আইসিস ক্রাইসিস (Isis Crisis) !
লিখেছেন লিখেছেন মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম ২৯ জুলাই, ২০১৫, ০১:০০:২৩ দুপুর
আমেরিকার ৪১তম প্রেসিডেন্ট বুশের ছেলে এবং ৪৩ তম প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের ভাই আমেরিকার ৪৫ তম প্রেসিডেন্ট হবার জন্য মাঠে নেমেছেন। এ প্রেক্ষাপটে এই কিছুদিন আগে মাত্র ১৯ বছরের একটি মেয়ে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বুশকে প্রশ্ন করেছিলেন যে, আইসিস তো তোমার ভাই সৃষ্টি করেছে। বলা বাহুল্য, ছোট্র একটা মেয়ের এই সাহসী আক্রমনে মিঃ বুশ থতমত খেয়ে গিয়েছিলেন। লা জবাব, কোন জবাব নেই! এভাবে একবার রাশিয়ার প্রাভদার খবরে বলা হয়, আল কায়েদা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের একটা বন্দুক। আসলে আল কায়েদা বলতে কিছুু নেই। সবই সাজানো। আমরা রাশিয়ার আফগান দখল, বিন লাদেনের আফগান জিহাদ, আমেরিকার সহযোগিতা, পরবর্তীতে লাদেনের ঘোষণা এবার যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধেও নামতে হবে-তখন থেকেই আমেরিকা লাদেনের বিরুদ্ধে এবং আফগান আক্রমণ। লাদেনকে দমনের জন্য, তালেবান সৃষ্টি। ইতিহাস হলেও সব চোখের সামনে ঘটছে। ইরাকের সাদ্দামের সাথে ইরানকে ধ্বংস করার জন্য কি রকম গাঁটছড়া বেঁধেছিল, পরবর্তীতে সাদ্দামের ইরাক ধ্বংস এবং তাঁকেও বিনাশ করেছে।
চলছে তেলের জন্য যুদ্ধ ইরাকে। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ, সৌদি আরবের ইয়েমেনে বিমান হামলা পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নিচ্ছে বলা যাচ্ছে না। ইহুদী সমর্থন পুষ্ট আইসিস বা ইসলামিক স্টেট যে ইসরাইল ও আমেরিকা তৈরি করেছে তা আজ গোপন নেই। যুদ্ধবাজরা অস্ত্র ব্যবসায়ীরা অস্ত্র ব্যবসার জন্য যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা চালাচ্ছে মুসলিম দেশগুলোকে কেন্দ্র করে। সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইসিস আবার ছুন্নী রঙ ধারণ করেছে! ইতিমধ্যে ইরাকের কিছু অংশ দখলে নিয়েছে, সৌদি আরবে বোমা হামলা চালিয়েছে, মিসরে চালাচ্ছে, তুরস্কে চালিয়েছে-বিভিন্ন দেশে আইসিস জঙ্গী ধরা হচ্ছে। ফলে আইসিস এখন বিরাট হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে বিশ্ব শান্তির জন্য। ফিলিস্তিনীদের প্রাণের সংগঠন হামাসকেও হুমকি দিচ্ছে গাজা দখলের জন্য। সম্প্রতি এক ভিডিও বার্তায় আইএস সন্ত্রাসীরা একথা প্রকাশ করে।
আইএসআইএল’র সম্ভাব্য হামলার বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চার করেছেন ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও সিনিয়র নেতা মাহমুদ আজ-জাহার। তিনি বলেন, সন্ত্রাসী এ গোষ্ঠীর যে কোনো হামলার বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নেবে হামাস। হামাসের বিরুদ্ধে আইএসআইএল সন্ত্রাসীরা হামলার হুমকি দেয়ার পর হামাসও প্রস্তুত হয়ে আছে। মাহমুদ আজ-জাহার বলেছেন, সন্ত্রাসীদের এ হুমকিতে হামাস ভয় পায় না। হামাস কোনো হুমকির কাছে মাথা নত করবে না বরং অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নিজেদের নীতি বাস্তবায়নের কাজ অব্যাহত রাখবে। যারা আমাদের নিরাপত্তার ওপর আঘাত হানতে চায় আমরা তাদের সেভাবেই জবাব দেব। আর যদি কেউ বিশ্বাস ও মতবাদ নিয়ে বিতর্ক করতে চায় আমরা তা নিয়ে আলোচনা ও বিতর্ক করতে প্রস্তুত রয়েছি। গাজা উপত্যকায় সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএসআইএল’র যেকোনো তৎপরতার বিরুদ্ধে হামাস শক্ত পদক্ষেপ নিয়েছে। গত এপ্রিল মাসে আইএসআইএল সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সদস্য হওয়ার জন্য গাজা থেকে সালাফিপন্থি এক ব্যক্তিকে আটক করে হামাস।
