আমি অধম বলিয়াই তুমি উত্তম

লিখেছেন লিখেছেন হরিণ খাইন গোয়েন্দা সংস্থা ০৬ আগস্ট, ২০১৫, ১০:৩৬:২৯ সকাল

শেখ সাদীর কবিতার চরণ,‘…………কামড় দিয়েছে

পায়, তাই বলে কি…..কামড়ানো মানুষের শোভা

পায়’ কিংবা ‘আমি অধম বলিয়াই তুমি উত্তম’

এমন উপমাগুলো বর্তমানে শুধু উপমাতেই

সীমাবদ্ধ । অন্ধকারাচ্ছন্ন আরবে যেমন ‘খুনকা

বদলা খুন’ নীতি প্রচলিত ছিল তেমনি আজকের

পৃথিবীটাও প্রায় সে নীতিতে বিশ্বাসী ।

সর্বক্ষেত্রে কেবল ক্ষমতাধর কর্তৃক

সংখ্যালগুদের নিপীড়ণের প্রমাণ । ক্ষমতার

দ্বন্দ্ব আর মোহ ক্ষমতালোভীদেরকে রীতিমত

অন্ধ করে দিচ্ছে । ন্যায়-অন্যায়, কল্যান-

অকল্যানের বিচার বিবেচনার সময় যেন কারো

নাই । সুদৃঢ় প্রসারী পরিকল্পনার খুব অভাব ।

সবাই শুধু দ্রুত ফলাফল প্রত্যাশা করে । যেকারণে

শান্তির ছিঁটে-ফোঁটাও অবশিষ্ট নাই ।

জ্ঞানীদের একাংশ ঘোষণা করছে, টাকার

বিনিময়ে আর যাই হোক সূখ কেনা যায় না অথচ

যারা এ বাণীর ঘোষক এবং যারা শ্রোতা তাদের

বেশিরভাগই টাকার পিছনে ছুটছে । ‘অর্থ সকল

অনর্থের মূল’ এ বাক্য মূখে উচ্চারণ করার পরেও

অর্থকে দেয়া হয়েছে স্রষ্টার পরের স্থান অর্থ্যাৎ

অর্থ নাকি দ্বিতীয় স্রষ্টা ! অর্থ উপার্জনের

মাধ্যম বৈধ কি অবৈধ; এ বিষয়ে কারো খুব বেশি

ভাবার যেন সময় নাই । টাকা পেলেই হল, তা

অর্জনর পথ যেমন হোক । টাকা থেকে গরীবের

রক্তের গন্ধ বের হলেও যেন কিছু আসে যায় না !

টাকা আর ক্ষমতার মোহে মানুষের মনুষ্যত্মবোধ

কিছুটা লোপ পেয়েছে এতে সন্দেহের সুযোগ নাই

। সমাজে কাকে সম্মানিত করা হবে, কে বেশি

মূল্যায়ণ পাবে তার নির্ধারক হয়েছে অর্থ ।

অর্থের কাছে শিক্ষা-সংস্কার একেবারেই

উপেক্ষিত । সমাজের বিদ্বানদের একাংশ ‘আঙুল

ফুলে কলাগাছ’ ধরণের অর্থ-বৃত্তশালীদের

চাটুকারীতায় ব্যস্ত । যার ধন আছে তার মান

হবেই; এমন বদ্ধমূল বিশ্বাস মানুষের মূল্যবোধে

রূপ নিয়েছে । সমাজ কিংবা রাষ্ট্রের সম্মানিত

আসনে কে বসবে, রাষ্ট্র পরিচালনায় কারা দক্ষ

তার সীমারেখাও নির্ধারণ করে দিচ্ছে অর্থ ।

অন্যদিকে প্রাচীনযুগে দাসদেরকে যেমন

অমানবিকভাবে ব্যবহার করা হত তেমনি

বর্তমানেও সাধারণ মানুষ ব্যবহৃত হচ্ছে । সেসময়

প্রভূর ইচ্ছানুযায়ী দাস শ্রেণী ব্যবহৃত হত আজ

শুধু সেখানে চিত্রিত করা হয়েছে, খেঁটে খাওয়া

মানুষেরা তাদের জীবিকার তাগিদেই প্রভূদের সেবা

করছে । এখানে যে ‘স্বেচ্ছায় বাধ্যতামূলক’ নামক

এক তত্ত্বকে সুকৌশলে কাজ করানো হচ্ছে তার

খবর খুব বেশি মানুষ রাখছে বলে অনুমিত নয় ।

সামান্য ব্যাখা-বিশ্লেষণে দেখা যাবে গোটা

বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যের নিয়্ন্ত্রক এখন

দেশের চরম বিবাদমান দুটি রাজনৈতিক বৃহৎ দল ।

এদের একটি দল যদি কোন কাজকে রাষ্ট্রের জন্য

মঙ্গলজনক বলে প্রচার চালায় তবে অন্যদলটি যে

কোন ভাবেই তা রাষ্ট্রের ক্ষতিকর হিসেবে ব্যাখা

করবে । গণশৌচাগার স্থাপণ থেকে শুরু করে

বিদেশী রাষ্ট্রের সাথে দেশের চুক্তির ব্যাপারে

তাদের একই অবস্থা । রাজনৈতিক দল দু’টোর

বিপরীত ধর্মী মেরুকরণের ফলে সাধারণ মানুষ দিনে

দিনে দু’টো অংশে বিভক্ত হয়ে পড়েছে ।

নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে কথা বলা কিংবা কোন ঘটনাকে

বস্তুবাদী দৃষ্টিভঙ্গিতে বিচার করার মত

অভিভাবক লোপ পেতে পেতে সংখ্যাটা মাত্র

দু’একজনে নেমেছে । যারা নিরপেক্ষ তারা হয়

কৃত্রিমভাবে মূক এবং কালায় পরিণত হয়েছে নতুবা

নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে কারো ছত্র-

ছায়ায় আশ্রয় নিয়েছে । শঙ্কার কথা হল,

নীতিবান মানুষ যখন কারো তোষামোদে

স্বেচ্ছায় অথবা বাধ্য হয়ে নিজেদেরকে জড়িয়ে

ফেলে তখন তারা সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য

মারাত্মক হুমকিতে পরিণত হয় । কেননা মূর্খদের

চেয়ে পদলেহনের ক্ষমতা ও কৌশল তাদের বেশি

নখদর্পণে থাকাটাই যৌক্তিক । বিশ্বাস, দেশের

বৃহৎ দু’টো রাজনৈতিক দলই দেশের মঙ্গলের

জন্য কাজ করে । তবে সংশয় ও শঙ্কা তৈরি হয়

যখন প্রধান এবং দ্বিতীয় বৃহত্তর রাজনৈতিকদল

দু’টি সর্বদা পরস্পর বিরোধপূর্ণ মতামত ব্যক্ত

করে । বিশ্বের অন্যদেশগুলোর যেগুলোতে

সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চালু আছে

সেগুলোতেও সরকারী দলের সাথে বিরোধীদলের

মতপার্থক্য থাকে কিন্তু কিছু কিছু স্বার্থে তারা

সর্বদা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করে । দূর্ভাগ্যের

হলেও, এ দেশে পালাক্রমে যারাই ক্ষমতায় এসেছে

তারা কখনোই বিরোধী দলের ছায়া পর্যন্ত

তাদের কাছে সহ্য করতে পারে নি । অবশ্য এর

পিছনে যৌক্তিক কতগুলো কারণও রয়েছে ।

বিষয়: বিবিধ

১৫০৫ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

334054
০৬ আগস্ট ২০১৫ সকাল ১১:৫৫
আব্দুল মান্নান মুন্সী লিখেছেন : হু অসাধারন নিতি কথা...কিন্তুু আমি ছারা আর তেমন কেউ তা উপলব্দি করতি পারবে না...পড়ে খুবই ভালো লাগলো আপনাকে অনেক ধন্যবাদ পিলাচ পিলাচ পিলাচ
০৬ আগস্ট ২০১৫ রাত ০৯:৫৪
276301
হরিণ খাইন গোয়েন্দা সংস্থা লিখেছেন : আপনাকে ও ধন্যবাদ :-P
334084
০৬ আগস্ট ২০১৫ দুপুর ০২:৩৫
নাবিক লিখেছেন : কথাগুলো ভালোই বলেছেন। ধন্যবাদ।
334099
০৬ আগস্ট ২০১৫ দুপুর ০৩:০৭
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : তুমি অধম তাই বলিয়া আমি উত্তম হইব না কেন?
এখন হবে :
তুমি অধম তাই বলিয়া আমি আরো অধম হইব না কেন?
-ধন্যবাদ..

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File