এক ফিলিস্তিনী নারীর ঘটনা এবং আমাদের অনুপ্রেরনা......।
লিখেছেন লিখেছেন শাহমুন নাকীব ফারাবী ২৮ আগস্ট, ২০১৫, ০৯:৫২:৩৫ রাত
গতবছর ইসরাঈলী দখলদার বাহিনী যখন “অপারেশন প্রটেসটিভ এজ” নামে ফিলিস্তিনীদের উপর অন্যায়ভাবে গনহত্যা চালাচ্ছিল, তখনকার একটি ঘটনা!
গাজার একটি প্রাইমারী স্কুলে চাকরি করতেন রেহেনা জাফরিন (ছদ্মনাম) নামের এক ফিলিস্তিনী মহিলা!স্বামী এবং চার বছরের এক পুত্র সন্তান নিয়ে বেশ সুখেই তাঁদের দিন যাচ্ছিল!তাঁর স্বামীও স্থানীয় একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক!
যুদ্ধ শুরু হবার তাদের দুজনের স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ হয়ে যায়!ইসরাঈলী দখলদার বাহিনীর কারনে রেহানার স্বামী ঘর থেকে বের হতে পারতেন না!সামনে পেলে গ্রেফতার অথবা গুলি করে দিবে!তাই তাঁকে সারাদিন ঘরে বসেই দিন পার করতে হতো!
কিন্তু চার বছরের ছেলে রাফিম, যুদ্ধের ভয়াবহতা সে বুঝতে পারে না!সে মাঝে মাঝে বাবা মায়ের চোখ ফাঁকি দিয়ে খেলতে চলে যায়!
একদিন দুপুর বেলা রাফিম কাউকে কিছু না জানিয়ে খেলতে বের হয়ে যায়!রেহেনা সবাইকে দুপুরের খাবার খাওয়ার জন্য টেবিলে আসতে বলে!কিন্তু কিছুক্ষন পর বুঝতে পারে,দুষ্টু রাফিম ঘরে নেই!তিনি বাসা থেকে বেরিয়ে রাফিমকে খুজতে যাবেন,এমন সময় তাঁর স্বামী বাধা দিয়ে বলেন আমি যাচ্ছি!
রেহেনার স্বামী রাফিমকে খুজতে বেরিয়ে গেল,তার কিছুক্ষন পর রাফিম একা বাড়ি ফিরল!রেহেনা তাকে জিজ্ঞেস করল,তোমার বাবা কোথায়? রাফিম বলল,আমার সঙ্গে তো দেখা হয় নি!রেহেনা বলল,সে তোমাকে খুজতেই বেরিয়েছে!
রাফিম বলল,আচ্ছা! আমি ওনাকে নিয়ে আসতেছি!
রাফিম বাবাকে খুঁজতে খুঁজতে মূলরাস্তায় চলে আসে!সে দেখতে পায় রাস্তায় কার যেন রক্তাত্ব লাশ পড়ে আছে!তার কিছুটা দূরেই ইসরাঈলী ট্যাঙ্ক দাড়িয়ে আছে!সে এক দৌড়ে লাশটির কাছে পৌছে দেখল,লাশটি তার হতভাগা বাবার(!)
বাবা ছেলের দেরি দেখে,রেহেনা তাদের খুঁজতে বেরিয়ে পড়ে!রেহেনা যখন মূল রাস্তায় চলে আসে,তখন সে দেখতে পায় রাফিম একটি রক্তাত্ব লাশের উপর শুয়ে কাঁদছে!আর ঠিক সে সময় ইসরাঈলী বাহিনীর ট্যাঙ্ক গাড়িটি এগিয়ে এসে বাবা ছেলেকে পিষ্ঠ করে দিল!আর চারদিকে তাদের শরীরের খন্ডিত অংশ এবং মাথার মগজ ছিটিয়ে পড়ল!রাস্তাটা হয়ে গেল রক্তের সমুদ্র!
এ অবস্থায় রেহেনা একদম পাথর হয়ে যায়!সে নিশ্চল পায়ে,তাঁর স্বামী এবং সন্তানের ছিন্ন ভিন্ন লাশের দিকে তাকিয়ে থাকে!
তখন এক ইসরাঈলী সৈন্য তাঁর দিকে এগিয়ে আসে!সে উচ্চস্বরে হেসে বলে, এবার তুমি কি নিয়ে বাঁচবে?তোমার বেঁচে থাকার অবলম্বন কি হবে?
তখন রেহেনা উচ্চারন করেন,“হাসবুন্নাল্লাহু ওয়া নিয়ামাল ওয়াকিল”।(আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ঠ এবং তিনিই আমাদের জন্য শ্রেষ্ঠ ওযাকিল)[সূরা আল ইমরান-১৭৩]
সুবহানআল্লাহ!
আলহামদুলিল্লাহ!ফিলিস্তিনের মা বোনেরা গত কয়েক দশক থেকে ধৈর্যের সর্বোচ্চ নজরানা পেশ করে যাচ্ছেন!এর আগেও ইসরাঈলী দখলদাররা ৭ লক্ষ ফিলিস্তিনীকে হত্যা করেছে!তবুও ফিলিস্তিনীদের আন্দোলন থেমে যায় নি!
তাহলে শাপলা চত্তরে ৫ মে তাগুদ বাহিনীর দ্বারা শাপলা চত্বরের সেই হত্যাযজ্ঞের পর আমরা থেমে গেছি কেন?
আমাদের মায়েরা কি দেখে না, ফিলিস্তিনি মায়েদের আত্তত্যাগ এবং উদারতা!আমাদের বোনরা কি দেখেনা?ফিলিস্তিনি বোনরা কিভাবে, তাঁদের স্বামীদেরকে হামাসে যোগদান করার জন্য উদ্বুদ্ধ করছে!
আমাদের মা বোনরা যেদিন সর্বাত্তকভাবে ইসলামের জন্য,তাদের সন্তান স্বামীদেরকে ফি সাবলিল্লাহ করে দিবে সেই দিন বাংলার এই জমিনে ইসলামিক বিপ্লবের পথ প্রশস্ত হবে!
আর বাংলার আকাশে একদিন উদিত হবে,কালেমা খচিত পতাকা!ইনশা আল্লাহ!
বিষয়: বিবিধ
১৭৭০ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন