব্যবহার বর্তমান হিন্দু সমাজে পাওয়া যায় না। এর কারন অনুসন্ধান করতে গিয়ে থলের বিড়ালের অজানা রহস্যের কথা জানা যায়!

“রক্তীদেবের রাজ্যে অল্পসংখ্যক গো হত্যা করা হয়েছিল।নিজেদের দলভুক্ত লোকের ভাগ্যে গো মাংস কম হবার আশংকায় অথর্ব ঋষি বেশ কিছুটা গো মাংস চুরি করে সরিয়ে রেখেছিলেন।খাওয়া দাওয়া শেষে প্রচলিত রীতি অনুসারে ভুক্ত গরু গুলোকে পুনরুজ্জীবিত করতে ব্যর্থ হওয়ায় সকলে হতবাক হয়।এর কারন অনুসন্ধান করতে গিয়ে,অথর্ব ঋষির গো মাংস চুরি করবার ঘটনা প্রকাশ পেয়ে যায়।তখন অথর্ব ঋষি,চুরি করা গো মাংস এবং অথর্ব বেদ সঙ্গে নিয়ে পালিয়ে যান।সেই দিন থেকে সনাতন ধর্মে গো হত্যা নিষিদ্ধ করা হয়”।[সূত্রঃপদ্মপুরানঃসৃষ্টি খন্ড ১ম অঃ]

স্বয়ং দেবতারা করবে গরু গোশত চুরি আর তার পাপের ফল ভোগ করবে অনুসারীরা!হায় সেলুকাস!

তোমাদের দেবতারা গো মাংসের লোভ সামলাতে ব্যর্থ হয়,সেখানে আখলাকদের দোষ কি ভাই!

ভারতের আরএসএস কে বলি আগে তোমাদের দেবতাদের সামলাও!কেননা তোমাদের দেবতাদের মত,আজকের হিন্দুরাও চুপি চুপি গরু গোশত দিয়ে উদর ভর্তি করছে!

বিষয়: বিবিধ

১১৩০ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

344498
০৫ অক্টোবর ২০১৫ দুপুর ১২:৩৭
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : আমার এক হিন্দু সহকর্মির স্বামি প্রতিবছরই কোরবানির পরদিন বাসায় উপস্থিত হতেন এই জন্য। এখন অস্ট্রেলিয়াতে এবং প্রায় প্রতিদিনই নাকি এই খাদ্য দিয়েই খান! একবার এক অনুষ্ঠানে আমাদের সাথে বসে আরামে গরুর গোস্ত খাওয়ার সময় বেচারা খেয়াল করেননি যে তার শাশুড়ি তাকে লক্ষ করছেন!!!

সাঁওতাল দের বিষয়টি ভাল লাগলনা। উনাদের মনে হল সামাজিক কারনেই দাওয়াত করা হয়নি এটাও এক ধরনের বর্ণ বৈষম্য। সাওতাল রা যতটুক জানি সব প্রানিই খায়।
344518
০৫ অক্টোবর ২০১৫ দুপুর ০৩:১২

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File