শবে বরাত : ইবাদতের মোড়কে নির্ভেজাল বিদআত

লিখেছেন লিখেছেন মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম ২২ মে, ২০১৬, ০৭:৪২:৩৯ সন্ধ্যা



মুসলিম উম্মাহর একটি অঞ্চলের বিশাল জনগোষ্ঠী “শবে বরাত” নামক ইবাদাতটি পালন করে আসছে কয়েক শতাব্দী ধরে। আমাদের প্রিয় বাংলাদেশসহ উপমহাদেশের কয়েকটি দেশে পালিত হয় মহাআয়োজনে। ভাগ্য রজনীখ্যাত রাতটির গুরুত্ব তাদের কাছে এত বেশি যে সম্ভবপর মহাসমারোহে পালিত হয়। মিডিয়ার ভাষ্য অনুযায়ী, ধর্মপ্রিয় মুসলমানগণ রাত জেগে যথেষ্ট ভাব-গাম্ভীর্যের মাধ্যমে রাতটি পালন করেন। পরদিন যথারীতি সরকারী ছুটিও থাকে। প্রশ্ন হচ্ছে, প্রচলিত এ ইবাদতটি কতটুকু শরীয়ত সম্মত? আর শরীয়ত সম্মত না হলে আর কতকাল ভুলের পাশে মুসলমান আবদ্ধ হয়ে দিকভ্রান্ত হবে? জন্মগত মুসলমান হিসেবে ঈমানের ছিটে ফোঁটা যা অবশিষ্ট থাকে তা ধর্মের আবরণে বিদআত পালনের মাধ্যমে বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আসুন দেখি শরীয়ত কী বলে?

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁর প্রদত্ত দ্বীনকে সহজ পদ্ধতি পালন করার জন্য নবী ও রাসুল প্রেরণ করেন। এর ধারাবাহিকতায় নবী মুহাম্মদ(সা) এবং দ্বীন আল্ ইসলামকে আমরা পাই। সর্বশেষ পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান হচ্ছে ইসলাম। সূরা আলে ইমরানের ১৯ নং আয়াতে এরশাদ হয়েছে,

إِنَّ الدِّينَ عِندَ اللّهِ الإِسْلاَمُ

“নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য দ্বীন একমাত্র ইসলাম।”

সূরা মায়েদায় এরশাদ হয়েছে,

الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ الإِسْلاَمَ دِينًا

“আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে পূর্নাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার নেয়ামত সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন হিসেবে মনোনীত করলাম।” (আয়াত-৩)

শরীয়তের সংজ্ঞা হচ্ছে, “মহান আল্লাহ দ্বীনের ইবাদাতের পদ্ধতি, নিয়ম-কানুন, হালাল-হারাম এবং বৈধ-অবৈধের যে সীমারেখা প্রদান করেছেন তার সমন্বিত রূপই শরীয়ত।” Shariah means : “The detailed code of conduct or the canons comprising way and modes of worship, standers of morals and the life and laws that allow and prescribe that judge between right and wrong.”(Towards understanding Islam)

রাব্বুল আলামীন তাঁর হাবীবের মাধ্যমে দ্বীনের পূর্ণতা প্রদান করেছেন এবং শরীয়তের সকল দিক ও বিভাগ পূর্ণরূপে প্রদর্শিত ও বাস্তবায়িত করেছেন। ফলে দ্বীনের মধ্যে নতুন কিছু সংযোজন বা বিয়োজন করার কোন সুযোগ কিয়ামত পর্যন্ত নেই।

শরীয়তের মুল উৎস কুরআন এবং হাদীস। এছাড়া ইজমা ও কিয়াসকেও উৎস হিসেবে চিন্তাবিদগণ বলে থাকেন। আলোচ্য মূল বিষয় ”শবে বারাত” নামক ইবাদাতটি উম্মাহর ইজমা নয়। একটি বিশেষ অঞ্চলের লোকদের মাঝে তা সীমাবদ্ধ।

শাবান মাসের মর্যাদা দিতে আল্লাহর নবী (সা)। তিনি এ মাসে বেশি সাওম এবং ইবাদতে লিপ্ত থাকতেন। অবশ্য অন্যান্য মাসেও তার কমতি ছিল না। “শবে বরাত”এর উৎস বা পালনীয় হিসেবে যে দলিল “শবে বরাত” পালনকারীরা দেন। তা বুঝতে কোন ইসলামী চিন্তাবিদ, মুফাসসির ও বিশেষজ্ঞের প্রয়োজন নেই। সূরা দুখানের ১-৪ আয়াতের ব্যখ্যা এবং কয়েকটি হাদীস যা হাদিস বিশারদদের কাছে কম গ্রহণীয় বলে প্রমাণিত।

“হা মীম। শপথ সুস্পষ্ট কিতাবের। নিশ্চয় এটা অবতীর্ণ করেছি এক বরকতময় রাতে। আমি তো সতর্ককারী মাত্র। এই রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থিরকৃত হয়।” (আয়াত : ১-৪)

এ আয়াতের লাইলাতুল মুবারাকা বা বরকতময় রাতকে তারা লাইলাতুল বারাআত বলতে চান। অথচ এত সরল আয়াত এখানে বলা হয়েছে এটা অবতীর্ণ করেছি বরকতময় রাতে। কুরআন নাযিলের মাস রমজান। সূরা বাকারার ১৮৫ নং আয়াতে বলা হয়েছে, “রমজান মাস, যাতে নাযিল করা হয়েছে আল্ কোরআন।” সূরা আল্ কদরে বলা হয়েছে,

نَّا أَنزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ

“নিশ্চয় এই কুরআন নাযিল হয়েছে লাইলাতুল কদরে।

وَمَا أَدْرَاكَ مَا لَيْلَةُ الْقَدْرِ

তুমি কি জান লাইলাতুল কদর কি?

لَيْلَةُ الْقَدْرِ خَيْرٌ مِّنْ أَلْفِ شَهْرٍ

লাইলাতুল কদর হল হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ।” (আয়াত : ১-৩)

এত সরল সুন্দর কথা আর কি হতে পারে? না বুঝার কি থাকতে পারে? কুরআন নাযিল হয়েছে এক বরকতময় রাতে। সেই রাতটি হল রমজান মাসে। আর শা’বানের মধ্য রাত্রিকে যদি শবে বরাত ধরা হয় তাহলে কি দাঁড়ায়? কুরআন নাযিলের রাত বা রমজান মাস বলা যাবে কি? শাবান মাসে কুরআন নাযিল হয়েছে? তাবেয়ী ইকরামা (র)এর মত অনুসারে কেউ কেউ বরকতময় রাত বলতে শবে বরাত বুঝিয়ে থাকেন তাহলে কুরআন-হাদীসের ভুল ব্যাখ্যা হবে। কারণ শবে বরাতের রাত্রে কুরআন নাযিল কুরআন -হাদীসের সুস্পষ্ট দলিলের পরিপন্থী। ইমাম কুরতুবী (র)তাঁর তাফসীরে বলেন, “কোন কোন আলেমের মতে ‘লাইলাতুম মুবারাকাহ’ উদ্দেশ্য হল মধ্য শা’বানের রাত। কিন্তু এটা একটা সম্পূর্ণ বাতিল ধারণা।”

ইমাম আবু বকর জাসসাস ‘আহকামুল কোরআন’ গ্রন্থে বলেছেন, “লাইলাতুল কদরের ৪টি নাম রয়েছে, তা হল : লাইলাতুল কদর, লাইলাতুল মুবারাকাহ, লাইলাতুল বারাআত এবং লাইলাতুল সিক।’’ (সূরা আদ-দুখানের তাফসীর) ইমাম মুহাম্মদ ইবনে আলী আশ-শাওকানী তাফসীরে ফতহুল কাদীর এবং ইবনে জরীর তাবারীও তাফসীরে তাবারী শরীফে অনুরূপ কথাই লিখেছেন। শবে বরাতকে “ভাগ্য রজনী’ হিসাবে মেনে নিয়ে অনেকে বিশ্বাস করেন হায়াত, মওত ও রিজিক বন্টনের বিষয়ে ফয়সালা করা হয়। অথচ লাইলাতুল কদরেই তা হয়।

হযরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একরাত্রে আমার পাশে রাসূল (সা)কে না পেয়ে তাঁর খোঁজে বের হলাম। এক পর্যায়ে তাঁকে জান্নাতুল বাকীতে পেলাম। তিনি আমাকে দেখে বললেন, আয়েশা! তুমি কি মনে করেছো যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সা) তোমার প্রতি অবিচার করবেন? তখন আয়েশা বললেন, হে আল্লাহর রাসূল(সা)! আমি মনে করেছি হয়ত আপনি আপনার অন্য কোন স্ত্রীর নিকট গমন করেছেন। অতঃপর রাসূল (সা) বললেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ শা’বানের মধ্য রাত্রে প্রথম আকাশে অবতরণ করেন এবং বনু ক্বালব গোত্রের ছাগলের লোমের চেয়েও অধিক সংখ্যক লোককে ক্ষমা করে দেন।” (তিরমিযী) উক্ত হাদীসটি ইমাম বায়হাকী তাঁর “শুয়াবুল ঈমান” গ্রন্থে সংকলন করেছেন।

হযরত আলী ইবনে আবু তালেব (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা) বলেছেন, “যখন শা’বানের মধ্যরাত আসে তখন তোমরা জেগে সালাত আদায় করবে আর দিবসে সাওম পালন করবে। কেননা আল্লাহ তায়ালা সূর্যাস্তের পর দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করে বলেন, কোন ক্ষমা প্রার্থনাকারী আছ কি? আমি তাকে ক্ষমা করব? কোন রিয্ক প্রার্থনাকারী আছ কি? আমি তাকে রিয্ক দেব? কোন বিপদগ্রস্ত ব্যক্তি আছ কি? আমি তাকে বিপদমুক্ত করব? এভাবে ভোর পর্যন্ত ঘোষণা দিতে থাকে।” (ইবনে মাযা ও বায়হাকী) আলবানী এ হাদীসকে দুর্বল এবং অগ্রণযোগ্য বলেছেন। কারণ এটি অপর সহীহ হাদীসের বিরোধী হওয়ায় এটি পরিত্যাজ্য। সহীহ হাদীসটি হাদীসে নুযুল নামে পরিচিত, যা ইমাম বুখারী ও মুসলিম তাদের কিতাবে সংকলিত করেছেন।

হাদীসটি হল : হযরত আবু হোরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা) বলেছেন, “মহান আল্লাহপাক প্রতি রাতের এক-তৃতীয়াংশ বাকী থাকতে দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করেন এবং বলতে থাকেন কে আছ আমার কাছে দু’আ করবে। আমি দু’আ কবুল করব। কে আছ আমার আছে চাইবে? আমি দান করব? কে আছ আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে? আমি তাকে ক্ষমা করে দেব।”(বুখারী ও মুসলিম) হাদীসটির বক্তব্য শা’বানের মধ্য রাত্রিতে আল্লাহ ঘোষণা করেন এবং হাদীসে নুযুলের বক্তব্য আল্লাহ প্রতি রাতে এভাবে ঘোষণা করেন। সুতরাং সহীহ হাদীসের বর্ণনায় যেখানে আল্লাহপাকের অবতরণকে আম করা হয়েছে, সেখানে দুর্বল হাদীস দিয়ে খাস করা যাবে কি?

হযরত আয়েশা (রা) বর্নিত হাদীসটি যদিও শবে বরাতের ভিত্তি হিসেবে ধরি, তাহলে কী দেখি? আল্লাহর রাসূল (সা) জান্নাতুল বাকীতে মৃতদের কবর জিয়ারাত করছেন। যদি এ ইবাদতটি সর্ব সাধারণের জন্য শরীয়তের বিষয় হলে তিনি সবাইকে এ ইবাদাত করার জন্য নির্দেশ কি দিতেন না? আল্ কুরআন বলছে,

“সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর।” সূরা মায়েদা-২ তাহলে সৎকর্ম পালনের জন্য একে অপরকে কি উৎসাহিত করতেন না?

প্রিয় বন্ধুগণ, আল্লাহর রাসূল (সা) এর ২৩ বৎসরের নুবুওয়াতী জীবনে কোন দিন কি মক্কার মসজিদুল হারাম এবং মদীনার মসজিদে নববীতে সাহাবীগণকে নিয়ে একত্রিত হয়ে “শবে বরাত” পালন করেছেন? যদি না করে থাকেন, তাহলে তা পালন করে আমরা কি নবীজী (সা)এর বিরুদ্ধাচরণ করছি না? বলুন তবে আমরা কেমন নবীর উম্মত?

আল্লাহর রাসুল উম্মতকে দ্বীনে নতুন কিছু সংযোজন করার ব্যাপারে বার বার সতর্ক করতেন। তিনি বলতেন, “সর্বোত্তম বাণী হল আল্লাহর কিতাব, সর্বোত্তম পথ-নির্দেশ হলো রাসূল (সা)এর প্রদর্শিত পথ, আর নিকৃষ্টতম কাজ হলো দ্বীনে নবআবি®কৃত কাজ।” দ্বীনে নবআবি®কৃত কাজ বিদআত, বিদআত মাত্রই গোমরাহী এবং প্রত্যেক গোমরাহীর স্থানই হচ্ছে জাহান্নাম।” (মুসলিম)

কথা হচ্ছে, মানুষ মাত্রই আল্লাহর বন্দেগীর প্রতি আনুগত্যশীল। শয়তান যখন কোন ব্যক্তিকে খোদাদ্রোহী কাজ করাতে পারে না, তখনবেশি বেশি নেকি ও সওয়াবের আশায় মানুষকে ধর্মের মোড়কে বিদআত লিপ্ত করে। সুতরাং শরীয়ত বিরোধী শবে বরাতের আয়োজন করা থেকে সচেতন হওয়ার সময় এসেছে। যে কাজ আল্লাহর রাসূল এবং তাঁর সাহাবীগণ তথা খোলাফায়ে রাশেদীনের ত্রিশ বৎসরেও পালন করার কোন দলিল নেই-তা পালন করার কোন মানে নেই। আল্লাহপাক আমাদের সঠিক বুঝ দান করুন এবং শিরক ও বিদআত থেকে আমাদের ঈমানকে হেফাজত করুন। আমিন।

=====

Good Luck Good Luckআরো দেখুন : মাহে শাবানের মর্যাদা- শবে বরাত না লাইলাতুন নিস্ফে মিন শাবান Good Luck Good Luck

বিষয়: সাহিত্য

১৫৪২ বার পঠিত, ২৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

369834
২২ মে ২০১৬ রাত ০৮:৩৬
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : এটা যে এখন কিছু হুজুর দের বিশেষ ইনকাম এর সময়। তাই সব জায়েজ!!
২৩ মে ২০১৬ বিকাল ০৪:১৩
306928
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : জি হুজুর,ধন্যবাদ আপনাকে..
২৩ মে ২০১৬ সন্ধ্যা ০৭:২৯
306963
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : দাওয়াত দেন। হুজুর ডাকছেন যে নাইলে তো বদদোয়া পড়ব!!!
২৩ মে ২০১৬ রাত ০৯:০১
306976
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : সময় সন্নিকটে..আর দেরি নেই যে!
369835
২২ মে ২০১৬ রাত ০৮:৪১
আবু জান্নাত লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ
ভাইয়া, প্রথম কথা হলঃ নিফস মিন শাবানকে মুক্তির রাত বলা হয় এজন্য যে সহীহ হাদিসে এসেছে এ রাতে অগণিত লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। মুক্তি শব্দটির আরবী হল براءة আর শবে বরাত অর্থ হলঃ "মুক্তির রাত" ভাগ্য রজনী নয়।

এ রাতে কোন সম্মিলিত ইবাদাত নেই, তাই কোন যুগে দলবেধে অনুষ্ঠানের সাথে পালন করার কোন প্রশ্নই আসে না।

সূরায়ে দুখানের আয়াত দ্বারা শবে ক্বদরই উদ্দেশ্য, শবে বরাত নয়।

কুরআনে শবে বরাত সম্পর্কে কোন আয়াত নেই, তবে নিসফে সাবানের ফজিলত হাদিস দ্বারা প্রমাণিত, কোন জয়ীফ হাদিস নয়, সহীহ হাদিস দ্বারা।

অকাট্য দলিল ও সহীহ হাদীস সম্বলিত পোষ্টটি দেখার অনুরোধ রইল, তারপর সহীহ না হলে আমি সহ বিরোধীতা করে যাবো। আর যদি সহীহ নয়, বিদআত বলাতে নিজেকে দূরে রাখতে হবে কিনা আপনার বিবেকের উপর ছেড়ে দিলাম।
বিস্তারীত দলীল লি‍ংকে দেওয়া আছে হাদিসের সনদের তাহকীক সহ........
Click this link

বর্তমান আরব আমিরাতের ইসলামী অথরিটি ও আওক্বাফের ফতোয়াও দেখতে পারেন: যা ২০/০৫/২০১৬ জুমআর খুতবায় পাঠ করা হয়েছে... Click this link এখানেও নিসফে শাবানের ইবাদাতের ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

বড় ব্যপার হল: এ রাতকে ঘিরে কিছু বিদআত আমাদের সমাজে দানা বেধেছে, ঐ বিদআত সরাতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

উকুন বাছতে মাথা কাটবেন, নাকি চুল কাটবেন, সিদ্ধান্ত আপনার।

জাযাকাল্লাহ খাইর, আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে সঠিক পথে পরিচালিত করুক। আমীন।

২৩ মে ২০১৬ দুপুর ০১:২৩
306923
দিল মোহাম্মদ মামুন লিখেছেন : মুহতারাম হুজুর, আপনি আলেম মানুষ, আপনাকে অনেক শ্রদ্ধাও করি, প্লিজ বুঝার চেষ্টা করুণ। আবুধাবিতে এইরকম একটা রাত চলে গেলো, অথচ কোনো লোকাল আরবীকে দেখলাম না মসজিদে এসে সারারাত ইবাদত করতে অথবা সব আরবি মিলে সদলবলে ইবাদত করতে!!!
২৩ মে ২০১৬ বিকাল ০৪:২৭
306932
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : ওয়ালাইকুম সালাম, আপনার বক্তব্য এবং মন্তব্যের জন্য শোকরিয়া। নিসফে শাবানের ফজীলত আছে। কিন্তু আল্লাহর রাসূল (সা) এবং খোলাফায়ে রাশেদীনের সময় কি এরকম আমল ছিলো? আর প্রতি রাত্রেই তো আল্লাহ বান্দাহকে আহ্বান করেন, যা আমরা এই হাদীসে পাই।"হযরত আবু হোরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা) বলেছেন, “মহান আল্লাহপাক প্রতি রাতের এক-তৃতীয়াংশ বাকী থাকতে দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করেন এবং বলতে থাকেন কে আছ আমার কাছে দু’আ করবে। আমি দু’আ কবুল করব। কে আছ আমার আছে চাইবে? আমি দান করব? কে আছ আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে? আমি তাকে ক্ষমা করে দেব।”(বুখারী ও মুসলিম) সে হিসেবে প্রতি রাতই গুনাহ মুক্তির রাত, নচেৎ মানুষ কেন তাহাজ্জুদ সালাত পড়েন?
আমি গতকালও একটি মসজিদে আপনি এশা সালাত পড়েছি দেখলাম ঐ মসজিদে এশার সালাতের পর ১২ রাকাত সালাত একবার সূরা আল কদর এবং ৭ বার করে সূরা ইখলাস পড়ে আদায় করল তাও জামায়াতের সাথে। এবার আপনি বলুন এ ধরনের আমল পৃথিবীর কোথায় আছে এবং বৈধ কিনা?একটিবার চিন্তা করুন আমার কথা সিস্টেমের বিরুদ্ধে। আরব জাহেলিয়াতের সময় কিভাবে হজ্জ পালন করত আমরা জানি (নগ্ন এবং আরো বিবিধ পদ্ধতিতে। আল্লাহর রাসুল (সা) কি করেছেন আমরা তাও জানি-শুধু সিস্টেম নয়,পুরো সমাজটাই বদলেছেন।...আর শবে বরাত অর্থ মুক্তির রাত বলায় হয় শবে বরাত কি আরবী শব্দ?
২৩ মে ২০১৬ রাত ০৮:০০
306968
আবু জান্নাত লিখেছেন : আরবীরাতো ফরজ ব্যতিত সুন্নাতে মোয়াক্কায়াদাহ কেও গুরুত্ব দেয়না, নফল ইবাদাতের ব্যপারে কি বলবো, তারা ফরজের খুব গুরুত্ব দেয়।

এ রাত তো নফল ইবাদাতের ব্যপারে, তাই আরবীরা আসুক না আসুক তাতে কি! আমি বলতে চেয়েছি: এটি ফজিলত পূর্ণ রাত, একাকী নফল ইবাদাতের রাত, ইবাদাত ঘরেও করতে পারেন মসজিদেও করতে পারেন।
সমস্যা হলঃ নফলকে কেন্দ্র করে কিছু বিদআদ ঝেকে বসেছে, তাই গড়ে বিরোধীতা না করে বিদআদগুলোর বিরোধীতা করুন, যেমনটি মাসুম ভাই বলেছেন।

শব ফার্সী শব্দ, অর্থ রাত, রজনী। বারাআত আরবী শব্দ, অর্থ মুক্তি, মুক্ত, বিমুখ হওয়া ইত্যাদি। কুরআনে এ রাত সম্পর্কে কোন আয়াত নেই, হাদিসের ভাষায় নিসফ মিন শাবান। আমাদের অঞ্চলে শবে বারাআত হিসেবে প্রসিদ্ধ, যেমন- নামায, রোজা, কোরবানী ইত্যাদি আমার আঞ্চলিক ভাষায় প্রসিদ্ধ। দু'জনকেই ধন্যবাদ।

২৩ মে ২০১৬ রাত ০৮:৩১
306972
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : আবু জান্নাত ভাই। বরাত এবং বারাআতের মধ্যে পার্থক্য আছে কিন্তু। সূরা তাওবাহর অন্য নাম বারাআত যার অর্থ ছিন্ন করা। এখানে শবে বরাত পালিত হচ্ছে..তাই এখানে আপত্তি। যেহেতু বিষয়টাও গুরুত্বপূর্ণ। ধন্যবাদ
২৩ মে ২০১৬ রাত ০৮:৫৩
306974
আবু জান্নাত লিখেছেন : জী ভাইয়া, বারাআত অর্থ ছিন্ন করা, মুক্ত করা, মুক্তি দেওয়া, অসহায় করা, রাগ করা। এভাবে ডিক্শনারীতে দশটার উপরে অর্থ এসেছে,। শুকরিয়া।
369837
২২ মে ২০১৬ রাত ০৮:৫৬
অনেক পথ বাকি লিখেছেন : ধন্যবাদ সুন্দর একটি বয়ানের জন্য।
২৩ মে ২০১৬ বিকাল ০৪:২৯
306933
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : ধন্যবাদ প্রিয় ভাই।
369838
২২ মে ২০১৬ রাত ০৯:৩৮
পললব লিখেছেন : আমাদের ভাবতে হবে কোরান কিংবা হাদিসের বাণী কোথা থেকে এসেছে? মক্কা না এ উপমহাদেশ থেকে?পৃথিবীর যে কোন জাতির যে কোন সংস্কৃতি বহন করে আসে ঐ জাতির মূলে অবস্থান করে এবং তা বহন করে আসে বর্তমানে। যদি এটা কোন সংস্কৃতি হয়ে থাকে তাহলে এটা আরব জাতির ভিতর বর্তমানেও বহন করে থাকবে। বর্তমানে কি আরব দেশে এটা প্রচলিত? না হলে এটা পরিত্যাজ্য। মজার বিষয় হলো পক্ষে কিংবা বিপক্ষে কেউ এটাকে ফরজ, ওয়াজিব কিংবা সুন্নত বলেনি। তবে কেন এটা সামাজিকভাবে পালনীয় হবে? ধন্যবাদ।
২৩ মে ২০১৬ বিকাল ০৪:৩১
306935
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, সুন্দরভাবে মন্তব্য শেয়ার করার জন্য..
369840
২২ মে ২০১৬ রাত ১০:০৮
শেখের পোলা লিখেছেন : দেখা যায় অনেক নামী দামী মৌলানারাও এই শবেবাত নিয়ে রীতিমত তর্কযুদ্ধ করেন, তারাই আবার দৈনন্দিন ফরজের ব্যাপারে অতটা মাথা ঘামান না, মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে ভুলে যান। কারণটা হয়ত দাওয়াত ও ইনকামের একটা খাত বন্ধ হওয়া হতে পারে। ধন্যবাদ।
২৩ মে ২০১৬ বিকাল ০৪:৩২
306936
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : মুসলমানদের বরাতটাই আসলে খারাপ নইলে শবে বরাত নিয়ে এত মাতামাতি করা কী থাকতে পারে। আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
369845
২২ মে ২০১৬ রাত ১০:৪৬
তবুওআশাবা্দী লিখেছেন : ভালো লাগলো আপনার লেখাটা | শবে বরাতকে আমাদর দেশে প্রায় লায়লাতুল কদরের সমপর্যায়ের মনে করা হচ্ছে | এটাই পুরো ব্যাপারটা ঘোলাটে করে ফেলেছে|যে পরিমান ফজিলত বলাহচ্ছে শবে বরাতের রাতের তা "শ্রেষ্ঠ রাত" লায়লাতুল কদরের ব্যাপারে আল্লাহ যা পবিত্র কোরান শরীফে বলেছেন তার সাথে সাংঘর্ষিক | শ্রেষ্ঠ দিন হিসেবে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন আরাফার দিন আর "শ্রেষ্ঠ রাত" হিসেবে কুরআন আর হাদিসে বলা হয়েছে লায়লাতুল কদরের রাতকে | এই রাতের বাইরে একই রকম মর্যাদাপূর্ণ আরো একটি রাতের কোনো অস্তিত্ব থাকলে সে সম্পর্কে আরো অনেক হাদিস থাকত | এত ফজিলতের একটা রাত সম্পর্কে সাহাবীরা সেই রাতে কি করতেন সে ব্যাপারে আরো অনেক পরিস্কার হাদিস থাকত | বিশেষ করে তাবেইন আর তাবে তাবেইনরা সাহাবীদের কাছে রাসুলুল্লাহর (সাঃ) শিক্ষা, সাহাবীদের আমল সম্পর্কে জানতে চাইতেন |তাই এত মর্যাদাপুন রাতের সম্পর্কে এত কম হাদিস, এত অস্পষ্ট বক্তব্যপূর্ণ হাদিস খুবই আশ্চর্যের |
২৩ মে ২০১৬ বিকাল ০৪:৩৩
306937
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : আস সালামু আলাইকুম। অনেক সুন্দর এবং সারগর্ভ মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে। ভাল থাকবেন।
369861
২৩ মে ২০১৬ দুপুর ০১:২৪
দিল মোহাম্মদ মামুন লিখেছেন : আবুধাবিতে এইরকম একটা রাত চলে গেলো, অথচ কোনো লোকাল আরবীকে দেখলাম না মসজিদে এসে সারারাত ইবাদত করতে অথবা সব আরবি মিলে সদলবলে ইবাদত করতে!!!
২৩ মে ২০১৬ বিকাল ০৪:৩৫
306938
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : আমি গতকালও একটি মসজিদে এশা সালাত পড়েছি দেখলাম ঐ মসজিদে এশার সালাতের পর ১২ রাকাত সালাত একবার সূরা আল কদর এবং ৭ বার করে সূরা ইখলাস পড়ে শবে বরাতের সালাত আদায় করল তাও জামায়াতের সাথে? কী তাজ্জব!
২৩ মে ২০১৬ সন্ধ্যা ০৭:৪৯
306966
দিল মোহাম্মদ মামুন লিখেছেন : বেদাত,বেদাত
২৩ মে ২০১৬ রাত ০৮:০৩
306969
আবু জান্নাত লিখেছেন : আরবীরাতো ফরজ ব্যতিত সুন্নাতে মোয়াক্কায়াদাহ কেও গুরুত্ব দেয়না, নফল ইবাদাতের ব্যপারে কি বলবো, তারা ফরজের খুব গুরুত্ব দেয়।

এ রাত তো নফল ইবাদাতের ব্যপারে, তাই আরবীরা আসুক না আসুক তাতে কি! আমি বলতে চেয়েছি: এটি ফজিলত পূর্ণ রাত, একাকী নফল ইবাদাতের রাত, ইবাদাত ঘরেও করতে পারেন মসজিদেও করতে পারেন।
সমস্যা হলঃ নফলকে কেন্দ্র করে কিছু বিদআদ ঝেকে বসেছে, তাই গড়ে বিরোধীতা না করে বিদআদগুলোর বিরোধীতা করুন, যেমনটি মাসুম ভাই বলেছেন।

শব ফার্সী শব্দ, অর্থ রাত, রজনী। বারাআত আরবী শব্দ, অর্থ মুক্তি, মুক্ত, বিমুখ হওয়া ইত্যাদি। কুরআনে এ রাত সম্পর্কে কোন আয়াত নেই, হাদিসের ভাষায় নিসফ মিন শাবান। আমাদের অঞ্চলে শবে বারাআত হিসেবে প্রসিদ্ধ, যেমন- নামায, রোজা, কোরবানী ইত্যাদি আমার আঞ্চলিক ভাষায় প্রসিদ্ধ। দু'জনকেই ধন্যবাদ।
369867
২৩ মে ২০১৬ দুপুর ০২:৪৬
হতভাগা লিখেছেন : লাইলাতুল বরাত বলে যদি কিছু থাকতো আমাদের শরিয়তে এবং এটা যদি এত বরকতময় হত তাহলে লাইলাতুল ক্বদরের মত লাইলাতুল বরাতের জন্যও আল্লাহ এরকম আরেকটা সূরা নাযিল করতেন ।
২৩ মে ২০১৬ বিকাল ০৪:৩৬
306939
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : আপনার মন্তব্য আমার খুবই ইউনিক/গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে। (আল্লাহ ভাল জানেন) অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
376398
১৭ আগস্ট ২০১৬ সকাল ১১:৩৩
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : এটা যে এখন কিছু হুজুর দের বিশেষ ইনকাম এর সময়। তাই সব জায়েজ!!
১৮ আগস্ট ২০১৬ বিকাল ০৪:৩৭
312099
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : জাযাকাল্লাহ খায়রান..Good Luck Good Luck

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File