শুধু মা এবং সৎ মায়ের মাঝে আজও এতোটাই পার্থক্য কেন?
লিখেছেন লিখেছেন শাহমুন নাকীব ফারাবী ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ১০:২৫:২৯ রাত
অনেকদিন আগের ঘটনা!
দখন আমি ক্লাস টেনে পড়ি!একদিন অতিরিক্ত গরমের কারনে কোচিং এ জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যাই!তারপর আমার বন্ধুরা আমাকে বাড়িতে পৌছে দেয়!আমাকে এ অবস্থায় দেখে আম্মা হতভম্ব হয়ে যান!আম্মা কাঁদতে কাঁদতে একদমই অস্থির!বেশ কিছুক্ষন হয়ে যাবার কারনে আমি প্রায় সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক কথা বলতেছিলাম!কিন্তু আম্মা, অনেকটা জোর করে আমাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলেন!
এর ১ বছর পর,রমজান মাসে আমি প্রচন্ড অসুস্থ হয়ে পড়লাম!আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলো!আব্বা আম্মা দুজনেই আমার পাশে ২৪ ঘন্টা থাকতেন!এরপর আরো উন্নত চিকিৎসার জন্য আমাকে রংপর শহরে নেয়া হলো!
রমজান মাস!আব্বা আম্মার সেহেরি করাটা অনেক কষ্টকর হয়ে গেল!তবুও সারাক্ষন আমার পাশে বসে দোয়া পড়তেন!যখন আমার জ্ঞান ফিরত তখন দেখতাম,আম্মা আমার বুকে হাত রেখে দোয়া পড়ছেন আর কাঁদতেছেন!মাঝ রাতে চোখ মেলে চারদিকে তাকালে দেখতাম আম্মা তাহাজ্জুদের নামায পড়ে জায়নামাযে বসে কাঁদতেছেন!
আর সেকারনেই ইসলাম মাকে এতো উচ্চ সম্মানে ভূষিত করেছে!
“হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন,এক ব্যক্তি রাসূল (সাঃ) কাছে উপস্থিত হয়ে জানতে চাইলেন,হে আল্লাহর রাসূল!মানুষের মধ্য থেকে আমার নিকট থেকে সবচেয়ে বেশি খেদমত পাবার অধিকার কে রাখে? আল্লাহর রাসূল বললেন,তোমার মায়ের!লোকটি আবার জানতে চাইলেন,তারপর কার? হুজুর (সাঃ) বললেন,তোমার মায়ের!লোকটি আবারও জানতে চাইলেন,তারপর কার?রাসূল (সাঃ) বললেন,তোমার মায়ের!লোকটি আবারো একই প্রশ্ন করলেন,তারপর কার?রাসূল (সাঃ) বললেন,তোমার পিতার”।[বোখারী ও মুসলিম]
সিমেটিক ধর্মগুলোর মধ্যে একমাত্র ইহুদী ধর্মেই নারী জাতিকে ছোট করা হয়েছে!
পৃথিবীর সব মায়েরই এমন বৈশিষ্ঠ্য দেখা যায়,একমাত্র সৎ মা ছাড়া!আমি সেসব সৎমায়েদের কথা বলছি,যারা মা জাতিটিকে কলঙ্কিত করেছেন!
একটি মা হারা পরিবারের কথা বলছি!ছোট ছোট বাচ্চাদের দেখাশুনা করার জন্য বাবা নতুন একটি বিয়ে করলেন!বাচ্চারা নতুন আম্মুকে আপন করে নিয়ে,পরম ভালবাসা নিয়ে আম্মু আমু বলে ডাকলেও সেই সৎ মা কখনো তাদের ডাকে সাড়া দেয় না!প্রতি উত্তরে আসে, কে তোমার আম্মু?
নিজের সন্তানকে না খাইয়ে কোন মায়েই রাখতে পারবেন না!একমাত্র সৎ মা ছাড়া!সকাল বেলা উঠে যখন বলে, আম্মু ক্ষুধা লেগেছে,খাবার দেন!তখন সে বলে,নিজের খাবার নিজে বানিয়ে খাও!এতোটুুকুন বাচ্চা কি করে নিজের খাবার বানিয়ে খাবে?
ভরদুপুর!মাথার উপরে গনগনে রোদ!কোন মা তার ৪-৫ বছর বয়সী সন্তানকে বলবেন না,যাও তো রোদে গিয়ে ধান শুকাও!কিন্তু একমাত্র সৎ মা বলেই একথা বলতে পারেন!এ মায়ের কেমন মানবিকতা?
ছোট বাচ্চারা বৃষ্টি দেখলে স্বাভাবিক কারনেই আনন্দে উদ্বেলিত হয়!সঙ্গে যদি খেলার সাথীরা থাকে তবে সেদিন বৃষ্টিতে ভিজতে কি যেন আনন্দ লাগে!কিন্তু বৃষ্টি শেষে বাড়ি ফিরে সৎ মা যখন তার ভেজা পিঠে,ঠাস!ঠাস!করে থাপ্পড় দিয়ে হাতের পাঁচ আঙ্গুল বসিয়ে দেন,তখন তাঁকে মা বলে স্বীকৃতি দিতে কোথায় যেন বাঁধে!
প্রিয় মা!আপনাদের অবস্থান ভেদে এমন বৈচিত্র্যময় চরিত্র কখনোই কাম্য নয়।আপনি ভুলে যাবেন না,আপনারও অকালে মৃত্যু হতে পারে!তখন আপনার নিজের সন্তানকেও কোন না কোন নারী এভাবেই নির্যাতন করবে!তখন সহ্য করতে পারবেন তো?
বিষয়: বিবিধ
১৭৩২ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন