সাবধান, জাল টাকার নোট যাতে আপনার ঈদ আনন্দকে মাটি করে না দেয়!

লিখেছেন লিখেছেন মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম ৩০ জুন, ২০১৬, ১২:০৪:১৮ দুপুর



সাবধান, সামনে ঈদ। জাল নোট জালিয়াত চক্রের প্রতারণা এ সময় সাধারণত: বেশি হয়ে থাকে। সবাই কচকচে নতুন নতুন নোট নিয়ে একটু গন্ধ শুঁকে দেখে। কী চমৎকার ঘ্রাণ! পকেট টান টান। মাঝে মধ্যে হাত দিয়ে দেখে আনন্দ অনুভব করেন। পকেটে টাকা বেশি না থাকলেও নতুন টাকার গন্ধে মন ভরে উঠে। প্রিয়জনকে দিতে মন উৎসুক। চমকে দিয়ে দিলেন কাউকে! গ্রহীতা টাকা নিয়ে বাজার গেলেন, দোকানীকে দিলেন। দোকানী উল্টে পাল্টে দেখেন। তখন আপনার মন খারাপ হতে পারে দোকানীর আচরণে। মনে মনে আপনি ভাবতে পারেন, এটা জাল নোট নয়। যেই মাত্র বললেন দোকানী, “এটা জাল নোট। ছিঁড়ে ফেলুুন বা বদলে দেন।” আপনার হাতে আর টাকাও মাল কেনার সমপরিমাণ নেই তখন আপনার মনের কী প্রতিক্রিয়া হতে পারে একবার ভাবুন তো!

অথবা কেউ ব্যাংকে নিয়ে গেছেন টাকা জমা দিতে। অনেকগুলো টাকার মধ্যে একটি নোট জাল। অফিসার আপনাকে বলার সাথে সাথেই সীল মেরে দিল জাল বলে। আপনি ভ্যাবাচ্যাকা বনে গেলেন। তাই সাবধান হোন, টাকা লেনদেন দেখে শুনে করুন।

ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, জীবনে অনেক ঠকেছি। অনেকবার প্রতারণা শিকার হয়েছি। বেশি টাকার বান্ডিল পেলে কাউন্টিং শুরু! অমনি ড্রয়ার ভর্তি করি। ধন্যবাদ বলে দাাতাকে বিদায় দিই। কিন্তু বিপত্তি ঘটে তখন যখন জাল নোট বলে চিহ্নিত হয়।

বিভিন্ন পত্রিকার অনুসন্ধানী রিপোর্ট থেকে জানা যায়,

“ঈদ এলেই বেসামাল হয়ে ওঠে টাকা জালিয়াত চক্র। নানা উপায়ে বাজারে ছড়িয়ে দেয় জাল নোট। এবারও ঈদ সামনে রেখে সক্রিয় হয়ে উঠেছে চক্রটি। ঈদকে কেন্দ্র করে জনসাধারণের অতিরিক্ত লেনদেনকে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগাচ্ছে জালনোট চক্রগুলো। এতে স্বল্প আয়ের মানুষ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বেশি বিপাকে পড়ছে। জাল টাকা সম্পর্কে ভালো ধারণা না থাকায় প্রতারিত হচ্ছেন সহজ-সরল মানুষ। জালিয়াত চক্রের বিশাল সিন্ডিকেটের সঙ্গে কয়েকজন বিদেশি নাগরিকও জড়িত। বিভিন্ন সময়ে বেশ কয়েকজন বিদেশি জালিয়াতকারী ধরা পড়ার খবর প্রকাশিত হয়েছে গণমাধ্যমে। তারা শুধু টাকা নয়, রুপি এবং ডলারও জাল করে বাজারে ছাড়ে একই ধরনের কৌশলে। তারা মাঠ পর্যায়ে জালনোট চালাতে এজেন্ট নিয়োগ করেছে নির্দিষ্ট কমিশনের ভিত্তিতে। জাল টাকা চালানোর জন্যে তারা নিত্যনতুন কৌশল অবলম্বন করছে। জালনোটে আসল টাকার কাগজ ব্যবহার হওয়ার কারণে সাধারণ মানুষ সহজে তা সনাক্ত করতে পারে না। খালি চোখে বুঝার উপায় নেই যে, নোটটি আসল কিনা। জাল নোট সনাক্তকরণ মেশিনেও অনেক সময় জাল নোট ধরা পড়ে না। কারণ জাল নোট ছাপার ক্ষেত্রে জালিয়াত চক্র উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকে। দেশে জাল নোট সনাক্তকারী সাধারণ মেশিনগুলো নোটে ব্যবহৃত কাগজটি জাল কিনা তা সনাক্ত করতে পারলেও নোটের জলছাপ বা নিরাপত্তা সুঁতা জাল কিনা তা সনাক্ত করতে পারে না অনেক সময়। ফলে সনাক্তকারী মেশিনকেও ফাঁকি দিয়ে জালনোটগুলো মিশে যাচ্ছে আসল নোটের কাতারে। আর এসব জালনোট সনাক্ত না হওয়ায় দেশব্যাপী এই নোট দিয়ে লেনদেন চলছে অনেকটা অজান্তেই। এতে একদিকে সাধারণ মানুষ যেমন প্রতারণা ও হয়রানির শিকার হচ্ছে, তেমনি অন্যদিকে দেশের অর্থনীতির উপর পড়ছে প্রচণ্ড চাপ।”


বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়মিত সার্কুলার জারি করে সব জনসাধারণকে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেয়। তারপরও জাল নোটের প্রতারণা রোধ করা যায় না। আইন-শৃংখলা বাহিনীর অভিযানে মাঝে মধ্যে মাঠ পর্যায়ের কিছু অসাধুলোক ধরা পড়লেও মূল হোতারা ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। মামলা হয়, জামিনে বেরিয়ে যায়। ব্যস! ঐ পর্যন্তই। যাই হোক সাবধান হতে হবে নিজ থেকেই। জাল নোট যাতে আপনার ঈদ আনন্দকে মাটি করে না দেয়। কথায় বলে-সাবধানের মার নেই!

====

বিষয়: বিবিধ

১৪২৪ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

373579
৩০ জুন ২০১৬ দুপুর ১২:১৬
হতভাগা লিখেছেন :
ফলে সনাক্তকারী মেশিনকেও ফাঁকি দিয়ে জালনোটগুলো মিশে যাচ্ছে আসল নোটের কাতারে।


০ যেসব জাল টাকা সনাক্তকারী মেশিনের জালেও ধরা পড়ে না সেগুলো সাধারণ মানুষরা বুঝবে কিভাবে জাল না আসল? আর দোকানীরাও বা এটাকে কিভাবে জাল বলে সনাক্ত করতে পারবে ?

এরকম টেকনলজি যদি জালিয়াতরা বের করে ফেলে তাহলে এদেরকেই জালিয়াত ধরার কাজে বসানো উচিত কাঁটা দিয়ে যেভাবে কাঁটা তোলা হয় ।

বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের চেয়ে এসব জালিয়াতেরা টেকনলজির ব্যবহারে দক্ষতার দিক দিয়ে কয়েক হাজার আলোক বর্ষ এগিয়ে ।
৩০ জুন ২০১৬ দুপুর ০৩:১৪
310071
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : অন্ধ যেমন হাতে নিয়ে কত টাকার নোট অনায়াসে বলে দিতে পারে। অনেক দোকানী আছের তারা টাকা হাতে ধরলেই জাল/নকল বুঝতে পারেন।..ধন্যবাদ আপনার সুচিন্তিত মন্তব্যের জন্য..
373584
৩০ জুন ২০১৬ দুপুর ১২:৫৭
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : জাল নোট সংক্রান্ত আইন টাই এমন যে এর মাধ্যমে জালিয়াত এর কিছু হয়না। কষ্ট দেওয়া হয় সাধারন মানুষ কে।
৩০ জুন ২০১৬ দুপুর ০৩:৩৯
310073
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : বজ্র আটুঁনি ফস্কা গেরো!Good Luck Good Luck
373622
৩০ জুন ২০১৬ দুপুর ০২:৫২
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ পিলাচ
৩০ জুন ২০১৬ দুপুর ০৩:৪০
310074
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck
373624
৩০ জুন ২০১৬ দুপুর ০৩:০১
আবু জান্নাত লিখেছেন : বাংলাদেশের আইন প্রয়োগ সমসময় জালিমের পক্ষে যায়, মাজলুম সব সময়ই জুলুমের শিকার হয়। বাবুল আক্তারের বেলায় যেমনটি হচ্ছে।
জাল টাকা বানানো ও এটিএম জালিয়াতি চক্ররা আজিবনই বিচারের বাইরে থাকে।

সাধারণ গ্রাহকরাই জুলুমের শিকার হয়।

৩০ জুন ২০১৬ দুপুর ০৩:৪১
310075
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : ধন্যবাদ। আপনার সুচিন্তিত মন্তব্য এবং উপস্থিতির জন্য। জাযাকাল্লাহ!
373654
৩০ জুন ২০১৬ রাত ০৮:২৬
শেখের পোলা লিখেছেন : চেনার উপায়টা বলেদিলে ভাল হত। ধন্যবাদ
০২ জুলাই ২০১৬ রাত ০২:০০
310163
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : সুন্দর পরামর্শ..Good Luck Good Luck
374468
১২ জুলাই ২০১৬ সন্ধ্যা ০৭:৩৫
দিল মোহাম্মদ মামুন লিখেছেন : যেখানে সরকার খোদ নিজেই অবৈধ, সেখানে জাল টাকা থাকবেনা তো কি থাকবে!!!
১৩ জুলাই ২০১৬ দুপুর ০২:৫৭
310715
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : Good Luck Good Luck Good Luck
377576
১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ দুপুর ০২:১৭
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
১৯ অক্টোবর ২০১৬ দুপুর ০১:০৯
313783
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File