মাকে নিয়ে মক্কাতুল মুকাররমা ও মদিনাতুল মুনাওয়ারাহ সফর-(০১) রায়হান আজাদ
লিখেছেন লিখেছেন রায়হান আজাদ ১০ মে, ২০১৫, ০৬:১৭:০৯ সন্ধ্যা
মাকে নিয়ে মক্কাতুল মুকাররমা ও মদিনাতুল মুনাওয়ারাহ সফর-(০১)
রায়হান আজাদ
আল জান্নাতু তাহতা আকদামিল উম্মুহাত- মায়ের পায়ের নীচে সন্তানের বেহেশত। মাÑমা গুণেই মহত। দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ ধন। অতীব আপন জন। মায়ের স্বার্থের ব্যাপারে আপোষ চলে না। দুনিয়াবী ক্ষেত্রে মা যাই বলেন তাই শেষ কথা। হাদীছে আছে,“মা বাবা তোমার জান্নাত ও জাহান্নাম”। আল কুরআনে আল্লাহর পরে মা বাবার সাথেই সবচে বেশী সদ্ব্যবহারের নির্দেশ রয়েছে। চট্টগ্রামের সীমানা ক্রস করার আগেই আমার বাবা পরলোকে পাড়ি জমান। ভবঘুরে মন ঘুরতে যেমন উৎসুক তেমনি কাছের মানুষকেও ঘুরাতে চায়। আমার ঘুরাঘুরি কা‘বা কেন্দ্রিক। মা‘র হজ্ব ফরজ হয়নি। আমারও না। বিশেষত মায়ের শরীরের সক্ষমতা দিন দিন ফুরিয়ে যাচ্ছে। পাছে ভয় হয় হজ্ব ফরজ হওয়ার আগেই তিনি শারীরিক শক্তি হারিয়ে ফেলবেন কিনা! তাই সিদ্ধান্ত নিলাম এবার আমি মাকে নিয়ে উমরাহ সফরে যাবো। টার্গেট দো‘য়া কবুলের জায়গায় দো‘য়া করানো। সবার দ্বিধা-দ্বন্দ্ব কাটে না আমার একের পর এক হাইফাই প্রজেক্ট দেখে। স্বল্পজীবী হলেও আমি কিন্তু ডিটারমাইন্ড। মায়ের সাথে আরো দুই মা Ñ খালাম্মা ও চাচীমা জুটে যায় । বাসা, ভিসা ও টিকেটিংয়ের সব এরেঞ্জমেন্ট সাহারা হজ্ব কাফেলার পরিচালক আলহাজ্ব মোহাম্মদ মাসুম সম্পন্ন করে দেন।
শেষতক ১৩ এপ্রিল আমাদের কাংখিত সফর। চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর হতে ফ্লাই দুবাইয়ে আমাদের যাত্রা। ইমেগ্রেশানে তেমন বেগ পেতে হয়নি। সন্ধ্যা ছ‘টা নাগাদ প্লেন আকাশে উড়ে। দুবাই পৌঁছে রাত একটায়। সেখানে একঘন্টা বিরতি পেয়ে আমরা যে যার যার মতো ইহরাম বেঁেধ নেই। রাত চারটায় ফ্লাই দুবাইয়ের অপর একটি ফ্লাইট আড়াই ঘন্টা আকাশে উড়ে আমাদেরকে জেদ্দা বিমানবন্দরে নামিয়ে দেয়। সেখানকার সব আনুষ্ঠানিকতা সেরে সকাল আটটায় আমাদের গাড়ি মক্কাতুল মুকাররমার আল হিজরাহ রোডের হোটেল মি‘য়াদ আস সাফওয়ার সামনে থামে। এ থ্রি স্টার মানের হোটেলে মায়েদের দেয়া হয় তিন সিট বিশিষ্ট একটি রুমে আর আমি তাদের পাশে মাসুম ভাইদের সাথে অন্য একটি রুমে বরাদ্দ নেই ।
দুপুরের পর সেদিন আমি মায়েদের নিয়ে প্রথম কা‘বা শরীফে গেলাম। প্রথম উমরাহ সমপন্ন করতে মাগরিবের ওয়াক্ত হয়ে যায়। এদিন তারা খুবই ক্লান্ত। তাই বাসায় নিয়ে খাইয়ে দাইয়ে তাদেরকে সকাল সকাল ঘুম পাড়িয়ে দিলাম। পরদিন কা‘বার চারপাশ ঘুরিয়ে দেখানোর প্লান। সাফা-মরওয়া পাহাড়ের দিকে রাসুলুল্লাহর বাড়ি, আবু জেহেলের বাড়িতে বাথরুম নির্মাণের দৃশ্য, জবলে আবু কাইছে সৌদি বাদশাহর রাজকীয় ভবনের সারি প্রভৃতি দেখালাম। যে কারো মতো আমার মায়েরও সুন্দরের প্রতি দুর্বলতা। তিনি অন্তরের ভাষায় একটি ফিলিস্তিনি পরিবারের সাথে কা‘বা চত্বরে সখ্য গড়ে তোলেন। আমি দোভাষীর কাজ করে তাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেই। আমি মায়েদের সহ তাদের ছবি তুলি আর তারা আমাদের ছবি তোলে। আহা ক্ষণিকের কী উচ্ছ্বাস!
সফরের ২য় পর্ব
সফরের ৪র্থ পর্ব
বিষয়: বিবিধ
১১৬৯ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন