মাকে নিয়ে মক্কাতুল মুকাররমা ও মদিনাতুল মুনাওয়ারাহ সফর-(০২) রায়হান আজাদ
লিখেছেন লিখেছেন রায়হান আজাদ ১২ মে, ২০১৫, ০৭:৫৪:৪৬ সকাল
মক্কায় আমাদের কাছের লোক জহির। তিনি সম্পর্কে আমার চাচা। তার আন্তরিকতার কমতি নেই। মক্কায় তার পেশা ড্রাইভিং। ১৬ এপ্রিল আম্মাদের ২য় উমরাহ পালনের দিন ঠিক হয়। জহির চাচা সকাল ৮টায় হোটেলের সামনে থেকে আমাদের তুলে নেন। তিনি নিয়ে যান হারামের বাইরে ‘তানঈম’- মসজিদে আয়েশা। ইহরাম বাঁধা আমাদের লক্ষ্য। উল্লেখ্য, হারামের ভেতরের কেউ উমরাহ বা হজ্বের জন্য মনস্থির করলে তাকে অবশ্যই উম্মুল মোমিনীন হযরত আয়েশা মসজিদে গিয়ে ইহরাম বাঁধতে হয়। ইহরাম বাঁধার পর জহির চাচা তার গাড়ি থেকে আমাদেরকে হারাম শরীফের কিং ফাহাদ গেইটের মুখে নামিয়ে দেন। সেখান থেকে আমরা সরাসরি বায়তুল্লাহ‘র গ্রাউন্ড ফ্লোরে চলে আসি। হাত ধরে ধরে মা ও খালাসহ তাওয়াফ করলাম। কা‘বা শরীফের গিলাফ জড়িয়ে ধরে মায়ের কী কান্না! প্রচন্ড ভীড় তবু তারা চেষ্টা করছেন। এদিকে আমার ছোটভাই সিনিয়র এসিস্ট.জজ মুজাহিদ সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন। মা তার জন্য দোয়া করেন আবেগভরে। আমি কিছু পারি আর না পারি ঠেলাঠেলি থেকে মায়েদের হেফাজতের চেষ্টা করতে থাকি। মকামে ইবরাহীমে দু‘রাকাআত সালাত শেষে আমরা সাফা-মারওয়া সাঈ করতে চলে যাই । জামায়াতে যোহর শেষে উমরাহর কাজ সমাপ্ত করে আম্মাদের নিয়ে আমি বাসায় চলে আসি। প্রচন্ড গরম। টায়ার্ড। খাবার দাবার শেষে বিকেলে আমি একাই যাই হারামে। দেখা হয় ভাইপো হাফেজ নুরুল আমিনের সাথে। সে মক্কা টাওয়ারে চাকরি করে। ফল ও জুস নিয়ে সে আমার সাথে হোটেলে তার দাদীদের দেখতে আসে।
পর দিন জুমাবার। মায়েদের নিয়ে হারাম শরীফে জুমা পড়ি। কী চমতকার তেলাওয়াত! বিকেল বেলা বেশ ব্যস্ত ছিলাম। আমার এক ছাত্র মাঈনুদ্দীন। তার বাবা জেদ্দা থাকেন। তিনি আমাদের আত্মীয়ও হন। ইশার পর তিনি আল বাইক থেকে বুরুজ নিয়ে তার খালাদের দেখতে আসেন হোটেলে। এদিকে WAMY মক্কা জোনের কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ নিজামী ভাই আমার সাথে দেখা করার জন্য চারটা থেকে অপেক্ষা করছেন। বহুক্ষণ খোঁজাখুঁজির পর বিন দাউদ শপিং মলের সামনে তার সাক্ষাত মেলে। আমি তাকে আমার ও প্রফেসর ড. আবু বকর রফীক লিখিত সিআরপিএস কর্তৃক প্রকাশিত কয়েকটি বই হাদিয়া দেই। আমার সম্পাদিত বন্ধুবর এডভোকেট জিয়া হাবীব আহসানের বাবা এডভোকেট এএম য়্যাহ্য়্যা স্মারকগ্রন্থখানিও পৌছাই। রাত এগারোটার দিকে আমি নিজামী ভাই থেকে বিদায় নিয়ে বাসায় এসে ঘুমিয়ে পড়ি। ক্লান্তির ঘুম। এক চিলতে ফজর।
বিষয়: বিবিধ
১২৪৮ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন