মাকে নিয়ে মক্কাতুল মুকাররমা ও মদিনাতুল মুনাওয়ারা সফর-(সমাপ্তি পর্ব)

লিখেছেন লিখেছেন রায়হান আজাদ ২২ মে, ২০১৫, ০৮:৫৩:৫৭ সকাল

২৬ এপ্রিল মদিনায় আমাদের শেষ দিন। মায়েদের জান্নাতুল বকী‘ ঘুরে ফিরে দেখালাম। সকালে দুলাভাই মৌলানা আখতারসহ যম যমের পানি সংগ্রহ করলাম। মাকে বললাম, ‘আপনার কি কি দরকার? ছোটখাট একটা শপিং হয়ে যাক না’। তিনি যা যা বললেন তা তা কিনে দিলাম। আজ বিকেল বেলা দুলাভাই তার শ্বাশুড়ীদের নিয়ে হারাম শরীফে গেলেন। আমি মাসুম ভাইদের সাথে কিছুদূর ঘুরলাম। আরো ঘুরতে পারলে হয়তো আরো ভালো হতো।

ইশার পর দুলাভাইসহ বিন দাউদ সুপার সপে গিয়ে বাসার জন্য কিছু স্টেশনারিজ নিলাম। সেখান থেকে তমার মার্কেটে গিয়ে আজওয়া ও অন্যান্য খেঁজুর খরিদ করলাম অল্পসল্প। সৌদি আরবের সোনা খাঁটি। তুলনামূলক সস্তাও। আমার এক ফুফাতো ভাইয়ের জন্য সোনা না নিয়ে পারলাম না। দুলাভাই মাঝরাত পর্যন্ত মায়েদের লাগেজ-গাট্টি বাঁধলেন। আমার অনেক আসান হয়েছে। মধ্যরাতে শু‘তে না শু‘তেই ফজরের আজান। কী আর ঘুম! হারাম শরীফে ফজর পড়লাম চমতকার কন্ঠের তিলাওয়াত শুনে। মসজিদে নববীর চত্বরে হিমেল হাওয়া। চারপাশের আকাশে গুমধরা কুয়াশা। মায়েদের নাস্তা-পানির ব্যবস্থা করে সকাল ৭টার মধ্যে আমরা জেদ্দা অভিমূখে রওয়ানার জন্য প্রস্তুতি নিই। মহানবীকে বিদায়ী সালাম জানিয়ে গাড়িতে উঠি সকাল আটটায়। গাড়িতে সবাই নিজ নিজ সিটে ঘুম। আরবের চারপাশের মরু প্রান্তর দেখে আমার ভাবনার জগতে হামাগুঁড়ি। দুপুর নাগাদ জেদ্দা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে আমাদের গাড়ি এসে পড়ে। এখানে বাধ সাধে বিমান কর্তৃপক্ষ ‘যমযমের পানি ইচ্ছে মত নেয়া যাবে না’- শুনে মনটা খারাপ হয়ে গেলো। হায়রে আমার কত কষ্টের পানি! বাধ্য হয়ে আমরা পাসপোর্ট দেখিয়ে স্বল্প পরিমাণ যমযম ভর্তি তিনটি প্যাকেট সংগ্রহ করি ২৭ রিয়ালের বিনিময়ে।

বোর্ডিং পাস শেষে ইমেগ্রেশনে দীর্ঘ বিড়ম্বনা। বিকেল সাড়ে পাঁচটায় আমাদের ফ্লাই দুবাই এয়ার কার্গো দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করে। রাত সোয়া নয়টায় দুবাই এয়ারপোর্টে পৌঁছে এ ফ্লাইট। সেখানে দীর্ঘ বিরতি শেষে রাত সোয়া তিনটায় চট্টগ্রামগামী ফ্লাই দুবাইয়ের অপর একটি কার্গো আমাদের নিয়ে আবার উড্ডয়ন শুরু করে। সাড়ে পাঁচ ঘন্টা পর সকাল সাড়ে দশটায় চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে আমাদের এয়ারক্রাপট অবতরণ করে। প্রয়োজনীয় ইমেগ্রেশন সেরে বেল্ট থেকে ব্যাগ ও গাইট সংগ্রহ নিয়ে বাইরে বেরুতেই দেখি খায়রুল বাশার বাবু ভাই নিজের গাড়ি নিয়ে চাচী মায়ের জন্য; প্রফেসর কামরুল হুদা,লেকচারার আমিন ও আতীক খালাম্মার জন্য আর আমার শ্বশুর ইঞ্জিনিয়ার শফিকুল আলম ও ছোটভাই মিজান আমার ও আম্মার জন্য অপেক্ষা করছে। তাদের ভাড়াকৃত কারে করে সোজা বাসায় চলে আসি। আলহামদুলিল্লাহ,প্রিয়তমা মাকে নিয়ে সুস্থভাবে আমার দু‘সপ্তাহের উমরাহ সফর সুসম্পন্ন হলো। ফলে মকামে ইবরাহীমে আমার দো‘য়া কবুলের প্রমাণ মিললো। জীবনের একটি সাধ পূর্ণ হলো। এখন মা-খালাম্মা ও চাচীমা দারুণ খুশী।

বিষয়: বিবিধ

১৪২৪ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

321756
২২ মে ২০১৫ সকাল ০৯:২২
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : আগে নাকি জমজম এর পানি কে ওজন এর পরিমান থেকে অব্যাহতি দেওয়া হত। গতবার হাজিদের নিজেদের হাতে জমজম এর পানি আনতেই দেওয়া হয়নি। বরং এয়ারপোর্টে কিনে নিতে বাধ্য করা হয়েছে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File