মাশরুম চাষের আদি-প্রান্ত ও বিপনন ব্যবস্থা :- (পর্ব-০১)
লিখেছেন লিখেছেন চুকচুক জৈব সার ১২ আগস্ট, ২০১৫, ১০:২২:৫৭ রাত
মাশরুম চাষের আদি-প্রান্ত ও বিপনন ব্যবস্থা :- (পর্ব-০১)
মাশরুম খাদ্যের তালিকায় নতুন এক সংযোজন। বাংলাদেশের পেক্ষাপটে বিপুল সম্ভাবনাময় একটি শিল্প হতে পারে মাশরুম। আমাদের দেশের আবহাওয়া মাশরুম উৎপাদন এর জন্য খুবই উপযোগী। আল্প পরিসরে ঘরোয়া পরিবেশে মাশরুম উৎপাদন করা যায়। শহুরে ব্যাস্ত কোলাহল পুর্ন জীবনে সামান্য একটু সময় করে আপনিও শুরু করে দিতে পারেন মাশরুম উৎপাদন। আমাদের দেশে যে হারে কৃষি জমি কমে যাচ্ছে এবং মানুষ শহরমুখী হচ্ছে তাতে করে খাদ্যের সংকট ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলছে। দেশে কৃষি জমি এবং কৃষক দুটোরই সংকট তৈরি হচ্ছে। এই পেক্ষাপটে একটি স্মার্ট কৃষি প্রকল্প শুরু করার কোন বিকল্প নাই। মাশরুম একটি স্মার্ট কৃষি প্রোডাক্ট এটা হতে পারে আপনার খাদ্য সংকট এবং অর্থনৈতিক মুক্তির এক মাইলফলক। মাশরুম আপনার শরীরে প্রোট্রিন এবং আমিষের চাহিদা পুরন করবে। উন্নত বিশ্বে মাশরুমকে অন্যতম খাদ্য তালিকায় রাখা হয়েছে। নানা রোগের নিরাময় সম্ভব মাশরুম দ্বারা। মাশরুম একটি এন্টিবায়োটিক গুন সমৃদ্ধ উদ্ভিদ দেশ বিদেশে কাচাঁ এবং শুকনা দুই প্রকার মাশরুমের বিপুল চাহিদা রয়েছে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদিশেও মাশরুম রপ্তানী করা যেতে পারে।
মাশরুম চাষের বিস্তারিত তথ্য
দুই ভাবে করা যায়:
১. ক্যামিক্যাল পাস্তুরাইজেশন
২. সেদ্ধ পদ্ধতি
১. ক্যামিক্যাল পাস্তুরাইজেশন:
৭.৫ গ্রাম কার্বেনডাজিয়াম (Carbendazium)
৫০ মি. গ্রাম ফরমালডিহাইড (Formaldehyde)
১০০ লিটার পানি।
পানিতে যৌগগুলো ভাল ভাবে মিশিয়ে শুকনো খড়কে ১৬ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। ভিজানোর জন্য ইট চাপা দেওয়া যেতে পারে। অতঃপর একটি কক্ষের মেঝেতে পলিথিন বিছিয়ে খড়গুলো শুকাতে হবে। সূর্যাতাপে শুকানো চলবে না। এখন খড়গুলো মাশরুমের কাজের উপযু্ক্ত হল। এরপর খড়গুলোকে পাখির বাসার মত গোলাকার করে ৩০*৫০ সে. মি. ব্যাসের পলিথিন প্যাকেটে ঢুকাতে হবে। পলিথিন প্যাকেটে ঢুকিয়ে খড়ের চাকার চারিদিকে তথা পলিথিনের সাথে গায়ে লাগিয়ে মাদার পাউডার (Mother spawn) গুলো চারিদিকে অল্প পরিমাণ বিছিয়ে দিতে হবে। এভাবে এক পলিথিনে পাচটি খড়ের চাকা দিয়ে সাজিয়ে একটি ব্যাগ বানানো যাবে। প্রতি ১২৫ গ্রাম মাদার পাউডার দ্বারা এক ব্যাগ তৈরী করা যায়। অতঃপর ব্যাগটিকে বায়ুশুন্য করে পাটের রসি/শুতলি দ্ধারা শক্ত করে বাধতে হবে। অতঃপর বন্ধ করা ব্যাগের চারিদিকে সেলাই সুঁচ দিয়ে ছিদ্র করতে হবে। মোটামুটি ৩৫ থেকে ৪০ টি ছিদ্র যথেষ্ট হবে।
ইনকিউবেশান:
প্রতিটি প্যাকেটকে চেইনের মত একটি সাথে অন্যটি জোড়া লাগিয়ে লটকাতে হবে। এতে খাড়া ভাবে সামান্য যায়গায় অনেকগুলো প্যাকেট লটকানো যাবে। এই কাজের জন্য বাছাই করা একটি কক্ষে এগুলো লটকাতে হবে। তাজা বাতাসের জন্য একদিন বাদে একদিন করে, কয়েক মিনিটের জন্য কক্ষটি খুলে রাখতে হবে। ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে প্রতিটি প্যাকেটে মাইসেলিয়াম ছড়িয়ে পড়বে। যখন দেখা যাবে প্রতিটি প্যাকেট মাইসেলিয়াম দ্ধারা সাদা হয়ে গিয়েছে, তখন একটি ব্লেড নিয়ে প্রলিথিন ব্যাগের প্রতিটি খড়ের চাকা বরাবর এক ইঞ্চি করে দাগ কাটার মত কেটে দিতে হবে।
এখন ব্যাগ গুলোকে উৎপাদন কক্ষে নিয়ে যেতে হবে। ট্রেতে সাজিয়ে রাখতে হবে যাতে করে প্রয়োজনীয় আদ্রতা, ময়েশ্চার পায়। ব্যাগে পানির স্প্রে করতে হবে। চতুর্থ দিনের দিন ছোট্ট ছোট্ট মাশরুম বের হতে থাকবে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই সেগুলো বাজার উপযোগী হবে।
আগামী পর্বে মাশরুমের প্রকারভেদ নিয়ে আলোচনা হবে... আপনাদের মতামতের অপেক্ষায় থাকলাম। আমাদের সাথেই থাকবেন এই কামনায়..
বিষয়: বিবিধ
১৭৫৯ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন