বিবর্তন- শিক্ষা কেন্দ্র থেকে ছিনতাই কেন্দ্রে পরিণত হবার গল্প ও একজন টিনু ভাই।
লিখেছেন লিখেছেন লেন্দুপ দর্জি ০৭ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০১:৪৫:৪৬ দুপুর
চট্রগ্রাম নগরীর চকবাজারকে সবাই চট্রগ্রামের শিক্ষা জোন হিসেবেই চেনে। এলাকাটি শিবির নিয়ন্ত্রিত বলে সবাই জানে। কিন্তু হাল আমলে এখানে শিবিরের পাত্তা নেই বললেই চলে। এখন এখানে দাপটের সাথে ঘুরে বেড়ায় বঙ্গবন্ধুর কম্বল চোরের উত্তরসুরীরা। চকবাজার ওয়ার্ডের বঙ্গবন্ধুর সৈনিকদের অবিসাংবাদিত নেতা হচ্ছেন নুর মোস্তফা টিনু। তিনি চকবাজার ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবং মহানগর যুবলীগ নেতা।
গতকাল বিকেলে (০৬/১২/২০১৫ইং) চকবাজার পোষ্ট অফিসের সামনে থেকে প্রবাসী সংখ্যালঘু ইঞ্জিনিয়ার সাধন চন্দ্র বসাকের ১০ লাখ টাকা ছিনতাই হয়। যা বাংলামেইলের এ সংক্রান্ত খবরের সূত্রানুসারে- "পুলিশের কাছে তথ্য রয়েছে, ছিনতাই-কারীরা স্থানীয় এবং চকবাজার এলাকার প্রভাবশালী এক ছাত্রলীগ নেতার অনুসারী নেতাকর্মী। যিনি সরকারের একজন মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত এবং থানার সাথে তার বেশ খাতির।"
যদিও বাংলামেইল বা এমন নিউজ পোর্টালগুলো অজানা কারণে এসব পাতি গডফাদারের নাম চেপে যায়, সবার কিন্তু চেপে যাওয়া উচিত না. সবারই সোনার ছেলেদের আসল পরিচয় জানার প্রয়োজন রয়েছে। তাই আমার এই ব্লগ পোষ্ট।
চকবাজার এলাকায় ছিনতাই ও সন্ত্রাসের মূল হোতা উপরে উল্লেখিত মহানগর যুবলীগ নেতা 'টিনু'। সে এবং তাঁর বন্ধুস্থানীয় শাহেদ ও ওয়ালিদ চকবাজারে সকল চাদাবাজী ও সন্ত্রাসের সাথে জড়িত। শাহেদ ও ওয়ালিদ দুই ভাই এবং ওয়ালিদই 'ছোট ভাই' হিসেবে পরিচিত। এরা হাটহাজারীর বর্তমান এম.পি. এবং সরকারের পানি সম্পদ মন্ত্রী জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য- ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ আত্মীয় (প্রকাশ আপন ভাগিনা)। এছাড়াও এদের সাথে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি ও মেয়র আ.জ.ম. নাছিরের প্রকাশ্য শখ্যতা রয়েছে।
বস্তুত টিনু শাহেদ ও ওয়ালিদের সন্ত্রাসী বাহিনীর কাছে চকবাজারের ব্যবসায়ী ও পরিবহন চালকেরা জিম্মি এবং এরা সবাই চকবাজার ওয়ার্ড যুবলীগের হর্তাকর্তা। এদের নিয়মিত আড্ডা চকবাজার থানার ও.সি. আজিজ আহমেদের রুমে।
চকবাজার কাঁচাবাজার ও সংলগ্ন এলাকা থেকে এই চক্রের দৈনিক আয় প্রায় এক থেকে দেড় লাখ টাকা (চাঁদা কালেক্টরের নাম আমির) যার ২০-২৫ ভাগই যায় পুলিশের পকেটে। ফলে টিনু ও তার অনুসারী সন্ত্রাসীরা বেপরোয়া হয়ে গেছে।
যা হোক রোববার বিকেলে ছিনতাই হওয়া টাকার জন্য ইঞ্জিনিয়ার সাধন চন্দ্র চকবাজার থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা না নেয়ার চেয়ে সমঝোতার চাপই প্রয়োগ করে ছিনতাইয়ের শিকার হওয়া বসাকের ওপর। শেষ পর্যন্ত বসাককে রীতিমতো সমঝোতা করতে বাধ্য করা হয়েছে। রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশের সমঝোতাই ‘উদ্ধার’ নাটকের মাধমে চকবাজার থানাতেই পুলিশ সাধন চন্দ্রকে ছিনতাই হওয়া টাকা ফেরত দিয়েছে (সে সময় শাহেদ থানার ওসির সাথে আড্ডায় ব্যস্ত ছিল)।
মূলত এই সমঝোতা এদের দৈনিক কাজের অংশ; এসব সন্ত্রাসীদের মামলা থেকে বাঁচাতেই ওসি নিজ উদ্যোগে প্রায়ই এমন সমঝোতার নাটক করে থাকেন। এলাকার 'ছোট ভাই (ওয়ালিদ)' ও তার বন্ধুদের হাত খরচের নামে একটা ভালো অংক কেটে রেখেই ভুক্তভুগীকে ভয় দেখিয়ে ও চাপ প্রয়োগ করে সমঝোতায় বাধ্য করা হয়।
এটাই এক বিবর্তনের গল্প। এভাবেই একটি শিক্ষা জোন ছিনতাই জোনে পরিণত হচ্ছে।
এ সংক্রান্ত বাংলা মেইলের নিউজটি মিলিয়ে পড়ুন সব আরও পরিষ্কার হয়ে যাবে-
ছিনতাই করল ‘ছাত্রলীগ’, টাকা ফেরত দিল পুলিশ! -আলম দিদার, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বাংলামেইল২৪ডটকম
০৭/১২/১৫
বিষয়: রাজনীতি
২৬৩৯ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সুত্র- এক/দেড় বছর আগে পড়েছিলাম আমার দেশে। ফিরোজ মাহবুব কামাল নাকি মিনার রশিদ লিখেছিলেন ভুলে গেছি।
অনেক ধন্যবাদ
মন্তব্য করতে লগইন করুন