এক ছাত্রলীগ নেতার সাথে, কিছু কথা!

লিখেছেন লিখেছেন শাহমুন নাকীব ফারাবী ৩০ জুলাই, ২০১৫, ১১:১৪:২৮ রাত

গত বছর রমজান মাসের ঘটনা!আব্বা ইহতেকাফ এ বসছেন!যোহরের নামায পড়ে আব্বার সঙ্গে দেখা করে বাসায় ফিরতেছি।মসজিদের বাহিরে এক বড় ভাইয়ের সঙ্গে দেখা।তিনি যে পাবলিক ভার্সিটিতে পড়েন, সেই ভার্সিটির তিনি আবার ছাত্রলীগের বেশ বড়সড় নেতা!

তিনি আমার খবরাখবর নিলেন।তারপর বললেন,ছোট ভাই তোমার হাতে সময় থাকলে তোমাকে কয়েকটা প্রশ্ন করবো!উত্তর দিতে পরবা তো? আমি হেসে বললাম, প্রশ্ন করার আগেই উত্তর পাবেন কি না তা নিয়ে সংশয়!যাক ভয় পেলাম!

আমরা একটা ফাকা জায়গায় গিয়ে বসলাম।উনি বললেন, আচ্ছা তোমরা কি চাও না দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষরা শান্তিতে থাকুক?যদি চাও,তবে ধর্ম নিরপেক্ষতাবাদের বিরুদ্ধে মিছিল কর কেন? সেটাকে স্বাগতম জানাচ্ছো না কেন?

আমি জবাবে বললাম,আপনাকে একটা ঘটনা বলি! ইসলাম বিজয়ের পরে,খোলাফায়ে রাশেদিনরা মুসলিম সম্রাজ্য বৃদ্ধীর লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশে দূত প্রেরন করেন এবং দূতের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে যুদ্ধ করতেন।

হযরত আমর ইবনুল আস (রাঃ) কে সেনাপতি করে মুসলিম বাহিনীকে আলেকজেন্দ্রীয়া পাঠানো হয়।আলেকজেন্দ্রীয়া ছিল খ্রিষ্ঠান অধ্যুষিত এলাকা।

খ্রিষ্ঠানরা অতর্কিত মুসলিম বাহিনীর উপর আক্রমন করে।প্রচন্ড যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়!অনেক মুসলিম সৈন্য শাহাদাত বরন করলেও,যুদ্ধে শেষ পর্যন্ত মুসলিমরা জয়ী হয়।(আলহামদুলিল্লাহ)

তারপর সেখানে শরীয়াহ আইন জারি করা হয়!আর সেখানকার শাসনভারের দায়িত্বপ্রাপ্ত হন হযরত আমর। খ্রিষ্ঠানরা ভয়ে ছিল,এবার হয়তো মুসলিমরা তাদের বংশকে নির্বংশ করে দিবে।কিন্তু তারা অবাক হয়ে লক্ষ্য করে,যখন শরীয়াহ এর বিধান তাদেরকে জীবনকে হেফাজত করবার সুযোগ করে দিল ।শরীয়াহর বিধান অনুযায়ী জিজিয়া কর দিয়ে আলোকজেন্দ্রীয়া থাকতে পারবে।খ্রিষ্ঠানরা সানন্দে রাজি হয়ে যায়!এরপর থেকে খ্রিষ্ঠানরা স্বাধীনভাবে তাদের ধর্মও পালন করবার সুযোগ পেল!

হঠাৎ একদিন,কয়েকজন খ্রিষ্ঠানপাদ্রী হযরতের আমর ইবনুল আস (রাঃ) এর দরবারে একটি অভিযোগ নিয়ে হাজির হন।অভিযোগটা হলে, কে বা কারা রাতের আধারে তাদের চার্চে প্রবেশ করে যীশু খ্রীষ্টের মূর্তির নাক ভেঙ্গে দিয়েছে।হযরত আমর বললেন,এটা অন্যায় কাজ হয়েছে।তোমরা এর বিনিময়ে কি করতে চাও!তখন পাদ্রীরা বলল,আমরা তোমাদের রাসূলের মূর্তি তৈরী করে তাঁরও নাক ভেঙ্গে দিতে চাই!হযরত আমর তাঁর কোমরে গুজে রাখা কোশবদ্ধ তরবারী উন্মুক্ত করে বললেন,হুঁশিয়ার!দ্বীতিয়বার এ কথা উচ্চারন করলে,ঘাড় থেকে মাথা আলাদা করে দিবো।

হযরত আমর বললেন,যদি আমার নাকটা কাটতে দেই তবে কি কাফফারা হবে?তারা বলল,হবে।পরের জুম্মাবারে খোলা ময়দানে হযরত আমর হাটু গেড়ে বসেছেন,নাক কুরবানি দিবেন।এমন সময় সাধারন মানুষের ভিড় ঢেলে একজন,এগিয়ে এসে বললেন নাক আমি ভেঙ্গেছি।আমার নাক কেটে দিন।

আজকে যেসব সংখ্যালঘু নির্যাতন চলছে,তা ধর্ম নিরপেক্ষ আইন করে, বন্ধ করা কেয়ামত পর্যন্ত সম্ভব হবে না।ধর্ম নিরপেক্ষতাবাদ হচ্ছে সংখ্যালঘুদের নির্যাতন করবার এক নব্য পন্থা।সংখ্যালঘুদের যাবতীয় নিরাপত্তা দিতে পারে, একমাত্র শরীয়াহ আইন।

বিষয়: বিবিধ

১৪০২ বার পঠিত, ১৭ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

332770
৩০ জুলাই ২০১৫ রাত ১১:৪৩
আকবার১ লিখেছেন : চমৎকার লেখা। যথেষ্ট পড়াশুনা রয়েছে। চালিয়ে যান।
৩১ জুলাই ২০১৫ সকাল ১১:৫৭
275059
মোঃ আবু তাহের লিখেছেন : জাজাকাল্লাহ।
৩১ জুলাই ২০১৫ দুপুর ১২:০২
275060
শাহমুন নাকীব ফারাবী লিখেছেন : জাজাকাল্লাহ
332779
৩১ জুলাই ২০১৫ রাত ০১:০১
৩১ জুলাই ২০১৫ দুপুর ০৩:৫২
275104
শাহমুন নাকীব ফারাবী লিখেছেন : ;Winking Happy Yahoo! Fighter
332790
৩১ জুলাই ২০১৫ রাত ০১:১৫
শেখের পোলা লিখেছেন : সহমত৷
৩১ জুলাই ২০১৫ দুপুর ০৩:৫৩
275105
শাহমুন নাকীব ফারাবী লিখেছেন : জাজাকাল্লাহ
332797
৩১ জুলাই ২০১৫ রাত ০১:৪৫
রক্তলাল লিখেছেন : আমি কিছুরই প্রচারক না, তাই মূল বিষয়ে কিছু বলব না।

শুধু প্রত্যক্ষদর্শী হিসাবে বলব - আওয়ামী জানোয়ারদের হিন্দুদের নির্যাতন ও জমি/বাড়ি দখল করতে দেখেছি। অন্য কোনো দলকে এমন করতে দেখিনি।
০৪ আগস্ট ২০১৫ সকাল ১০:৫০
275603
শাহমুন নাকীব ফারাবী লিখেছেন : সংখ্যালঘু বিষয়টা এখন রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের একটি অন্যতম কার্যকরী পন্থা!
332809
৩১ জুলাই ২০১৫ রাত ০৩:৩৫
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : উচিত জবাব.. ধন্যবাদ..
০৪ আগস্ট ২০১৫ সকাল ১০:৫১
275604
শাহমুন নাকীব ফারাবী লিখেছেন : বারাকাল্লাহ।
332825
৩১ জুলাই ২০১৫ সকাল ০৫:২১
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো
এরা আসলে ধর্মনিরপেক্ষতার নামে যা বুঝে সেটা হলো সব অপরাধ করার স্বাধিনতা।
০৪ আগস্ট ২০১৫ সকাল ১০:৫১
275606
শাহমুন নাকীব ফারাবী লিখেছেন : ঠিক তাই!সব অপরাধ করবার নব্য পন্থার নামই হচ্ছে ধর্ম নিরপেক্ষতাবাদ!
332842
৩১ জুলাই ২০১৫ সকাল ০৯:৫৮
ছালসাবিল লিখেছেন : Thumbs Up Big Grin Thumbs Up
০৪ আগস্ট ২০১৫ সকাল ১০:৫২
275607
শাহমুন নাকীব ফারাবী লিখেছেন : Happy ;Winking Love Struck Tongue Smug
332858
৩১ জুলাই ২০১৫ দুপুর ১২:০৭
হতভাগা লিখেছেন : সংখ্যা লঘুদের তাদের প্রাপ্যের চেয়ে বেশী দেওয়া হচ্ছে । প্রশাসনের বড় বড় পোস্টে আগের তুলনায় সংখ্যা লঘুরা বেশী ।

বছর তিনেক আগে মুসলমানদের ক্বুরবানীর জন্য যে ঘটনা প্রচলিত আছে ক্বুরআনে সেটার বিরুদ্ধে রিট করেছেও একজন হিন্দু ।
গত সপ্তাহে তাদের রথ যাত্রা যাচ্ছিল মতিঝিলের পাশ দিয়ে 'আছরের ওয়াক্তের সময় । মাইকে প্রবল আওয়াজ দিচ্ছিল , ফলে মুসল্লিদের নামাজ পড়তে অসুবিধা হচ্ছিল।

ওদেরকে বেশী বেশী লাই দেওয়া হয়েছে । অথচ ওরা বাংলাদেশের খেয়ে ভারতে গিয়ে ডিম পাড়ে ।
০৪ আগস্ট ২০১৫ সকাল ১০:৫৪
275608
শাহমুন নাকীব ফারাবী লিখেছেন : সংখ্যালঘুদের অধিকার নাই নাই করতে করতে এখন তারা সর্বোচ্চ অধিকার ভোগ করতেছে!এখন ৬৪ টি জেলার অধিকাংশ ডিসিই হিন্দু! আপনার শেষের কথাগুলোর সাথে আমি সম্পূর্ন একমত।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File