সমাজকে সুশৃঙ্খলভাবে টিকিয়ে রাখতে মানুষদের কর্তব্য কি হওয়া উচিৎ তার খুব সুন্দর একটি উদাহরণ
লিখেছেন লিখেছেন এশিয়ান স্প্রিং ২১ মে, ২০১৫, ০২:৪৭:০৩ দুপুর
একটি সমাজকে সুশৃঙ্খলভাবে টিকিয়ে রাখতে সেখানকার মানুষদের (যেকোনো বিশ্বাসের) কর্তব্য কি হওয়া উচিৎ সে ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (সা) খুব সুন্দর একটি উদাহরণ টেনেছিলেনঃ
“যারা আল্লাহর দেয়া সীমানা অতিক্রম করে না আর যারা করে তাদের উদাহরন হচ্ছে একটি জাহাজের উপরের তলা আর নীচের তলায় অবস্থান নিয়েছে এমন কিছু মানুষদের। নীচের তলার মানুষদের যখন পানি নিতে হয় তারা উপরের লোকদের কাছে যায়। কিন্তু তারা যদি ওপরের তলার মানুষদের এই প্রস্তাব দেয় যে, “আমরা জাহাজের তলায় একটা ফোঁটা করব আর তাতে আপনাদের কোন সমস্যা হবে না”। যদি ওপরের তলার লোকরা তাদের এই প্রস্তাবে রাজি হয়, পুরো জাহাজ সহ সবাই (ওপরের-নীচের) ডুবে যাবে। আর যদি এই কাজ করা থেকে বিরত করে, তাহলে সবাই বেঁচে যাবে” [বুখারি]
বর্তমান সামাজিক ও রাজনৈতিক ধ্বস এর *মুল কারন* নিয়ে আমাদের বুদ্ধিজীবীরা আলোচনায় একেবারে ইচ্ছুক না। তাই বাংলাদেশে ধর্ম-বর্ণ-আদর্শ নির্বিশেষে সকলেই আজ আতংকিত ও ক্ষতিগ্রস্থ। সমাজকে চালানোর ক্ষেত্রে সেকুলার গণতন্ত্র ব্যর্থ গ্লোবালি। সেটার বিপরীতে ইসলাম কে সমাধান হিসেবে পেশ করার গোঁড়ামি মুক্ত ও বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে অকাট্য প্রমাণাদি থাকার পরো কোন “রাজনৈতিক ইসলাম” এর আলোচনা করা যাবে না। তাই তথাকথিত আধুনিক সেকুলারদের চোখে খেলাফতের রাজনীতির আলোচনার অর্থই হল উগ্রবাদ ও মিলিট্যান্সি!!!
বাকি থাকলো সেকুলার ডান, মূলধারার ইসলামিস্ট এবং বাম নেতারা যারা পশ্চিমা লিবারেল দর্শন এবং গণতন্ত্রকে সমাধান হিসেবে দেখেন (যদিওবা যখন তাদের জিজ্ঞাস করা হয় বাস্তবতার আলোকে কেন তাদের এই চিন্তা ইউটোপিয়া না, কোন উত্তর পাওয়া যায় না)।বাংলাদেশে “গণতান্ত্রিক ইসলাম” এখন ক্লিনিক্যালি ডেড (তুরস্ক, মিশর, আলজেরিয়ার মতো)। বিভিন্ন ইসলামী দলের এক সময়ের ত্যাগী ইসলামী নেতাকর্মীরা অনেকেই এখন জীবনের মায়ায় বেছে নিয়েছেন সমাজসেবা এবং কুরআন শিক্ষামুলক অরাজনৈতিক কাজ কারন তাতে সরকারও চেতবে না এবং তারাও সেসব কাজে রুহানিয়াত খুঁজে পায়, যদিওবা তারাও ভাল করে জানেন তাদের ওসব কাজ দ্বারা সমাজের মুনকার দূর হয় না এবং সেটা আল্লাহর রাসুলের (সা) সুন্নাহও না।
ডানপন্থী ও মোডারেটরা ফ্যাসিবাদের ভয়ে এখন আতংকিত। সরকারি পর্যায়ে খুবই হাই কানেকশন যাদের নেই তারা কথাই বলছেন না। আসিফ নজরুলের মতো দুই একজন সেলেব্রিটি যারা বলছেন, তাদের সাথে ব্যক্তিগত ভাবে যাদের যোগাযোগ আছে তারা ভাল করেই যানে ওনাদের বর্তমান মানসিক দুর্দশা ও আতংক কোন পর্যায়ের। বামদের অবস্থাতো সবচেয়ে শোচনীয়। তাদের সুবক্তারা এখন জীবনের মায়ায় গর্তে ঢুকে পরেছে, পাতি যারা একটু হিরোইস্ম দেখাচ্ছিল তারাও হয়তো বুঝবে আদর্শগত ভাবে পরাজিত মতবাদ (সমাজতন্ত্র) দিয়ে বাস্তবতা বিবর্জিত আতলামি হয় কিন্তু আন্দোলন হয় না।
তাই যে হাদিস দিয়ে শুরু করেছিলাম সেটার আলোকেই বলব শুধু মুসলিমরাই নয়, সকল বিশ্বাসের মানুষদের উচিৎ ছিল সামাজিক অবক্ষয়ের প্রকৃত সমাধান নিয়ে আলোচনা শুরু করা। আজকে পাশ্চাত্যের মতো করে ইসলামের রাজনৈতিক সমাধানকে জঙ্গিবাদ ট্যাগ দিতে গিয়ে আপনারা নিজেরাই আজ “পশ্চিমা জঙ্গিবাদের” (গণতন্ত্র) শিকার। পুরো সমাজ ডুবছে আর আপনারা এখনো কল্পনার আকাশে পশ্চিমা গণতন্ত্রের ঘর বানাচ্ছেন। দোষ শুধু ফ্যাশিবাদ কে দেবেন না দয়া করে, নিজেদের দিকে তাকান এবং নিজেদের আগে জবাবদিহি করেন। সমস্যা তুলে ধরাই শুধু বুদ্ধিমানের কাজ না, সমাধানটা সঠিক কিনা সেটা বোঝা আরও গুরুত্বপূর্ণ।
বিষয়: বিবিধ
১১৭০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন