টার্কি পালন বাংলাদেশের জন্য নতুন সম্ভাবনা.....
লিখেছেন লিখেছেন চুকচুক জৈব সার ২০ মার্চ, ২০১৬, ০৬:২৮:০০ সকাল
বাংলাদেশে টার্কি মুরগী পালন ব্রয়লার মুরগির বিকল্প হতে পারে এবং বাংলাদেশে বাণিজ্যিক ভাবে টার্কি মুরগী পালন দিনে দিনে জনপ্রিয়তা অর্জন করছে । টার্কি বাণিজ্যিক মাংস উত্পাদনের জন্য খুবই উপযুক্ত । তারা দেখতে খুব সুন্দর হয় এবং আপনার বাড়ির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে । টার্কি মাংস উৎপাদনশীল । কিন্তু বাণিজ্যিক ভাবে ডিম উৎপাদনের জন্য উপযুক্ত নয় । তারা দ্রুত বড় হয়ে যায় এবং ব্রয়লার মুরগির মত খাওয়ার উপযুক্ত হয়ে ওঠে । আবহাওয়া ও বাংলাদেশের অন্যান্য পরিস্থিতিতে টার্কি মুরগী পালনের জন্য খুবই উপযুক্ত । এগুলো পালন মুরগি্র মত খুব সহজ (কিন্তু সঠিক যত্ন ও খামার পরিচালনার জন্য আপনাকে কিছু প্রশিক্ষণ নেয়া উচিৎ ) । বাংলাদেশে বাণিজ্যিক ভাবে টার্কি পালন / ব্যবসা থেকে ভালো মুনাফা অর্জনের উজ্জল সম্ভবনা রয়েছে । এখানে আমি বাংলাদেশে টার্কি মুরগী পালন / ব্যবসা শুরু করার পদক্ষেপ প্রক্রিয়া ধাপে ধাপে বর্ণনা করছি ।
প্রজাতির নির্বাচন: ———
টার্কি বাণিজ্যিক ভাবে মাংস উৎপাদনের জন্য উপযুক্ত. ভারতে চাষকৃত টার্কির বিভিন্ন প্রজাতির নীচে তালিকা দেয়া হলো ।
ব্রোঞ্জ, বোরবন লাল, কালো এবং স্লেট, ছোট সাদা ও হোয়াইট হল্যান্ড ।
তালিকাভুক্ত প্রজাতির মধ্যে “হোয়াইট হল্যাড” ও “কালো এবং স্লেট” প্রজাতির টার্কি বাংলাদেশ ও এশিয়ার কিছু অন্যান্য গরম দেশের জন্য খুবই উপযুক্ত.এবং এটা আমাদের দেশে এখন পাওয়া যাচ্ছে ।
ঘর ব্যাবস্থাপনা ঃ —————
সঠিক বৃদ্ধি এবং খামার পরিচালনার জন্য ভাল ঘর আবশ্যক । টার্কির ঘরের নকশা মুরগির ঘরের সঙ্গে সাদৃশ্য আছে । টার্কি বড় আকারের পাখি হিসাবে খাঁচায় পালন তাদের জন্য উপযুক্ত নয় । তাই সর্বাধিক কৃষক ডিপ লিটার পদ্ধতিতে টার্কি পালন করে ।
উন্মুক্ত পরিবেষে টার্কি পালন : — আপনি ঘেরা জমিতে এক একরে প্রায় ৪৫০ থেকে ৫০০ টার্কি রাখতে পারেন. এই পদ্ধতিতে আপনি রাত্রিতে ভরণপোষণের জন্য পাখি প্রতি ৩-৪ বর্গ ফুট স্থান নিশ্চিত করবেন ।.
ডিপ লিটার পালন পদ্ধতি: — আপনি মুরগির মত একই ভাবে তাদের বাড়াতে পারেন । টার্কি জন্য ঘর তৈরির সময় পর্যাপ্ত জায়গার ( ৬ বর্গ ফুট পাখী প্রতি ) প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে হবে । সবসময় ঝরঝরে ও পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে । সঠিক বায়ুচলাচল এর ব্যাবস্থা নিশ্চিত করুন. আর শিকারী ও ক্ষতিকর সব ধরনের প্রানি থেকে তাদের রক্ষা করার ব্যাবস্থা করুন ।
খাবার: ——–
স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর খাদ্য খাওয়ানো সঠিক বৃদ্ধির নিশ্চিয়তা সুতরাং সুষম ও পুষ্টিকর খাবার এর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ । সাধারণত টার্কির শরীরের ওজন ১ কেজি হতে প্রায় ৩.১৫ কেজি খাবার প্রয়োজন. সহজেই বাজারে পাওয়া যায় এমন হাঁস / মুরগির ফিড টার্কিকে দিতে পারেন.খরচ কমাতে নিজে তৈরি করেও নিতে পারেন । কিন্তু সে ক্ষেত্রে সকল খাবার প্রয়োজন মত নিশ্চিত করতে হবে । তবে নরম কচি ঘাস ৫০ – ৬০ ভাগ পর্যন্ত ব্যবাহার করলে খরচের পরিমাণ আরো কমে আসবে, সবসময় তাদের চাহিদা অনুযায়ী তাদের তাজা এবং পরিষ্কার পানি যথেষ্ট পরিমাণ পরিবেশন করার চেষ্টা করুন ।
সঠিক যত্ন ও ব্যাবস্থাপনা: —–
সঠিক যত্ন এবং ব্যবস্থাপনা ভালো উৎপাদন নিশ্চিত করতে পারে. টার্কি অন্যান্য দেশীয় মুরগির মত. আর তারা বিভিন্ন ধরনের রোগ এবং প্যারাসাইট দ্বারা ভোগে. টার্কির সবচেয়ে বেশী সাধারণ প্যারাসাইট গোল কৃমি এবং ফাউল মাইট হয় ।নিয়মিত কৃমিনাশক ব্যাবহার করতে হবে. টার্কি ব্যাকটেরিয়া ছত্রাক বা ভাইরাল রোগের দ্বারা প্রভাবিত. টার্কিকে ক্ষতিকর রোগ মুক্ত ও সুস্থ্য রাখতে ( ফাউল কলেরা, নীল ঝুঁটি রোগ, নিউ ক্যাসল রোগ,টাইফয়েড-সদৃশ জ্বর ) নিয়মিত টিকা দিন ।
টার্কির জন্য বয়স অনুযায়ী ভ্যাকসিন: —————–
একদিনের বাচ্চা ——- নিউ কাসল রোগ এর বি১ স্টেরেইন ( New Castle Disease- B1 Strain )
৪র্থ ও ৫ ম সপ্তাহ——- ফাউল পক্স ( Fowl Pox )
৬ ষ্ঠ সপ্তাহে ————–নিউ কাসল রোগ (New Castle Disease–R2B)
৮ – ১০ সপ্তাহ ————কলেরা ভ্যাকসিন ( Cholera Vaccine )
http://www.facebook.com/titirbd1
বিষয়: বিবিধ
২৫৬৪ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন