Good Luck Good Luckঅমর একুশে বইমেলা কী বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছে? Rose Rose

লিখেছেন লিখেছেন মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম ০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ০২:৫৯:০৫ দুপুর



বই মেলা ও নতুন বই:

১লা ফেব্রুয়ারী প্রতি বছর বই মেলার উদ্বোধন করেন দেশের প্রধানমন্ত্রী। এ বছরও উদ্বোধন হয়ে গেল যথারীতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাধ্যমে। বই মেলাকে বলা হয় প্রাণের মেলা। বাংলাদেশের সবচেয়ে হৃদয়গ্রাহী এ মেলায় প্রতি বছর নবীন-প্রবীণ লেখকরা নতুন বই লিখে, প্রকাশকরা প্রকাশ করে হৃদয়ের দৈন্যতাকে তাড়িয়ে পাঠকদের মনে আশার সঞ্চার করেন। বই মেলা মানেই লেখক, কবি, সাহিত্যিক, পাঠক, প্রকাশক গুণগ্রাহীদের মিলনমেলা। প্রকাশকরা নামী, দামী, বড় মাপের সম্ভাবনাময় লিখিয়েদের প্রাধান্য এবং সম্মান বা মূল্য বেশি দেয়, কারণ প্রকাশকরা চায় মূলধন তুললেই হবে না। মুনাফাও করতে হবে। ফলে নবীন লিখিয়েদের তাদের কাছে তেমন গুরুত্ববহ নহে। নবীনরা হতাশায় ভোগে, যেহেতু তাদের লেখা কে প্রকাশ করবে? প্রকাশকরা ঝুঁিক নিতে চান না, নবীনরাও সুযোগ পায়না। এক দ্বৈত স্নায়ু চাপে ভোগেন উভয় দল। ২০০২ সালে আমার প্রথম বই, “হৃদয়ে বাংলাদেশ” প্রকাশ করেন, শাফিন প্রকাশন। এর পর একে এক ১২টি বই প্রকাশিত হয়। বই মেলা সন্নিকটে আসলেই মনটা মোচড় দিয়ে উঠে-শঙ্কা জাগে এ বছর বই প্রকাশ হবে তো, কেন সহৃদয়বান ব্যক্তি বা সংস্থা এগিয়ে আসবেন তো? ইত্যোকার না না ঝক্কি, দুঃশ্চিস্তা তো থাকেই। কারণ আর্থিক সক্ষমতা একটি বড় ফ্যাক্টর।

বই মেলা প্রাণের মেলা :

বই মেলায় উপস্থিতির অনুভুতি এক বিরাট বিস্ময়, আবেগ উচ্ছ্বাসের বহি:প্রকাশ ঘটে বিভিন্ন ভাবে। বাংলা ভাষার লেখিয়েদের শীর্ষে ও জনপ্রিয়তায় অবস্থানকারী প্রধান কবি আল্ মাহমুদ বলেন, “বইমেলা আমাদের প্রাণের মেলা। প্রতিটি বই মেলায় যাওয়ার ইচ্ছা থাকলেও শারীরিক অবস্থার কারণে যেতে পারি না। তবু মনে হয় আমি হাজির আছি। কারণ যেখানে বইয়ের গন্ধ আছে সেখানে নিঃশ্বাস নিতে শরীরে শিহরণ খেলে যায়। তাছাড়া বই মেলাতে আমি দেখেছি কারো না কারো সাথে পরিচয় ঘটে, যিনি লেখালেখি করেন। লেখালেখি করেন এমন মানুষের সাথে দেখাদেখি হলে মনে একটা আনন্দের লহরি খেলে। আর যারা লেখেন তাদের চেহারায় একটা উজ্জ্বলতা ও আলোর ঝিলিক খেলে যায়। আমার এই আলোতে কারো মুখ দেখতে পুলক জাগে। এভাবেই পরিচয় ঘটে এবং কথায় হাসিতে রটে যায় আমার নাম।” সত্যিই আল্ মাহমুদ যেভাবে বলেছেন অকপটে সেভাবে কারো মুখে নবীনের প্রশংসা সহজে মুখ থেকে বের হতে সাধারণত: আমরা দেখি না। অহংকার, আভিজাত্য আর কৃত্রিমতা বর্জিত ভাব একমাত্র আল্ মাহমুদই করতে পারেন। বই মেলায় তারপরও যেন কিসের অভাব লক্ষ্য করা যায়, যার ফলে স্বত:র্স্ফুততা ব্যাহত হয়। কতক ব্যক্তি রাজনৈতিক দাপটে মাঝে মাঝে ছন্দহীনতা লক্ষণীয়। আদর্শের একটা বিভাজন সবসময়ই মেলায় পরিদৃষ্ট হয়। লেখকদের মধ্যে মতের অমিল কোন সমস্যা না। এটা সকল পেশার লোকদের মাঝে আছে। অনেক লেখক আছেন যারা অন্য লেখকের জনপ্রিয়তায় দিশেহারা হয়ে অপপ্রচারে নামেন, সাম্প্রদায়িকতার বিষবাস্প অনুসন্ধানের চেষ্টা করেন। এরা লেখক নামধারী চাপাবাজের অন্য নাম। সত্যানুসন্ধানী লেখকদের তাই পদে পদে প্রতিবন্ধকতার কারণে বইমেলা বিষাদ টেকে। লেখকরা হবেন সত্যের নিয়ত পুজারী, যেখানে মিথ্যার বেসাতি ধাকবে না। তীব্র ভাবে লেখনীর মাধ্যমেই জবাব দেয়া সততা ও সাহসের দাবী।



একুশের সে-ই বইমেলা :

ফেব্রুয়ারী এলে বই মেলায় উপস্থিতির ব্যাপারে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়, পারি না। ব্যবসায়িক কাজে ব্যস্ততার জন্য প্রতিবছর বই মেলায় যাওয়া হয় না। যত বারই অংশগ্রহণ করেছি শীর্ষ লেখকদের সাথে আলাপ চারিতার চেষ্টা করেছি। লেখালেখিটা প্রফেশনাল না হওয়ায় সিরিয়ানেসও নেই। পেশাগতভাবে সিরিয়াস না হলে যেমনটা হয়। সকল লেখক তো আর প্রফেশনাল নয়। লেখায় যেগুলো প্রবন্ধ তাতে অনেক সময় সমকালীন রাজনীতির কথা উঠে আসে। কেউ কেউ এতে আপত্তি জানায়, নিরপেক্ষভাবে লেখার আহ্বান জানায়। নিরপেক্ষতার মানে এই নয় যে, আমি সত্যকে ধামাচাপা দেব। সত্যকে অস্বীকার করে পাশ কাটিয়ে যাব। রাজনীতি, অর্থনীতি, সামাজিক কথা তো থাকতেই পারে, এর উদাহরণ সব লেখকের বেলায় আছে। আমি বিশ্বাস করি মানুষ শুধু সামাজিক জীব নয়, রাজনৈতিক জীবও বটে। তাই রাজনৈতিক কথা, লেখা চলে আসলেও কাউকে ইচ্ছাকৃতভাবে আহত করা কাম্য না। এটা অনাকাঙ্খিত হতে পারে। নিরপেক্ষ থাকা মানে বিবেক বুদ্ধি বন্ধক দেয়া, যেটা অন্যের বেলায় খাটলেও নিজের বেলায় নয়।



একুশের মূল চেতনা কি :

একুশ মানে অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করে বাংলাভাষার মর্যাদাকে সমুন্নত রাখা এবং সর্বস্তরের বাংলাভাষা চালু করা। ভাষার জন্য জীবন দান করা একমাত্র জাতি পৃথিবীতে আমরাই। বায়ান্নের একুশে ফেব্রুয়ারীর দিনটি ছিল বাংলা সনের ৮ই ফাল্গুন। যারা নিজের জীবন দিয়ে শহীদ হয়েছেন, বাংলাভাষার জন্যে। তাহলে আমরা ২১শে ফেব্রুয়ারী পালন করি কেন? এর কোন সদুত্তর কারো কাছে আছে কিনা জানি না? এটা কি আত্মপ্রতারণা নয়? ৮ ই ফাল্গুনকে কি আমরা বিশ্বসভায় পরিচিত করতে পারি না? একুশের বইমেলা আয়োজন করেন “বাংলা একাডেমী”। বাংলা একাডেমীর “একাডেমী” কি বাংলা ভাষার শব্দ? “শহীদ মিনার” কি বাংলা শব্দের প্রতিনিধিত্ব করে? আমি নাম বলছি না, দেশের অনেক রাজনৈতিক দলের নাম আছে বিদেশী ভাষায়। আমরা কেন বলবো? গাইবো? নাচবো? গলা উচিঁয়ে বলতে বাধ্য করবো? “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্র“য়ারী আমি কি ভুলিতে পারি?” এগুলিকে চেতনা বলা যায় না, বলা যায় শহীদের রক্তের সাথে প্রতারণা। তাই বাংলা ভাষার সর্বস্তরে ব্যবহার আজ প্রাণের দাবী। এটাই হোক মূল চেতনা।



বইমেলা ও লেখালেখি :

দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য সাম্রাজ্যবাদী শক্তি একটি বড় হুমকি, এটা ইতিমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। তারা বন্ধুত্বের ছদ্মাবরণে সর্বনাশা পরিকল্পনা নিয়ে বাংলাদেশকে আষ্ঠে-পৃষ্ঠে বেঁেধ বিভিন্নভাবে দুর্বল করতে খানিকটা সফল হয়েছে বলা যায়। সাং®কৃতিক আগ্রাসনের জন্য স্যাটেলাইটের মাধ্যমেও চাণক্য সংস্কৃতি অনুপ্রবেশ করিয়ে ভবিষ্যত প্রজন্মকে ইসলামী আদর্শ বিচ্যুত করছে নানা ভাবে। অর্থনৈতিকভাবে পর নির্ভর করে পঙ্গু করে দেয়া হচ্ছে দেশে গড়ে উঠা অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠানকে। আমরা ঐতিহ্যবাহী মুসলিম জাতি হিসেবে বিশাল সম্ভাবনার ও বীরত্বের অধিকারী, কিন্তু এদেশের শিক্ষাব্যবস্থা এমনভাবে পরিচালিত হচ্ছে, যাতে আমরা মাথা উচুঁ করে দাঁড়াতে না পারি। মুহাম্মদ বিন কাসিম এবং বখতিয়ার খলজির ঐতিহাসিক বিজয় গাঁথার কথা চিন্তা করুন। আজ বলা হচ্ছে আমরা পরাশক্তির আক্রমণে ২৪ ঘন্টাও ঠিকতে পারব না। কেন লক্ষণ সেনের উত্তর সুরীদের আমরা কেন ভয় পাব? আমাদের ঈমানী চেতনাকে শাণিত করার কোন শিক্ষা পাচ্ছি না বিধায় জুজুর ভয় দেখানো হচ্ছে। অধিকাংশ লেখক-কবি ও বুদ্ধিজীবী মুসলিম নামধারী হওয়া সত্ত্বেও বইমেলায় ইসলামী আদর্শ বিরোধী লেখা প্রকাশিত হয়ে থাকে। জ্ঞানের ইসলামী করণ না হলে জাতি হিসেবে মাথা উচুঁ করে দাঁড়ানো সম্ভব হবে না। যারা জ্ঞান অনুসন্ধানী তাদেরকে মনে রাখতে হবে, “জ্ঞান বা প্রজ্ঞা মুসলমানের হারানো সম্পদ। যেখানে পাও অন্বেষণ করতে হবে।”

বই কেনা ও পড়ার অভ্যাস করুন :

আমার প্রিয় ভাইয়েরা বই পড়ুন জ্ঞান অর্জন করুন, গণসম্পৃক্ত কাজের জন্য কুরআন এবং হাদীসের বই বেশি করে পড়ুন। ইসলামী আদর্শের বইসহ সকল প্রকার পড়ুন, মুসলিম মনীষা, যেমন-কুরআনের তাফসীর নবী-রাসূলদের কাহিনী, সাহাবাদের কাহিনী, বীরত্ব গাঁথা মুসলিমদের কাহিনী, বিশ্বজয়ী মুসলিমদের ঐতিহাসিক উপন্যাস, ইসলামী নেতৃবৃন্দের বই ইত্যাদি। যে বই আপনার ভাল লাগে তা বন্ধুদের জানান, তাদেরকে অধ্যয়নের জন্য উৎসাহিত করুন। ভাললাগার অনুভুতি শেয়ার করুন। বই কেনার চেষ্টা করুন, বন্ধুদের, প্রিয়জনদের উপহার দিন। এই কাজগুলো আপনি আগে করেছেন, বর্তমান উৎসাহ কমে গেছে কারণ বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা, কুরআন-হাদীস-ইসলামী সাহিত্যকে জিহাদী বই, জঙ্গী বই ইত্যাদি বলে অপপ্রচার করছে একশ্রেণীর লোকজন। তারপরও বন্ধ করবেন না। জ্ঞান অর্জন করা, বিতরণ করা যেমন অবশ্য কর্তব্য, মৌলিক অধিকার। আরো দ্বিগুণ, তিনগুণ, বহুগুণ উৎসাহের সাথে কাজের গতি বৃদ্ধি করুন। বিশ্বাস করুন, হক পথে থাকলে বাধা আসবেই। বাধা না আসলে মনে করতে হবে আমি সঠিক পথে নেই, আমরা বসে থাকলেও বাতিল বসে নেই, শয়তান বসে নেই।

সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের কবলে বইমেলা :

বইমেলাকে কেন্দ্র করে একটা কালোশক্তির মহড়া দেখা যায়। একুশকে ঘিরে বইমেলার আবর্তন, বিবর্তন সবকিছু ভোগবাদিতা, বস্তুবাদিতা এবং নাস্তিক্যবাদীদের দৌরাত্ম্যের কারণে মেলায় একটা আচ্ছন্নভাব এসে যায়, লেখকদের কাছে কোন কোন লেখক চিহ্নিত হয় বিরুদ্ধবাদী হিসেবে। ফলে অনেকটা কোণ ঠাসা হয়ে যায় নীরবে, আগ্রহ হারায় অংশগ্রহণের। এমনকি প্রাণনিয়েও শঙ্কা জাগে। গত বই মেলায়ও বিভিন্ন প্রাণঘাতী ঘটনা ঘটেছে। লেখকের কাজ সৃষ্টির ধ্বংসের নয়, অনেকেই ধ্বংসের জন্যে উস্কে দেয়, নির্মূলের আহ্বান জানায়। মৌলিক লেখকরা আতংকগ্রস্ত হয়। ড. মাহফুজ পারভেজ বলেন, “এখন যে অপসংস্কৃতির দাপট, সাংস্কৃতিক আগ্রাসন, বিদেশী মিডিয়া ফিল্মের বাণিজ্যিক আধিপত্য, সেটা ভিন্ন রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, অথনৈতিক কর্তৃত্ব, আগ্রাসন, সম্প্রসারণবাদ আমাদের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে না? অপসংস্কৃতির প্রতিরোধের ডাক দিতে বাধ্য হয়, তখন আগ্রাসন ও আধিপত্যকে তো আর লুকিয়ে রাখা যায় না।” আধিপত্যবাদর যে একটা বিপদ, নেপথ্যে বিদ্যমান তা তিনি লুকাতে চাননি বরং সর্তক করেছে সবাইকে। দলাদলি লেখকদের সৃষ্টিশীলতার ক্ষেত্রে বিরাট প্রতিবন্ধক, এটা উৎরাতে হবে নিজেদের উদ্যোগেই। বইমেলার চেতনা তো ভাষা সুরক্ষার মাধ্যমে এর সুফল প্রতিটি নাগরিকেরই প্রাপ্য, কাউকে বঞ্চিত করা যাবে না। এক্ষেত্রে খাঁটি জাতীয়তাবাদী চেতনার সাথে সাথে নির্মোহ একটা উদ্যোগ দরকার, যাতে সবার অংশগ্রহণে বাংলা ভাষার মর্যাদা ও গৌরব অক্ষুন্ন থাকে।

লেখক পরিচয়ে দারুণভাবে উজ্জীবিত হই :

মূল পেশা ব্যবসা হলেও যখন কেউ বলে, কবি সাহেব কি খবর? বা উনি লেখালেখি করেন, অমুক অমুক পত্রিকায়। উনাকে চেনেন না? উনি আমাদের অমুক ভাই। অফিসে কেউ এলেই জিজ্ঞেস করেন? আপনি কখন লেখেন, দিনে না রাতে। লেখক হতে কতটুকু পেরেছি জানি না, তবুও লেখক হিসেবে ভাবার প্রশ্ন অনেক কঠিন ব্যাপার? তবে লেখক পরিচয় তখন দারুণ ভাবে এনজয় করি। মনে মনে আবার ভাবি কি লেখি আল্লাহই জানে, এত কদরের কারণ কি? সব জায়গায় পলিটিকস্ ডুকে গেছে, লেখকদের মাঝেও দলাদলি চলছে। কেন জানি এটা শুভ সংবাদ নয়। লেখক-কবি-সাহিত্যিক বুদ্ধিজীবীরা যতই এর থেকে দূরে থাকবেন ততই জাতির জন্য মঙ্গলজনক বলে অন্তত আমার বিশ্বাস। একটি সমৃদ্ধ মেধাভিত্তিক, শিল্পবোধযুক্ত এবং উন্নত জাতি গঠনে সকল মহলের ঐক্যবদ্ধ ভুমিকার কোন বিকল্প নেই।

বইমেলা জাতির মননশীলতার প্রতীক :

বইমেলার অন্যতম প্রাণশক্তি হচ্ছে পাঠক। পাঠক চায় মুক্ত পরিবেশ, এবারের বই মেলার প্রশংসনীয় দিক হচ্ছে মেলার পরিধির বিস্তৃতি। মুক্ত পরিবেশের মাধ্যমে তৈরি হয়েছে সকল শ্রেণীর বই পিপাসু মানুষের মিলনমেলা। প্রতি বছর সকলে উন্মুখ হয়ে থাকেন কবে আসবে সেই মাহেন্দ্র মুহুর্ত, এ যেন দেশের জন্য এক অনিবার্য আনন্দ-উৎসবের ফুলঝুঁড়ি। সেই আনন্দ বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে অনন্যভাবে কবি সায়ীদ আবু বকরের কন্ঠে। তিনি বলেন, ‘রেখেছে বাঙালি করে, মানুষ করোনি’ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এ উক্তিকে বাঙালি মিথ্যা প্রমাণিত করেছে অন্তত দু’টি জিনিস দিয়ে। এক. একাত্তরে অর্জিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিয়ে, আর দুই. জ্ঞান ও মননের জাতীয় উৎসব হয়ে উঠা বাঙালির একুশে বইমেলা দিয়ে। এতে এখন আর সংশয় নেই যে, উন্নত অন্যান্য জাতির মতো বাঙালি জাতিও আজ ছুটতে শিখেছে বইয়ের পেছনে, জ্ঞান ও শিল্পের পেছনে। বই মেলার আরেকটি অপূর্ণ দিক হচ্ছে, মেলায় ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী লেখক-কবি-সাহিত্যিকরা অবহেলার শিকার হয়ে থাকেন। এটা বিভাজনমুক্ত, দ্বিধাবিভক্ত মুক্ত চিন্তার জাতি গঠনের ক্ষেত্রে এক বিরাট প্রতিবন্ধক, যা এড়ানো যায় না। প্রতিটি বই মেলায় অবশ্য এটি ঘটে থাকে এক অদৃশ্য চক্রের কারসাজিতে। বইমেলার স্বার্থে সকল সংকীর্ণতার উর্ধ্বে উঠে আমাদের মননের প্রতীক বইমেলা হয়ে উঠুক প্রাণের মেলাতে।



=====

বিষয়: সাহিত্য

১৫৫৭ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

358385
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ রাত ০৮:৩৪
শেখের পোলা লিখেছেন : ভাল লাগলো৷ দুঃখের বিষয় প্রবাসী হওয়ায় ইচ্ছা থাকলেও যেতে পারিনা৷ আমার অনুবাদটা মোটা অংকের টাকা দিয়েও গ্রন্থ আকারে দেখতে পেলাম না৷ দুইটা বইমেলা পার হল৷ কোন খবর নাই৷ধন্যবাদ৷
০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ সকাল ১১:৪৫
297330
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : আমার তো এবার ২/৩টি বই বের হওয়ার কথা। এখনও সিওর না, প্রতারকের খপ্পরে পড়েছি মনে হয়। ধন্রবাদ।
358410
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ রাত ১০:৩৯
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
আমার জিবনে বইমেলার অভিজ্ঞতা নিয়ে বছর দুয়েক আগে একটি পোষ্ট দিয়েছিলা। সেই পোষ্টটির লিংক পাঠিয়েছিলাম বাংলা একাডেমির প্রথম প্রকাশনা পরিচালক এবং জাতিয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক জনাব ফজলে রাব্বির কাছে। তিনি পড়ে মন্তব্য করেছিলেন যে বইমেলা কিছু পাঠক তৈরি করতে সমর্থ হলেও সামগ্রিক ভাবে প্রকাশনার বাজার সৃষ্টিতে সক্ষম হয়নি। এই জন্যই এখন বইমেলায় প্রতিভাহিন দালাল দের ছড়াছড়ি। আর ইসলামি বই ব্রাত্য। অন্যদিকে ঢাকা কেন্দ্রিকতা এই বইমেলার আরো বেশি সমস্যা সৃষ্টি করেছে। ঢাকাই শুধু বাংলাদেশ নয় এই বোধ আসা প্রয়োজন।
০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ সকাল ১১:৪৪
297329
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : আসলেই এককেন্দ্রিক হয়ে গেছে বই মেলা..ধন্যবাদ সুন্দর অনুভুতি প্রকাশ করার জন্য।
358449
০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ সকাল ১০:৪৪
বার্তা কেন্দ্র লিখেছেন : ভাল লাগলো, সাধুবাদ। আরো লিখুন।..
০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ সকাল ১১:৪৩
297328
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : ধন্যবাদ জনাব।
358761
০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ রাত ১২:১৪
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : গত বছর বই মেলায় বই বের করব বলে গিয়েও দেশের অবরোধের কারনে ঘর থেকেও বের হতে দেয় নি পরিবার
তারপরও আপনার লেখাকে সাধুবাদ জানাই

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File