হিসাব
লিখেছেন লিখেছেন দীপ জ্বেলে যাই ২৯ এপ্রিল, ২০১৫, ০৫:১৮:৩৫ বিকাল
“মানুষের হিসাব নিকাশের সময় নিকটবর্তী অথচ তারা বেখবর হয়ে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।” (সুরা আম্বিয়া, ২১ : ১)
সুতরাং যখন নির্ধারিত সময় আসবে এবং জগৎসমূহের স্রষ্টার সম্মুখে মানুষের দাঁড়ানোর সময় নিকটবর্তী হবে:
“শিংগায় ফুৎকার দেয়া হবে — একটিমাত্র ফুৎকার এবং পৃথিবী ও পর্বতমালা উত্তোলিত হবে ও চূর্ণ বিচূর্ণ করে দেয়া হবে।” (সুরা হাক্কাহ, ৬৯ : ১৩-১৪)
তখন যা অবশ্যম্ভাবী তা ঘটবে এবং বিচার দিবস নিকটে আনা হবে এবং প্রকৃত সত্যকে প্রকাশ করা হবে এবং চূড়ান্ত ঘন্টার আগমন ধ্বনিত হবে:
“এটা তো হবে কেবল এক মহা মহানাদ। সে মুহূর্তেই তাদের সবাইকে আমার সামনে উপস্থিত করা হবে।”(সুরা ইয়াসীন, ৩৬ : ৫৩)
এবং তারা
“কবর হতে তাদের পালনকর্তার দিকে ছুটে চলবে।” (সুরা ইয়াসীন, ৩৬ : ৫১)
দ্বিধাগ্রস্তভাবে এবং দ্রুততার সাথে, তারা বলবে:
“হায় আমাদের দুর্ভোগ! কে আমাদেরকে নিদ্রাস্থল থেকে উত্থিত করল? (তাদেরকে বলা হবে) : রহমান আল্লাহ তো এরই ওয়াদা দিয়েছিলেন এবং রাসূলগণ সত্য বলেছিলেন।” (সুরা ইয়াসীন, ৩৬ : ৫২)
“সুতরাং মৃদু গুঞ্জন ব্যতীত তুমি কিছুই শুনবে না।” (সুরা ত্বহা, ২০ : ১০৮)
তখন গলা শুকিয়ে যাবে সুতরাং
“এটা এমন দিন, যেদিন কেউ কথা বলবে না এবং কাউকে তওবা করার অনুমতি দেয়া হবে না।” (সুরা মুরসালাত, ৭৭ : ৩৫-৩৬)
এবং তাদের দৃষ্টি অবনমিত থাকবে এবং অবমাননা তাদেরকে গ্রাস করবে:
“সেই চিরজীবী চিরস্থায়ীর সামনে সব মুখমণ্ডল অবনমিত হবে এবং সে ব্যর্থ হবে যে জুলুমের বোঝা বহন করবে।” (সুরা ত্বহা, ২০ : ১১১)
এবং
“সেদিন কোন কোন মুখ উজ্জ্বল হবে আর কোন কোন মুখ হবে কালো।” (সুরা আলি ইমরান, ৩ : ১৬)
তখন মানুষ দুই দলে বিভক্ত হবে:
“একদল জান্নাতে এবং একদল জাহান্নামে প্রবেশ করবে।” (সুরা আশ শূরা, ৪২ : ৭)
অতপর, দুর্দশাগ্রস্ত ব্যক্তির জন্য তাদের দুরবস্থার জন্য দুর্ভোগ এবং তাদের শেষ অবস্থার করুণ পরিণতির জন্য তাদের উপর পুনরায় দুর্ভোগ।
“আর যদি আপনি দেখেন যখন তাদেরকে প্রতিপালকের সামনে দাঁড় করানো হবে। তিনি বলবেন : এটা কি বাস্তব সত্য নয়।” (সুরা আনআম, ৬ : ৩০)
তখন তারা শুধু একথাই বলবে:
“হ্যাঁ আমাদের প্রতিপালকের কসম।” (সুরা আনআম, ৬ : ৩০)
বাস্তবিকই তারা রাসূলের ডাকে সাড়া দেয়নি, কিন্তু তারা শপথ করত (যে তারা পুনরুত্থিত হবে না) যতক্ষণ তাদেরকে না দেখানো হবে এবং তাদের বিভ্রান্তি দূর করা না হবে, সুতরাং সৃষ্টির সূচনাকারী তাদের বলবেন:
“অতএব, তোমরা আস্বাদন কর, আমি কেবল তোমাদের শাস্তিই বৃদ্ধি করব।” (সূরা নাবা, ৭৮ : ৩০)
“যারা আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করে, কিয়ামতের দিন আপনি তাদের মুখ কালো দেখবেন। অহংকারীদের আবাসস্থল জাহান্নামে নয় কি?” (সুরা আ– ৩৯ : ৬০)
পুনরুত্থানে অবিশ্বাসী বস্তুবাদীরা, যারা বলত :
“আমাদের এ পার্থিব জীবনই জীবন, আমাদেরকে পুনরায় জীবিত হতে হবে না।” (সুরা আনআম, ৬ : ২৯)
অথবা যারা আল্লাহর রাসূলদের এবং তাদের আহ্বানকে বাধা দিয়েছিল, তারা শাস্তির এবং চূড়ান্ত ন্যায়বিচারের সেই দিনটিতে উপনীত, যেদিন
“কারও প্রতি জুলুম করা হবে না এবং তোমরা যা করবে, কেবল তারই প্রতিদান পাবে।” (সুরা ইয়াসীন, ৩৬ : ৫৪)
তারা তাদের চোখ, হৃদয়, কানকে সত্যের প্রতিটি আলো থেকে বিমুখ রেখেছিল। সেজন্য তাদের শাস্তি:
“আমি কেয়ামতের দিন তাদের সমবেত করব, তাদের মুখে ভর দিয়ে চলা অবস্থায়, অন্ধ অবস্থায়, মূক অবস্থায় এবং বধির অবস্থায়। তাদের আবাসস্থল জাহান্নাম।” (সুরা বনী ইসরাইল, ১৭ : ৯৭)
তাই তাদের মধ্যে একজন বলবে :
“হে আমার পালনকর্তা, আমাকে কেন অন্ধ অবস্থায় উত্থিত করলেন? আমি তো চক্ষুষ্মান ছিলাম। আল্লাহ বলবেন, এমনিভাবে তোমার কাছে আমার আয়াতসমূহ এসেছিল, অতঃপর তুমি সেগুলো ভুলে গিয়েছিলে। তেমনিভাবে আজ আমি তোমাকে ভুলে যাব।” (সুরা তোয়াহা, ২০ : ১২৫-১২৬)
তাদের হৃদয় অনুতাপে ক্ষতবিক্ষত হবে যাবে এবং
“যালিম সেদিন আপন হস্তদ্বয় দংশন করতে করতে বলবে, হায় আপসোস আমি যদি রাসূলের পথ অবলম্বন করতাম! হায় আমার দুর্ভাগ্য আমি যদি অমুককে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করতাম!” (সুরা ফুরকান, ২৫ : ২৭)
( ওয়েবসাইট থেকে)
বিষয়: বিবিধ
৯৭৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন