গুণীজনদের সাথে কিছুক্ষণ.. ..
লিখেছেন লিখেছেন মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম ১৭ নভেম্বর, ২০১৫, ০৬:২২:৪১ সন্ধ্যা
গত ১৫ নভেম্বর বন্দর নগরী চট্টগ্রাম ঘুরে গেলেন বাংলাদেশের স্বনামধন্য গবেষক, শেকড় সন্ধানী লেখক, বহুগ্রন্থ প্রণেতা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রফেসর ড. মাহফুজুর রহমান আখন্দ। আসর বসেছিল চর্চা কুটিরে। আয়োজক হলেন সদা হাসি লেগে থাকে যার মুখে সে-ই প্রিয় বাহাদুর ভাই (চাটিগাঁ থেকে বাহার নামে খ্যাত)। ড আখন্দ ছিলেন আসরের মধ্যমনি। ব্যস্ততার মাঝেও আমাদের সাথে সময় কাটিয়ে মুগ্ধ করলেন। ছিলেন আসরের অন্যতম আকর্ষণ চট্টলার তারুন্যের অহংকার কবি ও প্রফেসর কমরুদ্দিন আহমদ। শত ব্যস্ততার মাঝেও আমি উপস্থিত হতে পেরে অত্যন্ত ভাল কিছুক্ষণ সময় কেটেছে। আরো ছিলেন লেখক রিদওয়ান কবির সবুজ, কবি নাছির বিন ইব্রাহীম, নক্ষত্র সম্পাদক আবু ওবাইদা আরাফাত, তরুণ কবি হামিদ হোসাইন মাহাদীসহ আরো কয়েকজন উদীয়মান কবি।
বলছিলাম ড. মাহফুজুর রহমান আখন্দের কথা। উনার পরিচয় লেখার সাথে যুক্ত যারা আছেন সবাই কম-বেশী জানেন। তবু কিছু কথা বলছি। তাঁর অসংখ্য গবেষণা গ্রন্থ রয়েছে। তন্মধ্যেবিশেষ আরাকান ও রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে ২০টিরও অধিক গবেষণা গ্রন্থ রয়েছে। “আরাকানের মুসলমানদের ইতিহাস” নিয়ে একটি অনবদ্য গবেষণা গ্রন্থ রয়েছে। ড. আখন্দ একাধারে ছড়াকার, কবি, গীতিকার, গবেষক এবং সাহিত্য সমালোচক হিসেবে বেশ সুনাম অর্জন করেছেন। ছড়াগ্রন্থ গুলো হলো : ধনচে ফুলের নাও, মামদো ভুতের ছাও, স্বপ্নফুলে আগুন, ছড়ামাইট (যৌথভাবে), পদ্মাপাড়ের ছবি (যৌথভাবে), অণুকবিতার বই : তোমার চোখে হরিণমায়া, লিমেরিক : গুমর হলো ফাঁস, শিশুতোষ গল্প : জ্বীনের বাড়ি ভুতের হাড়ি, গানের বই : হৃদয় বাঁশির সুর, গবেষণা গ্রন্থ : রোহিঙ্গা সমস্যা: বাংলাদেশের দৃষ্টিভঙ্গি। ইতিপূর্বে তিনি সমন্বয়, বিজয়ের ছড়া ও আল ইশরাক নামের ছোটকাগজ সম্পাদনা করেছেন। বর্তমানেও ‘‘মোহনা’’ নামক ছোটকাগজ সম্পাদনা করছেন। তিনি বেশকিছু পুরষ্কার ও সম্মাননা লেখালেখির স্বীকৃতিস্বরূপ অর্জন করেছেন।
আসরে তিনি লেখালেখিতে যুক্ত হওয়া, শৈশবের কিছু স্মৃতি, বন্ধুদের নিয়ে বিভিন্ন সময়ের মজার গল্প, তাঁর সমালোচকদের কথা অকপটে বলেছেন। অতি অল্প সময়ের জন্য হলেও তাঁর উপস্থিতি আমাদেরকে যথেষ্ট অনুপ্রাণিত করেছে। তাই আমরা যারা নবীন তাদের জন্যই বলছি, লিখতে হলে কিছু শিখতে হলে গুণীজনদের সাহচর্য লাভ করতেই হবে। সম্মাণিত, লেখক, কবি ও বুদ্ধিজীবীগণ আমাদের সমাজের বিবেক। যারা দেশ ও সমাজের যে কোন সঙ্কটে এগিয়ে এসে জাতিকে সঠিক পথ বাতলে দেন।
ড. মাহফুজুর রহমান আখন্দ স্বল্প সময়ের জন্য এসে আমাদের সবার মন জয় করে নিলেন। ছোট্ট পরিসরে তিনি আমাদের অত সময় দেবেন কল্পনাও করিনি। তাঁর মহৎ হৃদয়ের প্রমাণ আমরা এভাবে পাই। আগেই বলেছি আরেকজন আলোকিত মানুষ এ আসরটিকে প্রাণবন্ত করেছিলেন কবি কমরুদ্দিন স্যার। তাঁর কবিতা লেখা এবং প্রথম কাব্য গ্রন্থ প্রকাশের ঘটনা অতি সুন্দরভাবে বর্ণনা করেছেন। সাথে প্রথম কাব্যগ্রন্থের কবিতা“শহর ছেড়েই যাব” আবৃত্তি করে শোনালেন। ড. আখন্দ তো আবৃত্তি শুনে বলেই ফেললেন কবি কমরুদ্দিনকে তিনি আমাদের “শহর ছেড়েই যাবোর” কবি! আসরে হাসির রোল উঠল। তিনিও একাধারে কবি, গবেষক, সুরকার, সাংবাদিক, শিক্ষক ও কথাশিল্পী। এ পর্যন্ত তাঁর বেশ কয়েকটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। “শহর ছেড়েই যাবো, সবুজ সুখের পুলক, বিষাদের ভাসানে জলজ ঘাতক ও হৃদয় শঙ্খ তীরে এবং প্রবন্ধের বই আধুনিক কবিতা : প্রাসঙ্গিক বিবেচনা, আল মাহমুদ : কবি ও কথা শিল্পী প্রকাশিত হয়। শঙ্খ তীরের কবি “তোমায় নিয়ে গাইব সুখের গান, কী সুন্দর এই বাঁশখালী, ভাঙ্গিছে কাশে অভিমান’ শিরোনামের বিখ্যাত গান লিখেন হৈ চৈ ফেলে দেন। অধ্যাপনার পাশাপাশি তিনি দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার সাহিত্য ও ফিচার সম্পাদনা করেন।
কমরুদ্দিন স্যারের আগ্রহ তরুনদের প্রতি কী নি:সীম্আন্তরিক তা আমি প্রায়ই লক্ষ্য করি। তিনি তাদের যে কোন ডাকে সাড়া দিয়ে আন্তরিকতার ব্যাপক সমন্বয় ঘটান। আমি আমার সম্পাদিত লিটল ম্যাগ “ইদানীং”এর মোড়ন উন্মোচনেও তাকে পেয়েছি। চর্চা কুটিরের যে কোন ডাকে তিনি সাড়া দেন। এ জন্য আমরা তাঁর প্রতি চিরকৃতজ্ঞ। আসরে তিনি লিখন কৌশল এবং আধুনিক কবিতা প্রসঙ্গে সম্যক ধারণা দেন। আসর সমাপনকালে লিখিয়েরা তাদের পারস্পরিক লিখিত বই, কাবগ্রন্থ এবং সম্পাদিত প্রকাশনাগুলো বিনিময় করেন। এ ধরনের শুভ উদ্যোগ আরো বেশি বেশি হওয়া উচিত বলে উপস্থিত সবাই মতামত ব্যক্ত করেন।
(সমাপ্ত)
===
বিষয়: বিবিধ
১৮৪৬ বার পঠিত, ৩০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনাকে মোবারকবাদ
সকলের অনেক দোয়া, দীর্ঘায়ু, ও শুভ কামনা রইলো।
অনেক ধন্যবাদ। আরো সময় পেলে ভাল হতো।
তবে পৃথক বাক্যে যত্ত খুশী দোয়া করা যায়!
আল্লাহতায়ালা আমাদের সবার অজ্ঞতাজনিত ভুলগুলোও ক্ষমা করুন!!
যদি আরো বৃদ্ধি করা উত্তম হতো বা সুযোগ থাকতো তবে তিনি অবশ্যই তা করতেন!
অন্য এক বর্ণনায় সরাসরি বলা হয়েছে "(সালামের জবাবে) তিনের পরে আর বৃদ্ধি নেই"
আপনার আশেপাশে কোন মুহাদ্দিসের সাহায্য নিলে আমার প্রতি ইহসান হয়!
আমি চেষ্টা করবো রেফারেন্স খুঁজে দিতে! সপ্তাহের মধ্যে না পেলে মেহেরবানী করে স্মরণ করাবেন!
জাযাকাল্লাহ..
মন্তব্য করতে লগইন করুন