এদিকে গত ঈদে ইসলামিক স্টেট (আইএস) এবার ঈদ উল-ফিতর-এর নামাজ পড়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করলো। ইরাকের আইএস অধিকৃত মসুলের অধিবাসীদের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে তারা। ঈদের নামাজ পড়া ইসলাম স্বীকৃত নয় এবং মহানবী নিজেই এই নামাজ আদায় করেননি জানিয়ে এই আদেশ জারি করেছে আইএস। কুর্দিস্তান ডেমোক্রিটিক পার্টির (কেডিপি) একজন মুখপাত্র এই নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জানা গেছে। গত বছর ইরাকের উত্তরাঞ্চলের মসুল দখলে নেয় আইএস। তারপর থেকেই অধিবাসীদের ওপর নিত্য নতুন বিধিনিষেধ চাপিয়ে দিয়ে আসছে তারা। আর তা না মানলে শারীরিক শাস্তি থেকে শুরু করে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত দেয় আইএস। অতএব যারা মুলধারার ইসলাম সংগঠন হামাসকে হঠিয়ে গাজা দখল করবে তারা ইহুদীদের চর ছাড়া আর কেউ নয়। ঈদের সালাত উপর নিষেধাজ্ঞা মানে ইসলামের উপর থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করা-এটা ইহুদীরাই করতে পারে। তাই আজ বিশ্ব মুসলিম নেতৃবন্দকে এ ব্যাপারে বলিষ্ঠ ঘোষণা দিতে হবে যে, আইসিস একটি শুধু জঙ্গী সংগঠন নয়, ইসলামের শত্র“ ইহুদীদের সৃষ্ট, ক্রীড়নক এবং তারা ইসরাইল আমেরিকার স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য কাজ করছে।
তুরস্কে আইসিসের হামলার পর তুর্কী সরকারও কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে, ফলে সেখানে নতুন ফ্রন্ট খুলছে যুদ্ধের। হতে পারে তা যুক্তরাষ্ট্রের আরেকটি চাল, যা তুর্কী সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে পারে। জানা গেছে তুরস্ক এবং যুক্তরাষ্ট্র এখন আইএস বিরোধী অভিযান চালাবে। এটা শুধু লোক দেখানোর জন্য যে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আইএসের কোন সম্পর্ক নেই! তুর্কী পররাষ্ট্র বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ওই অঞ্চল থেকে আইএস জঙ্গিদের হটিয়ে, সিরিয়া সীমান্ত নিরাপদ করা এবং দেশটির শরণার্থীদের ফিরিয়ে আনার লক্ষ্য নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র হামলায় অংশ নিতে চায়। উত্তর সিরিয়াতে তুরস্কের সাথে যৌথভাবে বিমান হামলা চালানোর বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। শেষ পর্যন্ত আইসিসের ষড়যন্ত্রেও কারণে তুর্কী, সৌদি আরব এবং মিসরও নতুন যুদ্ধক্ষেত্রে রূপ নেয়া অসম্ভব নয়। পরিস্থিতির মোড় কোন দিকে যায় ভবিষ্যতই বলে দেবে।
=====
বিষয়: আন্তর্জাতিক
১৭৫৯ বার পঠিত, ৩০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কাজেই এই গোষ্টীটি আসলে কারা এবং তাদের কিই বা উদ্দেশ্য এবং তাদেরকে পেছনের নাটের গুরু কারা তা আজ দিন দিন পরিস্কার হয়ে যাচ্ছে সচেতন মুসলমানদের নিকট।
কে হক্ব পন্থী আর কে বাতিল পন্থী নির্দিষ্ট করে বলা দায়।
আল্লাহই ভালো জানেন।
আইসিসের ব্যপারে যেহেতু আমার বিস্তারীত জানা নেই, তাই আমি তাদেরকে ভালো বা মন্দ বলতে আমার ভয় করে, যদি আমার ধারনা বা আমার শুনা কথাগুলো ভূল হয়ে থাকে! (কেউ ভালো বলছেন, কেই খারাপ বলছেন)
আশা করি বুঝেছেন, ধন্যবাদ @বার্তাকেন্দ্র
যা অমুসলিমের দ্বারা পরিচালিত। ধিক্কার এসব কুকর্মীদের....।
Anonymous হ্যাকাররা একবার ইসরাইলের ওয়েব সাইট হ্যাক করে বলেছিল,আইসিস এর সাথে সৌদি আরব বা আরব দেশগুলোর জড়িত থাকার বিষয়ে যতটা প্রমাণ পাওয়া যায় তার চেয়ে বেশি প্রমাণ পাওয়া যায় আমেরিকা এবং ইসরাইলের জড়িত থাকার বিষয়।
মন্তব্য করতে লগইন করুন