বখাটে (গল্প)
লিখেছেন লিখেছেন বার্তা কেন্দ্র ৩০ জুলাই, ২০১৫, ০৫:৫৯:৫৫ বিকাল
উৎসর্গ : ফখরুল ইসলাম সমকামীকে
প্রথম পর্ব:
প্রতিদিনই সোমার পিছু নেয় বখাটে ফখরুল। কোনমতেই রাজী হয় না তার ভালবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হতে। বহুদিন থেকেই চেষ্টা করছে। কোন ফল হচ্ছে না। ফখরুলের আজ প্রতিজ্ঞা যেমন করেই হোক সোমার ভালবাসা জোর করে হলেও আদায় করে নেবে। নচেৎ যেকোন উপায় অবলম্বন করবে সে। এজন্য আরো দু’জন বন্ধুকে বলে রেখেছে। কেরামত এবং জুলমত দোকানের পিছনে লুকিয়ে আছে। ফখরুলের ইশারা পেলেই মোটর বাইকে করে গোপন আস্তানায় নিয়ে যাবে। তারপর রাজী হলে তো ভালই না হলে নাহলে সোমার অহংকার মাটির সাথে মিশিয়ে দেবে। আজ সে তাই পরিকল্পনা মোতাবেক আমতলায় দাঁড়িয়ে সোমার জন্য অপেক্ষা করছে।
ফখরুল : এলাকার বখাটে হিসেবে পরিচিতদের একজন। লাম্পট্যপনায় সে উস্তাদ। গত বছর পাশ্ববর্তী হিন্দু পাড়াতে নষ্টামী করার সময় হাতে নাতে ধরা খেয়েছিল। এলাকাবাসী দ’ুদিন গাছের সাথে বেঁধেও রেখেছিল। এলাকার সরকার দলীয় চেয়ারম্যান গিয়ে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসে। ফলে এখন চেয়ারম্যানেরও সে আস্থা ভাজন হয়ে গেছে। স্থানীয় মাদ্রাসায় তিন তিন বার দাখিল পরীক্ষা দিয়েও পাশ করতে পারেনি। চলাফেরায় আদুভাই ভাব এসে গেছে। তাই বাড়ীতেও বাপের তিরস্কারের কারণে ডুকতে পারে না। তার মা ও ইদানীং দেখলেই বলে তোর মত কুলাঙ্গার ছেলে আমার দরকার নেই। মায়ের সাথে রাগ করে দুপুরে ভাত না খেয়ে বের হয়। ফলে মাথাও ছিল উত্তেজিত।
সোমা: সোমা ক্লাস নাইনের ছাত্রী। চাচাতো বোন। সুন্দর বলতে যা বুঝায় আল্লাহ সব ঢেলে দিয়েছে। তার রূপের আগুনে এলাকার ছেলেদের ঘুম হারাম। ফখরুলের ভয়ে কেউ ‘রা’ করে না। সে দিক থেকে সোমার ফখরুলের প্রতি টান থাকারই কথা! কিন্তু বিধি বাম, সোমা ধরা দেয় না। কারণ ফখরুলের লাম্পট্যপনা ইতিমধ্যে সোমার কানে গেছে। আর এমন গর্দভ ছেলেকে কেন সে ভালবাসবে। আর এ ধরনের ভালবাসা তো উচিতও না। ধার্মিক পরিবারের মেয়ে সোমা এখন স্কুলে যায় হিজাব পড়ে। তাই ফখরুলের আরো হতাশা বাড়ে। আগে তো মুখটা খোলা ছিল দুধের সাধ ঘোলে মেটাত। এখন হিজাবের জন্য চেহারা দেখা যায় না। সেই থেকে হিজাবের বিরুদ্ধে তার অবস্থান।
হিন্দু পাড়ায় ধরা খাওয়ার পর এলাকার ইসলামিস্ট ছেলেরাও তাকে এড়িয়ে চলে। আগে সে তাদের যোগাযোগ রাখতো। বিভিন্ন সাংগঠনিক কাজে যোগদান করতো। ইসলামী বই পুস্তক অধ্যয়ন করতো। পকেট থেকে মাসে মাসে এয়ানত দিত ১০ টাকা করে। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ না পড়লেও দিনে ২/৩ ওয়াক্ত পড়ত। কিন্তু এলাকার ভাল ছেলেরা তাকে এভয়েড করার পর থেকে তার মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তাই তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে এলাকার চেয়ারম্যান গ্র“পের সাথে হাত মিলিয়েছে। থানার সাথেও ভাল যোগাযোগ আছে। এলাকার চরিত্রবান ছেলেরা কোথাও বসে কিছু আলোচনা করলে সে পুলিশকে ফোন করত। গত পরশুও এক বাড়ীতে ৫/৬জনের একটি দল মিজানের বাড়ীতে বসে আলাপ করছে। পুলিশ মিজানকে ধরে নিয়ে গেছে। বাকীরা খবর পেয়ে পার হয়ে গেছে।
চারদিকে আতঙ্ক ছড়াতে পারঙ্গম সে। বলে ক্রসফয়ারের লিস্ট দিয়েছি। খবর আছে? এভাবে মানুষের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করতো। না দিলে পুলিশ, র্যাবের হুমকি! রিমান্ডে নিয়ে পা হাতে ধরিয়ে দেয়া হবে। ইত্যাদি ইত্যাদি।
আজকে সোমার বান্ধবী পুতুলসহ প্রাইভেট পড়ে বাড়ী আসছে। আমতলার কাছাকাছি এলো ওরা। সোমা ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে গেছে।
পুতুল বলল, চিন্তা করিস না, আমি আছি। আল্লাহকে ডাক।
সোমা বলল, আজকে ওর মুড ভাল দেখাচ্ছে না।
পুতুল বলল, তুই চিন্তা করিস না।
ফখরুল একদৃষ্টিতে সোমার দিকে তাকিয়ে যেন গিলে খেতে চায়।
বইগুলো বুকের মধ্যে চেপে ধরে সোমারা চলে যেতে উদ্যত।
এ সময় ফখরুল বলল, দাঁড়াও সোমা।
সোমারা থমকে দাঁড়ায়।
ফখরুল বলল, আমার প্রশ্নের জবাব আজ দিয়ে যাবি? নইলে তুই আর বাড়ি ফিরে যেতে পারবি না। হুংকার দিয়ে ফখরুল বলল।
এই মেয়ে তুই যা! ভাগ? পুতুলকে বলে ফখরুল।
পুতুল সরে দাড়াঁয় এবং হাটতে থাকে সামনে। কতদূর গিয়ে দৌড় দেয়।
সোমার ডান হাতটা ধরে ফখরুল। আমি এক থেকে তিন পর্যন্ত গুণব। এর মধ্যে একটা কিছু বলবি? থুতনী ধরে সোমার চোখে চোখ রেখে রাগত স্বরে বলে। আজকেই শেষ করবি আমার অপেক্ষার প্রহর, আমার অনেক কাজ। তোর পিছনে প্রতিদিন সময় ব্যয় করতে পারব না।
সোমার চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে। নীরব সে।
ফখরুল সোমার হাত ছেড়ে দিয়ে নিজের দু’হাত উপরে তুলে তালি বাজায়। কেরামত এবং জুলমত দোকানের পিছন থেকে বেরিয়ে আসে। কেরামত মোটর বাইক স্টার্ট দেয়। জুলমতের হাতে একটা কাপড়।
ফখরুল কাউন্ট ডাউন শুরু করে।
এক, দুই, আড়াই, পৌনে তিন.. ..
ফখরুল ইশারা করে। সোমার হাত থেকে বইগুলো নিয়ে ছুড়ে ফেলে। অপারেশন শুরু কর।
জুলমত সোমার মুখ এবং চোখ কাপড় দিয়ে বন্ধ করে দেয় এবং পাঁজাকোলা করে মোটর বাইকে তুলে মাঝখানে বসায়।
তোরা যা জায়গা মত। আমি আসছি।
মোটর বাইক চলতে থাকে নির্দিষ্ট গন্তব্যে।
(আগামী কিস্তিতে সমাপ্য)
বিষয়: সাহিত্য
২৩৬৯ বার পঠিত, ৩৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কোন কমেন্ট না করা।
যাবে। আমি স্বপন ভাই এর সাথে একমত।
আমাদের উচিৎ হবে, ওনার ব্লগে কোন কমেন্ট না করা। তাইলে উনি থেমে যাবে।
উনার লেখা পড়েন। কমেন্ট করবেন। এটাই
হবে, নিরবে বয়কোট করা।
রাহমানুর রাহিম সবাইকেই সুন্দর পথে রাখুক
সবাই একটু সাঁকো ধইরা খাড়ান। ঝাকাঝাকি শুরু।
আপনাকে ধন্যবাদ//
হেতেরে নিয়া গল্প লিখা হইতাছে!!!
ধন্যবাদ আপনাকে
ধন্যবাদ আপনাকে
ধন্যবাদ আপনাকে
মন্তব্য করতে লগইন করুন