টার্কি পালন বাংলাদেশের জন্য নতুন সম্ভবনা
লিখেছেন লিখেছেন চুকচুক জৈব সার ১৮ এপ্রিল, ২০১৬, ০৮:৩০:৫১ সকাল
টার্কি আমাদের দেশে এখনো বিত্তবানদের খাদ্য তালিকায় যোগ হয়নি ,এটি এখনো (Royal Food) রাজকীয় খাবারের মর্যাদায় ই আছে।এর কারণ টাকা থাকলেও আপনি হাটে বাজারে দেশের সর্বত্র যখন খুশী ,যত খুশি পাচ্ছেননা ।অথচ ,একটুখানি সচেতনতা ,সরকারী সদিচ্ছা এবং ক্রেতা-বিক্রেতার পারস্পরিক অংশগ্রহনে এই টার্কি ই হয়ে উঠতে পারে আত্নকর্মসংস্থানের মাধ্যম , নিরাপদ ও সহজলভ্য মাংসের যোগান , সর্বপরি ব্যপক উত্পাদনের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের উপায়। মেলিয়াগ্রিডিডেই পরিবারের এক ধরণের বৃহদাকৃতির পাখি এটা। টার্কি পাখির বাচ্চা দেখতে মুরগীর বাচ্চার মত হলেও পরিপূর্ন বয়সে বদলে যায় আকৃতি ও চেহারা। যদিও এই টার্কি পাখি মধ্য আমেরিকা ও উত্তর আমেরিকার বনাঞ্চলে বসবাস করতো কিন' বর্তমানে বিশ্বের প্রায় সবদেশেই এই টার্কি পাখি গৃহপালিত পশুপাখির মত পালন করা হচ্ছে।
বাংলাদেশে টার্কি মুরগী পালন ব্রয়লার মুরগির বিকল্প হতে পারে এবং বাংলাদেশে বাণিজ্যিক ভাবে টার্কি মুরগী পালন দিনে দিনে জনপ্রিয়তা অর্জন করছে । টার্কি বাণিজ্যিক মাংস উত্পাদনের জন্য খুবই উপযুক্ত । তারা দেখতে খুব সুন্দর হয় এবং আপনার বাড়ির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে । টার্কি মাংস উৎপাদনশীল । কিন্তু বাণিজ্যিক ভাবে ডিম উৎপাদনের জন্য উপ যুক্তনয় ।তারা দ্রুত বড় হয়ে যায় এবং ব্রয়লার মুরগির মত খাওয়ার উপযুক্ত হয়ে ওঠে। আবহাওয়াও বাংলাদেশের অন্যান্য পরিস্থিতিতে টার্কি মুরগী পালনের জন্য খুবই উপযুক্ত। এগু লোপালন মুরগি্র মত খুব সহজ (কিন্তু সঠিক যত্ন ও খামার পরিচালনার জন্য আপনাকে কিছু প্রশিক্ষণ নেয়া উচিৎ ) বাংলাদেশে বাণিজ্যিক ভাবে টার্কি পালন / ব্যবসা থেকে ভালো মুনাফা অর্জনের উজ্জল সম্ভবনা রয়েছে। একটুখানি সচেতনতা , সদিচ্ছা এবং ক্রেতা-বিক্রেতার পারস্পরিক অংশগ্রহনে এই টার্কিই হয়ে উঠতে পারে আত্নকর্মসংস্থানের মাধ্যম , নিরাপদ ও সহজলভ্য মাংসের যোগান , সর্বপরি ব্যপক উত্পাদনের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের উপায়।
একজন সৌখিন, আধুনিক ও কৃষিমনস্ক প্রকৌশলী শাহীন হাওলাদার ও একজন তরুন উদ্যোক্তা মিরাজ হোসেনের (টার্কি মিরাজ) সমন্বয়ে ঢাকার উত্তর বাড্ডা সাতার কুল রোডে পূর্ব পদরদিয়া প্রামে গড়ে তুলেছেন একটি বানিজ্যিক টার্কি মুরগীর খামার এবং এই খামারটি দেখাশুনার দায়ীত্বে রয়েছেন নুরুল আমিন ।
টার্কির রোগ বালাই ও চিকিৎসা সেবা নিয়ে গবেষণা করছেন ফার্মাসিস্ট এনামুল হক। এরই মধ্যে তিনি টার্কির বাচ্চা মৃত্যুহার কমাতে ও সুস্থ বাচ্চা উৎপাদনের লক্ষে এই খামারের সাথে মমতার সহিত কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়াও টার্কির সুষম খাদ্য নিশ্চয়তার জন্য খাবার ম্যানু তৈরির কাজ করছেন। তিনি নিয়মিত এই টার্কি খামার পরিদর্শন করেন এবং চিকিৎসা সেবা প্রধান করেন ।তিনি জানান, মাংস উৎপাদনের জন্য টার্কি একটি উপযুক্ত প্রানী। টার্কি বাণিজ্যিক মাংস উৎপাদনের জন্য খুবই উপযুক্ত।
খামারটি পরিচালনার দায়ীত্বে থাকা তরুন উদ্যোক্তা মিরাজ হোসেন (টার্কি মিরাজ ) বলেন :-
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন নিজ হাতে উপার্জিত আয় কে সেরা আয় বলেছেন । নিজ হাতের উপার্জিত আয় দ্ধারা সন্তান প্রতি পালন করলে, তাদের চরিত্র কে এমন করে দেবেন যা দেখে পিতা-মাতার চক্ষু জুড়িয়ে যাবে ।স্ত্রীকে খাওয়ালে সুখী জীবন হবে এবং একে অপরের প্রতি আন্তরিক তা বাড়িয়ে দেবেন। কৃষি, সুতার, কামার, তাঁতী ইত্যাদি সরাসরি হস্ত অর্জিত কর্ম।আমাদের দেশের জীবন ব্যবস্থায় এসব পেশা কে ঘৃনা না করলেও মর্যাদাকর মনে করেনা। ফলে তাদের ঘরের সন্তান কেউ শিক্ষিত হলে পর, পিতার সাথে এসব কাজে হাত দিতে চায়না ।অথছ আল্লাহ বলেছেন, ‘স্ব হস্তে উপার্জনাকারী ব্যক্তি আল্লাহর অন্তরঙ্গ বন্ধু’।তার আয়কে সর্ব শ্রেষ্ট আয় বলা হয়েছে ।
প্রতিদিনই বাড়ছে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা।প্রতি বছর যেহারে লোক সংখ্যা বাড়ছে, সেহারে বাড়ছেনা কর্মক্ষেত্র । একারণে দিন দিন চাকরি যেন ‘সোনারহরিণ’ হয়ে দাঁড়িয়েছে ।বুক ভরা স্বপ্ননিয়ে পড়ালেখা শেষ করলেও জুটছেনা কাঙ্ক্ষিত চাকরি।তাই জেলা শহরে ব্যর্থ হয়ে কাজের সন্ধানে অবশেষে শিক্ষিত বেকার যুবকরা ছুটে আসছেন রাজধানীতে । বেকারত্বের বিষবাষ্প ছড়িয়ে আছে দেশের আনাচে-কানাচে। কষ্ট-আর হতাশার মালা গলায় নিয়ে অন্তহীন দিন গুলো পাড়ি দিচ্ছে অগণিত তরুণ।এই তরুণদের চোখের সামনে নেই কোন স্বপ্ন, নেই জীবনের অনাগত দিন গুলো সাজানোর কোন সুন্দর পরিকল্পনা।জীবনের অনাগত দিন গুলো তাদের কাছে এখন অভিশপ্ত মনেহয় ।কিন্তু এই ক্রান্তিকাল শুরুর আগে ,কারো মনেই এমন প্রত্যাশা ও ছিলনা ।সবার মনেই ছিল একটা সুন্দর স্বপ্ন !সমাজের মানুষের কাছে দিন দিন নিজেদের নেতিবাচক অবস্থান দেখে তাদের অনেকেই আজ বিপর্যস্থ ।সমাজের ও একান্ত প্রিয় মানুষ গুলোর প্রতিনিয়ত অবমূল্যায়ন ,অপদস্থমূলক উক্তিগুলো তাদেরকে করে তুলছে অপ্রকৃতস্থ ।কিন্তু কেউ এমন নয়,কাজের অপর্যাপ্ত সুযোগ তাদেরকে ধীরে ধীরে অগ্রহণযোগ্য করে তুলছে সবার কাছে ।কিন্তু এই কষ্টের কথা কেউ জানতেও চায়না,শুনতেও চায়না।দেখে মনে হয় এই সমস্যা উত্তরণে এই সমাজ বা রাষ্ট্রের কোন ভাবনা নেই!এই ধরণের ছোট্ট ছোট্ট ঘুন পোকা গুলোই কিন্তু ধীরে ধীরে সমাজ দেহে ক্যান্সারের মতো বিরাট আকার ধারণ করছে।তাই যা করিনা,কেন বেকারত্বের হাত থেকে তরুণ সমাজ কে রক্ষা করতে হবে।যদি এই সম্ভাবনাময় তরুণ প্রজন্মকে বেকারত্বের হাত থেকে রক্ষা না করা যায়,তাহলে তাহলে এটি সমাজ তথা রাষ্ট্রের জন্যএক দূরারোগ্য ব্যাধি হিসেবে দেখা দিবে!
বাংলাদেশের গ্রাম গঞ্জে ও শহরে অনেক জায়গা অনাবাদী/পতিত অবস্থায় পরে থাকে। যেখানে প্রাকৃতিক ভাবে জন্মে নানা ধরনের ঘাস লতা।এরকম উন্মুক্ত জায়গা টার্কি পালনের জন্য বেশী উপযোগী ।অন্যদিকে আমাদের রয়েছে এক বৃহত্তর বেকার জনগোষ্ঠী । তাই একদিকে অব্যবহৃত জমিকে ব্যবহার এবং বেকারদের জন্য কর্মসংস্থান,এই দুই এর মাঝে সেতু বন্ধন হতে পারে ছোট একটি টার্কি খামার । যারা বেকার বসে আছেন যারা নতুন কিছু শুরু করতে চান পোল্ট্রি ব্যবসা করে যারা লোকসানের সম্মুখীন হয়েছেন এবং আপনার স্থাপনা এখন কোন কাজে আসছেনা, যারা কম ঝামেলা পূর্ণ কাজ পছন্দ করেন এবং ভালো আয়ের উৎস খুজছেন, যারা অল্প পুঁজি এবং কম ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবসা খুজছেন, টার্কির খামার তাদের জন্য আদর্শের।
টার্কি পালনের সুবিধা সমুহ ---
১। মাংস উদপাদন ক্ষমতা ব্যাপক ।
২। এটা ঝামেলাহীন ভাবে দেশী মুরগীর মত পালন করা যায় ।
৩। টার্কি ব্রয়লার মুরগীর চেয়ে দ্রুত বাড়ে।
৪। টার্কি পালনে তুলনা মূলক খরচ অনেক কম, কারন এরা দানাদার খাদ্যের পাশাপাশি ঘাস,লতা পাতা খেতেও পছন্দ করে।
৫। টার্কি দেখতে সুন্দর, তাই বাড়ির সোভা বর্ধন করে।
৬। টার্কির মাংসে প্রোটিনের পরিমাণ বেশী, চর্বিকম ।তাই গরু কিংবা খাসীর মাংসের বিকল্প হতে পারে।
৭। টার্কির মাংসে অধিক পরিমাণ জিংক, লৌহ, পটাশিয়াম, বি৬ও ফসফরাস থাকে।এ উপাদান গুলু মানব শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী।এবং নিয়মিত এই মাংস খেলে কোলেস্টেরল কমে যায়।
৮। টার্কির মাংসে এমাইনো এসিড ওট্রিপটোফেন অধিক পরিমাণে থাকায় এর মাংস খেলেশরীরেরোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
৯। টার্কির মাংসে ভিটামিন ই অধিকপরিমাণে থাকে।
১০। একটি আদর্শ টার্কি খামার করতে খুব বেশী পুঁজির প্রয়োজন হয়না।
১১। অন্যান্য পাখীর তুলনায় এর রোগ বালাই কম এবং কিছু নিয়ম মেনে চললে এই খামারে ঝুঁকি অনেক কম ।
১২। যেহেতু ৭৫% পর্যন্ত ঘাস দেয়া যায়, তাই খবারে খরচ কম।
১৩। বাজার চাহিদা প্রচুর।
১৪। উচ্চ মুল্য থাকায় খরচের তুলনায় আয় অনেক বেশী।
টার্কির স্থিতিমাপ সমূহ:
• পুরুষ – মাদী অনুপাত- ১:৫
• গড় ডিমের ওজন -৬৫ গ্রা.
• গড় এক দিনের বাচ্চার ওজন-৫০ গ্রা.
• যৌন পরিপক্কতার বয়স-৩০ সপ্তাহ
• গড় ডিমের সংখ্যা-৮০-১০০
• ইনকিউবেশন বা ডিমে তা দেওয়ার সময়সীমা-২৮ দিন
• ২০ সপ্তাহে গড় ওজন-৪.৫-৫ কিগ্রা (মাদী) ৭-৮ কিগ্রা (পুরুষ)
• ডিম দেওয়ার সময়সীমা-২৪ সপ্তাহ
• বাজারজাত করার উপযুক্ত বয়স-পুরুষ-১৪-১৫ সপ্তাহ ,মাদী-১৭-১৮ সপ্তাহ
• বাজারজাত করার উপযুক্ত ওজন-পুরুষ-৭.৫ কিগ্রা,মাদী-৫.৫ কিগ্রা
• খাদ্য কার্যকরতা-২.৭-২.৮
• বাজারজাত করার উপযুক্ত বয়স পর্যন্ত গড় খাবার গ্রহণ-পুরুষ-২৪-২৬ কিগ্রা,মাদী-১৭-১৯ কিগ্রা
• ব্রীডিংয়ের সময় মৃত্যুর হার-৩-৪%
বাজার সম্ভবনা –
• টার্কির মাংস পুষ্টিকর ও সুস্বাদু হওয়ায় এটি খাদ্য তালিকার একটি আদর্শ মাংস হতে পারে । পাশাপাশি দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর মাংসের চাহিদা মেটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখতে পারে । যাদের অতিরিক্ত চর্বি যুক্ত মাংস খাওয়া নিষেধ অথবা যারা নিজেরাই এড়িয়ে চলেন, কিংবা যারা গরু / খাসীর মাংস খায়না , টার্কি তাদের জন্য হতে পারে প্রিয় একটি বিকল্প । তাছাড়া বিয়ে, বৌ –ভাত, জন্মদিন সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে খাসীর/গরুর মাংসের বিকল্প হিসেবে টার্কির মাংস হতে পারে অতি উৎকৃষ্ট একটি খাবার । এবং গরু / খাসীর তুলনায় খরচ ও হবে কম ।
• বানিজ্যিক খামার করলে এবং মাংস হিসেবে উৎপাদন করতে চাইলে ১৪/১৫ সপ্তাহে একটি টার্কির গড় ওজন হবে ৫/৬কেজি । ৪০০ টাকা কেজি দর হিসেব করলে একটি টার্কির বিক্রয় মুল্য দাঁড়াবে ২০০০/২৫০০ টাকা । ১৪/১৫ সপ্তাহ পালন করতে সর্বচ্চ খরচ পরবে ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা । তাহলে কম পক্ষে একটি টার্কি থেকে ৫০০ টাকা লাভ
করা সম্ভব ।
• তবে মাংস হিসেবে বানিজ্যিক খামার গড়ে উঠতে আমাদের আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে । বর্তমানে ছোট আকারের খামার করার যে চাহিদা দেশ ব্যাপী তৈরি হয়েছে, তাতে আগামী ৩/৪ বসরে কয়েক লাখ টার্কির প্রয়োজন হবে । এবং সে ক্ষেত্রে দাম ও বেশী পাওয়া যাচ্ছে । ৩০০০ থেকে ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত বয়স ও রং ভেদে টার্কির জোড়া কেনা – বেচা চলছে ।
টার্কি মুরগী পালন পদ্ধতি
দুই ভাবে টার্কি পালন করা যায়
(১) মুক্ত চারণ বা খোলা স্থানে পালন পদ্ধতি
(২) নিবিড় বা সেড করে পালন পদ্ধতি
মুক্ত চারণ পালন পদ্ধতি
সুবিধা:
• খাবারের খরচ পঞ্চাশ শতাংশ কম হয় ৷
• স্বল্প বিনিয়োগ ৷
• খরচের তুলনায় লাভের হার বেশী ৷
মুক্ত চারণ পদ্ধতিতে, এক একর ঘেরা জমিতে আমরা ২০০-২৫০ টি পূর্ণ বয়স্ক টার্কি পালন করতে পারি৷ রাতে পাখী প্রতি ৩-৪ বর্গফুট হারে আশ্রয় জোগাতে হবে৷ চরে খাওয়ার সময় তাদের শিকারী জীবজন্তর হাত থেকে বাঁচাতে হবে৷ ছায়া ও শীতল পরিবেশ জোগানর জন্য গাছ লাগান বাঞ্ছনীয়৷ চারণভূমি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ব্যবহার করতে হবে যার ফলে পরজীবী সংক্রমণের ঘটনা কম হতে সাহায্য হবে৷
মুক্ত চারণব্যবস্থায় খাবার:
টার্কি খুব ভালভাবে আবর্জনা খুঁটে খায় বলে,এরা কেঁচো,ছোট পোকামাকড়,শামুক,রান্নঘরের বর্জ্য ও উইপোকা খেতে পারে, যাতে প্রচুর প্রোটিন আছে ও যা খাবারের খরচকে পঞ্চাশ শতাংশ কমিয়ে দেয়৷ এ ছাড়া শিম জাতীয় পশুখাদ্য যেমন লুসার্ন, ডেসম্যান্থাস, স্টাইলো ইত্যাদি খাওয়ান যায়৷ চরে বেড়ানো পাখীদের পায়ের দুর্বলতা ও খোঁড়া হওয়া আটকাতে খাবারে ঝিনুকের খোলা মিশিয়ে সপ্তাহে ২৫০ গ্রাম হিসাবে ক্যালসিয়াম দিতে হবে৷ খাবারের খরচ কম করার জন্য শাকসবজির বর্জ্য অংশ দিয়ে খাবারের দশ শতাংশ পরিমাণ পূরণ করা যেতে পারে৷
স্বাস্থ্য রক্ষা:
মুক্ত চারণব্যবস্থায় পালিত টার্কির অভ্যন্তরীণ(গোল কৃমি) ও বাহ্য(ফাউল মাইট)পরজীবী সংক্রমণের সম্ভাবনা অত্যন্ত বেশী৷ তাই পাখীদের ভাল বিকাশের জন্য মাসে একবার ডিওয়ার্মিং ও ডিপিং করা আবশ্যক৷
নিবিড় পালন পদ্ধতি
উপকারিতা:
• উন্নত উৎপাদন দক্ষতা ৷
• উন্নততর পরিচালন ও ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ ৷
বাসস্থান:
• বাসস্থান টার্কিদের রোদ,বৃষ্টি,হাওয়া,শিকারী জীবজন্তু থেকে বাঁচায় ও আরাম জোগায় ৷
• দেশের অপেক্ষাকৃত গরম অঞ্চলগুলিতে ঘরগুলি লম্বালম্বি পূব থেকে পশ্চিমে রাখতে হবে ৷
• দুটি ঘরের মধ্যে অন্তত ২০ মিটার দূরত্ব থাকতে হবে এবং কমবয়সী পাখীর ঘর প্রাপ্তবয়স্কদের ঘর থেকে অন্তত ৫০ থেকে ১০০ মিটার দূরে থাকতে হবে ৷
• খোলা ঘরের প্রস্থ ৯ মিটারের বেশি হওয়া চলবে না ৷
• মেঝে থেকে ছাদ পর্যন্ত ঘরের উচ্চতা ২.৬ থেকে ৩.৩ মিটারের মধ্যে থাকতে পারে ৷
• বৃষ্টির ছাঁট আটকাতে ঘরের চালা এক মিটার বাড়িয়ে রাখতে হবে ৷
• ঘরের মেঝে সস্তা, টেঁকসই ও নিরাপদ ও আর্দ্রতা রোধক বস্তু, যেমন কংক্রিটের হওয়া বাঞ্ছনীয় ৷
•
ডিপ লিটার পদ্ধতিতে টার্কি পালনের সাধারণ পরিচালনা ব্যবস্থা মুরগী পালনেরই অনুরূপ, তবে বড় আকারের পাখীটির জন্য যথাযথ বসবাস, ওয়াটারার ও ফীডারের জায়গার ব্যবস্থা রাখতে হবে৷
খাদ্য :
• মুরগীর তুলনায় টার্কির শক্তি,প্রোটিন ও খনিজের প্রয়োজন বেশি ৷
• যেহেতু পুরুষ ও মাদীর ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় শক্তির(এনার্জি) পরিমাণ আলাদা, তাই ভাল ফল পাওয়ার জন্য তাদের পৃথক ভাবে পালন করতে হবে৷
• খাবার ফীডারে দিতে হবে, মাটিতে নয় ৷
• যখনই এক রকম খাবার থেকে অন্য খাবারে পরিবর্তন করা হবে তা যেন আস্তে আস্তে করা হয় ৷
• টার্কিদের সব সময় অবিরাম পরিষ্কার পানির প্রয়োজন ৷
• গ্রীষ্মকালে পানির সাথে স্যালাইন অথবা গ্লুকোজ দিতে হবে ৷
• গ্রীষ্মকালে দিনের অপেক্ষাকৃত ঠাণ্ডা সময়ে টার্কিদের খাবার দিতে হবে ৷
• পায়ের দুর্বলতা এড়াতে দিনে ৩০-৪০ গ্রা. হারে ঝিনুকের খোলার গুঁড়ো দিন ৷
সবুজ খাদ্য:
নিবিড় পদ্ধতিতে, ড্রাই ম্যাশ হিসাবে মোট খাদ্যের ৫০% পর্যন্ত সবুজ খাবার দেওয়া যায়৷ সব বয়সের টার্কির জন্য টাটকা লুসার্ন প্রথম শ্রেণীর সবুজ খাদ্য৷ এছাড়া খাবারের খরচ কম করার জন্য কচুরি পানা, কলমি শাক ,সবুজ ঘাস কুচি করে টার্কিদের খাওয়ান যেতে পারে৷
দানা দার খাবার –
টার্কির একটি আদর্শ খাদ্য তালিকা নিচে দেয়া হলো –
ধান --------------- ২০%
গম ---------------- ২০%
ভুট্টা --------------- ২৫%
সয়াবিনমিল ------- ১০%
ঘাসেরবীজ -------- ৮%
সূর্যমুখীবীজ ------- ১০%
ঝিনুকগুড়া -------- ৭%
মোট = ১০০%
টার্কি মুরগীর ও তিতিরের খামার করতে আগ্রহিরা এই বিষয়ক সকলকিছু বিস্তারিত জানতে ০১৯৭২২২১২৩৪ নাম্বারে ফোন করে যোগাযোগ করতে পারেন। প্রয়োজনে আমাদের টার্কি ও তিতিতের খামার টি দেখে যেতে পারেন। প্রতি শুক্রবার জুমার নামাজের পরে টার্কি পালন পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে আমাদের খামারটি পরিদর্শন করতে পারেন।আপনাদের সকলের সহযোগিতা জন্য আমরা একটি গ্রুপ ও একটি ইউ টিউব চ্যানেল ওপেন করেছি আশা করি আপনার সবাই গ্রুপে জয়েন করবেন এবং চ্যানেলটি সাবক্রাইব করবেন আমরা আমাদের সকল আপডেট এগুলোর মাধ্যমে জানাবো। আশা করি আপনারা যারা টার্কি ফার্ম করতে চান তার সকল তথ্য পাবেন।
ইউ টিউব চ্যানেল- https://www.youtube.com/channel/UCzcS1kbT6i-qRvR9SXYmokw…
ফেসবুক গ্রুপ-https://www.facebook.com/groups/1690181174554409/
ফেসবুক পেজ- https://www.facebook.com/titirbd1
ফেসবুক আই ডি- http://www.facebook.com/shomihossain
ফোন নাম্বার- ০১৯৭২২২১২৩৪
বিষয়: বিবিধ
৩৫৫০ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
টার্কির দেশি জাত তো নাই মনে হয়।
মন্তব্য করতে লগইন করুন