গণতন্ত্র হারাম কিন্তু গণতন্ত্রের চর্বিতে খুব আরাম
লিখেছেন লিখেছেন ক্রসফায়ার ০২ জুন, ২০১৫, ০৭:১৬:৪৪ সন্ধ্যা
আমরা গণতন্ত্র মানিনা কিন্তু গণতান্ত্রিক দেশের সব আইন কানুন মেনে দেশে বসবাস করি, আমাদের প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতি গণতান্ত্রিকভাবেই নির্বাচিত হন। আমরা হারামের মধ্যে ছব্বিশ ঘন্টা ডুবে থাকি তবু হারাম আমাদের ছিটেফোঁটাও স্পর্শ করেনা। এটা কি করে সম্ভব? এটা সম্ভব কেবল "গণতন্ত্র কুফরী, গণতন্ত্র হারাম" এই জাতের স্লোগানদারীদের ক্ষেত্রে।
এরা গণতন্ত্রের বিপক্ষে কথা বলতে বলতে জিহ্বা ক্ষয় করে ফেললেও দেখবেন না কেউ গণতান্ত্রিক সরকারের ছায়া মাড়িয়ে দেশান্তরী হয়েছে। বরং এরা যখন অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেত গিয়ে নিগৃহীত হয় তখন এরা বলে আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। এরা জেলে গিয়ে গণতান্ত্রিক সরকারের কাছে জামিন চায় বা খালাস চায় এবং গণতান্ত্রিক সরকারের নাগরিক সুবিধাাগুলোও চায়। মোদ্দা কথা এরা শুয়োরের মাংস খায় না কিন্তু শুয়োরের চর্বি খায়।
এরা খেলাফতের একটা রূপরেখাও দিতে পারেনা কিন্তু খেলাফতের কথা বলে গলা ফাটিয়ে ফেলে। এরা এক বিশ্বে এক নেতার আদর্শে বিশ্বাসী। কিন্তু এরা রাসূলুল্লাহর (সাঃ) জীবনী থেকে কর্মপদ্ধতি গ্রহন করে না।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) মক্কার জীবনে ইসলামের প্রাথমিক কাজগুলো করেছেন কিন্তু তিনি কি মক্কাতে সরকার কায়েম করেছেন? তিনি কি মক্কাতে জিহাদের ডাক দিতে পারতেন না? বরং মক্কার জুলুম নির্যাতন সইতে না পেরে আল্লাহর নির্দেশে মদীনায় হিজরত করেছেন। সেখানেই প্রথম খেলাফত কায়েম করেছিলেন রাসূল (সাঃ)। কিন্তু আমাদের খিলাফতের দাবীদারেরা দ্বীন কায়েমের উদ্দেশ্যে হিজরত করেছে এমন নজীর একটাও কেউ দেখাতে পারবেন?
এরা হিজরত করতে গেলেও আবার গণতান্ত্রিক সরকারের অনুমতি নিয়ে পাসপোর্ট ভিসা গ্রহন করতে হবে। পারবে এরা এ পথ অবলম্বন করা ছাড়া?
পৃথিবীর কোথাও এরা প্রকৃত শরীয়ত কায়েম করেছে এমন একটা নাজির কেউ দেখাতে পারবেন? আর এদের কথিত শরীয়ত কায়েমের এলাকায় সংঘাত ছাড়া আর কোন কিছু আছে? অথচ আল্লাহর রাসূল (সাঃ) মদীনায় ইসলাম কায়েমের পর সেখানকার মানুষ মুক্তি পেয়েছিলো। আর এরা ইসলাম কায়েমের এলাকায় নরকে পরিণত করেছে। যেমনটা দেখছি আমরা আইএস নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে।
ইসলামের সাথে ইসলামের আদর্শের সাথে ইসলামের শিক্ষার সাথে যাদের দূরতম সম্পর্ক নেই তাদের ইসলামের নামে ধ্বংশাত্মক কর্মকান্ড সম্পর্কে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। আল্লাহ আমাদের এই গজব থেকে রক্ষা করুন (আমীন)
বিষয়: বিবিধ
১৯২৬ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
হে মুমিনরা! যখন তোমাদের কাছে কোন ফাসিক ব্যক্তি সংবাদ নিয়ে আসে, তখন তা অনুসন্ধান কর। যদি তোমরা না জেনে কোন জাতির উপর ঝাঁপিয়ে পড় তাহলে অবশেষে তোমরা যা করেছো তার উপর লজ্জিত হবে। (সূরা হুজুরাত-৬) একদল পাপাচারী মিডিয়ার লোক বলছে আর আপনি বিশ্বাস করছেন। আচ্ছা এই মিডিয়া যে সারাদিন প্রচার করে আপনারা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করেন, রগ কাটেন, আপনাদের নেতারা ধর্ষক, গণহত্যাকারী এগুলোও কি তাহলে সত্যি? যেহেতু এই মিডিয়াই তাদের নামে বলছে যা আপনারা বিশ্বাস করছেন তাহলে আপনাদেরটা বিশ্বাস করতে বাঁধা কোথায়? ইরাকে যে শিয়াদের হাতে হাজার হাজার সুন্নী গণহত্যার শিকার হয়েছে, শত শত সুন্নী নারীকে কারাগারে ও নিজ গৃহে শিয়ারা ধর্ষণ করেছে, ছোট ছোট বাচ্চাকে জীবন্ত আগুনে পুড়িয়ে মেরেছে তার কয়টা সংবাদ আপনার মহান মিডিয়ারা দেখিয়েছে? আইএস হটাৎ করেই মাথা গজিয়ে ওঠেনি। ইরাকের সুন্নীরা আইএসের বিরুদ্ধে কেন যাচ্ছেনা? এর উত্তর আপনার কাছে আছে? আইএস এর সাথে যারা যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে আইএস কি তাদের কপালে চুমু খাবে? হ্যা! আইএস সত্য থেকে বিচ্যুত অন্য কারণে আপনার বর্ণনার মতে না। আর খেলাফতের রূপরেখা তৈরী করতে হবে এটা কে বলল আপনাকে? খেলাফত কি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, যে তা মানুষের হাতে রূপরেখা প্রণয়ন হবে?
কয়েকটি সূত্র আপনাকে দিচ্ছি চিন্তা করার জন্য কিংবা গবেষনা করার জন্য।
১। সিরিয়া যুদ্ধের ঠিক কোন ক্ষনটিতে আই এস এর উদ্ভব হয়? ইনভলব পক্ষগুলোর অবস্থান ইমিডিয়েট আগে কোন অবস্থায় ছিল? বিশেষ করে ইউএস, ইসরাইল, সৌদী, জর্ডান, তুরুস্ককে এক দিকে রেখে দেখুন। তারপর ইরাক, ইরান ও হেজবুল্লাহকে অন্যদিকে এনে তাদের অবস্থান দেখুন এবং সব শেষে রাশিয়া, চায়না ও ইউএন এর অবস্থান দেখুন।
২। প্রথম কত লোককে আই এস এর ফোর্স বলা হয়? সে সংখ্যার বৃদ্ধির পারসেনটেইজ কি? ৮,০০০ আই এস সর্বনিন্ম কতদিনে ২ মিলিয়ন আই এস হতে পারে? একটা ক্যালকুলেশান করুন?
৩। আই এস ব্রান্ডিং এর ধরন দেখুন। কালো পতাকা হাতে স্লোমোশান এ হাটা দেখুন এবং ৯০ এর দশকের শেষ দিকে এসে আল কায়েদা ব্রান্ডিং এর কথা মনে করে দেখুন - কোন মিল খুজে পান কিনা?
৪। আই এস এর বর্ডার এরিয়া দেখুন। কারা তা নিয়ন্ত্রন করছে? কিভাবে আই এস সোলজার রিক্রুট করছে?
৫। পুরো ইউরোপ ও আমেরিকায় আই এস কে কিভাবে ইউজ করা হচ্ছে আপতঃ খৃষ্টান গ্রুপগুলোকে উসকিয়ে দেবার জন্য? মোটিভ কি ও কোথায় কিভাবে কাজ করছে তা বিশ্লেষন করুন।
৬। হোয়াইট হাউজের আই এস রিলেটেড স্টেইটমেন্ট পর্যালোচনা করুন, ফরেন মিনিস্ট্রি ও সিআইএ/এফবিআই এর স্টেইটমেন্ট ও।
৭। আমি শিওর এর পারশিয়াল চিত্র আপনি পেলে - আপনি ১০০% নিশ্চিত হবেন - মূলতঃ আই এস কি? কোন কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে?
এর বাহিরে আপনি ইরাকের সেন্ট্রাল ব্যাংকের টাকা ইরাকের পশ্চিমে সরানো, সুন্নী বন্দীদের কে ইরাকের পশ্চিমে আনা এবং আমেরিকা হতে কেনে এ্যাডভান্স উইফনস গুলো ইরাকের পশ্চিমে আনা ও বর্তমানে আমেরিকা নিবাসী আই এস এর কাছে তথাকথিত সারেন্ডার করা আর্মী অফিসার দের নিউজ গুলো পড়ুন। পড়ুন কে কেন কোথা হতে অমন সিনেমাটিক ভিডিও গুলো আপলোড করে? কেন তা জীবন্ত ভাবে ফেইস বুক ঘুরে?
মক্কাতে অনেক কিছুই ফরজ হয়নি,যেগুলো আপনি করছেন। যেমন মক্কাতে প্রথম অবস্থায় নামাজ,রোজা ফরজ হয়নি। তাহলে আপনি এসব কেন করছেন? যেহেতু মক্কীযুগে আছেন। মোট কথা আপনি এসব বিষয়ে একেবারেই ধারনা নেই বললেই চলে, তাই আপনি মন খোলা রেখে কোরআন হাদীস পড়াশুনা করুন। আর আপনার ছবিতে দেখছি আপনার মুখে দাড়ি নাই। যদি দাড়ি না থাক তাহলে, আগে দাড়ি রাখুন তারপর এগুলো বিষয় নিয়ে ভাবুন। কারন জিহাদ হচ্ছে সবোর্চ্চ চূড়া। যার ব্যাক্তিগত আমলগুলোই ঠিক না তারা জিহাদ নিয়ে বিদ্দেষ ছড়াটা বোকামি। ধন্যবাদ।
"আইএসআইএল গ্রুপটির আচরণ ছিল সবসময়েই রহস্যজনক। আর প্রথমথেকেই তাদের ব্যাপারে আমেরিকার আচরণরও ছিল খুবই সন্দেহজনক। আইএসআইএল যেমন বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে, ঠিক তেমনি তারা নানান খোড়া যুক্তিতে ফ্রি সিরিয়ান আর্মি, ইসলামিক ফ্রন্ট, আহরার আশ শাম ও জাবহাত আন নুসরাহ এর সাথেও যুদ্ধে জড়িয়ে পরে। আইএসের সাথে এসব যুদ্ধে বিদ্রোহী গ্রুপগুলো ৩০০০ এর অধিক সদস্যকে হারায়, যাদের অধিকাংশই ছিল জাবহাত আন নুসরাহ ফ্রন্টের সদস্য। তারা ফ্রি সিরিয়ান আর্মি, ইসলামিক ফ্রন্টকে কাফির-মুরতাদ বলে আখ্যা দেয়। তারা ইরাক সিরিয়ায় আল কায়েদাকে বিলুপ্ত ঘোষণা করে এবং জাবহাত আন নুসরাহ ফ্রন্টকে তারা নির্দেশ দেয় আল কায়েদার নেতৃত্ব থেকে বের হয়ে এসে করে আবু বকর বাগদাদিকে নেতা হিসেবে মেনে নেয়ার জন্য। আল কায়েদার নেতাদেরকে তারা , অযোগ্য,বুড়ো,পাগল-মুরতাদ ইত্যাদি আখ্যা দেয়। কিন্তু নুসরাহ ফ্রন্ট এর বিরোধীতা করলে আইএসআইএল নুসরাহ ফ্রন্টের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয় তাদের কয়েক হাজার সদস্যকে হত্যা এবং তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকা নিজ দখলে নিয়ে নেয়। গত বছর হটাৎ তারা ইরাকের মসুল দখল করে নেয় মাত্র ৮০০ সৈন্য নিয়ে। ব্যাপারটি ছিল চরম রহস্যজনক। কারণ টেলিভিশন ডকুমেন্টারিতে ইরাকি এক সৈন্যের বর্ণনামতে, আগেরদিন হটাৎ করেই ইরাকি সৈন্যদের কাছ থেকে মোবাইলগুলো নিয়ে নেয়া হয়। পরেরদিন সবাইকে সামরিক পোশাক ছেড়ে সিভিল ড্রেস পরতে বলা হয়, সবার কাছ থেকে অস্ত্র নিয়ে নেয়া হয় এবং সামরিক যানের বদলে পায়ে হেটে চলতে বাধ্য করা হয়। তাদেরকে বলা হয় সরকারী লরি তাদেরকে বাগদাদ ও সামারায় পৌছে দিবে। তারা যখন লরিতে ওঠে তাদের বাগদাদ, সামারায় না নিয়ে সরকারী লরিগুলো তাদেরকে নিয়ে আইএস এর হাতে তুলে দেয়। আইএস তাদেরকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে তাদের উপরে গণহত্যা চালায়। "৩০,০০০ সৈন্যকে নিরস্ত্র করে কেন মসুল আইএসের হাতে ছেড়ে দেয়া হল?" ব্যাপারটি রহস্যজনক বটে। পরের ঘটনা সবারই জানা। এক ব্যাক্তি যার নাম আবুবকর বাগদাদি তিনি মসুলে তাদের দখলকৃত এলাকায় খেলাফত ঘোষণা করেন, নামকরণ করেন isis (islamic state of iraq and syria) নিজে হন যার খলিফা অথচ ইরাকি বিদ্রোহী গ্রুপটি ছিল আলকায়েদার একটি শাখা । আমেরিকা যেখানে যুদ্ধচলাকালীন সময়ে AQI (Al qayeda in Iraq) এর প্রধান নেতা Abu Musab al-Zarqawi সহ আটককৃত কাউকেই জীবিত ছাড়েনি, সেখানে হটাৎ মার্কিনিদের হাতে আটক আবু বকর বাগদাদিকে স্বশরীরে ছেড়ে দেয়া হয় এবং তিনি এসেই AQI এর প্রধান হন ও নাম পরিবর্তন করে রাখেন আইএস/ISIL. এবং কিছুদিন যাবার পরই আল কায়েদার নেতৃত্ব অস্বীকার করেন এবং তাকে না মানায় সিরিয়ায় নুসরাহ ফ্রন্টের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে তাদের কয়েক হাজার সদস্য হত্যা করেন। আল কায়েদা নেতৃত্ব তাদেরকে খারেজি বলে আখ্যা দেয় এবং তাদের খেলাফতকে অবৈধ বলে রায় দেয়। একজন খলিফা হবার জন্য যেসব যোগ্যতা থাকা জরুরী, তার কোনটিই তার মাঝে নেই। তিনি বাগদাদ বিশ্যবিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন অর্থাৎ সাধারণ শিক্ষিত, তিনি আলেম না।" তালেবান ও আলকায়েদা নেতৃত্ব তাদেরকে পরামর্শ দেয় উভয় পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য আলেমদের দ্বারা একটি শরিয়াহ আদালত স্হাপন করে তাদের অভ্যন্তরীন কোন্দলগুলো মিটিয়ে ফেলার কিন্তু আইএস তা প্রত্যাখ্যান করে এমনকি মসূল দখলের পর তারা ২য় দফা সিরিয়ান নুসরাহ এর উপর যুদ্ধাভিযান শুরু করে এবং তাদের প্রথম সারির কয়েকজন কমান্ডারকে হত্যা করে ও তাদের নিয়ন্ত্রিণ বেশ কিছু এলাকা দখল করে নেয়।"
সাদাচোখে ভাইয়া, সবার কাছে "তারা আসলেই কি?" সেটা অনেক বড় ব্যাপার কিন্তু আমি চিন্তা করি তারা যদি আজকে ধ্বংশ হয়ে যায় তখন ইরাকি সুন্নীদের বাঁচাবে কে?? ইরাকে যে সুন্নী গণহত্যা চলমান এটা কি বাস্তবতা নয়?? এদের কথা কেউ ভাবতে রাজিনা। এসব মানুষগুলোর কি দোষ??
