দুর্নীতিতে সরকার আকন্ঠ নিমজ্জিত-স্বীকার করলেন অর্থমন্ত্রী?
লিখেছেন লিখেছেন বার্তা কেন্দ্র ২১ জুলাই, ২০১৫, ০৮:১১:৫৯ রাত
বাংলাদেশের যে দুর্নীতি হচ্ছে অবশেষে স্বীকার করে নিলেন মাননীয় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মোহিত। তিনি পরিকল্পনা কমিশনের সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার খসড়া দলিলের এক সভায় বলেন, “দুর্নীতি না থাকলে জিডিপি ২-৩% শতাংশ বাড়ত।” সভার প্রধান অতিথি অর্থমন্ত্রী এ সময় আরও বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতায় জিডিপির ১ শতাংশ ক্ষতি হয়েছে। দেশের মানুষ রাজনৈতিক অস্থিরতা চায় না। অর্থনৈতিক শক্তি বাড়লে রাজনৈতিক অস্থিরতা এমনিতেই কমে যাবে। এ ছাড়া অর্থমন্ত্রী এ পরিকল্পনা খসড়ায় বেশ কিছু লক্ষ্যকে উচ্চাভিলাষী বলে অভিহিত করেছেন। এ পরিকল্পনায় আগামী পাঁচ বছরে ১ কোটি ৮৭ লাখ লোকের কর্মসংস্থানের লক্ষ্য ধরা হয়েছে। অর্থমন্ত্রীর মতে, এ লক্ষ্য উচ্চাভিলাষী। তিনি বলেন, ‘আমার তথ্য-উপাত্ত বলে, এ লক্ষ্য অর্জন কঠিন হবে। এ দেশে বেকারত্বের হারও অনেক বেশি। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) মানদণ্ড অনুযায়ী দেশে যে বেকারত্বের চিত্র পাওয়া যায়, বাস্তবে এর বেশি বেকার রয়েছে।’ তিনি মনে করেন, কর্মসংস্থান এখন বড় চ্যালেঞ্জ। দক্ষ মানব-সম্পদ গঠনে দাতারা অংশ নিতে পারে। এ ছাড়া তথ্যপ্রযুক্তি খাতে উন্নতি করে কর্মসংস্থান করা যেতে পারে।
টিআইবি নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “আমরা এতদিন যা বলে আসছি এতদিন পর অর্থমন্ত্রী তা স্বীকার করে নিয়েছেন। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, টিআইবির গবেষণায় দেখা গেছে, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পুলিশ, বিচার রাষ্ট্রের এমন সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে যে অর্থের দুর্নীতি হয়, তার পরিমাণ জিডিপির আড়াই শতাংশের মতো। আর রাষ্ট্রের বড় ক্রয় খাতে যোগসাজশের যে দুর্নীতি হয়, এর পরিমাণ জিডিপির ৩ শতাংশের মতো। সব মিলিয়ে দুর্নীতির পরিমাণ কমপক্ষে জিডিপির ৫ শতাংশের বেশি। তাঁর মতে, যারা এ ধরনের দুর্নীতির জন্য দায়ী, তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। এ জন্য আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার সঙ্গে জড়িত আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বিচারব্যবস্থাকে কাজ করতে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ পরিবেশ দিতে হবে
এদিকে টিআই-এর দুর্নীতির ধারণাসূচক কার্যক্রম বাংলাদেশে ব্যাপারে ২০০১ সালে সম্ভবত আগষ্ট-সেপ্টেম্বরের দিকে রিপোর্ট হয় । এ বছর সারা বিশ্বে দুর্নীতিতে প্রথম হওয়ার সৌভাগ্য লাভ করে! তখন আওয়অমী লীগ ক্ষমতায় ছিল। পরবর্তীতে জোট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে প্রথম স্থান অব্যাহত ছিল আরো ৫ বছর পর্যন্ত। মঈন উদ্দিন-ফখর উদ্দিন দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিহাদের কথা বলে ২ বছরে লুটপাট করে ঠেলা সামলাতে না পেরে আ’লীগকে ক্ষমতায় বসিয়ে দেয়। যাতে তাদের অপকর্মের বিচার করতে না পারে। এব্যাপারে তাদের সাথে অলিখিত চুক্তিও হয়। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীও তাদের সব কাজের বৈধতা দেওয়ার কথা বলে ক্ষমতায় আসে। এ ইতিহাস সবার জানা।
অর্থমন্ত্রী যা বলেছেন তার সারাংশ :
এক. দেশে দুর্নীতি কমে নাই, বরং বেড়েছে।
দুই. রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য মাত্র ১% প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হয়েছে।
তিন. দেশের মানুষ রাজনৈতিক অস্থিরতা চায় না।
চার. বাস্তবে বেকারত্বের হার অনেক বেশি।
পাঁচ. কর্মসংস্থান এখন বড় চ্যালেঞ্জ।
যদি তাই হয় রাজনৈতিক অস্থিরতা ২০১৫ সালের প্রথম দিকে হয়েছে। প্রবৃদ্ধি ব্যাপারে রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে দায়ী করা কি উচিত? গত কয়েক দশক থেকে প্রবৃদ্ধি এক জায়গায় ঘুরপাক খাচ্ছে। দেশের মানুষ রাজনৈতিক অস্থিরতা চায় না। কিন্তু সরকার চায়, না হলে ক্ষমতার কি হবে? যে যা বলুক মেরে ক্ষমতা থাকতেই হবে। অস্থিরতা সরকারেরই সৃষ্ট। গণতন্ত্রকে হত্যা করে বাকশাল কায়েমের স্বপ্ন দেখলে কি জণগণ চুপ করে থাকবে? আজ সাত বছরে বেকারদের জন্য উল্লেখযোগ্য কী করা হয়েছে? বেকার বাড়বে না তো কমবে? জনশক্তি রপ্তানী স্থবিরতার জন্য সরকারই পুরোপুরি দায়ী এ ব্যাপারে কারো দ্বিমতের করার অবকাশ নেই। কর্মসংস্থান কীভাবে হবে? বিভিন্নভাবে চাকরীতে হয়রানি, পদচ্যুতি, দলীয়করণ, ওএসডি করলে তো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সবখানে তৈরি হবে। এর জন্য সরকারই একমাত্র দায়ী। আমরা দেখি যে রাজপথের বিরোধী দলের কেউ হলে শ্রীঘরে আর সরকারের কেউ হলে দুদক নামে অথর্ব প্রতিষ্ঠানটি ধুয়ে মুছে সাফ করে দেয়া ছাড়া আর কিছুই করতে পারেনি। দিন-দুপুরে ধরা পড়ার পরও কালো বিড়ালরা ধোয়া তুলসী পাতা। আর ফখরুলরা কথিত ঘটনায় কত নাজেহাল হচ্ছে, জীবন শঙ্কায় পড়ছে-তা জুলুম বৈকি! রাজনীতির নোংরা খেলায় মেতে থাকায় মানুষ সরকারের দুর্নীতি সম্পর্কে জানতে পারছে না। বর্তমান সরকার পা-থেকে মাথা পর্যন্ত আকন্ঠ দুর্নীতিসহ যত ধরনের অপকর্ম আছে সর্ব গুণে গুণান্বিত। তারপরও তাদের টনক নড়বে না, আজীবন ক্ষমতায় থাকায় স্বপ্নে বিভোর সরকার সর্বস্তরে দুর্নীতির জোয়ার বইলেও আরো উৎসাহ দেবে বেশি বেশি করের আখের গোছানোর জন্য। ওরা দুর্নীতি করে সম্পদের পাহাড় গড়–ক, আমরা কেউ টু শব্দটিও করব না!
===
বিষয়: রাজনীতি
১২৪৪ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
টিআইবি নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “আমরা এতদিন যা বলে আসছি এতদিন পর অর্থমন্ত্রী তা স্বীকার করে নিয়েছেন
সত্যকে কতদিন আর চাপা দিয়ে রাখা যায়?
As per my understanding - nowadays WB/IMF is failing to blackmail Hasina as they used to, in the name of BNP/Jamat.
So, they are preparing a plot of corruption (that really exists) to blackmail government in coming days. Example: securing commitment of international audits in government bodies.
The objectives are nothing but to
i. Replace 'Rab' of Bangladeshis i.e. Washington/Jerusalem instead of Allah.
ii. Ensure further level of enslavement.
মন্তব্য করতে লগইন করুন