এমন একজন বন্ধুর প্রতিক্ষায়!
লিখেছেন লিখেছেন শাহমুন নাকীব ফারাবী ২৮ জুন, ২০১৫, ০৮:৫০:১৭ রাত
প্রচন্ড মাইগ্রেনের ব্যথা নিয়ে শুয়ে আছে আবরার!আর তার বালিশের কাছে বসে মাথায় হাত বুলাচ্ছে আর ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাদতেছে,ইবনুল।আবরার বা ইবনুল কেউ কারো রক্তের সম্পর্কের না হলেও, আত্নার দিক থেকে তারা অনেক বড় সম্পর্কে জড়িয়ে গেছে।
আবরার এবং ইবনুলের মধ্যে প্রথম পরিচয় ঘটে ফেসবুকে।তারপর থেকে তাদের মধ্যে নিয়মিত চ্যাট হতো। এক সময় তারা পরষ্পর পরষ্পরের মধ্যে পারসোনাল মোবাইল নাম্বার বিনিময় করে।তারপর থেকে মোবাইলে কথা বলে তাদের মধ্যে গড়ে উঠতে শুরু করে বন্ধুত্বের সেতু বন্ধন।এভাবে দিন যায় আর তাদের মাঝে আত্নার বন্ধন দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর হতে থাকে।
আবরারের বাড়ি রংপুরে আর ইবনুলের বাড়ি চট্রগ্রামে।এতো দূর হবার পরেও তাদের বন্ধুত্ব গড়ে উঠবার পিছনে একটি সৎ উদ্দেশ্য লুকিয়ে ছিল। আর তা হলো আবরার এবং ইবনুল দুজনেই এমন একজনকে বন্ধু রূপে খুজতে ছিলেন, যে হবে তথাকথিত সমস্ত মেয়েলি ব্যপার থেকে মুক্ত। আর তারা দুজনে এসব মেয়েলি ব্যপার থেকে মুক্ত হবার কারনে, তাদের মাঝে গড়ে উঠে এক অকৃত্রিম বন্ধুত্ব।
তাদের বন্ধুত্বের বন্ধন দৃড় হবার সাথে সাথে পরষ্পর কে সামনা সামনি দেখার আকাঙ্খাও বাড়তে থাকে।৬ মাস পর আবরার ট্রেনে উঠে পড়ে, উদ্দেশ্য চট্রগ্রামে বন্ধুর বাড়ি।
বন্ধুর কাছে পৌছা মাত্র আবরার যেন খুজে পেল নতুন এক পৃথিবীর ঠিকানা।আবরার কে কাছে পেয়ে ইবনুলও যেন আকাশের তারা হাতে পেল,এমন অবস্থা।
ইবনুল আবরার কে নিয়ে চট্রগ্রামের বিখ্যাত জায়গা গুলো দেখতেহ বের হয়। আবরার কয়েকদিন পরে লক্ষ্য করে, সে চট্রগ্রামে আসার পর ইবনুল আর একবারও ফেসবুকে লগইন করেনি।
আবরার ইবনুলের কাছে এর কারন জানতে চাইলে, ইবনুল বলে যার জন্য আমি ফেসবুকে লগইন করতাম, সে নিজেই যখন আমার সামনে তখন ফেসবুকে লগইন করবার আর কোন দরকার মনে করি না। এ কথা শুনে ইবনুল কে বুকে জড়িযে ধরে আবরার।
আবরার ফিরে আসার দুইদিন আগে হঠাৎ করে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। প্রচন্ড মাইগ্রেনের ব্যথায় সে অস্থির। নিজের ব্যাগ খুজে দেখে তার মাইগ্রেনের ওষুধও শেষ।এ অবস্থায় ইবনুল আবরারের ওষুধ খুজতে বাজারে যায়। পথি মধ্যে শুরু হয় বৃষ্টি।ইবনুল বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে সারা বাজার চষে কাক ভেজা হয়ে,বন্ধুর জন্য ওষুধ নিয়ে আসে।
বাসায় ফিরে আবরারের মাথা ব্যথায় ছটফট করা দেখে, কেদে ওঠে ইবনুল।
বিঃদ্রঃ এটি কোন কল্পিত গল্প কাহিনী নয়।চরিত্রের নামগুলো কাল্পনিক হলেও ঘটনাগুলো সব সত্য।এমন বন্ধুত্বের গল্প অনেকবার গল্পের বইয়ে পড়লেও, এবার আল্লাহপাক আমাকে সরাসরি এমন বন্ধত্বের সাক্ষি হবার সুযোগ দান করে দিয়েছেন।(আলহামদুলিল্লাহ)
এমন বন্ধু যদি কারো থাকে, তাহলে তার নারী ঘটিত প্রেম করবার প্রয়োজন আছে বলে আমি বা আমরা মনে করিনা।আমার আফসোস হয়, আহহা!আমারও যদি এমন একজন বন্ধু থাকতো।
আল্লাহর কাছে মিনতি করি,তাদের বন্ধুত্ব যেন কাল কেয়ামতের ময়দানেও অটুট থাকে। আমীন।
বিষয়: বিবিধ
১২৮৮ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন