বিশ্ব নামক ট্রেন চালাচ্ছে নাস্তিকেরা(!)
লিখেছেন লিখেছেন শাহমুন নাকীব ফারাবী ০৮ জুলাই, ২০১৫, ১১:৫৯:৩৩ সকাল
আমাদের বাড়ির পিছনের দিকে একটি খোলা জায়গা আছে!মূলত ঐ জায়গাটা বাড়ির মহিলাদের বিকাল বেলা আড্ডা এবং বাচ্চাদের খেলাধুলার জন্য ব্যবহার করা হয়!
আমরা ছোটবেলায়, ঐ জায়গাটাতে খুব সহজে যেতাম না।ঐ জায়গায় ছিল একটি বড় নারিকেল গাছ! আর গাছটির পাতার খুব কাছেই ছিল, জাতীয় গ্রীডের ৩৩ হাজার ভোল্টের বিদ্যুত লাইন!যার কারনে সামান্য বাতাস হলেই, নারিকেল গাছের পাতা বিদ্যুত্যের তার গিয়ে লাগত!আর ভয়ানক শব্দ করে আগুন জ্বলে উঠত!
দাদু বেশ কয়েকবার লোক লাগিয়ে, নারিকেল গাছের সব ডালপালা কাটার ব্যবস্থা করেছিলেন।কিন্তু কিছুদিন পর নতুন ডাল এবং পাতা গজিয়ে আবারো বিদ্যুতের তারে গিয়ে লাগত! এর ভুক্তভোগী শুধু আমরা একাই ছিলাম না।আমাদের বাড়ির আশেপাশের মানুষরাও খুব আতঙ্কের ভিতরে থাকতেন।
একদিন বাড়ির সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেয়া হল, গাছটির শিকড়সহ কেটে ফেলা হবে।কিন্তু কোন কাঠুরে কাটবে সেটাই ছিল প্রশ্ন(!)
দুইজন কাঠুরে আসল!কিন্তু শর্ত হল, তাদেরকে বেশ চড়া দাম দিতে হবে!তারপর সেই কাঠুরেরা দির্ঘক্ষন সময় নিয়ে কোন ধরনের বিপদ ছাড়াই গাছটি কেটে ফেলতে সমর্থ হয়!
আজকের নাস্তিক্যতার রূপ অনেকটা নারিকেল গাছটার মতোই!
নাস্তিক সমস্যাটার ভুক্তভোগী শুধু হেফাজত কিংবা জামায়াত ইসলাম নয়!তাবলীগ জামায়াত থেকে শুরু করে চোরমোনাই পীর সাহেবরাও এর ভুক্তভোগী!হয়তো কেউ বুঝতে পারতেছে আর কেউবা একটা নির্দিষ্ট দলের বিরোধীতা করতে গিয়ে নাস্তিক্যতাবাদকেও নীরবে সহ্য করেরে যাচ্ছে!
তবে দুই একটা মিছিল মিটিং করে নাস্তিকদের দমন করা সম্ভব নয়!এর জন্য প্রয়োজন তাদের শিকড়সহ উৎখাত করা।তবে কি আমরা চাপাতি হাতে তুলে নিবো?
১৯৪০ সালের দিকের ঘটনা।তখন জামায়াত ইসলামের অগ্রযাত্রা সবে শুরু হয়েছে।জামায়াতের প্রতিষ্ঠাকালীন এক সভায়, একজন মাওলানা মওদূদীকে নাস্তিক্যবাদ নিয়ে প্রশ্ন করেন।তাঁর প্রশ্নটা ছিল নাস্তিক্যবাদের শিকড়কে আমরা কি করে উৎখাত করতে পারি?
জবাবে মাওলানা মওদূদী বলেছিলেন, গোটা বিশ্বটা একটা ট্রেনের মতো।আর এই ট্রেন পরিচালকের আসনে বসে আছে নাস্তিকেরা।যার কারনে ট্রেন পরিচালকের আসনে নাস্তিকেরা ট্রেনের ইঞ্জিনকে যেদিকে নিয়ে যেতে চাইবে ট্রেনের বাকি বগিরাও সেদিকে যাবে।
যার অর্থ হচ্ছে, নাস্তিক্যবাদকে দমন করতে হলে আমাদেরকে তাদের থেকেও জ্ঞানী হতে হবে।তাদের থেকেও প্রজ্ঞাবান হতে হবে।আমরা যখন তাদের থেকে জ্ঞানী হবো,তখন ট্রেন পরিচালনার দায়িত্বটাও নিয়ে নিতে পারবো।তখন আমরা ইঞ্জিন যেদিকে নিয়ে যাবো বাকি বগিরাও সেদিকে যাবে।নাস্তিক্যবাদও সম্পূর্নরূপে নির্মূল হয়ে যাবে।
এজন্য প্রচলিত নিয়মে আন্দোলনের পাশাপাশি জ্ঞান অর্জন করতে হবে।কুরআনের জ্ঞানকে নিজেদের আয়ত্তে আনতে হবে।
মিলিয়ে দেখুন, স্বীকৃত নাস্তিক তসলিমা নাসিরন থেকে শুরু করে নাস্তিক্যবাদকে উসকে দেয়া কবি সুফিয়া কামাল,হুমায়ূন আজাদ,আহসান উল্লাহ মাষ্টার,অভিজিৎ রায়, আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী এবং সর্বশেষ আব্দুল গফুল চৌধুরীরা সকলেই আওয়ামিলীগ।
অতএব সমীকরন দাড়াল, সকল আওয়ামিলীগ নাস্তিক না হলেও সকল নাস্তিক-ই আওয়ামিলীগ।
বিষয়: বিবিধ
১২০০ বার পঠিত, ১৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন