পিন্ডী-দিল্লী বা ইস্তাম্বুল নয় ঢাকামুখি হওয়া চাই-১ মাহবুব সুয়েদ

লিখেছেন লিখেছেন সমশেরনামা ২২ মে, ২০১৬, ১০:২১:০৯ সকাল

১-বৃটিশদের গোলামির জিঞ্জির পরে উপমহাদেশ শোসিত হয়েছিল প্রায় ২০০ বছর।দু-শ বছরের শাসনের পরে চতুর বৃটিশরা বিদেয় কালে 'দ্বী-জাতি তত্বের' ভিত্তিতে মুসলিম মানস আর হিন্দু মানসে সাম্প্রদায়িকতার বিষ ঢেলে দিয়ে 'ভারত' ও 'পাকিস্তান' নামে দুই রাষ্ট্রের গোড়াপত্তন করে দিয়ে যায়।১৯৪৭ সালের সেই বিভাজনের পর থেকে খন্ডিত উপমহাদেশে পারস্পরিক রেষারেষি শুধু বেড়ে ই চলছে দিনে দিনে।ভারত আর পাকিস্তান এই দু'দেশ নিজেদের প্রতিরক্ষা খাতের সর্বাদিক ব্যায় করে থাকে পরস্পরের বিরুদ্বে।নবাব সিরাজুদ্দৌলার সুবে বাংলাকে ধর্মীয় দিক বিবেচনায় বৃটিশরা পিন্ডীর সাথে জুড়ে দিয়ে যায়।দুনিয়ার ইতিহাসে এক 'আশ্চর্য' রাষ্ট্র তৈরি হয় যার একাংশ আরেকাংশ থেকে প্রায় দেড় হাজার মাইল দুরত্বে ছিল।নাবাবদের বাংলা আর আসামের সিলেটাঞ্চল জুড়ে যায় প্রায় দেড় হাজার মাইল নামকা মুসলিম এবং আসলকা বদমেজাজি 'পাকিস্তানিদের' সাথে।

২-দুই অংশ নিয়ে গঠিত পাকিস্তানে পশ্চিমাংশের দুঃশাসনে অতিষ্ট হয়ে দ্বীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ি সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ঢাকাকে রাজধানী করে স্বাধীন বাংলাদেশ নামে বিশ্ব মানচিত্রে নতুন রাষ্ট্রের জন্ম হয়।৪৭এ বিভক্ত উপমহাদেশ তিন রাষ্ট্রে ভাগ হয় তিন রাজধানীকে ধারন করে।পিন্ডীর মানুষেরা 'ইসলামাবাদ'কে তাদের রাজধানী হিসেবে মেনে নিয়ে তারা তাদের রাজধানী মুখি এখনও আছে এবং এক্ষেত্রে তারা কোন রাষ্ট্রকে নিজেদের 'মনিব' মনে করেনা।পাকিস্তানে আর যাই হোক তারা নিজেদের কখনো 'ভারতীয়' বা 'বাংলাদেশি' দালাল বলে গালি দেয়না।নানা কু-গুনের পাশাপাশি তাদের মাঝে চরম ভারতবিরুধী এবং স্বাধিন জাতীয়তাবাদি মানসের উপস্থিতি এখনও রাখতে পেরেছে।

৩-১৯৪৭ এ বৃটিশদের কাছ থেকে স্বাধীন হওয়া ভারত তাদের নিজেদের অর্জনের খাতা শুধু বৃদ্বি করে ই চলছে।'গোয়া' ও 'সিকিম' অঙ্গরাজ্য হিসেবে ৪৭ পরবর্তিতে যোগ হয়েছে দিল্লীওয়ালাদের সাথে।কি হিন্দু কি মুসলিম বলতে গেলে সব ভারতীয় নিজেদের খাটি দেশপ্রেমিক মনে করে এবং নিজদের স্থল বা জল সীমা বৃদ্বির চিন্তায় বিভোর এরা।ভুটান,নেপাল বা মালদ্বিপের মত রাষ্ট্রকে নিজেদের মুখাপেক্ষি করে রেখেছে এরা।আপাদস্তক ভারতীয় জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী ভারতে কেউ অন্য রাষ্টের তাবেদারী করেনা বা কাউকে অন্য রাষ্ট্রের এজেন্ট ও ভাবেনা।

৪-১৯৭১ সালে স্বাধিন হওয়া ৫৬ হাজার বর্গমাইলের বাংলাদেশ নামক নতুন রাষ্ট্রটি তার রাজধানি হিসেবে ঢাকাকে বেছে নেয়।একটি স্বাধিন সার্বভৌম জাতী হিসেবে বাংলা বিশ্ব মানচিত্রে স্থান করে নেয়।লাখো লাখো বনি আদমের জীবন নাশ হাজারো মানুষের ইজ্জত আর মা বোনদের আহাজারির বিনিময়ে অর্জিত বাংলা স্বাধীন হয়েছে যদিও ৭১ সালে কিন্তু রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন আর নেতাদের হীন চরিত্রগত কারনে বাংলা আজ স্বাধিন হওয়া সত্বেও এখন ও নিজেকে পরিপুর্ন স্বার্বভৌমত্বের মালিক ভাবতে কুন্ঠাবোধ করে।এখানকার রাজনৈতিক বা নাগরিক চরিত্র এমন হয়ে দাড়িয়েছে যে,দেশের সর্ববৃহত দলকে অপর সব বিরুধীদল 'দিল্লী'র আশির্বাদপুষ্ট মনে করে এবং বিভিন্ন সময় 'ভারতীয় দালাল' বলে ইঙ্গিত করে থাকে। বলা বাহুল্য যারা খোদ সরকার পরিচালনা করছে একটি স্বাধিন দেশের তাদের প্রতি ই যদি দেশের প্রধান বিরুধীদল সমুহ অন্য দেশের এজেন্ট বলে সন্দেহ করে তাহলে স্বাধিনতার কোন অর্থবহ আর কিছু বাকি আছে বলে মনে করিনা।

৫-১৯৭৫র পটপরিবর্তনের মাধ্যমে ক্ষমতার পালাবদল হলে জেনারেল জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে বহুদলীয় গনতন্ত্র কায়েম করেন এবং বিএনপি প্রতিষ্টা করেন।রনাংগনের মুক্তিযোদ্বা জিয়া কতৃক ঘোষিত দলটিকে হাল জামানায় শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারনে ইদানিং প্রতিপক্ষ সরকারিদল 'পাকিস্তানে' এজেন্ট বলে ইঙ্গিত করে থাকে এবং এর প্রতিষ্টাতাকে তারা মুক্তিযুদ্বে পাকিস্তানি এজেন্ট ছিল বলতে ও দিধ্বা করেনা। চিন্তা করে দেখুন মহান মুক্তিযুদ্বের একটি সেক্টরের কমান্ডার আবার বীর উত্তম উপাধীপ্রাপ্ত যোদ্বাকে যদি পাকিস্তানের এজেন্ট বলে ভাবা হয় তাহলে কি আর আমাদের স্বাধীনতা বলে কিছু অবশিষ্ট থাকে?

বিষয়: বিবিধ

১১৮২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File