না বলেনি। আমি পাইনি।
কিন্তু এসব বলেছেঃ
১। আলেম ও মূর্খ সমান নয়। তাদের দুজনের মতামত সমান নয়।
২। মতামত পাবলিকলী নিতে হবে এবং নেতা সিদ্ধান্ত নিবে কোরান ও হাদীসের আলোকে, মেজরিটির মতামতের আলোকে নয়।
৩। হালালকে হারাম করা যাবে না কিংবা হারাম কে হালাল। গণতন্ত্রে তা করা যায় এবং অসংখ্য করা হয়েছে।
এ নিয়ে এমনি বেশ কিছু লিখা হয়েছে কোরান ও হাদীসের আলোকে। আপনি তা পড়ে আপনার মতামত দিতে পারেন। কারো আন্ডারস্ট্যান্ডিং এ ভুল থাকলে নিশ্চয়ই আমরা তা শোধরাতে পারবো। এ নিয়ে আমার একটা লিখা আছে, ঘুম ভাংতে চাই ভাই য়ের ও একটা লিখা আমি পড়েছি - যা আমার ভাল লেগেছে এবং মোর ফ্যাক্টচুয়াল মনে হয়েছে।
আর সবশেষে আপনার প্রশ্নের আলোকে বলতে হয় - হিরোইন কিংবা আমাদের ইয়াবার কথাও কোরানে কিংবা হাদীসে হারাম বলা হয় নি - এর মানে তো নিশ্চয়ই এই না যে - তা হারাম নয়।
ধন্যবাদ।
আরো আছে, অধিকাংশই পথভ্রষ্ট, যালেম , ফাসেক ইত্যাদি। আয়াত গুলো ঠিক মনে নেই। চাইলে দিত পারব।
গণতন্ত্রের মূল্য ভিত্তিই অধিকাংশ।
আর কোরান-হাদিসেও এব্যাপারে কমতি নেই।
মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না (রহঃ) হুযায়ফা ইবনু ইয়ামান (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ লোকেরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে কল্যাণের বিষয়াদি জিজ্ঞাসা করত। কিন্তু আমি তাকে অকল্যাণের বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতাম এ ভয়ে যে, অকল্যাণ আমাকে পেয়ে না বসে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমরা তো জাহিলিয়াতে ও অকল্যাণের মাঝে ছিলাম। এরপর আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে এ কল্যাণের মধ্যে নিয়ে আসলেন। এ কল্যাণের পর আবারও কি অকল্যান আসবে? তিনি বললেনঃ হ্যা। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, সে অকল্যাণের পর আবার কি কোন কল্যাণ আসবে? তিনি বললেনঃ হ্যা। তবে এর মধ্যে কিছুটা ধূম্রাচ্ছনতা থাকবে। আমি প্রশ্ন করলাম, এর ধূম্রাচ্ছনতা কিরূপ? তিনি বললেনঃ তখন এমন একদল লোকের উদ্ভব হবে-যারা আমার প্রবর্তিত পদ্ধতি ছাড়া অন্য পদ্ধতি- অবলম্বন করবে, আমার প্রদর্শিত হেদায়েতের পথ ছেড়ে অন্যত্র হেদায়েত ও পথের দিশা খুঁজবে। তাদের মধ্যে ভাল-মন্দ উভয়টিই থাকবে। তখন-আমি আরয করলাম, এ কল্যাণ পর কি কোন অকল্যাণ আছে? তিনি বললেন, হ্যা! জাহান্নামের দরজার দিকে আহবানকারীদের উদ্ভব হবে। যারা তাদের ডাকে সাড়া দেবে তাদেরকে তারা তাতে নিক্ষেপ করবে। আমি তখন বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ! তাদের কিছু বৈশিষ্ট্যের কথা আমাদের বর্ণনা করুন। তিনি বললেনঃ তাদের বর্ণ বা ধরন-ধারণ হবে আমাদের মতো এবং তারা আমাদেরই ভাষায় কথা বলবে।( মুসলিম: ৪৬৩১, বুখারী: ৬৬০৫ অর্থাৎ এটি মুত্তাফাকুন আলাইহ)
# এই অংশটুকু লক্ষ্য করুন: "আমি প্রশ্ন করলাম, এর ধূম্রাচ্ছনতা কিরূপ? তিনি বললেনঃ তখন এমন একদল লোকের উদ্ভব হবে-যারা আমার প্রবর্তিত পদ্ধতি ছাড়া অন্য পদ্ধতি- অবলম্বন করবে, আমার প্রদর্শিত হেদায়েতের পথ ছেড়ে অন্যত্র হেদায়েত ও পথের দিশা খুঁজবে।"
আজ কি মডারেট ইসলামিস্টরা পশ্চিমা গণতন্ত্রকে হেকমাহ বলে গ্রহণ করছেনা? এই পদ্ধতির অনুমোদন কি আল্লাহর রাসূল (স)দিয়েছেন? আল্লামা ইকবাল ও অন্যান্য মডারেট ইসলামিস্টরা অভিমত পোষণ করেছেন, খেলাফতের বিকল্প হিসেবে গণতন্ত্রকে গ্রহণ করা যেতে পারে। এটা তারা কিসের ভিত্তিতে বলছেন? তারা আজ এই মডারেট ইসলামিক মুভমেন্টের জন্য অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার এর জন্য জীবন দিচ্ছেন এর মাঝেই হেদায়েত খুঁজছেন। আজ মুসলিমদের মাঝে মডারেট ইসলামিক মুভমেন্টের প্রতি জনপ্রিয়তা বেশি। তারাও নেতাদের কথায় এর মাঝেই হেদায়েত ও পথের দিশা খুঁজছেন অথচ এই আন্দোলনও ব্যর্থ হয়েছে আলজেরিয়ায় ৯০% ভোট পাবার পরেও সামরিক বাহিনীর বর্বরতায়, তিউনিসিয়ায়, মিশরে, তুরষ্কে। হ্যা! এর মাঝে কিছু ভালো দিকও আছে আবার কিছু খারাপ দিকও সেটা কিন্তু আল্লাহর রাসূল (স)ও বলেছেন।
ইরবায বিন সারিয়া (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূল (সাঃ)বলেন, আর আমার পর তোমাদের কেউ জীবিত থাকলে সে বহূ (ইসলামে) মতভেদ দেখতে পাবে। তখন আমার সুন্নাহ এবং হেদায়াতপ্রাপ্ত (৩০ বছরের ৪জন খলিফা যথাক্রমে: আবূ বকর, উমার, উসমান ও আলী রাঃ) খোলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাহ অনুসরণ করা হবে তোমাদের অপরিহার্য কর্তব্য। এই সুন্নাহকে খুব মজবুত করে দাঁত দিয়ে চেপে ধরবে। আর দ্বীনে নতুন উদ্ভাবিত বিষয়সমূহ থেকে বিরত থাকবে। কেননা, (দ্বীনে)প্রত্যেক নব উদ্ভাবিত জিনিসই হচ্ছে বিদ'আত।আর প্রত্যেক বিদ'আতই ভ্রষ্টতা।(আহমাদ, আবু দাউদ ৪৬০৭, তিরমিজি ২৮১৫, ইবনে মাজাহ, মিশকাত ১৬৫)
আমি জানি এসব বললেই সবাই বলে, আরে এখন সিচুয়েশন আলাদা পৃথিবী বদলে গেছে তুমি চাইলেই কি গণতন্ত্র বাদ দিয়ে খেলাফত আনতে পারবা নাকি?
ঠিক আছে আমরা যদি এই খলিফাদের সিচুয়েশনও বাদ দেই পরবর্তী যুগ নিয়েও আলোচনা করা যায়। কারণ তখনকার সিচুয়েশন ছিল প্রচন্ড খারাপ।
#ইসহাক ইবনু রাহওয়াইহ (রহঃ) ইমরান ইবনু হুসাইন (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমার উম্মতের সর্বশ্রেষ্ঠ যুগ আমার (সাহাবীগণের) যুগ। এরপর তৎ-সংলগ্ন যুগ (তাবেয়ীদের যুগ)। এরপর তৎ-সংলগ্ন যুগ (তাবে-তাবেয়ীদের যুগ)।(বুখারী, অধ্যায়:নবী-রাসূল-৫০, হাদিস নং:৩৩৮৮)
এই শেষ যুগ তাবে-তাবেয়ীদের যুগে ফেৎনা ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পরে। ওসমান (রাঃ) ও আলী (রাঃ) হত্যার শিকার হন, খেলাফত নিয়েই অনেক যুদ্ধ-বিগ্রহ, রক্তক্ষয় হয় এবং খারেজী ও শিয়াদের উদ্ভব হয় যা আল্লাহর রাসূল (স) আগেই ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন কিন্তু সে সময়ে "যেহেতু খেলাফতের ক্ষমতা নিয়ে এত সমস্যা" তারাও কি সমস্যা সমাধানের জন্য গণতন্ত্রের মত কোন বিকল্প পথ বের করতে পারতেননা? কিন্তু করলেননা কেন? অথচ আজকের পরিস্হিতির সাথে তখনকার পরিস্হিতির অনেক মিল ছিল।
মুহাম্মাদ ইবনে আবদুল আযীয (রঃ).. আবু সাইদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন, নবী ﷺ বলেছেন, নিশ্চয়ই তোমরা তোমাদের পূর্ববর্তীদের আচার-আচরণকে বিঘতে বিঘতে হাতে হাতে গ্রহণ অনুকরণ করবে। এমনকি তারা যদি গুঁইসাপের গর্তেও প্রবেশ করে থাকে, তাহলে তোমরাও এতে তাদের অনুসরণ করবে। আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! এরা কি ইহুদি-নাসারা?তিনি বললেন, আর কারা?(বুখারী:৬৮২১, ইফাবা:১০ম খন্ড, পৃষ্ঠা ৫০৬-৫০৭, পিডিএফ পেজ: ৪৫২ মান সহীহ)
হুজায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “নবুওয়াত ব্যবস্থা তোমাদের মাঝে ততদিন থাকবে, যতদিন আল্লাহ তাআলা মঞ্জুর করেন। অতঃপর যখন ইচ্ছা, তখন তিনি তা উঠিয়ে নিবেন। তারপর (রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওফাতের পর) তোমাদের মাঝে নবুওয়াতের পদ্ধতিতে খেলাফত ব্যবস্থা কায়েম হবে এবং তা আল্লাহ তাআলা যতদিন ইচ্ছা ততদিন থাকবে (খুলাফায়ে রাশিদিন এর যুগ)। অতঃপর তিনি তা উঠিয়ে নিবেন। তারপর হানাহানির রাজত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে এবং তা আল্লাহ তাআলার যতদিন ইচ্ছা ততদিন থাকবে (রাজতন্ত্র)। অতঃপর আল্লাহর ইচ্ছায় তার বিলুপ্তি ঘটবে। তারপর জবর দখল তথা আধিপত্য বিস্তারের রাজত্ব কায়েম হবে এবং আল্লাহর ইচ্ছায় দুনিয়াতে কিছুকাল বিরাজমান থাকবে (নানা ভূখণ্ডে বর্তমান গণতন্ত্র, একনায়কতন্ত্র ও রকমারি বাদ ও তন্ত্রে প্রতিষ্ঠিত স্বৈর শাসকগণ) । তারপর যখন আল্লাহ ইচ্ছা করবেন, তখন এরও অবসান ঘটবে। অতঃপর নবুওয়াতের পদ্ধতিতে খেলাফত রাষ্ট্র-ব্যবস্থা কায়েম হবে। এ বলে রাসূল সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়া সাল্লাম চুপ রইলেন”। (মুসনাদে আহমদঃ ৪/২৭৩)
মন্তব্য করতে লগইন করুন