আধুনিক মেয়ে
লিখেছেন লিখেছেন ক্রসফায়ার ১২ জুন, ২০১৫, ০৮:০৪:১৮ রাত
আলীমুদ্দীর একটি মেয়ে
নামটি তার সুরভী
দেখতে যেমন সুনয়না
ছাত্রী হিসাবেও মেধাবী।
প্রাইমারিতে বৃত্তি পেলো
এস.এস.সিতে এ প্লাস
এইচ.এস.সিতে গোল্ডেন পেলো
তবুও একটু দীর্ঘশ্বাস।
মেয়ে এখন পড়তে চায়
শহরের কোন ভার্সিটিতে
আলীমুদ্দীর নাই যে কেউ
যে পারে সুরভীকে রাখতে।
মেয়ে কিভাবে ঢাকা যাবে
এই নিয়ে আলীমুদ্দীর নাই ঘুম
প্রতিবেশীর বুদ্ধিতে হোস্টেলে দিলো
সেখানে খরচও অনেক কম।
কক্ষগুলো ছোট হলেও
ছাত্রী হোস্টেলটি খুব পরিপাটি
কোচিং সেন্টারে ভর্তি হয়ে
পড়ালেখায় আনলো নতুন গতি।
রাতদিন খেটে খুটে সুরভী
ইডেন কলেজে পেলো সুযোগ
ভর্তিযুদ্ধ শেষ করে এসে
পারলোনা ধরে রাখতে আবেগ।
বাবা আলীমুদ্দীর অনেক স্বপ্ন
মেয়ে অনেক বড় হবে
দেশের তরে দশের তরে
অনেক বড় ভূমিকা রাখবে।
অনেক রকম লড়াই করেও
কলেজ হোস্টেলে পেলোনা আসন
সুরভী তাই আগের হেস্টেলে
কাটাতে থাকলো কলেজ জীবন।
হোস্টেল জীবনের দিনগুলো তার
কাটছিলো বেশ ভালোভাবেই
এখানে সবাই নামাজী কালামী
আন্তরিকতারও অভাব নেই।
জঙ্গীবাদের ধোঁয়া তুলে হঠাৎ
পুলিশ হোস্টেলে দিলো হানা
অনেককে ধরে নিয়ে গেলো
হোস্টেল খুলতে করলো মানা।
ভয়ে সেদিন হোস্টেল ছাড়লো
খুঁজতে থাকলো নতুন আবাস
নতুন আরেকটি হোস্টেল পেলো
যেখানে আধুনিক মেয়েদের বসবাস।
চোখ বন্ধ করে উঠে পড়লো
সেখানে পুলিশের অন্তত নেই ভয়
পুলিশের বড় কর্তারাও সেখানে
সকাল বিকাল আসে যায়।
প্রথম প্রথম খারাপ লাগলো
মেয়েগুলো কেমন জানি উশৃঙ্খল
আস্তে আস্তে মানিয়ে নিলো
উশৃঙ্খলতাই হলো তার শৃঙ্খল।
সুরভী এখন আনস্মার্ট নয়
রোজ বন্ধুদের সাথে আড্ডা মারে
মাঝে মাঝে বিভিন্ন পার্টিতে
আধুনিক ছেলেদের সাথে ঘুরে।
প্রেম কি জিনিস বুঝতোনা সে
প্রেম এখন তার পান্তা ভাত
একটা ছেড়ে আরেকটা ধরে
ছেলেদের চিনাচ্ছে তার জাত।
মাঝে মাঝে বাবার কথা
মনে পড়ে তার বেশ
দুষ্ট বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে
নিমিষেই কেটে যায় তার রেশ।
বাবা অনেক গর্ব করবে
তার মেয়ে হচ্ছে পুরো আধুনিক
বাজে অভ্যাসগুলো জানবেনা কেউ
দেখবেতো শুধু তার বাহ্যিক।
সময় যত যাচ্ছে গড়িয়ে
সুরভী হচ্ছে ততই বেপরোয়া
কলেজ রাজনীতিতে নাম লেখালো
হোস্টেলের সিট তার হাতের মোয়া।
বন্ধুরা এখন অফার করে
দে না সিগারেটে এক টান
হাসিমুখেই মেনে নিলো
অসৎ বন্ধুদের সেই আহবান।
পার্টির কাজে রাত জাগতে হয়
ঘুম বাঁধা দেয় সারাক্ষণ
পার্টির ভাইয়ের পরামর্শে তাই
শুরু করলো ইয়াবা সেবন।
নেত্রী আসবে কলেজে তাই
সাজলো সেদিন মনের মতন
বড় নেতার চোখ পড়লো
করতে চাইলো একান্ত আপন।
বড় পদ দিয়ে দিবে
দিবে অনেক গাড়ি বাড়ি
ঠান্ডা মাথায় ঢেলে দিলো তাই
নিজের যৌবনের রসের হাড়ি।
দিন যায় মাস যায়
সেই নেতার আর খোঁজ নেই
একবার যখন শরীর গেলো
এখন সে তা বিলায় অবলীলায়।
দিন কয়েক বাদে বুঝলো সুরভী
হয়ে গেছে সে গর্ভবতী
এই মুখ দেখাবে কি করে সে
তাই সিদ্ধান নেলো আত্মঘাতী।
বিষ পানে করলো সুরভী আত্মহত্যা
লাশের পাশে তার স্বজনের আহাজারি
এই সমাজ কিভাবে অপরাধী বানালো
দেখালো তা এক সহজ সরল নারী।
বিষয়: বিবিধ
১১২৪ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন